পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা পদে নিয়োগের ফলাফল প্রকাশের দাবি

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের আওতাধীন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা (এফডব্লিউভি) পদে নিয়োগের ফলাফল বাতিলের নোটিশ বন্ধ করে দ্রুত ফল প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন নিয়োগ প্রত্যাশীরা।

রোববার (২১ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে সংবাদ সম্মেলন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এই দাবি জানান তারা।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এফডব্লিউভি পদে নিয়োগ প্রত্যাশী কানিজ মারিয়া ও ফৌজিয়া আক্তার বলেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের আওতাধীন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর ২০২০ সালের ১০ মার্চ পরিবার কল্যণ পরিদর্শিকা (এফডব্লিউভি) পদে এক হাজার ৮০ জন প্রশিক্ষণার্থী মনোনয়নের বিজ্ঞপ্তি জারি করে।

বিজ্ঞপ্তির আলোকে প্রায় ৩ লাখ ৩১ হাজার প্রার্থী আবেদন করেন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দীর্ঘ তিন বছর পর ২০২৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি এই পদের লিখিত পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। লিখিত পরীক্ষার ফলাফল ওই বছরের ১১ মে প্রকাশ করা হয় এবং ২৫ মে থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত ভাইভা পরীক্ষা গ্রহণের নোটিশ প্রকাশ করা হয়। এই পরীক্ষা যাতে স্বচ্ছ হয়, এজন্য বারবার কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারপরও দুর্নীতির অজুহাতে এই নিয়োগ বাতিল করা হয়।

তারা আরও বলেন, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা বিভিন্ন পত্রিকাকে জানিয়েছে যে, ইতিমধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের অতিরিক্ত সচিবসহ চার সদস্য এক উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটির মাধ্যমে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। তদন্তে অভিযোগের পক্ষে কোন ধরনের সত্যতা না পেয়ে বিষয়টি নথিভুক্ত করা হয়েছে। তাহলে মৌখিক পরীক্ষার দীর্ঘ আট মাস পর পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর অনিয়মের আলামত কোথায় পেলো?

নিয়োগ প্রত্যাশীরা অভিযোগ করে বলেন, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর বরাবরই মেয়েদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। তারা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ৭ নং শর্তে উল্লেখ্য করেছিল, চূড়ান্ত কৃতকার্য প্রশিক্ষণার্থীরা যোগদানের পূর্বে সিভিল সার্জন কর্তৃক শারীরিক সুস্থতা ও গর্ভবতী নয় এই মর্মে সনদ পত্র দাখিল করতে হবে। গর্ভবতী হলে তার মনোনয়ন বাতিল বলে গণ্য হবে। প্রার্থীরা আশায় বসে থাকে এই মনে হয় পরীক্ষা হবে কিন্তু পরীক্ষার কোন খবর নাই। যার কারণে তারা পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারেনি।   

তারা আরও বলেন, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের চার বছর পর লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করে। এসব পরীক্ষা গ্রহণের দীর্ঘ আট মাস পরে ফলাফল প্রকাশ না করে বরং ৭ হাজার ৬২১ জন নিয়োগ প্রত্যাশী ও তাদের পরিবারকে কাঁদিয়ে নিয়োগ বাতিলের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। আমরা চূড়ান্ত ফলাফল প্রত্যাশীরা দ্রুত ফলাফলের জন্য চার বার মাবনবন্ধন করি। এতে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর ফল প্রকাশ না করে নিয়োগের ৭নং শর্তটি বাতিল করে। চার বছর পরে এসে এই শর্ত বাতিল করলে কি তারা আমাদের চার বছর ফিরিয়ে দিতে পারবে? এত বিপুল সংখ্যক পরীক্ষার্থীর দীর্ঘ সময় যাবত শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতির দায়ভার কে নেবে? 

সংবাদ সম্মেলনে তারা আরও বলেন, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর কি জানে একজন মা হওয়ার জন্য কতটা ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। এই পরীক্ষার কারণে অনেক বোনের সরকারি চাকরির বয়স শেষ হয়েছে, অনেকের সংসার নষ্ট হয়েছে। আমাদের কি এটাই অপরাধ যে আমরা মেয়ে মানুষ। সমাজে কি আমাদের কোন স্থান নেই।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি কামনা করে এই নিয়োগ বাতিলের নোটিশ বাতিল করে দ্রুত ফলাফল প্রকাশের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে জান্নাতুল গুলশান আরা, প্রিয়ংকা, সানজিদা লিজা, বনলতা, নিপা সুলতানাসহ প্রায় অর্ধশত নিয়োগ প্রত্যাশী উপস্থিত ছিলেন।