২০ বছরে হাঁটতে শিখলো চম্পা
শিশুরা সচরাচর দুই থেকে আড়াই বছর বয়সে হাঁটতে শেখে। কিন্তু ২০ বছর বয়সী চম্পার ক্ষেত্রে ঘটেছে অন্যরকম ঘটনা। ২০ বছর পার করার পরও হাঁটতে পারেনি সে। শারিরীক গঠনও শিশুদের মতো রয়েছে।
তবে এত বছর পর চম্পার বাবা-মা নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। কারণ গত ১ মাস আগে চম্পা নিজের পায়ে হাঁটতে শিখেছে।
শুক্রবার (২২ জুন) ঝিনাইদহ শহরের আলফালাহ হাসপাতালে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা.অলোক কুমার সাহার চেম্বারে গিয়ে দেখা যায় ২০ বছর বয়সী চম্পাকে। মায়ের কোলে বসে আছে, কখনওবা মেঝেতে হাঁটাহাঁটি করছে।
১৯৯৯ সালের ২৮ এপ্রিল সদর উপজেলার বংকিরা গ্রামে জন্ম নেয় চম্পা। পিতার নাম হাসেম মোল্লা ও মায়ের নাম মিনুয়ারা বেগম।
জন্মের পর থেকে চম্পা বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধী। আচরণও শিশুর মতো। কোন কথা বলতে পারে না। কেবল হাসতে আর কাঁদতে পারে। সারাক্ষণ মানুষের কোলে দিন কাটাতো। কৃষক পিতার আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করাতে পারেনি।
বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধী হিসেবে সমাজসেবা থেকে তার নাম নিবন্ধিত হলেও ভাগ্যে জোটেনি প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড। চলতি বছর সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম ও গনমাধ্যমে চম্পাকে নিয়ে সংবাদ প্রচারিত হয়।
ঝিনাইদহের বিশিষ্ট শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. অলোক কুমার সাহার চোখে পড়ে চম্পার সংবাদ। তিনি চম্পার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। জন্মের পর থেকে চম্পার ইতিহাস পর্যালোচনা ও পরীক্ষা নিরীক্ষা করে শুরু করেন।
অবশেষে ড.আলোক কুমার সাহার ওষুধ সেবন করে চার মাসের মধ্যে কোল থেকে নেমে কেবল হাঁটা শিখেছে চম্পা।
এ ব্যাপারে শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. অলোক কুমার সাহা জানান, চম্পা খাতুন থাইরয়েডিজম রোগে আক্রান্ত। জন্মের পর থেকে মেয়েটির চিকিৎসা করালে সুস্থ হয়ে উঠতো। এখন খুব বেশি শারিরীক বৃদ্ধি হবে না। তবে নিয়ম অনুযায়ী ঔষধ সেবন করলে, নিজের কাজ নিজে করতে পারবে চম্পা।