নরসিংদীতে জামানত হারাচ্ছেন ২৭ প্রার্থী
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নরসিংদী জেলায় এবার জামানত হারাচ্ছেন ২৭ প্রার্থী। এবারের নির্বাচনে নরসিংদীর ৫ টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৩৩ জন প্রার্থী।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও তাদের দলীয় বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী ছাড়া অধিকাংশ প্রার্থীই ৫ শতাংশের কম ভোট পাওয়ায় এই জামানত হারাচ্ছেন। এছাড়া ১শতাংশেরও কম ভোট পেয়েছেন এই ২৭ প্রার্থী।
নির্বাচন কমিশনের আইন মোতাবেক প্রদানকৃত ভোটের ৫ শতাংশের কম ভোট পেলে প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়। নির্বাচন কমিশনের এই আইন অনুযায়ী ২৭ জন প্রার্থী এই জামানত হারাচ্ছেন।
নরসিংদী জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী নরসিংদীতে গড়ে ৪১ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এবারের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে সব থেকে কম ভোট পেয়েছেন রায়পুরা উপজেলার বিএনএফের প্রার্থী মো. বিটু মিয়া। তিনি রায়পুরা আসনের ২৪ টি ইউনিয়নের ১৬৩টি কেন্দ্রে মোট ভোট পেয়েছেন মাত্র ৭৫টি।
নরসিংদী-১ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম(বীর প্রতীক) ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান ছাড়া বাকি ৬ প্রার্থীই জামানত হারাচ্ছেন। এই আসনে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৪৩৬ জন ভোটারের মধ্যে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৭১৩ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। বাংলাদেশ কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী ইকবাল হোসেন ভূইয়া ১৮৯ ভোট, জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী ওমর ফারুক মিয়া ৭৫০, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মো. ছবির মিয়া ২৭৩, তৃণমূল বিএনপির মো. জলিল সরকার ১৪০, স্বতন্ত্র প্রার্থী জাকারিয়া ১৪২ ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির প্রার্থী সাজাহান মিয়া ৪৭৭ ভোট পেয়েছেন।
নরসিংদী-২ (পলাশ) আসনে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী ছাড়া বাকি দুইজন জামানত হারাচ্ছেন। এই আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৬৯ হাজার ২৫৩ জন। ৯০টি কেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন ৯৩ হাজার ২৫৫ জন। জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী এ.এন.এম রফিকুল আলম সেলিম পেয়েছেন ৪ হাজার ৯১৫ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী আফরোজা সুলতানা ৬২৪ ভোট ও আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মাসুম বিল্লাহ পেয়েছেন ৭৭৫টি ভোট।
নরসিংদী-৩ শিবপুর আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ফজলে রাব্বি খানকে পরাজিত করে নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা। এই আসনে ৮জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাদের মধ্যে ৬জন জামানত হারাচ্ছেন । মোট ২ লাখ ৬৩ হাজার ৭২৩ জন ভোটারের মধ্যে ভোট প্রয়োগ করেছেন ১ লাখ ৩ হাজার ২৪০ জন। জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী এএসএম জাহাঙ্গীর পাঠান পেয়েছেন ১৮৯ ভোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ডা. মো. আলতাফ হোসেন ১৮০, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মিরানা জাফরিন চৌধুরী ৩৪৮, ইসলামী ঐক্যজোটের মোহাম্মদ নুরুজ্জামান ৩৩১, গণফোরামের মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান ১১২ ও তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী সুশান্ত চন্দ্র বর্মণ ১৮৬ ভোট পেয়ে জামানত হারাচ্ছেন।
নরসিংদী-৪ (বেলাবো-৭৭ মনোহরদী) আসনে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম খান বীরু ছাড়া অন্য ২ প্রার্থী জামানত হারাচ্ছেন। এই আসনে ৪লাখ ২ হাজার ৬১০ জনের মধ্যে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮০৩ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. কামাল উদ্দিন ৯৫২টি ভোট ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী এমদাদুল হক (ভুলন) ১৮৪টি ভোট পাওয়ায় তারাও জামানত হারিয়েছেন।
নরসিংদী-৫ (রায়পুরা) আসনে ৭ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে। মোট ১ লাখ ৭৯ হাজার ২৮৪ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এরমধ্যে ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মুফতি আব্দুল কাদের মোল্লা ১ হাজার ৩৩৭ ভোট, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মমতাজ মহল ১৫৫, গণফ্রন্টের মো. নাজমুল হক সিকদার ১০১, বিএনএফের মো. বিটু মিয়া ৭৫, জাসদের মাহফুজুর রহমান ৬৯০, জাতীয় পার্টি মো. শহীদুল ইসলাম ৭৫৬ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সোলায়মান খন্দকার ৩৩৭ ভোট পেয়ে জামানত হারাচ্ছেন।