ওয়ালটনের ২৭ মডেলের নতুন ফ্রিজ উন্মোচন



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
অর্ধশতাধিক নতুন মডেলের ফ্রিজের উদ্বোধন করেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদ

অর্ধশতাধিক নতুন মডেলের ফ্রিজের উদ্বোধন করেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদ

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদুল আজহা উপলক্ষে ২৭টি নতুন মডেলের ফ্রিজ উন্মোচন করলো বাংলাদেশি সুপারব্র্যান্ড ওয়ালটন। একইসঙ্গে ডিজাইন ও ফিচার আপডেট করা আরও অর্ধশতাধিক মডেলের ফ্রিজ আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারে ছাড়লো ওয়ালটন। নিজস্ব কারখানায় তৈরি এসব ফ্রিজের মধ্যে রয়েছে আইওটি বেজড স্মার্ট রেফ্রিজারেটর, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ডিজিটাল ইনভার্টার প্রযুক্তি এবং ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী সুপার কুলিং ফিচারের ফ্রিজ। বর্তমানে বাজারে রয়েছে ওয়ালটনের প্রায় দুইশ মডেলের রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার ও বেভারেজ কুলার।

বুধবার (২ জুন) গাজীপুরের চন্দ্রার কারখানায় নতুন মডেলের ফ্রিজগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদ। একইসঙ্গে ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসকে সামনে রেখে ওয়ালটন কারখানায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন তিনি।

এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর আলমগীর আলম সরকার, নির্বাহী পরিচালক কর্নেল (অব.) শাহাদাত আলম, উদয় হাকিম, প্রধান বিপণন কর্মকর্তা ও নির্বাহী পরিচালক ফিরোজ আলম, নির্বাহী পরিচালক আমিন খান, ইউসুফ আলী, ইয়াসির আল ইমরান, ফ্রিজের সিইও আনিসুর রহমান মল্লিক, আরএন্ডডি বিভাগের চিফ কো-অর্ডিনেটর তাপস কুমার মজুমদার, কম্প্রেসরের সিইও রবিউল আলম প্রমুখ।

প্রকৌশলী গোলাম মুর্শেদ বলেন, নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছেন ওয়ালটন পরিবারের সদস্যরা। এজন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ঈদ উপলক্ষে অর্ধশতাধিক নতুন মডেলের ফ্রিজ বাজারে ছাড়া হয়েছে। এটা আমাদের আরেকটি সফলতা। আমাদের প্রত্যাশা এই ধারা অব্যাহত রেখে ২০৩০ সালের মধ্যে ওয়ালটন বিশ্বের ৫টি শীর্ষ ব্র্যান্ডের কাতারে উঠে আসবে।

তিনি আরও বলেন, সবুজ-শ্যামল বাংলাদেশ বিনির্মাণ আমাদের প্রত্যয়। শিল্পায়ন চলমান থাকবে; বাংলাদেশ হবে শিল্প ও প্রযুক্তিনির্ভর। কিন্তু বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে দেশকে সবুজায়ন করতে হবে। করোনাকালে আবারও প্রমাণিত হচ্ছে অক্সিজেন ছাড়া আমরা বাঁচতে পারবো না। বাংলাদেশকে রক্ষা করতে এবং আগামী প্রজন্মকে সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে বৃক্ষরোপণের বিকল্প নেই। ওয়ালটন একটি বড় পরিবার। এখন থেকে ওয়ালটনের প্রতিটি সদস্য একটি করে গাছ লাগাবে। এর মাধ্যমে সবুজায়নের দিকে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক মুক্তি ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে সব সময় কাজ করবে ওয়ালটন।

ওয়ালটন ফ্রিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনিসুর রহমান মল্লিক বলেন, নতুন মডেলের ওয়ালটনের এসব ফ্রিজের ধারণক্ষমতা ১২৫ লিটার থেকে ৩৬৫ লিটারের মধ্যে। ফ্রিজের উল্লেখযোগ্য ফিচারের মধ্যে রয়েছে- হাই এনার্জি এফিসিয়েন্ট, এলিগেন্ট ডোর প্যাটার্ন, স্ট্যাবিলাইজার ফ্রি অপারেশন, বিগার ফ্রিজার ক্যাপাসিটি, ইউজার ফ্রেন্ডলি আরগনোমিক অ‌্যান্ড এলিগেন্ট ডোর ডিজাইন, দীর্ঘ কুলিং সুবিধা, র‌্যাট প্রিভেন্টিভ কম্প্রেসর ব্যাক কাভার, লো নয়েজ লেভেল, ৫ স্টার এনার্জি রেটিং, আল্ট্রাফ্রেশনেস, সুপার কুলিং, আইসিএস বা ইন্টালিজেন্ট কন্ট্রোল সিস্টেম, স্মার্ট ডায়াগনোসি, আইজিটি আয়োনাইজার ও ইলেকট্রনিক্স কন্ট্রোল ইত্যাদি। এছাড়াও ওয়ালটন ফ্রিজে সংযোজন করা হয়েছে আইওটি বেজড স্মার্ট প্রযুক্তি। তার প্রত্যাশা নতুন ও অত্যাধুনিক ফিচার সমৃদ্ধ ওয়ালটন স্মার্ট ফ্রিজ ব্যাপক গ্রাহকপ্রিয়তা পাবে।

কর্তৃপক্ষ জানায়, মেগা ঈদ ফেস্টিভালে ওয়ালটন ফ্রিজ কিনে রয়েছে মিলিয়নিয়ার হওয়ার সুযোগসহ কোটি কোটি টাকার নিশ্চিত ক্যাশ ভাউচার। পাশাপাশি ফ্রিজে ১ বছরের রিপ্লেসমেন্টসহ ইনভার্টার কম্প্রেসরে ১২ বছরের ওয়ারেন্টি দিচ্ছে ওয়ালটন।

   

রাজস্ব আয় বৃদ্ধিতে অটোমেশনের বিকল্প নেই: অর্থ প্রতিমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য অটোমেশনের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় গুলশানের ‘আমারি ঢাকা’র গ্র্যান্ড বলরুমে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআরআই) আয়োজিত 'বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ বাড়ানোর প্রয়োজনীয় রূপরেখা' (Bangladesh’s Domestic Resource Mobilisation: Imperatives and a Roadmap) উপস্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে সবাই অনলাইনে রিটার্ন সাবমিট করতে পারেন। বাংলাদেশের ইনফরমাল সেক্টর অনেক বড় বিধায় এই সেক্টর থেকে কর আদায় গুরত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে, বেসরকারি খাত আমাদের সঙ্গে থেকে সহায়তা করতে পারে।

ওয়াসিকা আয়শা খান বলেন, মানি মার্কেট, বেসরকারি ও সরকারি ঋণ নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি ‘ক্যাপিটাল মার্কেট’ নিয়ে আরো আলোচনা করা দরকার। কীভাবে আরো বেশি ভালো কোম্পানি মার্কেটে আসে, সে বিষয়ে সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে। তাহলে মানি মার্কেটের ওপর চাপ কমবে। ক্যাপিটাল মার্কেট, ইক্যুইটি মার্কেট ও বন্ড মার্কেট বৃদ্ধি করা জরুরি।

তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুগান্তকারী নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশের সফল বাস্তবায়ন শেষে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিরলস কাজ করছে বর্তমান সরকার। তার সুযোগ্য পরিচালনায় গত ১৫ বছরে যেসব মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে, সেগুলো থেকে দেশ এখন রিটার্ন পাচ্ছে। ‘আইবাস’ (ইন্টিগ্রেটেড বাজেট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টিং সিস্টেম-IBAS) ব্যবস্থাপনার কারণে বাজেটের বাস্তবায়নের দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

আগে বাজেট পাস হলেও বাজেট বাস্তবায়ন শুরু হতে অর্থ বছরের প্রথম প্রান্তিক চলে যেতো। বর্তমানে ১ জুলাই থেকেই অফিসগুলো বাজেট ব্যবহার করছে।

আজকের (৩০ এপ্রিল) আলোচনা অনুষ্ঠান থেকে যেসব পরামর্শ উঠে এসেছে, সেগুলো অর্থ মন্ত্রণালয় অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে বলেও আশ্বাস দেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা রাহমাতুল মুনীম ও এফবিসিসিআই'র প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম।

মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআই'র নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পিআরআই'র চেয়ারম্যান ড. জাইদী সাত্তার।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন পিআরআই'র ভাইস চেয়ারম্যান ড. সাদিক আহমেদ, এমসিসিআই'র প্রেসিডেন্ট কামরান টি রহমান, সিএসই চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, ডিসিসিআই'র প্রেসিডেন্ট আশরাফ আহমেদসহ প্যানেল আলোচকবৃন্দ।

;

পাট রফতানিতে বড় চ্যালেঞ্জ কাঁচামাল



আরিফুল ইসলাম মিঠু, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
পাট রফতানিতে বড় চ্যালেঞ্জ কাঁচামাল

পাট রফতানিতে বড় চ্যালেঞ্জ কাঁচামাল

  • Font increase
  • Font Decrease

পাট রফতানি খাতের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো কাঁচামাল, এবং এ কাঁচামালের অভাববেই প্রতিবন্ধক বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ডাইভারসিফাইড জুট প্রোডাক্টস, ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রাশেদুল করিম মুন্না।

তিনি বলছেন, বৈচিত্র্যময় পাটজাত পণ্য তৈরির কাঁচামাল পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। পাটজাত পণ্য তৈরির জন্য ভারতে ১০০ ধরনেরও বেশি পাটের কাপড় রয়েছে। সেসব দিয়ে মানসম্পন্ন পণ্যও তৈরি করতে পারে ভারত। অন্যদিকে বাংলাদেশে মাত্র চার থেকে পাঁচ ধরনের কাপড় রয়েছে এবং কাপড়ের গুণগত মানও তেমন ভালো নয়।

কাঁচামাল বিষয়ক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের বিশেষায়িত পাটকল স্থাপন করতে হবে; যা শুধু কাপড়ই তৈরি করবে না, একইসাথে রং করবে এবং লেমিনেশনের সুবিধা থাকবে। এতে উদ্যোক্তারা উচ্চমানের পণ্য তৈরি করতে পারবেন বলে মনে করছেন তিনি।

তিনি বলেন, ডিজাইন, দক্ষতা উন্নয়ন এবং পণ্যের উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য আমাদের একটি ‘জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার' রয়েছে। ভারতের জাতীয় পাট বোর্ডের মতোই প্রতিষ্ঠানটি আমাদের পণ্য বিক্রির জন্য সংস্থাটির স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে ভূমিকা পালন করে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি এখনও প্রকল্পের তহবিলে চলে। ফলে, প্রমোশন সেন্টারটি তহবিল সংকটের কারণে উদ্যোক্তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারে না।

ভারতের এমন চারটি শাখা রয়েছে যা পণ্য উন্নয়ন বা কাঁচামাল উন্নয়নের সাথে সংশ্লিষ্ট। বাজার সম্প্রসারণের জন্য তারা প্রায় ২০-২৫টি আন্তর্জাতিক মেলার আয়োজন করে থাকে। আমাদের সরকারকেও এমন আন্তর্জাতিক মেলার আয়োজন করতে হবে।

এছাড়াও তহবিল সংকট নিরসনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘সুলভ ঋণ’ সুবিধাকে কাজে লাগানো যেতে পারে। বিভিন্ন শিল্পখাতে সরকারের তহবিল নির্ধারণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন সুলভ ঋণ বাস্তবায়ন করে থাকে। অন্যান্য খাতে এসব ঋণ সুবিধা বেশি থাকলেও পাট কৃষিজাত পণ্য হওয়ায় তেমন সুবিধা পায় না। এছাড়া ‘সুলভ ঋণের’ তালিকায় অন্তর্ভুক্তও নয় পাট।

কৃষকদের কাছ থেকে কাঁচা পাট সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে আমাদের ২ শতাংশ কর দিতে হয়। শিল্পের উন্নয়নে সরকারকে ট্যাক্স নেওয়া বন্ধ করতে হবে। আবার পাট রফতানিতে প্রণোদনা পাওয়া নিয়েও রয়েছে জটিলতা। পাটজাত পণ্য রফতানিতে প্রণোদনা পাওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে বিদ্যমান সার্কুলার সংশোধন করতে হবে।

আরএমজি খাতের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আরএমজি এত বড় শিল্পখাতে পরিণত হওয়ার কারণ তারা বন্ডেড গুদামের সুবিধা পেয়েছে। আরএমজি সেক্টরের মতো পাট ও চামড়া খাতও সরকারের তেমন সুযোগ-সুবিধা পেতে চায়। কিন্তু এনবিআর কর্মকর্তাদের নেতিবাচক মনোভাবের কারণে তারা নতুন খাতে লাইসেন্স দিতে চান না।

বাংলাদেশ বর্তমানে প্রায় ৮৫ শতাংশ পাটজাত পণ্য, কাঁচা পাট বা সুতা বিদেশে রফতানি করছে। এতে কোনো কমপ্লায়েন্সের প্রয়োজন হয় না। কারণ তারা তাদের কারখানার কাঁচামাল দিয়ে পাট-পণ্য তৈরি করছে। বাংলাদেশে প্রচলিত পাটকলের ৯৯ শতাংশের কোনো কমপ্লায়েন্স সার্টিফিকেট নেই।

;

পাট ও চামড়াজাত পণ্য রফতানিতে বহুমুখীকরণে বাধা কোথায়?



আরিফুল ইসলাম মিঠু, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ইনফোগ্রাফিক্স: মামুনুর রশীদ, বার্তা২৪.কম

ইনফোগ্রাফিক্স: মামুনুর রশীদ, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘদিন ধরেই রফতানিমুখী পণ্যকে বহুমুখীকরণ করার চেষ্টা করে আসছে বাংলাদেশ। তবে তৈরি পোশাক (আরএমজি) শিল্প থেকে কোনভাবে বেরিয়ে আসতে পারছে না দেশটি ।

বাংলাদেশের সর্বশেষ রফতানি নীতিতে ১৮টি অগ্রাধিকার খাত এবং ১৪টি খাতকে ‘থার্স্ট সেক্টর’ (উদীয়মান খাত) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

রফতানি নীতিতে বলা হয়েছে, রফতানিকারকরা কম সুদের হারে ঋণ পাবেন, আয়করের ওপর ছাড়, বন্ডেড গুদাম সুবিধা এবং নতুন বাজার, বাজারের পণ্যগুলি খুঁজে বের করতে এবং এফডিআই (ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট) বিদেশে বিনিয়োগ করতে পারবেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১১.৫২ শতাংশ প্রবদ্ধি অর্জনের জন্য ৭২ বিলিয়ন ডলারের রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। পণ্য রফতানির জন্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৬২ বিলিয়ন ডলার এবং সেবাখাতের জন্য লক্ষ্যমাত্রা ১০ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৪.৫৫  বিলিয়ন ডলার এবং প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিল ৫.৮৮ শতাংশ।

অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে, বাংলাদেশ ৩৭,২০২.৬৩ মিলিয়ন ডলারের আরএমজি পণ্য এবং ৭৯৪.১৯ মিলিয়ন ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য এবং ৬৫৯.৫৪ মিলিয়ন ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি করেছে। আর এতে আরএমজি খাতের অবদান ৮৫.৪২ শতাংশ।

২০১৩-১৪ অর্থবছরে দেশের রফতানি হয়েছে, মোট ৩০,১৮৬.৬২ মিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে আরএমজি খাত ২৪,৪৯১.৮৮ ডলার, ৭৪৫.৬৩ মিলিয়ন ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য এবং ৮২৪.৪৯  মিলিয়ন ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি করেছে। এক্ষেত্রে আরএমজি খাতের অবদান ছিল ৮১.১৩ শতাংশ।

পাট পাটজাত পণ্য

শীর্ষস্থানীয় পাট পণ্য রফতানিকারকদের একজন, ক্রিয়েশন প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদুল করিম মুন্না বলেন, পাটজাত পণ্য বহুমুখীকরণে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কাঁচামাল পাওয়া।

ভারতে পাটজাত পণ্যের বহুমুখীকরণের জন্য একশ’রও বেশি পাটের সুতা রয়েছে। তারা এ সুতা দিয়ে মানসম্পন্ন পণ্য তৈরি করতে পারে। অন্যদিকে, বাংলাদেশে মাত্র চার থেকে পাঁচ ধরনের পাটজাত সুতা রয়েছে এবং এ সুতা তেমন একটা মানসম্পন্ন নয়।

তিনি বলেন, ‘কাঁচামাল আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা পাটজাত পণ্যের বহুমুখীকরণেরণের বলছি, কিন্তু আমাদের কাছে এই ধরনের পণ্য তৈরির কাঁচামাল নেই।’

সমস্যার উত্তরণ প্রসঙ্গে রাশেদুল করিম মুন্না জানান, পাটজাত পণ্যের বহুমুখীকরণের জন্য বিশেষায়িত পাটকল স্থাপন করতে হবে, যা শুধু সুতাই তৈরি করবে না, রঙ এবং লেমিনেশন করার সুবিধাও দেবে, যাতে উদ্যোক্তারা উন্নতমানের পণ্য তৈরি করতে পারেন।

এ জন্য বাংলাদেশের ‘জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার’, আমাদের পণ্য ডিজাইনে সহায়তা, দক্ষতা উন্নয়ন এবং পণ্যের মান উন্নয়নে দক্ষতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারে।

এ সেন্টার আমাদের পণ্য বিক্রির জন্য স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও একটা বড় ভূমিকা রাখতে পারে। ‘ভারতের জাতীয় পাট বোর্ড’ ঠিক এই কাজটিই করে থাকে।

বাংলাদেশের জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার প্রকল্প সহায়তা দিয়ে চলে বলে ভারতের জাতীয় পাট বোর্ডের মতো ভূমিকা রাখতে পারে না। সীমিত তহবিল দিয়ে এ কাজ করা সম্ভব নয়।

বাংলাদেশ ৮৫ শতাংশ কাঁচা পাট বা সুতা বিদেশে রফতানি করে।

পিছিয়ে চামড়াজাত পণ্য

বাংলাদেশের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে- এলজিডব্লিউ সার্টিফিকেট।

বুড়িগঙ্গা নদী বাঁচাতে হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারি স্থানান্তর করা হয়েছে। সেখানে অনেক কারখানাতেই ‘কমন এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (সিইটিপি- সাধারণ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্ল্যান্ট) স্থাপন করা হয়নি। কোনো কোনো কারখানায় ইটিপি বন্ধ রাখা হয়, অর্থ বাঁচাতে। ফলে এখানকার ট্যানারি শিল্প এখনো পানি ও পরিবেশকে দূষিত করে চলেছে।

দিলজাহান বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএলএলএফইএ) সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ভূঁইয়া জানান, এখন শুধু চীন তাদের কাছ থেকে চামড়া কেনে। তারা একটি পণ্য এক ডলার ১০ সেন্ট থেকে এক ডলার ২০ সেন্টে কেনে। তারা সাত বছর আগে একই পণ্য ২ ডলার ২০ সেন্টে বিক্রি করতেন।

তিনি আরও যোগ করেন, ‘চীন ছাড়া আমাদের কাছ থেকে অন্য কোনো দেশ কাঁচা চামড়া কিনতে আসে না। এর কারণ হিসেবে অন্য দেশগুলোর বক্তব্য, এজন্য আমাদের এলডব্লিউজি সনদ লাগবে। কিন্তু এ সনদ পেতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সনদ লাগবে। এ সদন ছাড়া তারা আমাদের কাছ থেকে কাঁচা চামড়া কিনবে না।’

এ বিষয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি ) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, প্রতিটি সেক্টরে নিজস্ব সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তার সঙ্গে তারা যে কাঠামোতে কাজ করে সেখানেও সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘যদিও আরএমজি সেক্টর ৪০ বছরের পুরনো একটি শিল্প। তারপরেও এখাতে প্রণোদনা দিতে হয়। এটি এখন পক্ষপাতমূলক হয়ে গেছে। তারা এখনো বন্ডেড সুবিধা ভোগ করে’।

‘আরএমজি উদ্যোক্তারা নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা করতে পারলেও অন্য শিল্পখাতের উদ্যোক্তারা তা করতে পারেননি। ফলে, অন্যান্য খাতের উদ্যোক্তারা দুর্বলই থেকে যাচ্ছেন।’- বলে মনে করেন তৌফিকুল ইসলাম খান।

তিনি এটাও স্মরণ করে দেন, ‘আরএমজি উদ্যোক্তারা যখনই কোনো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন, তখনই তারা ঐক্যবদ্ধভাবে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছেন। অন্য সেক্টরের স্টেকহোল্ডাররা তা করতে পারেননি। ফলস্বরূপ, নীতিনির্ধারণ সবসময় যারা বেশি প্রভাবশালী, তাদের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট ছিল। চামড়া শিল্পের সমস্যা হচ্ছে, কমপ্লায়েন্স সমস্যা। এটি এই খাতের একটি সুনির্দিষ্ট সমস্যা। এইখান থেকে উন্নীত হতে হবে।’

কৌশলগত প্রচেষ্টার উপর জোর দিয়ে সিপিডি’র সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান জানান, সরকার রফতানিখাতকে 'থ্রাস্ট সেক্টর’ ঘোষণা করেছে। এসব পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের জন্য আমাদের কৌশলগত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার প্রয়োজন।

;

কৃষি খাতকে লাভজনক করতে স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহারের বিকল্প নেই: এফবিসিসিআই



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
কৃষি খাতকে লাভজনক করতে স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহারের বিকল্প নেই

কৃষি খাতকে লাভজনক করতে স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহারের বিকল্প নেই

  • Font increase
  • Font Decrease

কৃষির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, ব্যয় হ্রাস, কৃষিপণ্যের অপচয় রোধ, কৃষকদের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করার পাশাপাশি কৃষি খাতকে অধিক লাভজনক করতে জরুরি ভিত্তিতে স্মার্ট প্রযুক্তি গ্রহণের ওপর বিশেষ জোর দিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।

মঙ্গলবার (এপ্রিল ৩০) দুপুরে মতিঝিলে অবস্থিত এফবিসিসিআই কার্যালয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সিসকো (CISCO) এর একটি প্রতিনিধি দলের সাথে অনুষ্ঠিত সভায় এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন এফবিসিসিআই’র সহ-সভাপতি ড. যশোদা জীবন দেব নাথ।

এ সময় তিনি বলেন, আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ হলো খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। খাদ্যের জোগান ঠিক রাখতে হলে কৃষকদের বাঁচাতে হবে। কৃষির উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে, চাষাবাদের ব্যয় কমাতে হবে। মাটি, পানিসহ খনিজ সম্পদের উপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। কার্বন নিঃসরণ হ্রাস এবং জলবায়ু ইস্যুতে দায়িত্বশীল হতে হবে। এক্ষেত্রে কৃষিতে স্মার্ট প্রযুক্তির ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জমি কর্ষণ, সেচ, শস্য মাড়াই, কৃষিপণ্য সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণে আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংস) সহ সর্বাধুনিক স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষিকে আরও লাভজনক করতে সরকার, বেসরকারি খাত, গবেষণা সংস্থা এবং প্রযুক্তি উন্নয়ন সহযোগী (Solution Provider) সহ সকল অংশীজনকে দ্রুত সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে বলে জানান ড. যশোদা জীবন দেবনাথ।

যান্ত্রিকীকরণকে বেগবান করতে কৃষিতে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ও স্মার্ট প্রযুক্তি আমদানিতে শুল্ক ছাড়সহ অন্যান্য সুবিধা প্রদান জরুরি বলে এসময় মন্তব্য করেন উপস্থিত বক্তারা। পাশাপাশি, স্মার্ট কৃষি বাস্তবায়নের অন্তরায় সকল আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করার আহ্বান জানান তারা।

এসময়, বাংলাদেশে স্মার্ট কৃষি বাস্তবায়নের যাত্রায় অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করেন সিসকো কমার্স ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন অফিসের টেক লিড দীনেশ পাল সিং।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মির্জা হাসানুজ্জামান, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবসর প্রাপ্ত অতিরিক্ত মহাপরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. বেলায়েত হোসেন, অতীশ দীপঙ্কর ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির এগ্রি বিজনেস বিভাগের চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন, এফবিসিসিআই’র সাবেক পরিচালক এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, এফবিসিসিআই’র সাধারণ পরিষদের সদস্যবৃন্দ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ প্রমুখ।

;