শোকজের পর আরও বেশি দাম নিচ্ছে এলপিজির



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আগে নির্ধারিত দরের চেয়ে ৫০-৭০ টাকা বেশি আদায় করা হতো। এখন স্থানভেদে ১০০ থেকে ২০০ টাকা বেশি দামে এলপি গ্যাস বিক্রির খবর পাওয়া যাচ্ছে।

চলতি মাসে ১২ কেজির সিলিন্ডারের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১২৮৪ টাকা নির্ধারিত থাকলেও ওমেরা গ্রুপের রংপুরের ডিলার ১৩৩০ টাকা এবং বেক্সিমকো গ্রুপের ডিলাররা ১৩৫০ টাকা দাম আদায় করছেন। বিক্রেতারা ৫০ টাকা যোগ করে ১৪০০ টাকায় বিক্রি করছেন। আবার কোন কোন এলাকায় ১৫০০ টাকা দরে বিক্রির খবর পাওয়া যাচ্ছে।

খুচরা বিক্রেতা কিংবা ডিলার নয় খোদ আমদানিকারকরাই মানছে না বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) ঘোষিত নির্ধারিত দর। ইতিপূর্বে বেশি দাম রাখায় বসুন্ধরা এলপিজি, ওমেরা এলপিজি, টোটাল এলপিজি ও ইউনাইটেড গ্রুপকে শোকজ করলেও পাত্তাই দিতে চাইছে না। একাধিক দফায় নোটিশ দেওয়ার পর শুধুমাত্র ওমেরা গ্রুপ দায়সারা জবাব দিয়েছে। আর কয়েক মাস পরে এসে জবাব দেওয়ার জন্য সময়ে চেয়েছে টোটাল। টোটাল ও ইউনাইটেডকে শোকজ করা হয় ১১ জুলাই, আর ওমেরা ও বসুন্ধরাকে মে মাসের ২২ তারিখে শোকজ করে বিইআরসি।

ওমেরা তার জবাবে বলেছে, তারা পরিবহন খরচ ও পরিবেশকের কমিশন চালানে উল্লেখ করেছে। পরে এই টাকা সমন্বয় করে দেবেন। অন্যরা এখনও পাত্তাই দিতে চাইছে না বিইআরসির চিঠিকে। ওমেরাসহ অন্যরাও আগের তুলনায় আরও বেশি দামে বিক্রি অব্যাহত রেখেছেন।

জুলাই মাসে ১২ কেজির সিলিন্ডার ডিলার পর্যায়ে ৯২৪ টাকা দরে বিক্রি করার নির্দেশনা থাকলেও ইউনাইটেড এলপিজি ১০৭৪ টাকা, টোটাল গ্যাস ১০১৯ টাকা দরে বিক্রির তথ্য প্রমাণ পায় বিইআরসি। অন্যদিকে বসুন্ধরাকে ৫০ টাকা বেশি দামে এবং ওমেরাকে ৭৫ টাকা বেশি দরে বিক্রির দায়ে শোকজ করা হয়।

ইউনাইটেড এলপিজি লিমিটেডের এজিএম রাইসা বার্তা২৪.কম-কে বলেছিলেন, বিইআরসি দর নির্ধারণ করেছে ৩ তারিখে, সিস্টেম আপডেটের বিষয় রয়েছে। আমরা কি ততদিন পর্যন্ত বিক্রি বন্ধ রাখবো?

বিইআরসির নির্দেশনা অনুযায়ী ৩ তারিখ সন্ধ্যা ৬টা থেকে নতুন দর কার্যকর হওয়ার কথা। চালানপত্রটি ৫ তারিখের, যুক্তির খাতিরে যদি আগের মাসের দরও ধরে নিই তাতেও গড়মিল হয়। আগের মাসে (জুন) ডিস্ট্রিবিউটরের কাছে বিক্রি করার কথা ১০০২ টাকায়। আর সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ছিল ১০৭৪ টাকা। তাহলে কি ডিস্ট্রিবিউটর ও খুচরা বিক্রেতার কমিশন কখনই দিচ্ছে না ইউনাইটেড এলপিজি। এমন প্রশ্ন করা হলে কোন জবাব দেননি।

বিইআরসির চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, আমি দেশের বাইরে ছিলাম, এই মুহুর্তে আপডেট জানা নেই। শুনেছি কিছু কোম্পানির শোকজের জবাব দিয়েছে। তাদের জবাবগুলো যাচাই করে দেখা হবে, আর যারা দেয়নি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কি ধরণের ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, তারা আমাদের লাইসেন্সী, তাদের লাইসেন্স বাতিল করার ক্ষমতাও আমাদের হাতে রয়েছে।

তিনি বলেন, কেউই আইনে ঊর্ধ্বে নয়। সবাইকে নির্ধারিত দরে এলপি গ্যাস বিক্রি করতে হবে। আমদানিকারকরা ডলারের দর নিয়ে আপত্তি করেছিল, আমরা সেখানে বাড়িয়ে দিয়েছি। আরও কিছু জায়গায় সুবিধা দেওয়া হয়েছে। তারপরও দাম মেনে না চলেছে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।

তিনি বলেন, আমরা অভিযান জোরদার করেছি। চলতি মাসের ৪ তারিখে নারায়ণগঞ্জে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে অভিযান পরিচালনা করেছি। আবার ৯ সেপ্টেম্বর গাজীপুরে অভিযান করেছি, সেখানে একজন পরিবেশকের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। দু’জন খুচরা বিক্রেতারও জরিমানা করা হয়েছে। এখন গেলাম দেখলাম এমন হবে না। গড়মিল পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক শাস্তি দেওয়া হবে।

প্রশ্ন ছিল বড় অপরাধী হচ্ছে আমদানিকারকরা, তারাই তো বেশি দাম নিচ্ছে। পরিবেশক ও খুচরা বিক্রেতার কি করার আছে। জবাবে বিইআরসি চেয়ারম্যান বলেন, আমরা বাজারে টিম পাঠিয়ে একটি সার্ভে করেছি। কারা এই অপরাধ করছে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।

২০২১ সালের ১২ এপ্রিল প্রথম এলপি গ্যাসের দর ঘোষণা করে বিইআরসি। তখন এলপিজি আমদানিকারক, ডিলার ও খুচরা বিক্রেতার জন্য ১২ কেজির সিলিন্ডারে মোট ৩৫৯ দশমিক ৪০ টাকা কমিশন নির্ধারণ করা হয়েছিল। দর ঘোষণার দিনেই কমিশনের পরিমাণ নিয়ে আপত্তি তোলেন লোয়াব (এলপিজি আমদানিকারকদের সংগঠন)। তারা প্রতিমাসের দর ঘোষণাও বর্জন করে বিভিন্নভাবে বিইআরসির ওপর চাপ তৈরি করে। এমনকি এলপিজি আমদানি বন্ধ করে দেওয়ারও হুমকি দেন লোয়াবের সভাপতি আজম জে চৌধুরী। বিইআরসি অনেকটা বাধ্য হয়ে ৭ মাসের মাথায় ১০ অক্টোবর কমিশন ৩৫৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৪১ টাকা করেন। তারপরও কোম্পানিগুলো বেশি দাম আদায় করে যাচ্ছে।

প্রথম দর ঘোষণার পর কার্যকর নিয়ে বিইআরসির বক্তব্য ছিল, নতুন পদ্ধতি মানিয়ে নিতে একটু সময় লাগছে। সময়ের সঙ্গে সব ঠিক হয়ে যাবে। আড়াই বছর পেরিয়ে গেছে, এখন দিন দিন উন্নতি না হয়ে আরও পতনের ধারা দেখা যাচ্ছে।

বিইআরসি শুধু খুচরা বিক্রেতার ওপর খড়গহস্ত ছিলেন। কমিশনে নতুন চেয়ারম্যান যোগদানের পর এবারেই প্রথম এলপিজি কোম্পানির ওপর নজর দিয়েছে। তারপরও কমছেনা দৌরাত্ম। অনেকটাই অসহায় দেখাচ্ছে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটিকে। শুধু আমদানিকারক নয়, সরকারি অনেক কোম্পানিও একে পাত্তা দিতে চাইছে না। কেউ কেউ একে কাগুজে বাঘ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

   

৫২ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর অপরিবর্তিত, কমেছে লেনদেন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
৫২ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর অপরিবর্তিত, কমেছে লেনদেন

৫২ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর অপরিবর্তিত, কমেছে লেনদেন

  • Font increase
  • Font Decrease

সূচকের মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় সপ্তাহের তৃতীয় কার্য দিবস পার করেছে দেশের শেয়ার বাজার। লেনদেনে অংশ নেয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে এ দিন ৫২ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত ছিল। শেয়ার দর বৃদ্ধির তুলনায় দরপতনের পাল্লাই ছিল ভারি। পাশাপাশি আগের কার্যদিবসের তুলনায় কমেছে লেনদেন।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক 'ডিএসই এক্স' ৩ দশমিক ১৬ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। লেনদেন শেষে সূচকটি অবস্থান নিয়েছে ৬ হাজার ২৪৭ পয়েন্টে। প্রধান সূচকের সঙ্গে শরীয়াহভিত্তিক কোম্পানিগুলোর সূচক 'ডিএসই এস' আজ ১ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট বেড়েছে। তবে অপর সূচক 'ডিএস ৩০' দশমিক ৬৫ পয়েন্ট হারিয়েছে।

সূচকের মিশ্র প্রতিক্রিয়ার দিনে ডিএসইতে শেয়ার লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। আজ এক্সচেঞ্জটিতে ৩২৪ প্রতিষ্ঠানের ১৩ কোটি ৫০ লাখ ৩১ হাজার ১৬৯টি শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছে। এসব শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৪৬০ কোটি টাকা, যা আগের দিনের তুলনায় ৩১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা কম। গতকাল (সোমবার) এক্সচেঞ্জটিমে ৪৯১ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।

মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনে অংশ নেয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৭০টির শেয়ার দরই অপরিবর্তিত ছিল। দর কমেছে ৯৪টির। বিপরীতে মাত্র ৬০ কোম্পানির শেয়ার দর বৃদ্ধি পেয়েছে।

আজ ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। একদিনে কোম্পানিটির ২৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা মূল্যের ১ কোটি ২৩ লাখ ৬৭ হাজার ৩১৭টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

সপ্তাহের তৃতীয় কার্য দিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে বিনিয়োগকারীদের সবচেয়ে বেশি আগ্রহ ছিল ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের প্রতি। ফলে ফান্ডটি আজ ডিএসইতে দর বৃদ্ধির শীর্ষে অবস্থান করছে। একদিনে মিউচুয়াল ফান্ডটির ইউনিটদর ১ টাকা ১০ পয়সা বা ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে সর্বোচ্চ দর হারানো জিকিউ বলপেন ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার দর কমেছে ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ।

এদিকে দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক 'সিএএসপিআই' আজ ১১ দশমিক ৪০ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। এক্সচেঞ্জটিতে ১৮০ কোম্পানির ১০ কোটি টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর কমেছে ৩৯টির, বেড়েছে ৪৯টির। বিপরীতে ৯২ কোম্পানির শেয়ার দর সোমবার অপরিবর্তিত ছিল।

;

আবারও শীর্ষ ভ্যাটদাতার তালিকায় নগদ



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

যাত্রা শুরুর তৃতীয় বছরেই দেশের শীর্ষ করদাতার তালিকায় চলে এসেছিল মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান নগদ। দেশের অন্যতম শীর্ষ এই প্রতিষ্ঠানটি তার অগ্রযাত্রা ধরে রেখে আবারো শীর্ষ ভ্যাটদাতাদের তালিকায় এসেছে।

সেবা খাতে ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের অন্যতম সর্বোচ্চ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) পরিশোধকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে নগদ-এর নাম ঘোষণা করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

প্রতিবছরের মতো এবারও ১০ ডিসেম্বর রোববার ভ্যাট দিবস পালন করা হবে। আর এই দিন এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নগদসহ অন্যান্য সেরাদের হাতে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মাননীয় অর্থমন্ত্রী জনাব আ হ ম মোস্তফা কামাল, এফসিএ, এমপি পুরস্কার হস্তান্তর করবেন।

বিদায়ী অর্থবছরে এনবিআর উৎপাদন খাত, ব্যবসা খাত এবং সেবা খাতে তিনটি করে মোট নয়টি প্রতিষ্ঠানকে দেশের সর্বোচ্চ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) পরিশোধকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুরস্কৃত করবে।

একের পর এক নতুন উদ্ভাবন এবং সেবা বিতরণের ক্ষেত্রে অভিনবত্ব নিয়ে শুরু করায় দ্রুতই নগদ-এর সেবা গ্রাহকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এতে নগদ-এর মাধ্যমে লেনদেন যেমন বেড়েছে, একইভাবে সরকারের হয়ে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) সংগ্রহেও নগদ সেরার অবস্থানে চলে এসেছে।

২০১৯ সালে স্বাধীনতা দিবসের দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে উদ্বোধন হওয়া নগদ বর্তমানে সাড়ে আট কোটি গ্রাহককে সেবা দিচ্ছে। সুবিধাবঞ্চিত কোটি মানুষের কাছে সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা, প্রাথমিকের উপবৃত্তি এবং করোনার সময় প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার বিতরণের মাধ্যমে সরকারি অর্থ বিতরণ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করেছে নগদ।

শুরুতেই গ্রাহক নিবন্ধনের জন্য দেশে প্রথম ইলেকট্রনিক কেওয়াইসির উদ্ভাবন করে দেশে আর্থিক খাতে ডিজিটালাইজেশন নিশ্চিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এরপর নগদ উদ্ভাবন করে মোবাইল অপারেটরদের কাছে থাকা গ্রাহক তথ্যের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খোলার পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে মোবাইল ফোনে মাত্র পাঁচটি বাটন ডায়াল করেই অ্যাকাউন্ট খোলার পদ্ধতি চালু হয়, যা ডিজিটাল সেবার দুনিয়াকে নাড়িয়ে দিয়েছে।

নগদ-এর গ্রাহক নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজতর হওয়ায় দেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি যেমন বেড়েছে, তেমনি ক্যাশলেস লেনদেনের বিবেচনায় অনেক অগ্রগতি হয়েছে বলে মনে করেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আমিনুল হক। তিনি বলেন, ‘যত বেশি গ্রাহক ডিজিটাল সেবা ব্যবহার করবেন, তাদের জীবন ততটাই সহজ হবে। আর সেটি হলে ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল যেমন ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে, সরকারের রাজস্ব আয়েও ইতিবাচক ধারা চলে আসবে।’

আমিনুল হক আরও বলেন, ‘সর্বোচ্চ ভ্যাট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুরস্কার পাওয়ার জন্য আমরা কাজ করিনি, নগদ কাজ করেছে গ্রাহক সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য। সেটি করতে পেরেই আমরা খুশি। এই পথে এমন পুরস্কার আমাদের আরও অনুপ্রাণিত করবে।’

ক্যাশলেস লেনদেনকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যেতে দেশের প্রথম ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠার জন্য এখন কাজ করছে নগদ।

;

দিনের শুরুতে তিন মিউচুয়াল ফান্ডে আগ্রহ বিনিয়োগকারীদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সূচকের মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস শুরু করেছে দেশের শেয়ারবাজার। প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূল্য সূচকগুলোর মিশ্র প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। অপরিবর্তিতত রয়েছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর। দিনের শুরুতেই তিন মিউচুয়াল ফান্ডের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ সবচেয়ে বেশি রয়েছে। ডিএসই সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা পর্যন্ত ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক 'ডিএসই এক্স' দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। আর শরীয়াহভিত্তিক কোম্পানিগুলোর সূচক 'ডিএসই এস' এখন পর্যন্ত দশমিক ৮৪ পয়েন্ট বেড়েছে। তবে বাছাই করা কোম্পানিগুলোর 'ডিএস ৩০' সূচক একই সময়ে দশমিক ৮৫ পয়েন্ট হারিয়েছে।

সূচকের মিশ্র প্রবণতার সঙ্গে শেয়ারবাজারে লেনদেনের গতি কিছুটা কমেছে। প্রথম ঘণ্টায় ডিএসইতে ২৫৪ প্রতিষ্ঠানের ৪ কোটি ২০ লাখ ৭৪ হাজার ৯২৭টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে। এসব শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ১২৪ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। গতকাল (সোমবার) এক ঘণ্টায় এক্সচেঞ্জটিতে ১৪৬ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।

বেলা ১১টা পর্যন্ত ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১০৮টির শেয়ারদরই অপরিবর্তিত ছিল। দর কমেছে ৯২টির। বিপরীতে ৫৪ কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধি পেয়েছে।

সোমবার লেনদেনের শুরুতে সবচেয়ে বেশি মূল্যের শেয়ার হাতবদল হয়েছে সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের। এক ঘণ্টায় কোম্পানিটির ১৩ কোটি ৫১লাখ টাকা মূল্যের ৬৫ লাখ ৬৮ হাজার ৩৫১টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে। এখন পর্যন্ত শেয়ারদর বৃদ্ধিতে এগিয়ে আছে তিন মিউচুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের ইউনিটদর বেলা ১১টা পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারদর ১ টাকা ১০ পয়সা বা ১০ শতাংশ বেড়েছে। অর্থাৎ ফান্ডটির ইউনিট এক দিনের নির্ধারিত সার্কিট ব্রেকার বা দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে।

এছাড়াও প্রাইম ফার্স্ট ফাইন্যান্স মিউচুয়াল ফান্ড ও সিএপিএম আইবিবিএল মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটদরও প্রায় সার্কিট ব্রেকার স্পর্শ করেছে।

;

তিতাস কেনো আবাসিকের গ্যাস বিল বাড়াতে চায়!



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ঢাকা
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

লালমাটিয়ার বাসিন্দা ডা. মনিরুল ইসলাম গ্যাসের প্রিপেইড মিটার ব্যবহার করেন। মাসে ৫০০ টাকার গ্যাসেই শেষ করতে পারেন না। মিটার ভাড়াসহ কোন কোন মাসে ৪০০ টাকাতেই চলে যায়।

ডা.মনিরুল ইসলামের আরেকটি বাসা রয়েছে সাভারের অরুনা পল্লীতে। সেখানে কেউ না থাকলেও প্রতিমাসে ১০৮০ টাকা করে বিল দিয়ে যেতে হচ্ছে তাকে। অথচ তার দু’টি সংযোগেই একই বিতরণ প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি অধীনে। মাত্র কয়েক মাইলের ব্যবধানে তার এই দুই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন বার্তা২৪.কমকে। আবার তার বাসার উল্টোদিকে ধানমন্ডিতেই মিটারবিহীন গ্রাহকদের বাড়তি বিল দিতে হচ্ছে গ্রাহককে।

তিনি বলেন, আমার লালমাটিয়ার বাসায় ৫ জনের রান্না হয়। কখনই ৫০০ টাকার বেশি রিচার্জ করতে হয়নি। আর যেখানে আমরা থাকি না তারজন্য টানা ৩ বছর ধরে বিল দিয়ে যাচ্ছি। তাও আবার দ্বিগুণের চেয়ে বেশি।

মনিরুল ইসলাম আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, পত্রিকায় নিউজ দেখি গ্রাহকের পকেট কেঁটে প্রফিট বোনাস নেওয়া হচ্ছে। পত্রিকায় দেখেছিলাম কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গতবছর প্রত্যেকে ১৮ লাখ টাকা করে বোনাস পেয়েছে। আমরা বিল দিয়ে মরি আর তারা টাকার পাহাড় গড়ছে।

প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারী রূপনগর আবাসিক এলাকার (রোড ১৯) বাসিন্দা আবেদ আলী বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা ৪ জন। সাড়ে ৩’শ থেকে সাড়ে ৪’শ টাকার রিচার্জে মাস পার হয়ে যায়। গ্যাসের প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা কমবেশি এমনই। যাদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা বেশি তাদের সর্বোচ্চ ৬’শ টাকা খরচ হচ্ছে।

মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রে নির্ধারিত বিল আদায় করা হয়। যা বর্তমানে দুই চুলা ৬০ ঘনমিটার ও এক চুলা ৫৫ ঘনমিটারের সমান। গ্রাহক ব্যবহার করুক, না করুক অথবা বেশি ব্যবহার করলেও । গ্যাসের বিতরণ কোম্পানিগুলো দশকের পর দশক ধরে বলে আসছে মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকরা গ্যাস বেশি পুড়ছে। এ কথা বলে দফায় দফায় দাম বাড়িয়ে নেওয়া হয়। তাদের বক্তব্য ছিল মিটার স্থাপন করলে তাদের রাজস্ব বেড়ে যাবে। কিন্তু লালমাটিয়া (২০১৬ সালে) এলাকায় প্রথম প্রিপেইড মিটার বসানো হলে রেজাল্ট এলো উল্টো। দেখা গেলো প্রি-পেইড মিটার ব্যবহারকারিদের বিল আসছে দেড়’শ থেকে আড়াই’শ টাকা (তখন মিটারবিহীন গ্রাহকদের বিল ছিল দুই চুলা ৪৫০ টাকা )।

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ২০১৬ সালে জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে বলেছিলেন, প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের পাইলট প্রকল্পের রেজাল্ট ভালো। দুই চুলায় মাসে ৩৩ ঘন মিটার গ্যাস সাশ্রয় হচ্ছে। তখন দুই চুলায় ৭৭.৪১ ঘনমিটারের বিল নির্ধারিত ছিল। অর্থাৎ ৪৫ ঘনমিটার গ্যাস পুড়ছে গ্রাহকরা।

পাইলট প্রকল্পের আগে গ্যাসের প্রিপেইড মিটার স্থাপনের তৎপরতা ছিল লক্ষ্যণীয়। কিন্তু এখন যতটা পারা যায় বিলম্বিত করার কৌশলী অবস্থান নিয়েছে বিতরণ কোম্পানিগুলো। ৩৮ লাখ আবাসিক গ্রাহকের মধ্যে ৮ বছরে মাত্র ৪ লাখের মতো মিটার স্থাপন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর ধীরে চলো নীতির কারণে গ্রাহক যাতে নিজে কিনে বসাতে পারে সে জন্য চাপ দেয় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।

বিইআরসি-২০১৮ সালে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির আদেশে প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের দ্রুত করার আদেশ দেন। গ্রাহক যাতে নিজেরা মার্কেট থেকে মিটার কিনে স্থাপন করতে পারে সেই সুবিধা উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর ২০২১ সালে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। সেই নীতিমালায় বলা হয়েছে গ্রাহক নিজের পছন্দমতো দোকান থেকে মিটার ক্রয় করে বিতরণ কোম্পানিতে জমা দেবেন। বিতরণ কোম্পানিগুলো পরীক্ষা করে গ্রাহকের আঙ্গিনায় স্থাপন করবে। তবে নানা জটিলতা দেখিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। বাজারের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি দামে মিটার স্থাপন করছে কোম্পানিগুলো। তাও আবার ঢিমেতালে। কোম্পানিগুলো একে লুটপাটের নতুন খাত হিসেবে ভাবতে শুরু করেছে।

বিইআরসি গত বছরের মার্চে সর্বশেষ গ্যাসের দাম বৃদ্ধির উপর গণশুনানি গ্রহণ করে। তখন বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রিপেইড গ্রাহকের ব্যবহারের পরিসংখ্যানের উপর ভিত্তি করে এক চুলা ৭৩.৪১ ঘনমিটার ও দুই চুলা ৭৭.৪১ ঘনমিটার থেকে কমিয়ে যথাক্রমে ৫৫ ও ৬০ ঘনমিটার করা হয়।

তিতাস গ্যাস বিদ্যমান এক চুলা ৫৫ ঘনমিটার (৯৯০ টাকা) বাড়িয়ে ৭৬.৬৫ ঘনমিটার (১৩৭৯.৭০ টাকা), দুই চুলা ৬০ ঘনমিটার (১০৮০ টাকা) থেকে বাড়িয়ে ৮৮.৪৪ ঘনমিটার (১৫৯১.৯২) করার আবেদন করেছে বিইআরসির কাছে। আবেদনটি চলতি বছরে মে মাসে জমা দিলেও ব্যাপক বিতর্কের পর বিষয়টি অনেকটা ধামাচাপা পড়ে যায়। তবে সম্প্রতি বেশ গোপনে এ বিষয়ে আবার তৎপরতার শুরুর কথা জানা গেছে।

তিতাসের গ্যাস বিল বাড়ানোর প্রস্তাব শিগগিরিই কমিশনের সভায় তোলা হবে বলে জানিয়েছেন বিইআরসি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন।

তিতাস দাবি করেছেন, নির্ধারিত পরিমাণের (৫৫ ও ৬০ ঘনমিটার) চেয়ে মিটারবিহীন গ্রাহকগন বেশি গ্যাস ব্যবহার করে। ফলে সিস্টেম লস বৃদ্ধি পেয়েছে। এক চুলা ৭৬.৬৫ ঘনমিটার ও দুই চুলা ৮৮.৪৪ ঘনমিটার করার আবেদন করা হয়েছে। বিইআরসি আগে যে আদেশ দিয়েছে তা বাস্তব সম্মত ছিল না।

বিইআরসির সাবেক সদস্য (তৎকালীন সদস্য- গ্যাস) মকবুল ই-এলাহী চৌধুরী বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, আমারতো মনে হয় ৫০ ঘনমিটারের নিচে করা উচিত ছিল। প্রথমবার জন্য যথাক্রমে ৫৫ ও ৬০ ঘনমিটার করা হয়েছিল। তখন শর্ত দেওয়া হয়, প্রিপেইড মিটার বসানো এবং পরবর্তীতে কমিয়ে আনার।

কিসের ভিত্তিতে ৫৫ ও ৬০ ঘনমিটার করা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, তাদের যে সাড়ে ৩ লাখ প্রিপেইড মিটার ছিল সেখানে দেখা গেছে গড়ে ৪৫ এর নিচে ব্যবহৃত হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাড়ে ৩ লাখ মিটারকে বিবেচনা করবেন, নাকি তাদের (তিতাস গ্যাস) ১০০ মিটারকে। কোন বিশেষ এলাকায় যদি বেশি গ্যাস ব্যবহার হয়, তাহলে সেখানে দ্রুত মিটার বসিয়ে দিলেই হয়, তার জন্য ৩৪ লাখ গ্রাহকের বিল বাড়ানো যৌক্তিক হবে না।

মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহকের গ্যাস বিল বাড়ানোর তোড়জোড় শুরু করেছে বিইআরসি। দু’একজন কর্মকর্তা তিতাস ও পেট্রোবাংলার সঙ্গে যোগসাজসে মাঠে নেমেছেন বলে জানা গেছে। তারা চান দ্রুততার সঙ্গেই তিতাসের আবেদন বাস্তবায়ন করতে।

কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর সিনিয়র সহ-সভাপতি ও জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. শামসুল আলম বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, তিতাসের ওই আবেদনে সাড়া দিতে গেলে বিইআরসিকে অবশ্যই গণশুনানি করতে হবে। গণশুনানি ছাড়া বিল বাড়ানোর কোন সুযোগ নেই। গণশুনানি শুরু হলে সেখানে এ বিষয়ে তথ্য উপাত্ত দিয়ে কথা বলা হবে। বিল বাড়ানোর কোন যৌক্তিকতা দেখি না।

 

;