এসআইবিএল- এর উপশাখার ব্যবসায়িক সম্মেলন-২০২৩ অনুষ্ঠিত



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের উপশাখার ব্যবসায়িক সম্মেলন-২০২৩ ২৮ জানুয়ারি রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী জাফর আলম।

সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মুহাম্মদ ফোরকানুল্লাহ। অন্যান্যের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের মানব সম্পদ বিভাগের প্রধান কাজী ওবায়দুল আল-ফারুক সহ আঞ্চলিক প্রধানগণ, বিভাগীয় প্রধানগণ, ঊর্ধ্বতন নির্বাহী এবং দেশব্যাপী বিস্তৃত ১৬৩টি উপশাখার ইনচার্জবৃন্দ। ব্যবসায় সম্মেলনে ২০২৩ সালের কর্মপরিধি নির্ধারণ ও লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য উপশাখাসমূহের করণীয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাফর আলম বলেন, দেশব্যাপী বিস্তৃত উপশাখাগুলোর মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে যাচ্ছে প্রান্তিক মানুষের দোরগোড়ায়। তিনি সামনের দিনগুলোতে উপশাখার সংখ্যা আরো বৃদ্ধি করে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের জীবনধর্মী প্রোডাক্ট ও প্রযুক্তিভিত্তিক আধুনিক ব্যাংকিং সেবা দেশের সকল মানুষের হাতের নাগালে পৌঁছে দেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

   

বঙ্গোপসাগরে মৎস্যশিল্পের সম্ভাবনা



নুসরাত জাহান ডায়না
বঙ্গোপসাগরে মৎস্যশিল্পের সম্ভাবনা

বঙ্গোপসাগরে মৎস্যশিল্পের সম্ভাবনা

  • Font increase
  • Font Decrease

আবহমান কাল ধরে বাঙ্গালির ঐতিহ্যের একটি অন্যতম অংশ হয়ে আছে “মাছ”। বাঙ্গালিকে বলা হয় “মাছে-ভাতে বাঙ্গালি”। এই মৎস্য সম্পদকে যদি শিল্প হিসেবে গড়ে তোলা যায় তাহলে বাংলাদেশ সমুদ্র সম্পদ আহরণের ক্ষেত্রে অনেকদূর এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় যে অঞ্চল রয়েছে তার বেশিরভাগই মৎস্যজীবীদের অচেনা। পর্যাপ্ত জরিপের অভাবে সমুদ্রের কোন অঞ্চল থেকে বেশি মৎস্য এবং কোন অঞ্চল থেকে কি ধরণের মাছ আহরণ করা যাবে সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া কঠিন। মৎস্য সম্পদ আহরণ, প্রজনন এবং উন্নয়নের জন্য সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ এখন খুব গুরুত্বপূর্ণ কারণ বাংলাদেশ সুনীল অর্থনীতি উন্নয়নে আগ্রহী।

বাংলাদেশ মাছের দেশ হলেও এই দেশে এখনো মাছ আমদানি করা হচ্ছে। তবে সেই আমদানির পরিমাণ দিনে দিনে কমছে। মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৭৮ হাজার টন, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে প্রায় ৮৮ হাজার টন মাছ আমদানি করা হয় ।বর্তমানে মৎস্য উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম এবং বাংলাদেশের মৎস্য উৎপাদনের পরিমাণ ৪১ লাখ টন (প্রথম আলো, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৯) ।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ স্থল সম্পদের পাশাপাশি তাদের সমুদ্র সম্পদের দিকে দৃষ্টি দিয়েছে। অনেক দেশ সমুদ্র তলদেশের সম্পদ কাজে লাগিয়ে নিজেদের উন্নত করছে। বাংলাদেশের সমুদ্র তলদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে আহরণ উপযোগী, যেমন, মাছ, খনিজ, গ্যাস ও তেল। এই আহরণ প্রক্রিয়া উন্নয়নের মাধ্যমে দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা যাবে। ফলে এই সম্পদ হতে পারে দেশের প্রধান রপ্তানি খাত।

বাংলাদেশ ভারত ও মিয়ানমারের সাথে সমুদ্রসীমা নির্ধারিত হওয়ায় দেশের সামুদ্রিক মানচিত্র প্রণয়নের পাশাপাশি সম্পদ আহরণ ও সমুদ্র এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের উপকূল থেকে ৩৫৪ মাইল পর্যন্ত মহীসোপানের দাবি জাতিসংঘে পেশ করেছে (প্রথম আলো, নভেম্বর ৬, ২০১৬) ।

এ বিষয়ক আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে ২০১২ সালে মিয়ানমারের সাথে ও ২০১৪ সালে ভারতের সাথে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি হয়। এরফলে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার সমপরিমাণ টেরিটোরিয়াল সমুদ্র এলাকায় বাংলাদেশের নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ব, অধিকার ও সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যার আয়তন প্রায় আরেকটি বাংলাদেশের সমান। আরও আছে ২০০ নটিক্যাল মাইল একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল (EEZ)। আর চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপানের তলদেশে সব ধরনের সম্পদের ওপর পূর্ণ অধিকার।

আমাদের সমুদ্র তলদেশে যে কত সম্পদ আছে তা দেশের জনগণ জানে না। জানতে পারলে এবং এখাতে বিনিয়োগে উদ্যোক্তারা এগিয়ে এলে আমাদের জাতীয় অর্থনীতির চেহারা পাল্টে যেতে পারে।

“মাছ চাষে গড়ব দেশ, বদলে দেব বাংলাদেশ” এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত জাতীয় মৎস্য সাপ্তাহের বক্তারা বলেন, “মিঠা পানির মাছ উৎপাদনের পাশাপাশি সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ বাড়ানোর দিকে মনোযোগী হতে হবে। জাটকা ও মা ইলিশ ধরা বন্ধ রাখতে হবে।

বঙ্গোপসাগরের সমুদ্র সম্পদকে দুই ভাগে ভাগ করে আলোচনা করে থাকেন গবেষকগণ। প্রথমত, অপ্রাণিজ সম্পদ এবং দ্বিতীয়ত, প্রাণিজ সম্পদ। অপ্রাণিজ সম্পদ বলতে খনিজ ও খনিজ জাতীয় সম্পদকে বুঝায়। আর প্রানিজ সম্পদ হচ্ছে মৎস্য সম্পদ, সামুদ্রিক প্রাণী, শৈবাল, লতা, গুল্ম ইত্যাদি। ফলে বঙ্গোপসাগরের এই মৎস্য সম্পদ হতে পারে বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ।

নরওয়ে তার গভীর সমুদ্রসীমায় মৎস্য সম্পদ আহরণের জন্য বাংলাদেশ থেকে ২০০০(+) মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন আন্তর্জাতিক মানের ট্রলার তৈরি করে নিচ্ছে। কিন্তু যে দেশটি এই জাহাজ তৈরি করে দিচ্ছে, তার নিজেরই সেই মানের জাহাজ নেই। উন্নত দেশে মাছ ধরার কাজে ২ হাজার মেট্রিক টন বা তারও বেশি ধারণক্ষমতাসম্পন্ন ফিশিং ভেসেল ব্যবহার করা হয়, সেখানে বাংলাদেশের ফিশিং ভেসেলের সর্বোচ্চ ধারনক্ষমতা ৩০০ মেট্রিক টন। এত ছোট ভেসেল দিয়ে গভীর সমুদ্রে মাছ আহরণ সম্ভব নয় । বেশিরভাগ সামুদ্রিক মাছ থাকে উপকূলীয় এবং গভীর সমুদ্র এলাকায়।

সমুদ্র সম্পদ আহরণের জন্য অনুসন্ধান ও জরিপের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সাগরকেন্দ্রিক অর্থনীতি অর্থাৎ ব্লু ইকোনমির সম্ভাবনার দুয়ার উন্মুক্ত করতে মৎস্য সম্পদ সম্পর্কিত অনুসন্ধান কার্যক্রমের অগ্রগতির জন্য সরকার মালয়েশিয়া থেকে ক্রয় করেছে গবেষণা জাহাজ ‘আর,ভি, মীনসন্ধানী’। দেশের সমুদ্র অঞ্চলের আয়তন বর্তমান ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটার, যা বাংলাদেশের টেরিটোরিয়াল সি বা নিজস্ব সমুদ্র এলাকা, Contiguous Sea বা লাগোয়া এলাকা ও Exclusive Economic Zone (EEZ) বা একান্ত অর্থনৈতিক এলাকা। এর বেশিরভাগ অংশই অজানা আমাদের। এর বেশিরভাগ অংশই অজানা আমাদের।

নুসরাত জাহান ডায়না, পিএইচডি গবেষক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, প্রভাষক, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ওমরগণি এম ই এস কলেজ চট্টগ্রাম।

;

আগাম ডলার বুকিং, দাম ১২৩ টাকা ৩৫ পয়সা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আগাম (ফরওয়ার্ড রেট) ডলার বেচাকেনায় নতুন নিয়ম চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে ব্যাংকগুলো ইচ্ছেমতো দাম নির্ধারণ করতে পারবে না। এখন থেকে ডলারের আগাম বেচাকেনার ক্ষেত্রে বেঁধে দেওয়া দামের সঙ্গে সর্বোচ্চ ১২.১৪ শতাংশ বার্ষিক ভিত্তিতে দাম বাড়ানো যাবে। কোনোক্রমেই এর বেশি বাড়ানো যাবে না। ফলে আগাম বিক্রির ক্ষেত্রে এক বছর মেয়াদে প্রতি ডলারের দাম হবে সর্বোচ্চ ১২৩ টাকা ৩৫ পয়সা। ছয় মাস মেয়াদে প্রতি ডলারের আগাম দাম হবে সর্বোচ্চ ১১৬ টাকা ৬৮ পয়সা। বর্তমানে প্রতি ডলারের বেঁধে দেওয়া দর সর্বোচ্চ ১১০ টাকা।

রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়।

জানা গেছে, বাজারে সংকট থাকায় আমদানির এলসি খোলার জন্য চাহিদা অনুযায়ী ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে আমদানিকারকরা এলসি খোলার জন্য আগাম ডলার কিনে রাখছেন। অনেকে আগে এলসি খুললেও এখন দেনা শোধের জন্য আগাম ডলার কিনছেন। যে কারণে বাজারে আগাম ডলারের চাহিদা বেড়েছে। এতে দামও বাড়ছে। বর্তমানে করপোরেট ডিলিংয়ের আওতায় আগাম ডলার ১২২ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন মেয়াদি ডলার ১১৪ থেকে ১২৫ টাকা দরেও বিক্রি হচ্ছে। এ কারণেই আগাম ডলার বাজারে শৃঙ্খলা আনতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন দর বেঁধে দিয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলার অনুযায়ী, আগাম ডলার বেচাকেনার দাম নির্ধারিত হবে ছয় মেয়াদি ট্রেজারি বিলের গড় সুদের হারের সঙ্গে। প্রতিমাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই সুদের হার ঘোষণা করছে। বর্তমানে ছয় মেয়াদি ট্রেজারি বিলের গড় সুদের হার ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ। এর সঙ্গে আরও ৫ শতাংশ যোগ করতে পারবে ব্যাংকগুলো।

ফলে আগাম ডলার বেচাকেনার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো প্রিমিয়াম হিসাবে সর্বোচ্চ ১২ দশমিক ১৪ শতাংশ যোগ করতে পারবে। বর্তমানে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) আমদানিতে প্রতি ডলারের বেঁধে দেওয়া দর হচ্ছে সর্বোচ্চ ১১০ টাকা। নতুন নিয়মে আগাম বেচাকেনার ক্ষেত্রে এক বছর মেয়াদে এর সঙ্গে আরও ১২ দশমিক ১৪ শতাংশ প্রিমিয়াম যোগ করা যাবে। এ হিসাবে এক বছর মেয়াদে আগাম ডলার বেচাকেনার দর হবে সর্বোচ্চ ১২৩ টাকা ৩৫ পয়সা। একই সঙ্গে ছয় মেয়াদের সর্বোচ্চ দর হবে ১১৬ টাকা ৬৮ পয়সা।

;

রেমিট্যান্স প্রবাহে ভাটা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভাটা পড়েছে বিদেশ থেকে পাঠানো প্রবাসীদের আয়ে। গত আগস্টের মতো চলতি সেপ্টেম্বরেও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত ২২ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে মাত্র ১০৫ কোটি ৪৯ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১১ হাজার ৫৫১ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা ধরে)।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে রেমিট্যান্সের পরিমাণ দাঁড়াবে ১৪৮ কোটি ডলার, যা আগের মাসের চেয়ে প্রায় ১১ কোটি ডলার কম। আগস্টে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার।

প্রতিবেদনের তথ্যমতে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৯ কোটি ১১ লাখ ৩০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ২ কোটি ৯৮ লাখ ৮০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৯২ কোটি ৯৮ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৪১ লাখ ৫০ হাজার ডলার দেশে এসেছে।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার এবং আগস্টে প্রবাসী আয় আসে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার। এক মাসের ব্যবধানে রেমিট্যান্স কমে ৩৭ কোটি ৩৭ লাখ মার্কিন ডলার।

১ সেপ্টেম্বর থেকে প্রবাসী ও রফতানিকারকরা এক ডলারের বিপরীতে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা পাচ্ছেন। পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ১১০ টাকার বিপরীতে পাওয়া যায় এক ডলার। কিন্তু কার্ব মার্কেট বা খোলাবাজারে এক ডলার কিনতে গ্রাহকদের দিতে হচ্ছে ১১৭-১১৮ টাকা। চিকিৎসা, শিক্ষা বা ভ্রমণের জন্য যারা বিদেশে যাচ্ছেন তাদের অন্তত সাত-আট টাকা বেশি খরচ করতে হচ্ছে।

;

‘নিরাপত্তা মানেই হচ্ছে ব্যবসা’



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
হোটেল রেস্তোরাঁয় এলপিজি সিলিন্ডারের নিরাপদ ব্যবহার” শীর্ষক সেমিনার

হোটেল রেস্তোরাঁয় এলপিজি সিলিন্ডারের নিরাপদ ব্যবহার” শীর্ষক সেমিনার

  • Font increase
  • Font Decrease

রাস্তায় কাঁদামাটিতে সিলিন্ডার রাখা দীর্ঘ মেয়াদের জন্য খুবই বিপদজ্জনক। দূর্ঘটনা রোধে এলপিজি সিলিন্ডারে প্রেসার রেগুলেটিং ভাল্ব স্থাপন জরুরি। অনেক দেশেই ব্যবহৃত হচ্ছে এই প্রযুক্তি।

রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ইপিবি অডিটরিয়ামে “হোটেল রেস্তোরাঁয় এলপিজি সিলিন্ডারের নিরাপদ ব্যবহার” শীর্ষক সেমিনার এমন সুপারিশ উঠে এসেছে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) আয়োজিত ওই সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিইআরসির চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল আমিন।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মাকসুদ হেলালী। তিনি বলেন, সিলিন্ডারের ক্ষেত্রে বিইআরসি নির্ধারিত নিরাপত্তা নির্দেশিকা সঠিকভাবে মানা হচ্ছে না। সিলিন্ডারের গায়ে ওয়ার্কিং ও টেস্টিং প্রেসার উল্লেখ বাধ্যতামুলক হলেও থাকছে না। সিলিন্ডারে ভাল্ব ও রেগুলেটর ব্যবহার হচ্ছে অনুমোদনহীন। কিছু প্রযুক্তি এসেছে বিএসটিআই এর অনুমোদন নেই, তবুও বাজারে চলছে। এগুলো মার্কেটে আনা উচিত হয় নি।

তিনি বলেন, আধুনিক মানেই নিরাপদ নয়। উন্নত বিশ্ব নতুন প্রযুক্তি এলে তার ভালো দিকগুলো বেশি বেশি প্রচার করে, খারাপ দিকগুলো বলে না। আমরা দেখেছি গ্যাস্টিকের ওষুধ খেয়ে মানুষকে ক্যান্সারের আক্রান্ত হতে।

বুয়েটের কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দা সুলতানা রাজিয়া বলেন, কোন কিছু করতে গেলে অনেক জায়গা থেকে লাইসেন্স নিতে হয়। কিন্তু দূর্ঘটনার পর দায়িত্ব নেওয়ার জন্য কাউকে পাওয়া যায় না। সেভাবে কোন অথরিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয় নি। ব্যবসা লাভজনক না হলে, নিরাপদ না হলে দীর্ঘমেয়াদে টিকতে পারবে না। যে কারণে নিরাপত্তা মানেই হচ্ছে ব্যবসা।

ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স এর উপ-পরিচালক (ঢাকা) সালেহ উদ্দিন বলেন, দিন শেষে সকল দায় ফায়ার সার্ভিসের উপর পড়ে। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে খুবই অবহেলা করা হয়। গার্মেন্টে জিএম কমপ্ল্যায়েন্স বেতন পান ১ লাখ টাকা, আর প্রোডাকশনের জিএম পান ৩ লাখ টাকা।

সেমিনার রুমটির (রপ্তানি উন্নয়ন ব্যূরো) ত্রুটির দৃষ্টান্ত তুলে ধরে বলেন, বড় এই হল রুমে, দরজা মাত্র একটি। কোন কারণে ওই দরজা বন্ধ হয়ে গেলে লোকজন বের হবে কোন দিক দিয়ে তার কোন ব্যবস্থা নেই। ভবন তৈরির সময় এসব বিষয় বিবেচনায় রাখা উচিত।

ওমেরা পেট্রোলিয়ামের হেড অব হেলথ্ সেফটি এনভায়রনমেন্ট এন্ড কোয়ালিটি দাউদুর রহমান খান বলেন, হোটেল রেস্তোরাঁয় ব্যবহৃত এলপিজি সিলিন্ডার রাস্তার পাশে কাদামাটিতে রাখা হয়। এতে দীর্ঘ মেয়াদে সিলিন্ডারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বহুতল ভবনের সিঁড়ির নিচে কিংবা স্টোররুমে সিলিন্ডার স্টোরেজ করা হচ্ছে। যেখানে পর‌্যন্ত বাতাস প্রবেশের কোন ব্যবস্থা নেই। এমনকি কোন দুর্ঘটনা ঘটলে আগুণ নিয়ন্ত্রণের কোন ব্যবস্থা নেই। এলপি গ্যাস বাতাসের চেয়ে ভারি তাই লিকেজ হলে নিচে জমা হয়। আর আগুণের স্পর্শে এলে বিস্ফোরিত হয়। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে ক্রস ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা থাকা উচিত। মেঝের লেভেলে হাওয়া বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা রাখা গেলে দুর্ঘটনা কমে আসবে।

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তিনি বলেন, ২০০৯ সালে এলপি গ্যাসের চাহিদা ছিল ৪৭হাজার টন, এখন ১৪ লাখ টন ছাড়িয়ে গেছে। চাহিদা ২০ থেকে ২২ গুণ বেড়ে গেছে, ভবিষ্যতে এটা দ্বিগুণ হবে। এটার যুগপোযোগি নীতিমালা জরুরি। আরও আধুনিক নীতিমালা করা দরকার। সিলিন্ডার লিকের কারনে অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটে। যানবাহনে কিভাবে, কোথায় ব্যবহৃত হবে তার একটি গাইডলাইন থাকা দরকার। যত্রতত্র যাতে না বসতে পারে, তার জন্য নীতিমালা থাকা উচিত। আমাদের দেশ উন্নয়ন হচ্ছে, এখন এসব বিষয়ে দেখা দরকার। ভবিষ্যতে কোথায় কিভাবে গ্যাস দিবো তার জন্য একটি মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা হচ্ছে।

বিইআরসি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, দুর্ঘটনার খবর দেখছি, যে কারণে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। যারা ব্যবসা করছেন সবকিছুর দিকে যেনো নজর দেন। অটোগ্যাস স্টেশন থেকে সিলিন্ডারে গ্যাস নিচ্ছে এটি কোনভাবেই কাম্য নয়।

এলপিজির দর প্রসঙ্গে ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের সঙ্গে মিটিং করেই প্রতি মাসে দর ঘোষণা করা হচ্ছে। দর মেনে চলা উচিত। আপনাদের অনেক ইস্যু আমরা দেখেছি, একসঙ্গে সবকিছু করা সম্ভব না। ভোক্তাদের দিকটাও দেখতে হবে। বিইআরসি যেহেতু লাইসেন্স দিয়েছে, সে কারণে তাদের লাইসেন্স বাতিল করারও সুযোগ রয়েছে। আমরা সেভাবেই কাজ করছি।

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোঃ নুরুল আলম বলেন, আবাসিকে আর নতুন করে গ্যাস সংযোগ দেওয়া সম্ভব না। পাইপলাইনের গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এলপিজি ব্যবহারের ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার জন্য সচেতনতা বাড়াতে হবে। এজন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

বিইআরসির সদস্য ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, নিরাপত্তাই প্রথম বলা হয়, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই ছাড় দেওয়া হয়। যা মোটেই কাম্য নয়। যারা বাজারজাত করছে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব তাদের। দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে অল্প বলে এড়িয়ে চলার ‍সুযোগ নেই। একটি দুর্ঘটনাও অবহেলা করার সুযোগ নেই।

বিইআরসি সদস্য ড. মোঃ হেলাল উদ্দিন, আবুল খায়ের মোঃ আমিনুর রহমান, মোঃ কামরুজ্জামান, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার, বিইআরসির সচিব ব্যারিস্টার মোঃ খলিলুর রহমান খান, জেএমআই এলপিজির জিএম (টেকনিক্যাল অপরেশন) প্রকৌশলী লিয়াকত আলী, রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি ওসমান গণি, এলপিজি পরিবেশক এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

;