দেউলিয়ার পথে চট্টগ্রামের মোস্তফা গ্রুপ, চেয়ারম্যান জেলে, পরিচালকরা পলাতক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
মোস্তফা গ্রুপ, চট্টগ্রাম/ছবি: সংগৃহীত

মোস্তফা গ্রুপ, চট্টগ্রাম/ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের এক সময়ের শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠান মোস্তফা গ্রুপ। ১৯৫২ সালে ভোগ্যপণ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসায়িক যাত্রা। চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার মোস্তাফিজুর রহমানের হাত ধরে গ্রুপের প্রতিষ্ঠা। সময়ের পরিবর্তনের তার হাত ধরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন খাতে ব্যবসার পরিধি বাড়িয়ে তোলেন।

যুগের পর যুগ ভোগ্যপণ্যের ব্যবসায় নেতৃত্ব দেওয়া শিল্পগ্রুপটি সম্প্রতি ঋণে জর্জরিত হয়ে ডুবতে বসেছে। বন্ধ হয়ে গেছে শিল্প গ্রুপটির বিভিন্ন ব্যবসার খাতও। এমনকি বর্তমানে ভোগ্যপণ্যের ব্যবসাও নেই গ্রুপটি। ঋণের বোঝায় টিকে থাকা ব্যবসার অন্যখাতগুলোও ধুঁকছে।

২০০৬ সালে মোস্তফা রহমানের মৃত্যুর পর পরবর্তী প্রজন্মের অদক্ষ ব্যবস্থাপনায় গ্রুপের পতনের শুরু বলে দাবি করেন প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা। গ্রুপের দায়িত্ব নেওয়া তার সাত সন্তান ব্যবসার পরিধি বাড়াতে ঋণ নেওয়া দিকে ঝুঁকে পড়েন। তারা ভোগ্যপণ্য ও ভোজ্যতেল আমদানি, শিপব্রেকিং, পেপার মিলসহ বিভিন্ন খাতে ব্যবসার জন্য ব্যাংক থেকে প্রচুর টাকা ঋণ নেন। স্বল্পমেয়াদি ঋণের এসব অর্থ বিনিয়োগ করেন দীর্ঘমেয়াদি সম্পদ গড়ার কাজে। কিন্তু সুদক্ষ ও সৎ ব্যবস্থাপনার অভাবে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপটির অবস্থা এখন নাজুক ।

অন্যদিকে দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক সুনাম থাকায় ব্যাংকগুলোও শিল্প গ্রুপটির চাহিদা মতো ঋণ প্রদান করে। সেই ঋণের বোঝায় মোস্তফা রহমানের কষ্টে গড়া শিল্প গ্রুপটি আজকে দেউলিয়ার পথে। খেলাপি ঋণের জন্য পরিচালকদের বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা করেছে ব্যাংকগুলো। এর মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকের দায়ের করা চারটি মামলায় গ্রুপের চেয়ারম্যান হেফাজেতুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি পরিচালকদের বেশির ভাগের বিরুদ্ধেও রয়েছে পরোয়ানা।

বাবার মৃত্যুর এক বছর পরেই অর্থাৎ ২০০৭ সালে লোকসানের মুখে পড়ে গ্রুপটি। এই লোকসান চলতে থাকে টানা ২০১৩ সাল পর্যন্ত। জানা গেছে, গ্রুপটির খেলাপি হওয়া ঋণগুলোর বেশির ভাগই নেয়া হয়েছে ২০০৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে। বর্তমানে মোস্তফা গ্রুপের কাছে ব্যাংকসহ ৩১টিরও বেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাওনা ২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

খোঁজ নিয়ে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এর মধ্যে মোস্তফা গ্রুপের কাছে ন্যাশনাল ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার পাওনা ৩০০ কোটি টাকা। এছাড়া সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখার ১৩৫ কোটি, মার্কেন্টাইল ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখার সাড়ে ৫৬ কোটি, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার সাড়ে ৩৫ কোটি, উত্তরা ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখার সাড়ে ৩৩ কোটি, এনসিসি ব্যাংক আন্দরকিল্লা শাখার সাড়ে ৩১ কোটি, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখার ২১ কোটি, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার সাড়ে ১৮ কোটি, আইএফআইসি ব্যাংকের সাড়ে ১৭ কোটি, ইউসিবিএল জুবিলী রোড শাখার ১৬ কোটি ও ব্যাংক আল ফালাহ আগ্রাবাদ শাখার সাড়ে ৬ কোটি টাকার ঋণ খেলাপি হয়ে পড়েছে।

উপরের প্রতিষ্ঠানগুলো ছাড়াও মোস্তফা গ্রুপের কাছে সাউথইস্ট ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখার ২০০ কোটি, প্রাইম ব্যাংকের ৮০ কোটি, পূবালী ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার ৬৫ কোটি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট আগ্রাবাদ শাখার ৪০ কোটি, এক্সিম ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখার ৪০ কোটি, রূপালী ব্যাংক লালদীঘি শাখার ২৮ কোটি, মাইডাস ফিন্যান্স লিমিটেডের ২২ কোটি টাকাসহ ইসলামী ব্যাংক খাতুনগঞ্জ শাখা, ইস্টার্ন ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, সিটি ব্যাংকের বড় অংকের পাওনা রয়েছে।

মোস্তফা গ্রুপ সবচেয়ে বেশি অংকের ঋণ নিয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখা থেকে। এই শাখার ব্যবস্থাপক এএসএম হেলাল উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক সুনামের কারণে বড় অংকের ঋণ দেওয়া হয়েছিলো মোস্তফা গ্রুপকে। গ্রুপটির কাছে পাওনা ৩০০ কোটি টাকা আদায় নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে ব্যাংকটি। ঋণ পরিশোধে কোনো আগ্রহ নেই শিল্প গ্রুপটির কর্ণধারদের।

ঋণে জর্জরিত হয়ে মোস্তফা গ্রুপের ব্যবসা দিনে দিনে সংকোচিত হয়ে আসছে। শিপব্রেকিং অ্যাসোসিয়েশনের দীর্ঘদিনের সভাপতি হেফাজতুর রহমানের নেতৃত্বাধীন মোস্তফা গ্রুপ শিপব্রেকিং খাতের ব্যবসাও বন্ধ করে দিয়েছে। ভোজ্যতেলের ব্যবসা বন্ধ করে ট্যাংক টার্মিনাল বিক্রি করে দিয়েছে গ্রুপটি। চা-বাগান, রাবারবাগান, আমবাগান, কাগজ, মত্স্য (চিংড়ি), স্টিল, পরিবহন, শিপিং, সিকিউরিটিজ ও পোশাক খাতের বহু প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে গ্রুপটির।

গ্রুপটির খেলাপি হয়ে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো মোস্তফা ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেড, মোস্তফা করপোরেশন, এমএম ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেড, এমএম করপোরেশন, মেসার্স মোস্তফা এন্টারপ্রাইজ, মোস্তফা পেপার কমপ্লেক্স, মোস্তফা শ্রিম্প প্রডাক্টস, মোস্তফা গ্যালভানাইজিং প্লান্ট।

শিল্প গ্রুপটির এমন দুর্দশা নিয়ে মোস্তফা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির উদ্দিন বলেন, আমাদের প্রধান ব্যবসা ছিল ভোগ্যপণ্য ও শিপব্রেকিং খাতে।  কিন্তু ১/১-এর সময় থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ভোগ্যপণ্য ব্যবসায় বড় ধরনের লোকসান গুনতে হয়েছে।  ওই সময়ে  ঋণের উচ্চ সুদ আমাদের খেলাপি বানিয়ে দেয়।

নিজেদের পরিস্থিতির শিকার উল্লেখ করে জহির উদ্দিন বলেন, আমারা ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টা করছি। ব্যাংক থেকে নতুন অর্থায়নের চেষ্টা করা হচ্ছে।  তবে বর্তমানে ব্যাংকগুলো আমাদের বিপদের সময় অর্থায়ন বন্ধ করে দেয়। ওয়ার্কিং ক্যাপিটালের অভাবে সব ধরনের সক্ষমতা থাকার পরও আমরা প্রতিষ্ঠানগুলো চালাতে পারছি না।

এ সময় তিনি  মোস্তফা গ্রুপের মতো দেশের পুরনো ও রুগ্ণ শিল্প গ্রুপগুলোকে সচল রাখতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহ্ববান জানান।

দেশের ব্যাবসা খাতের নেতৃত্ব দিয়ে আসা মোস্তফা গ্রুপের পতনের পিছনে বহু কারণ রয়েছে বলে মনে করছেন প্রতিষ্ঠানটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাসহ পাওনাদার ব্যাংকের বিভিন্ন কর্মকর্তারা। তারা জানান, ব্যবসায় করপোরেট সংস্কৃতির উন্নয়ন না ঘটানো, গতানুগতিক পদ্ধতিতে ব্যবসা পরিচালনা। এবং কর্মকর্তাদের প্রতিষ্ঠানের লাভের চেয়ে নিজেদের ব্যক্তিগত স্বার্থ বাস্তবায়নে বেশি ব্যস্ত ছিলেন। এসব কারণেই আজকে প্রতিষ্ঠানটির করুণ দশা

প্রসঙ্গত, মোস্তাফিজুর রহমানের মৃত্যুর পর দীর্ঘদিন ধরে গ্রুপের চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন তার বড় ছেলে হেফাজতুর রহমান। ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে আছেন জহির উদ্দিন। তাদের ভাই কফিল উদ্দিন গ্রুপটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান, শফিক উদ্দিন ভাইস চেয়ারম্যান ও কামাল উদ্দিনসহ তিনজন পরিচালক হিসেবে রয়েছেন।

   

চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ৫.৮২ শতাংশ: বিবিএস



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) আগের বছরের তুলনায় কিছুটা বেড়ে ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ হয়েছে। 

সোমবার (২০ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত অর্থবছরে ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির তুলনায় চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে মাত্র ০ দশমিক ০৪ শতাংশীয় পয়েন্ট।

অর্থবছরের প্রথম সাত মাসের গতি প্রকৃতি পর্যালোচনা করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে বলে জানানো হয়।

প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বাজার মূল্যে চলতি বছরে জিডিপির আকার দাড়িয়েছে ৫০ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকায়। গত অর্থবছের ৪৪ লাখ ৯১ হাজার কোটি টাকার তুলনায় এবার জিডিপির আকার বেড়েছে প্রায় ৪ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা।

খাত ভিত্তিক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এবার সেবা খাতে সর্বোচ্চ ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এ খাতে গত অর্থবছরে ৮ দশমিক ৩৭ শতাংশের তুলনায় এবার প্রবৃদ্ধি কমেছে। শিল্প খাতে আগের বছরের ৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ থেকে কিছুটা বেড়ে এবার প্রবৃদ্ধি দাড়িয়েছে ৫ দশমিক ৮০ শতাংশে। কৃষি খাতে আগের বছরের ৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ থেকে আরও কমে এবার উৎপাদন বেড়েছে মাত্র ৩ দশমিক ২১শতাংশ।

চলতি বছরে মাথাপিছু আয় ৩৫ ডলার বাড়ছে বলে জানিয়েছে বিবিএস।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে বছর শেষে মাথাপিছু আয় দাঁড়াবে ২,৭৮৪ মার্কিন ডলার, যা আগের অর্থবছরে ছিল ২,৭৪৯ ডলার। আর দেশীয় মুদ্রায় মাথাপিছু আয় ২ লাখ ৭৩ হাজার টাকা থেকে বেড়ে প্রথম বারের মত তিন লাখ ৪১ হাজার ৪৪ টাকায় উঠেছে।

জিডিপির তুলনায় সঞ্চয়ের অনুপাত কিছুটা বাড়লেও বিনিয়োগে চলতি বছরে বড় কোন উন্নতি দেখা যায়নি। জিডিপির আকারের তুলনায় এবার বিনিয়োগের হার ৩০ দশমিক ৯৮ শতাংশে উঠেছে, যা আগের অর্থবছরে ছিল ৩৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ।

এ সময়ে ব্যক্তি খাতের বিনিয়োগ জ্জিডিপির ২৩ দশমিক ৫১ শতাংশে নেমে এসেছে, যা গত পাঁচ বছর সর্ব নিম্ন। গত অর্থবছরে জিডিপির ২৪ দশমিক ১৮ শতাংশ বিনিয়োগ করেছিল ব্যক্তি খাত।

সরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা এবারও অব্যাহত থাকছে বলে জানিয়েছে বিবিএস। চলতি অর্থবছরে জিডিপির ৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ বিনিয়োগ করেছে সরকার, যা গত অর্থ বছরে ছিল ৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

;

বাজেট সহায়তা ও অনুদান মিলে এএফডি দেবে ৩৮৮২ কোটি টাকা



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাজেট সহায়তা হিসেবে ফ্রান্সের উন্নয়ন সংস্থা এএফডি আগামী তিন বছরে বাংলাদেশকে মোট ৩০ কোটি ইউরো বাজেট সহায়তা দেবে বলে জানিয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)।

এর বাইরে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের কারিগরি দক্ষতা বাড়াতে অনুদান হিসেবে আরও ৫০ লাখ ইউরো অনুদান দেবে সংস্থাটি।

ঋণ ও অনুদান মিলে ৩০ কোটি ৫০ লাখ ডলার বা ৩ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা ছাড় করতে সোমবার সরকারের সঙ্গে একটি ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্ট সই করেছে ফ্রান্সের সংস্থাটি।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং এএফডি বাংলাদেশ অফিসের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর Cecilia CORTESE নিজ নিজ পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।

অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত Marie MASDUPUY উপস্থিত ছিলেন বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ইআরডি।

ইআরডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাজেট সহায়তা সুনির্দিষ্ট কিছু শর্তের অনুকূলে ছাড় হলেও এই খাতের অর্থ সরাসরি সরকারের ট্রেজারিতে জমা হয়। প্রকল্পের বাইরেও যে কোনো খাতে এই অর্থ ব্যয় করার সুযোগ থাকে।

রাজস্ব আহরণে ব্যর্থতায় তীব্র আর্থিক সংকট ও বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভে ঘাটতির মধ্যে এই ধরনের সহায়তা সংকট মোকাবেলায় বড় ধরনের সহায়ক ভূমিকা রাখে বলে তারা জানিয়েছেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তিন বছরের বাজেট সহায়তার প্রথম কিস্তির ১০ কোটি ইউরো আগামী জুনের মধ্যে দেওয়া হবে। এ হিসাবে চলতি অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়নে সরকারের তহবিলে যোগ হচ্ছে প্রায় ১ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা।

ইআরডির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জলবায়ু সংক্রান্ত জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা, ন্যাশনাল ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশনস (NDC) এবং মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক অভিঘাতের বিরুদ্ধে কার্যকর ও শক্তিশালী ভিত্তি প্রস্তুত করার লক্ষে তিন বছরের প্রকল্পটি নেয়া হচ্ছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে জলবায়ু-সহিষ্ণু ও স্বল্প কার্বন নিঃসরণভিত্তিক অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত করা হবে বলেও জানিয়েছে ইআরডি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, ফরাসি সরকারের দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সহায়তা বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সংস্থা এএফডি ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করে। সংস্থাটি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবহন ও যোগাযোগ এবং স্বাস্থ্য ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ খাতে সহায়তা দিচ্ছে।

বাংলাদেশে চলমান ১১টি প্রকল্পে মোট ১১৪ কোটি ১৯ লাখ ইউরো সহায়তা দিচ্ছে এএফডি। এর মধ্যে ১.১২ মিলিয়ন ইউরো ঋণ আর ১ কোটি ৯৯ লাখ ইউরো অনুদান রয়েছে।

;

বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকতে পণ্য বহুমুখীকরণ-সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ। এলডিসি গ্রাজুয়েশনের ফলে একদিকে যেমন আন্তর্জাতিক বাজারে শুল্কমুক্ত বাণিজ্যের অধিকার হারাবে বাংলাদেশ, তেমনি প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গেও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে দেশকে। এ অবস্থায় এলডিসি গ্রাজুয়েশন পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এখন থেকেই নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন ব্যবসায়ীরা।

পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণ করতে ব্যবসাবান্ধব নীতিমালা প্রণয়ন, দক্ষিণ এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি, আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি, অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করা অত্যন্ত জরুরি বলেও মনে করছেন তারা।

এসব চুক্তির সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে নিজেদের সক্ষমতা ও দক্ষতা বাড়ানোর প্রতিও গুরুত্বারোপ করেছেন। এ লক্ষ্যে সরকার ও বেসরকারিখাতের মধ্যে সমন্বয় আরো জোরদার করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন ব্যবসায়ীরা।

সোমবার (২০ মে) সকালে এফবিসিসিআই-এর ‘আরটিএ, পিটিএ, এফটিএ ও ডব্লিউটিও’ বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম সভায় ব্যবসায়ীরা এসব কথা বলেন বলে এফবিসিসিআই-এর হেড অব পিআর অ্যান্ড কমিউনিকেশনস তানজিদ বসুনিয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। উদ্যোক্তাদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও বিভিন্ন ধরনের সহায়তা প্রদান করছে। তবে এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পর প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে টিকে থাকতে নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি।

লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, চামড়া, হস্তশিল্প, চা, পাট ইত্যাদি খাতে আরো বৈচিত্র্যকরণ আনতে হবে বলে মন্তব্য করেন মাহবুবুল আলম। একইসঙ্গে ব্যবসায়ীদের হয়রানি কমাতে কাস্টমস, বন্দর ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর অটোমেশন জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এফবিসিসিআই-এর সিনিয়র সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ প্রস্তুতি নিয়েই বাণিজ্য চুক্তিগুলো করছে। আমাদেরও এসব চুক্তির আগে প্রস্তুতি নিতে হবে। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে টিকে থাকার মতো সক্ষমতা অর্জন না করলে স্থানীয় বাজার হারানোরও আশঙ্কা থেকে যাবে।

এফবিসিসিআই-এর সহসভাপতি ড. যশোদা জীবন দেবনাথ বলেন, প্রযুক্তিতে আমরা অনেক এগিয়েছি। আইটি ও আইটি এনাবেল সার্ভিসে বাংলাদেশের বড় সম্ভাবনা থাকলেও উচ্চ ডিউটি দিয়ে সেসব পণ্য দেশে আনতে হয়। অনেক দেশ এসব পণ্য আমদানিতে ডিউটি না রাখলেও আমাদের এখানে উচ্চ মূল্য দিতে হচ্ছে।

এসময় পণ্য আমদানি সহজীকরণে কাস্টমসকে সহযোগিতামূলক আচরণ করার আহ্বানও জানান তিনি।

‘কাস্টমস আইন-২০২৩’-এ জটিলতা ও আমদানির ক্ষেত্রে বিভিন্ন জায়গায় বাধা রয়েছে উল্লেখ করে বাণিজ্য সংগঠন ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে জনমত গঠনের মাধ্যমে এ আইন সংশোধনের তাগিদ দেন কমিটির ডিরেক্টর ইন-চার্জ এ এম মাহবুব চৌধুরী।

বন্দরে দ্রুত পণ্য খালাস প্রক্রিয়া সহজীকরণ করার তাগিদ দেন তিনি। এছাড়া রফতানি পণ্য বহুমুখীকরণের গুরুত্বও তুলে ধরেন এ এম মাহবুব চৌধুরী।

সভাপতির বক্তব্যে কমিটির চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআই-এর সাবেক পরিচালক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, বৈশ্বিক পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে টিকে থাকতে হবে বাংলাদেশকে। আমরা কোনো দেশের সঙ্গে এফটিএ না করতে পারায় পার্শ্ববর্তী দেশগুলো ব্যবসার সুযোগ নিচ্ছে।

তিনি এসময় সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কিত আইনগুলো তৈরির ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করার আহ্বান জানান।

বিজিএমইএ-র সদ্য সাবেক সভাপতি ও এফবিসিসিআই-এর পরিচালক ফারুক হাসান বলেন, এলডিসি গ্রাজুয়েশনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলাসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে সরকার কাজ করছে।

এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পর ট্রানজিশন পিরিয়ড ৩ বছর থেকে বাড়িয়ে ৬ বছর করার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোচনা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

সভায় আরো বক্তব্য রাখেন- এফবিসিসিআই-এর পরিচালক হাফেজ হাজী হারুন অর রশীদ, আলহাজ্ব আজিজুল হক, নিয়াজ আলী চিশতী, মহাসচিব মো. আলমগীর, কমিটির কো-চেয়ারম্যানবৃন্দ, সদস্যবৃন্দ ও সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ।

;

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ১০ নতুন উপশাখার উদ্বোধন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ১০ নতুন উপশাখার উদ্বোধন

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ১০ নতুন উপশাখার উদ্বোধন

  • Font increase
  • Font Decrease

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক আরও ১০টি নতুন উপশাখার উদ্বোধন করা হয়েছে।

সোমবার (২০ মে) প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উপশাখাগুলোর উদ্বোধন করেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী জাফর আলম।

ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ ফোরকানুল্লাহ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হাবীবুর রহমান এবং ব্রাঞ্চেস কন্ট্রোল বিভাগের প্রধান জয়নাল আবেদীন।

ব্যাংকের ইন্টারনাল কন্ট্রোল এন্ড কমপ্লায়েন্স ডিভিশনের প্রধান এ এ এম হাবিবুর রহমানসহ বিভিন্ন বিভাগীয় প্রধান ও ঊর্ধ্বতন নির্বাহীগণ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ীসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, ব্যাংকের বিভিন্ন অঞ্চলের আঞ্চলিক প্রধানগণ, সংশ্লিষ্ট শাখাসমূহের ব্যবস্থাপক ও উপশাখার ইনচার্জবৃন্দ এতে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।

নতুন উপশাখাগুলো হচ্ছে- খাগড়াছড়ির গুইমারা, চট্টগ্রামের বারৈয়ারহাটের আবু তোরাব, বাকলিয়ার খাজা রোড, লোহাগাড়ার কানুরাম বাজার, নানুপুরের ইসলামিয়া বাজার, ফেনীর ফুলগাজীর ছাগলনাইয়া, মানিকগঞ্জ, কুমিল্লার মুন্সিরহাটের হাড়িসর্দার বাজার, হোমনার ঘাড়মোড়া বাজার এবং ঢাকার ইব্রাহিমপুর।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাফর আলম বলেন, ইসলামী ব্যাংকিং সুদমুক্ত ব্যাংকিং যা সকলের জন্য কল্যাণ বয়ে আনে। দেশের এক তৃতীয়াংশ রেমিট্যান্স
আসে ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে। আর আমাদের ব্যাংক এই মুহূর্তে রেমিট্যান্স আহরণে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের

গ্রাহক প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি যাতে অচিরেই অর্ধকোটি মানুষের ব্যাংকে পরিণত হয় আমরা সেই লক্ষে কাজ করছি।

;