জনশুমারিতে সংখ্যায় বেশি, ভোটার সংখ্যায় পিছিয়ে নারীরা



জাহিদ রাকিব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
জনশুমারিতে সংখ্যায় বেশি, ভোটার সংখ্যায় পিছিয়ে নারীরা

জনশুমারিতে সংখ্যায় বেশি, ভোটার সংখ্যায় পিছিয়ে নারীরা

  • Font increase
  • Font Decrease

৯ বছর আগে রাজধানীর মধুবাগে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে চার সন্তানের জননী শিল্পী আহমেদের (৩৫) টিনশেড ঘরটি পুড়ে যায়। তার কিছুদিন পর স্বামী তাকে ছেড়ে অন্যত্র বিয়ে করে। তারপর থেকে সন্তানদের নিয়ে একাই জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। 

শিল্পী আহম্মেদ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ধর্মীয় রীতি পালন করি, ছবি তুলতে হবে তাই আমি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) করিনি। অগ্নিকাণ্ডে ঘর পুড়ে যাওয়ার পর সবাই সরকারি-বেসরকারি ত্রাণ-সহযোগিতা পেলেও এনআইডি না থাকায় কোনো সহায়তা পাইনি।

শিল্পী আহম্মেদের মত ঢাকার মোমিনবাগের বাসিন্দা শরীয়তপুরের উম্মে কুলসুম কুসুম (৩৮) বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন। ছয় নাবালক সন্তান রেখে স্বামী মারা গেছেন পাঁচ বছর আগে। মুখচ্ছবি দিতে সম্মতি না দেওয়ায় জাতীয় পরিচয়পত্র পাননি। কোথাও কাজ নিতে গেলে সবাই আগে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখতে চায়।

নানাবিধ কারণে শিল্পী আহম্মেদ ও উম্মে কুলসুমের মত এখনো জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন করেননি। ফলে নাগরিক সুবিধার বাইরে রয়ে গেছেন এনআইডি না নেওয়া নারীরা। 

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জনশুমারির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে নারীর সংখ্যা বেশি হলেও ইসির ভোটার তালিকায় বেশি পুরুষ ভোটার সংখ্যা। সেখানে দেখা যায়, ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬ জন জনসংখ্যায় পুরুষ রয়েছে ৮ কোটি ৪১ লাখ ৩৪ হাজার ৩ জন। নারীর সংখ্যা আট কোটি ৫৬ লাখ ৮৬ হাজার ৭৮৪ জন।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৭৯ জন, নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৯ হাজার ২০২ জন। সেই হিসেবে পুরুষ ভোটারের তুলনায় নারী ভোটার ১৮ লাখ ৫২ হাজার ৩৭৭ ভোটার কম।

নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, জনসংখ্যায় যেহেতু নারীর সংখ্যা বেশি, স্বাভাবিকভাবে নারী ভোটারও বেশি থাকার কথা। কিন্তু কিছু লোকের ধর্মীয় বিশ্বাস, ছবি তুলতে অসম্মতি, এনআইডির গুরুত্ব নিয়ে প্রচারের অভাব, নানা প্রতিবন্ধকতা, প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের মধ্যে আগ্রহ বা সুযোগের অভাব ভোটার সংখ্যায় ওই উল্টো চিত্রের কারণ ঘটাতে পারে।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বার্তা২৪.কম-কে বলেন, নারীরা নানান কুসংস্কার বিশ্বাস করে বিধায় এখনো কেউ কেউ ভোটার হচ্ছে না। সমাজে নারীদের পিছিয়ে রাখার জন্য একটি মহল কাজ করছে, যাতে নারীরা এগিয়ে যেতে না পারে। এর পেছনে পরিবার ও সমাজ নানাভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার মাধ্যমে ভোটার হওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।

তিনি আরও বলেন, ধর্মের নামে মিথ্যা অজুহাত দিয়ে অনেক নারী এনআইডি গ্রহণ করছেন না। ফলে রাষ্ট্র নারীকে যে অধিকার দিয়েছে, সে অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা চাই, সকল নারী যেন এনআইডি গ্রহণ করুক। সেখানে যেন কো নো পশ্চাৎপদ চিন্তা ভাবনা ধর্মীয় গোঁড়ামির ঊর্ধ্বে ওঠে নারীদের এগিয়ে আসতে হবে।

২০০৭-২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা কার্যক্রম হাতে নেয় তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন। সেই সময় ৯ কোটি ভোটারের ডাটাবেজ তৈরি করা হয়। ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়নের পর এ পর্যন্ত ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে সাতবার। ২০২১-২২ সালে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হালনাগাদ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে ইসি। ছবিসহ ভোটার তালিকা শুরুর পর থেকে নারী-পুরুষের সংখ্যা প্রায় সমান থাকলেও গত ১৫ বছরে হালনাগাদে নারী ভোটারদের সাড়া মিলেছে কম।

এমন পরিস্থিতিতে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা নারী ভোটার না হওয়ার একাধিক কারণ চিহ্নিত করেছিলেন। সেখানে দেখা যায়, নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহে অনীহা, হিন্দু অবিবাহিত মেয়েদের পিত্রালয়ে নিবন্ধন করতে অনীহা; অবিবাহিত, অনগ্রসর ও নিরক্ষর মেয়েদের ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে আগ্রহ কম; মা-বাবার জাতীয় পরিচয়পত্র দাখিল করতে ব্যর্থ হওয়া, রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্র দূরে হওয়া, আবহাওয়া অনুকূল না থাকা, সামাজিক সংস্কার ও ধর্মীয় অজুহাতে ছবি তুলতে অনীহা এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীদের অসচেতনতা। তখন একাধিক কর্মসূচিও হাতে নিয়েছিল বলেও কমিশন সূত্রে জানা যায়। তারপরও নারীদের ভোটার সংখ্যা বাড়াতে পারেনি কমিশন।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে, ২০২০ সালে দেশে মোট ভোটার ছিল ১০ কোটি ৯৮ লাখ ১৯ হাজার ১১২ জন। সেখানে নারী ভোটার ছিল ৫ কোটি ৪৩ লাখ ৩৬ হাজার ২২২ জন। আর পুরুষ ভোটার ছিল ৫ কোটি ৫৪ লাখ ৮২ হাজার ৫৩০ জন। সেখানে পুরুষের চেয়েও ১১ লাখ নারী ভোটার কম। ২০২১ সালে দেশে মোট ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ১১ কোটি ১৭ লাখ ২০ হাজার ৬৬৯। সেখানে নারী ভোটার ছিল ৫ কোটি ৫১ লাখ ২২ হাজার ২২৩ জন। পুরুষ ভোটার ৫ কোটি ৬৫ লাখ ৯৮ হাজার ৫ জন। ২০২০ সাল থেকে ২০২১ সালে পুরুষ ভোটার ১০ লাখ বৃদ্ধি পেলেও নারী ভোটার বেড়েছে মাত্র ৮ লাখ।

একইভাবে দেশে ২০২৩ সালে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৮৯ হাজার ২৮৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৭ লাখ ৬৯ হাজার ৭৪১ জন, নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৮ হাজার ৬৯৯ জন এবং হিজড়া ভোটার ৮৪৯ জন। সর্বশেষ হালনাগাদের খসড়ায় দেখা যায়, ১২ কোটি ১৭ লাখ ৭৫ হাজার ৪৫০ জন ভোটার; এর মধ্যে পুরুষ ৬ কোটি ২০ লাখ ৯০ হাজার ১৩৭ এবং নারী ৫ কোটি ৯৬ লাখ ৮৪ হাজার ৩৮৯ এবং ৯২৪ জন হিজড়া ভোটার। এখানেও পুরুষের চেয়েও ২৪ লাখ নারী ভোটার কম। কিন্তু বিবিএসের জনশুমারিতে দেশে পুরুষের চেয়েও নারীর সংখ্যা সাড়ে ১৫ লাখ বেশি।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জনশুমারির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০০১ সালে দেশে মোট জনসংখ্যা ছিল ১৩ কোটি ৫ লাখ ২২ হাজার ৫৯৮ জন। সেখানে পুরুষের সংখ্যা ছিল ৬ কোটি ৭৭ লাখ ৩১ হাজার ৩২০, আর নারীর সংখ্যা ছিল ৬ কোটি ২৭ লাখ ৯১ হাজার ২৭৮ জন। এখানে নারীর চেয়েও ৫০ লাখ বেশি। এই সংখ্যা ২০১১ সালের জনশুমারিতে নারী ও পুরুষের সংখ্যা সমান হয়।

কিন্তু বিবিএসের সর্বশেষ ২০২২ সালের জনশুমারির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, দেশে মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন। পুরুষের সংখ্যা ৮ কোটি ৪১ লাখ ৩৪ হাজার ৩ জন। নারীর সংখ্যা ৮ কোটি ৫৬ লাখ ৮৬ হাজার ৭৮৪ জন। হিজড়ার সংখ্যা ৮ হাজার ১২৪ জন। ২০০১ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত গত ২০ বছরে পুরুষের সংখ্যা চেয়েও নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৩১ শতাংশ। এখানে পুরুষের চেয়েও সাড়ে ১৫ লাখ বেশি।

জাতীয় পরিচয়পত্রে ছবি ছাড়া আঙুলের ছাপের মাধ্যমে ভোটার নিবন্ধন নিয়ে আন্দোলন করছে আঞ্জুমান মহিলা পরিষদ। ওই পরিষদ নির্বাচন কমিশন, মানবাধিকার কমিশনে তাদের দাবির বিষয়ে স্মারকলিপি দিয়েছে। স্মারকলিপি দিয়ে কোনো সাড়া না পেয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে।

আঞ্জুমান মহিলা পরিষদের শারমিন ইয়াসমিন বার্তা২৪.কম-কে জানান, ভোটার না হওয়ায় আমরা বেশ কয়েকটি অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে আমরা কেউ ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারছি না। আমাদের অনেক বোনেরা কোথাও চাকরির আবেদন করতে পারছে না। 

তিনি বলেন, আমরা চাই পর্দাশীল নারীদের জন্য ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা পদ্ধতি শিথিল করা হোক। এই জন্য আমরা দুইটা দাবি করেছিলাম। ছবি ছাড়া আঙুলের ছাপের মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ড দেওয়ার জন্য।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ভোটার হতে অনাগ্রহ রয়েছে এমন বিষয় না থাকলেও কিছু কুসংস্কার রয়ে গেছে অনেক এলাকায়। ধর্মীয় কুসংস্কারের কারণে অনেক নারী ভোটার হতে চায় না।

তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে যেসব নারী পর্দা করে তারা ছবি তুলতে চায় না বলেই নারী ভোটারের সংখ্যা কম। নারী ভোটারের সংখ্যা বাড়াতে নির্বাচন কমিশন ছাড়াও জাতীয়ভাবে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা সবসময় বলি জাতীয় পরিচয়পত্র যে ভোট দেওয়ার জন্য প্রয়োজন সেটা না, জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া কেউ এখন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, জমির দলিল করতে পারে না।

নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে নারী-পুরুষ সকলকে ভোটার হতে আহ্বান জানান এই কর্মকর্তা।

   

তীব্র তাপদাহে বুথে অচেতন হয়ে পড়লেন বৃদ্ধা নারী ভোটার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লক্ষ্মীপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে নির্বাচনী বুথে এক বৃদ্ধা নারী ভোটার অচেতন হয়ে পড়েছেন।

রোবাবার (২৮ এপ্রিল) ভোট চলাকালীন দুপুর ২টার দিকে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ১৪নং লাহারকান্দি ইউনিয়নের কুতুবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

এ সময় ওই নারীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনায় কেন্দ্রে উপস্থিত ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

অচেতন হয়ে পড়া নারীর নাম পরিচয় জানা যায়নি। তবে তিনি কেন্দ্রের ১০নং নারী বুথের সামনে ভোট দেওয়ার জন্য লাইনে অপেক্ষমাণ ছিলেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, দুপুরে হঠাৎ কেন্দ্রে বুথের সামনে নারী ভোটারের লাইনে অচেতন হয়ে পড়ে ওই নারী। তার বয়স প্রাশ ষাটোর্ধ্ব। অচেতন হয়ে পড়ার পর তার নাকে-মুখে ফেনা ও সারা শরীরে প্রচণ্ড ঘাম পরিলক্ষিত হয়। ভোট দিতে তার সাথে কোনো স্বজন এসেছে কিনা জানা যায়নি।

এ বিষয়ে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা জানান, অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য ওই নারীকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

এদিকে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের অনেকগুলো কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে লাইনে অপেক্ষমাণ ছিলেন পুরুষ ও নারী ভোটাররা। ভোটারের উপস্থিতিও ব্যাপক দেখা গেছে। এরমধ্যে নারী ভোটারের সংখ্যা বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে।

তবে বেলা বাড়ার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে তাপদাহ। সেইসাথে কমতে থাকে কেন্দ্রের সামনে লাইনে অপেক্ষমাণ ভোটারের সংখ্যা।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভোটাররা কেন্দ্রের সামনে লাইন ছেড়ে দিয়ে বাইরে গাছের নিচে কিংবা ছায়াতলে অপেক্ষা করছেন। আবার অনেকেই বুথের ভেতরের কক্ষে জড়ো হয়ে অবস্থান নিয়েছেন ভোট প্রদান করতে।

ভোটাররা জানান, তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে ভোটাররা এদিক সেদিক চলে গেছে। কেউ কেউ বাড়ি ফিরে গেছে। তবে রোদের খরতাপকে উপেক্ষা করে অধিকাংশ ভোটার ভোট প্রয়োগ করতে কেন্দ্রের আশেপাশে অথবা লাইনে অপেক্ষমাণ রয়েছে। এর মধ্যে কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

প্রসঙ্গত: সীমানাজনিত মামলা জটিলতা শেষে দীর্ঘ ১৩ বছর পর জেলার সদর উপজেলার ২নং দক্ষিণ হামছাদি, ৩নং দালাল বাজার, ৬ নং বাঙ্গাখাঁ, ১৫ নং লাহারকান্দি ও ১৯ নং তেয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ফলে ভোটারদের মাঝে এ উৎসবের আমেজ বিরাজ করতে দেখা যায়।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ৫টি ইউনিয়নের ৪৬টি কেন্দ্রে মোট এক লাখ ২২ হাজার ৯২৮ জন ভোটার। নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে ১৭ জন আনসার সদস্য, একজন পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ও তিনজন কনস্টেবল মোতায়েন করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে দুটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স, একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, দুইজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত রয়েছে।

এছাড়া নির্বাচনী এলাকায় দুই প্লাটুন বিজিবি এবং র‍্যাবসহ প্রয়োজনীয় সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন আছে।

;

পটুয়াখালীর দুই ইউনিয়ন পরিষদে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট চলছে



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পটুয়াখালী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

পটুয়াখালীর সদর উপজেলার ভুরিয়া ও কমলাপুর দুটি ইউনিয়নে উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে।

রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ৮টায় ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে একটানা চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।

সরেজমিনে দেখা যায় প্রচণ্ড তাপদাহ উপেক্ষা করেও ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে কেন্দ্রের সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। এদিকে ভোটারদের স্বাস্থ্য সমস্যা হলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে মেডিকেল টিম।

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, দুই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৭ জন, সাধারণ সদস্য ৫১ জন ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ১৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ দুই ইউনিয়নে ১৮টি ভোট কেন্দ্রে প্রায় ২৮ হাজার ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

নির্বাচনী আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবে। এছাড়াও নির্বাচন সুষ্ঠ করতে দুই ইউনিয়নে ১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ৪ প্লাটুন বিজিবি, ৫ প্লাটুন র‍্যাব নির্বাচনী মাঠে কাজ করছেন। প্রতিটি কেন্দ্রে আটজন পুলিশ সদস্য, ১৭ আনসার সদস্য সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন।

ভোটাররা জানান, এখন পর্যন্ত ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ রয়েছে। সারাদিন যদি এমন পরিবেশ বিরাজ করে তাহলে তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন।

পটুয়াখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সারমিন সুলতানা বলেন, নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হবে। আশা করছি কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে ভোট সম্পন্ন হবে।

;

১৯ ইউনিয়ন পরিষদে চলছে ভোট



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
১৯ ইউনিয়ন পরিষদে চলছে ভোট

১৯ ইউনিয়ন পরিষদে চলছে ভোট

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের আটটি জেলার ১৯টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে।

রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ। একটানা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

এর আগে, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান জানিয়েছিলেন, নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

যেসব ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ চলছে সেগুলো হলো- লক্ষ্মীপুর সদরের দক্ষিণ হামছাদী, দালাল বাজার, বাঙ্গাখা, লাহারকান্দি ও তেওয়ারীগঞ্জ; দিনাজপুরের বিরল উপজেলার আজিমপুর, ফরক্কাবাদ ও বিরল; রাজশাহীর পুঠিয়ার পুঠিয়া; পটুয়াখালী সদরের কমলাপুর ও ভুরিয়া; বরগুনার আমতলীর আমতলী; সাতক্ষীরা সদরের আলিপুর; ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার কুটি; কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামপুর, ইসলামাবাদ, জালালাবাদ, ঈদগাঁও এবং পোকখালী ইউনিয়ন পরিষদ।

নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য নির্বাচন কমিশন একটি মনিটরিং সেল গঠন করেছে। এই সেল নির্বাচন ভবন থেকে ভোটগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করছে। বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে সেলটি গঠিত হয়েছে।

২০২২ সালে সাত ধাপে সাড়ে চার হাজার ইউপির ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করে নির্বাচন কমিশন।

মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া সাপেক্ষে বাকি ইউপির ভোট হচ্ছে সময়ে সময়ে।

;

লক্ষ্মীপুরের ৫ ইউপিতে ভোটগ্রহণ শুরু,কেন্দ্রে উৎসবের আমেজ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লক্ষ্মীপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন পরিষদে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ চলছে।

রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ৮ টা শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত। সকালে এসব ইউনিয়নের কয়েকটি কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় উৎসবের আমেজ। কেন্দ্রগুলোতে পুরুষের পাশাপাশি নারী ভোটারের ব্যাপক উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়েছে।

দীর্ঘ ১৩ বছর পর জেলার সদর উপজেলার ২নং দক্ষিণ হামছাদি, ৩নং দালাল বাজার, ৬ নং বাঙ্গাখাঁ, ১৫ নং লাহারকান্দি ও ১৯ নং তেয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ফলে ভোটারদের মাঝে এ উৎসবের আমেজ বিরাজ করতে দেখা যায়।

নারী ভোটারদের উপস্থিতিও বেশি

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ৫টি ইউনিয়নের ৪৬টি কেন্দ্রে মোট এক লাখ ২২ হাজার ৯২৮ জন ভোটার। নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে ১৭ জন আনসার সদস্য, একজন পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ও তিনজন কনস্টেবল মোতায়েন করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে দুটি করে স্টাইকিং ফোর্স, একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, দুইজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত রয়েছে। 

এছাড়া নির্বাচনী এলাকায় দুই প্লাটুন বিজিবি এবং র‍্যাবসহ প্রয়োজনীয় সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন আছে। 

জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান জানান, নির্বাচনী এলাকায় বহিরাগতদের কোন স্থান দেয়া হবে না। তারা যাতে ভোটকেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার করতে না পারে, সে জন্য প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। জাল ভোট ও বহিরাগত কাউকে ভোটকেন্দ্র এলাকায় দেখলে তাদেরকে আইনের আওতায় নেয়া হবে। নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ৫টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে বলে জানান তিনি। 

;