সন্ধ্যা নামলেই ইয়াবার হাট বসে জিনিয়া রিসোর্টে!
প্রশাসনের চলমান মাদকবিরোধী অভিযানের মধ্যেও কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল এলাকার জিনিয়া বিচ রিসোর্টে চলে মাদকের রমরমা বাণিজ্য। সন্ধ্যা নামলেই এ রিসোর্টে শুরু হয় ইয়াবার ক্রয়-বিক্রয় এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে রাখা হয়েছে রিসোর্টের আশে-পাশের এলাকায় বিশেষ নজরদারি।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিপুল সংখ্যক বহিরাগত তরুণ যুবক ও নারীরা রিসোর্টটিতে ভিড় জমিয়েছেন। চলছে মাদকের রমরমা বাণিজ্য ও সেবন। শুধু স্থানীয় তরুণ নয়, ঢাকা ও তার আশে-পাশের জেলাগুলো থেকে জিনিয়ায় আসেন তরুণরা। শুধু মাদক সেবন নয়, তাদের লক্ষ্য থাকে যুবতী নারীদের দিকে। নারী ভাড়া ও মাদক সেবনে এখন জিনিয়ায় চলছে রমরমা বাণিজ্য।
জিনিয়া রিসোর্ট থেকে বের হয়ে আসা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক যুবক বার্তা২৪.কম এর প্রতিনিধির কাছে মাদক সেবনের কথা স্বীকার করেন। ঐ যুবক জানান, তার বাড়ি ঢাকার সাভারে, রিসোর্টটির নির্বাহী পরিচালক বোরহান উদ্দিনের বাড়িও সেখানে। সেই সুবাদে বোরহানের অফারে এখানে এসেছেন তিনি।
এ সময় তার সাথে একজন তরুণীও ছিল। যুবক জানান, তার খরচ হয়েছে ৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে যাওয়ার সময় ইয়াবা কিনে যাচ্ছেন বলেও স্বীকার করেন তিনি। তার মতো আরও অনেক এখানে মাদক সেবন করতে আসেন বলেও জানান তিনি।
স্থানীয়দের দাবি, কিছুদিন আগে জিনিয়া রিসোর্ট থেকে রুবেল নামে একজনকে ইয়াবাসহ আটক করে পুলিশ। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই সেই রুবেল রহস্যজনকভাবে বেরিয়ে আসেন। শুধু রুবেল নয়, ফ্লাটে থাকা একাধিক যুবক ইয়াবা পাচার ও খুচরা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে জিনিয়া বিচ রিসোর্টে বসে।
বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত বিপুল সংখ্যক যুবকের সমাগম ঘটে মূলত সন্ধ্যায়। এ সময় চলে নারী নিয়ে অবৈধ মেলা-মেশা, ইয়াবা সেবনসহ নানান অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। প্রশাসনের এক শ্রেণীর কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে রিসোর্টের এ কার্যক্রম চলছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
একাধিক নির্ভযোগ্য সূত্র বলছে, ঢাকার সাভার এলাকার বোরহান উদ্দিন এক সময় কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল জোনে একটি রিসোর্টে বসে ইয়াবার চালান পাঠাতেন। হঠাৎ মাদকবিরোধী অভিযানে পরিবর্তন আশায় তিনি রিসোর্ট কেন্দ্র করে চালু করেন মাদক সেবনের আখড়া ও অঘোষিত পতিতালয়।
তবে নামে রিসোর্ট হলেও কাগজে কলমে সেটি এপার্টমেন্ট। ১০ তলার অধিক নির্মিত এ এপার্টমেন্টে রয়েছে ৩৫টিরও অধিক ফ্লাট। যা উপ-ভাড়ার মাধ্যমে হলেও বেশিরভাগ রয়েছে মূল মালিক এইচ এম বোরহানের নিয়ন্ত্রণে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে আমরা সব সময় কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছি। এ বিষয়ে অবগত হয়েছি। খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জিনিয়া বিচ রিসোর্টের নির্বাহী পরিচালক এইচ এম বোরহান উদ্দিন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আমার এখানে সবাই বাহির থেকে আসেন। স্থানীয় কাউকে আমি প্রশ্রয় দেয় না। তবে মাদক ব্যবসার অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।’