আশেক-কমলের হ্যাটট্রিক, ইবরাহিমের প্রথম ও শাহীনের দ্বিতীয় জয়



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম কক্সবাজার
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কক্সবাজারে ৪ টি সংসদীয় আসনে টানা তৃতীয় মেয়াদে বিজয়ী হয়ে হ্যাটট্রিক করেছেন কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক ও কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু-ঈদগাঁও) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল।

এছাড়া সিমান্ত এলাকা কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনে দ্বিতীয় বারের মতো বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আলোচিত সাবেক সংসদ সদস্য আব্দু রহমান বদির স্ত্রী শাহীন আক্তার এবং ৭৫ বছরে শেষ বয়সে এসে প্রথমবারের মতো সংসদে যাওয়ার স্বাদ পাবেন কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম।

রোববার (০৭ ডিসেম্বর) সকাল ৮ টায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় বিকেল ৪ টায়। সমুদ্র নগরী কক্সবাজারেও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে ভোটগ্রহণ। তবে ভোটে অনিয়মের অভিযোগে এনে কক্সবাজার ১, ৩ ও ৪ আসনের ৪ জন সংসদ সদস্য প্রার্থী ভোট বর্জন করে।

আশেক-কমলের হ্যাটট্রিক: মহেশখালী-কুতুবদিয়া দুই উপজেলা নিয়ে গঠিত কক্সবাজার-২ আসন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত (নৌকা) আশেক উল্লাহ রফিকের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন জাতীয়তাবাদী আন্দোলন- বিএনএম মনোনীত (নোঙর) মো. শরীফ বাদশা। এই আসনে ১১৮টি কেন্দ্রে নৌকার প্রাপ্ত ভোট ৯৭৩৯৮ এবং নোঙরের প্রাপ্ত ভোট ৩৪৪৯৬। দুই উপজেলায় মোট ভোটার ৩৪৮১২৭ ভোট। মোট ফলাফলে ৬২৯০২ ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন নৌকা প্রতীকের আশেক উল্লাহ রফিক। আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হলে কক্সবাজার-২ আসন থেকে টানা তিন মেয়াদের সংসদ সদস্য হয়ে হ্যাটট্রিক করবেন এই সংসদ সদস্য। এর আগে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে একবারও হারেননি আশেক।

তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় আশেক উল্লাহ রফিক বার্তা২৪.কম-কে বলেন,"মহেশখালীতে সরকারের বড় বড় মেগা প্রকল্পগুলো হচ্ছে। এছাড়া দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় প্রথম বিদ্যুৎ এর আলোয় আলোকিত হয়েছে। এগুলোর কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মার্কা, উন্নয়নের মার্কা নৌকাকে ভোট দিয়ে মানুষ জয়যুক্ত করেছে"।

কক্সবাজার সদর-রামু-ঈদগাঁও উপজেলা নিয়ে কক্সবাজার-৩ আসন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত (নৌকা) সাইমুম সরওয়ার কমলের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল) ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ। তবে অনিয়মের অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করে নেন তিনি। এই আসনে ১৭৬টি কেন্দ্রে নৌকার প্রাপ্ত ভোট ১৬৭০২৯ এবং ঈগলের প্রাপ্ত ভোট ২১৯৪৬। দুই উপজেলায় মোট ভোটার ৪৮৯৬১০। মোট ফলাফলে ১৪৫০৮৩ ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন নৌকা প্রতীকের সাইমুম সরওয়ার কমল। আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হলে কক্সবাজার-৩ আসন থেকে টানা তিন মেয়াদের সংসদ সদস্য হয়ে হ্যাটট্রিক করবেন এই সংসদ সদস্য। এর আগে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী থেকে হারলেও দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে টানা তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।

টানা তৃতীয় মেয়াদে বিজয়ী হওয়া জনপ্রিয় এই সংসদ সদস্য বার্তা২৪.কম-কে বলেন,"আমার এ জয় আমার এলাকার মানুষ এবং জননেত্রী শেখ হাসিনাকে উৎসর্গ করলাম। আমি এই মানুষ জন্য সারাজীবন কাজ করেছি। আমার সবকিছু মানুষের জন্য বিলিয়ে দিয়েছি। একারণে মানুষ আমাকে ভোট দিয়েছে। আমি মানুষের গোলাম হিসেবে থাকতে চাই"।

বদীর বধূ শাহীনের দ্বিতীয় জয়: সীমান্ত উপজেলা উখিয়া-টেকনাফ নিয়ে গঠিত কক্সবাজার-৪ আসন। এই আসনে একচ্ছত্র আধিপত্য সাবেক আলোচিত সংসদ সদস্য আব্দু রহমান বদির। বদি আইনি জটিলতায় আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেলেও ঠিকই তার স্ত্রী শাহীন আক্তারকে দেওয়া দ্বিতীয় বারের মতো মনোনয়ন। শাহীন আক্তার সংসদ সদস্য হলেও এই আসনে অঘোষিত সংসদ সদস্য যেন আব্দু রহমান বদি। এবারও নৌকা নিয়ে টানা দ্বিতীয় বার বিজয়ী হয়েছেন শাহীন আক্তার। এর মাধ্যমে প্রথম কোন নারী দ্বিতীয় বারের মতো সরাসরি ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। যদিও তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল) নুরুল বশর নির্বাচন বর্জন করেছেন। এছাড়া জাতীয় পার্টির (লাঙ্গল) নুরুল আমিন সিকদার ভুট্টোও নির্বাচন বর্জন করে নেন।

এই আসনে ১০৪টি কেন্দ্রে নৌকার প্রাপ্ত ভোট ১২৫৭২৫ এবং ঈগলের প্রাপ্ত ভোট ২৯৯২৯। দুই উপজেলায় মোট ভোটার ৩২৬৯৭১। মোট ফলাফলে ৯৫৭৯৬ ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন নৌকা প্রতীকের শাহীন আক্তার। আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হলে কক্সবাজার-৪ আসন থেকে টানা দ্বিতীয় মেয়াদের সংসদ সদস্য হবেন এই সংসদ সদস্য। এর একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে টানা দ্বিতীয় বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।

৭৫ বছর বয়সে প্রথম সংসদে যাওয়ার স্বাদ পাবেন ইবরাহিম: চকরিয়া-পেকুয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত কক্সবাজার-১ আসন। নিজ এলাকার সংসদ নির্বাচনে হেরে জামানত হারালেও এই আসনে বিজয়ী হয়ে ৭৫ বছর বয়সে সংসদে যাওয়ার স্বাদ পাবেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। কক্সবাজারে এর মাধ্যমে দ্বিতীয় কোন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগে মহেশখালী- কুতুবদিয়া থেকে বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত উইংস কমান্ডার জহিরুল ইসলাম এরশাদ আমলে সংসদ সদস্য ছিলেন। যদিও তার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী (ট্রাক) বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলম। তিনি অনিয়মের অভিযোগে নির্বাচন বর্জন করেন।

এই আসনে ১৫৮টি কেন্দ্রের মধ্যে তিনটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয় ১৫৫ কেন্দ্রে হাতঘড়ির প্রাপ্ত ভোট ৮১৯৫৫ এবং ট্রাকের প্রাপ্ত ভোট ৫২৮৯৬। দুই উপজেলায় মোট ভোটার ৪৮৬২৫২। মোট ফলাফলে ২৯০৫৯ ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন হাতঘড়ি প্রতীকের সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হলে কক্সবাজার-১ আসন থেকে প্রথম বারের মতো সংসদ সদস্য হবেন তিনি।

হাতঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী কল্যান পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, চকরিয়া পেকুয়ার মানুষ সন্ত্রাস এবং দখলবাজাদের হাত থেকে রেহাই পাবে। চকরিয়াকে সাজাতে আমি বদ্ধ পরিকর। চকরিয়া পেকুয়ার মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, এই অঞ্চলের মানুষ আমাকে যে সম্মান দেখিয়েছে আমি আমৃত্যু তা মনে রাখবো এবং এখানের শিশু, তরুন, যুবক, বৃদ্ধ এবং নর নারীর জন্য কাজ করে যাবো। এই অঞ্চলের উন্নয়ন করাই হবে আমার প্রধান কাজ"।

কক্সবাজার জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন শেষ করতে পেরেছি। তবে তিনটি কেন্দ্রে গণ্ডগোল হয়েছে বলে সেগুলো স্থগিত করা হয়েছে।

   

আচরণবিধি ভঙ্গ হলেই প্রার্থিতা বাতিল: ইসি হাবিব



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিন খান (অব.) বলেছেন, ‘ভোটকেন্দ্রে যদি আচরণ বিধি ভঙ্গ হয়, বাধাপ্রাপ্ত হয়, তাহলে প্রয়োজনে প্রার্থিতা বাতিল করা হবে। এটা একদম পরিষ্কার কথা।’

সোমবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে চুয়াডাঙ্গায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার বলেন, কোনো প্রার্থীর যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে লিখিত আকারে রিটার্নিং তথ্য-প্রমাণ সহকারে অফিসারকে দেন। কেউ গন্ডগোল করছে ভিডিও করে ফেলেন, কেউ বাধা দিচ্ছে ভিডিও করে ফেলেন। যদি আচরণ বিধি ভঙ্গ হয়, বাধাপ্রাপ্ত হয়, তাহলে প্রয়োজনে তাদের প্রার্থিতা বাতিল করা হবে। এটা একদম পরিষ্কার কথা।

আহসান হাবিব খান বলেন, প্রত্যেক প্রার্থী আমাদের কাছে সমান। সেই প্রার্থী যদি একটা উঁচু দরের ব্যক্তির ভাই হয়, বোন হয় অথবা সেই প্রার্থী যদি একজন জেনারেল সাহেব হন, অথবা ওই প্রার্থী যদি একজন ইন্ডাস্ট্রিয়াল হন, আমির-ফকির যেই হোক, আমাদের দৃষ্টিতে সকল প্রার্থীই সমান। আমরা ভালোকে ভালো বলব, খারাপকে খারাপ বলন। কোনো পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ আমাদের কারোর মাঝে পাবেন না।

তিনি বলেন, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে প্রার্থীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংখ্যা বেশি চেয়েছেন। আমরা বলেছি নির্বাচন সুষ্ঠু করতে যত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাগে, সব দিয়ে দেব। আমরা যে পর্যায়ে নির্বাচনটাকে নিয়ে গিয়েছি, সেখান থেকে কিন্তু আর নিচে নামব না, নামতে পারব না। দিন দিন কিন্তু আরও উপরের দিকে যেতে হবে। এটা আমাদের দেশের ভাবমূর্তি, আপনার অঞ্চলের ভাবমূর্তি, জনগণের ভাবমূর্তি, বিদেশের কাছে দেশের ভাবমূর্তি।

ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দিলেই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও মন্তব্য করেছেন- ইসি আহসান হাবিব।

তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রে প্রবেশে সাংবাদিকদের কোনো অনুমতি লাগবে না। সাংবাদিকরা ভোটকক্ষে যেতে পারবেন, ভিডিও করতে পারবেন। তবে লাইভ করতে হলে কক্ষের বাইরে বারান্দায় এসে করেন, কোনো অসুবিধা নেই। কারণ এই সাংবাদিকরাই কিন্তু আমাদের তৃতীয় চোখ-কান হিসেবে কাজ করছে।

ব্যালট পেপারের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা সিদ্ধান্তই নিয়েছি এখন থেকে যত নির্বাচন হবে, সব নির্বাচনে ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট যাবে।

প্রেস ব্রিফিংয়ের আগে বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ জেলার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান (অব)।

;

টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা নির্বাচন স্থগিত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মারা যাওয়ার কারণে রোববার (২৮ এপ্রিল) নির্বাচন কমিশনের উপসচিব আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে এই উপজেলার সব পদের নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

জানা যায়, গোপালপুর উপজেলা পরিষদের বর্তমান নারী ভাইস চেয়ারম্যান মরিয়ম আখতার মুক্তা এবারও একই পদের জন্য প্রার্থী হয়েছিলেন। সম্প্রতি তিনি ময়মনসিংহে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান। সেখানে গত শুক্রবার অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। দ্রুত তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মরিয়ম আক্তার মুক্ত মারা যান।

নির্বাচন স্থগিতের চিঠিতে বলা হয়েছে, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপে ৮ মে গোপালপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের কথা ছিল। কিন্তু নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে বৈধ প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় সব পদের নির্বাচন স্থগিত করা হলো। পুনঃতফসিল ঘোষণার মাধ্যমে চতুর্থ ধাপে ৫ জুন ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তাছাড়া, নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ইতঃপূর্বে যারা মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন তাদের নতুন করে মনোনয়ন দাখিলের প্রয়োজন হবে না এবং পূর্বে মনোনয়নপত্র দাখিলকারীগণকে প্রত্যাহারের সুযোগ দেওয়া যাবে। গোপালপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে পূর্বের মনোনয়ন বহাল থাকবে। উক্ত পদে বিদ্যমান প্রার্থীদের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গোপালপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে পাঁচ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে একজন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুই জনের মনোনয়ন পত্র বৈধ ঘোষণা করেন জেলা রিটার্নিং অফিসার। এর মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান পদে একমাত্র প্রার্থী মারুফ হাসান জামী।

গোপালপুর উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ২৮ হাজার ৭১ ভোট। এদের মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ১৪ হাজার ৬৬ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ১৪ হাজার ৪ জন।

;

রাজশাহীর পবার নতুন মেয়র হলেন সাবেক মেয়রের স্ত্রী



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
নতুন মেয়র হলেন সাবেক মেয়রের স্ত্রী

নতুন মেয়র হলেন সাবেক মেয়রের স্ত্রী

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজশাহীর পবা উপজেলার কাটাখালী পৌরসভার মেয়র পদে উপ-নির্বাচনের মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন একমাত্র নারী প্রার্থী মোসা. রাবেয়া সুলতানা মিতু। হ্যাঙ্গার প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ৬ হাজার ৩০৮ ভোট।

তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র আবু শামা নারিকেল গাছ প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৪৮৭ ভোট। আর মিজানুর রহমান চামচ প্রতীকে ২ হাজার ৯১৭ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন।

রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ৯টি কেন্দ্রে বিরতিহীনভাবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)-এর মাধ্যমে ভোটগ্রহণ চলে। ভোটগ্রহণ শেষে কেন্দ্র থেকেই ফল ঘোষণা করেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারা। ৯টি কেন্দ্র থেকে পাওয়া তথ্যমতে ভোটের এই ফল জানা গেছে।

নির্বাচনে মেয়র পদে মোট সাতজন প্রার্থী অংশ নেন। অন্য স্বতন্ত্র প্রার্থী জহুরুল ইসলাম রিপন মোবাইল ফোন প্রতীকে ১ হাজার ৩৩৯ ভোট, মোতাহার হোসেন রেল ইঞ্জিন প্রতীকে ১ হাজার ৮৮ ভোট, সিরাজুল ইসলাম জগ প্রতীকে ৩৮৪ ভোট এবং জিয়ারুল ইসলাম ক্যারাম বোর্ড প্রতীকে ১২৭ ভোট পেয়েছেন।

এই নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হওয়া মোসা. রাবেয়া সুলতানা মিতু কাটাখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্বাস আলীর স্ত্রী।

উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেন ভোটাররা। নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলাকালে কোথাও কোনো গোলযোগের খবর পাওয়া যায়নি। এই নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

নির্বাচনে ১৫ হাজার ৬৫০ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এই পৌর সভায় ভোটার ছিলেন ২৩ হাজার ৫৪১ জন। যার মধ্যে নারী ভোটার ১১ হাজার ৭৭৬ এবং পুরুষ ভোটার ১১ হাজার ৮৮৬ জন।

;

তীব্র তাপদাহে বুথে অচেতন হয়ে পড়লেন বৃদ্ধা নারী ভোটার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লক্ষ্মীপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে নির্বাচনী বুথে এক বৃদ্ধা নারী ভোটার অচেতন হয়ে পড়েছেন।

রোবাবার (২৮ এপ্রিল) ভোট চলাকালীন দুপুর ২টার দিকে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ১৪নং লাহারকান্দি ইউনিয়নের কুতুবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

এ সময় ওই নারীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনায় কেন্দ্রে উপস্থিত ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

অচেতন হয়ে পড়া নারীর নাম পরিচয় জানা যায়নি। তবে তিনি কেন্দ্রের ১০নং নারী বুথের সামনে ভোট দেওয়ার জন্য লাইনে অপেক্ষমাণ ছিলেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, দুপুরে হঠাৎ কেন্দ্রে বুথের সামনে নারী ভোটারের লাইনে অচেতন হয়ে পড়ে ওই নারী। তার বয়স প্রাশ ষাটোর্ধ্ব। অচেতন হয়ে পড়ার পর তার নাকে-মুখে ফেনা ও সারা শরীরে প্রচণ্ড ঘাম পরিলক্ষিত হয়। ভোট দিতে তার সাথে কোনো স্বজন এসেছে কিনা জানা যায়নি।

এ বিষয়ে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা জানান, অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য ওই নারীকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

এদিকে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের অনেকগুলো কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে লাইনে অপেক্ষমাণ ছিলেন পুরুষ ও নারী ভোটাররা। ভোটারের উপস্থিতিও ব্যাপক দেখা গেছে। এরমধ্যে নারী ভোটারের সংখ্যা বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে।

তবে বেলা বাড়ার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে তাপদাহ। সেইসাথে কমতে থাকে কেন্দ্রের সামনে লাইনে অপেক্ষমাণ ভোটারের সংখ্যা।

সরেজমিনে দেখা যায়, ভোটাররা কেন্দ্রের সামনে লাইন ছেড়ে দিয়ে বাইরে গাছের নিচে কিংবা ছায়াতলে অপেক্ষা করছেন। আবার অনেকেই বুথের ভেতরের কক্ষে জড়ো হয়ে অবস্থান নিয়েছেন ভোট প্রদান করতে।

ভোটাররা জানান, তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে ভোটাররা এদিক সেদিক চলে গেছে। কেউ কেউ বাড়ি ফিরে গেছে। তবে রোদের খরতাপকে উপেক্ষা করে অধিকাংশ ভোটার ভোট প্রয়োগ করতে কেন্দ্রের আশেপাশে অথবা লাইনে অপেক্ষমাণ রয়েছে। এর মধ্যে কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

প্রসঙ্গত: সীমানাজনিত মামলা জটিলতা শেষে দীর্ঘ ১৩ বছর পর জেলার সদর উপজেলার ২নং দক্ষিণ হামছাদি, ৩নং দালাল বাজার, ৬ নং বাঙ্গাখাঁ, ১৫ নং লাহারকান্দি ও ১৯ নং তেয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ফলে ভোটারদের মাঝে এ উৎসবের আমেজ বিরাজ করতে দেখা যায়।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ৫টি ইউনিয়নের ৪৬টি কেন্দ্রে মোট এক লাখ ২২ হাজার ৯২৮ জন ভোটার। নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে ১৭ জন আনসার সদস্য, একজন পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ও তিনজন কনস্টেবল মোতায়েন করা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়নে দুটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স, একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, দুইজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত রয়েছে।

এছাড়া নির্বাচনী এলাকায় দুই প্লাটুন বিজিবি এবং র‍্যাবসহ প্রয়োজনীয় সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন আছে।

;