ডিবি অফিসে মিম, যা জানালেন অভিযুক্ত জবি শিক্ষকরা



জবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মিমকে যৌন হয়রানি ও হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগে বুধবার (২০ মার্চ) সকালে অভিযুক্ত দুজন শিক্ষককে ডিবি কার্যালয়ে ডাকা হয় । 

এর আগে, সোমবার (১৮ মার্চ) নিজ বিভাগের শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ দেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার ও হত্যার হুমকি পাচ্ছেন বলে অভিযোগ করে আসছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মিম। নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ডিবি কার্যালয়ে যান তিনি।

এ বিষয়ে কাজী ফারজানা মিম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলাম। তাই ডিবি কার্যালয়ে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেছি। ডিবি কার্যালয়ে তারা আমাদের বক্তব্য শুনেছেন। আমি উপযুক্ত প্রমাণসহ আমার বক্তব্য উপস্থাপন করেছি। অভিযুক্তরাও তাদের বক্তব্য দিয়েছেন। তবে ডিবি স্যারের আমার প্রমাণাদি সঠিক বলে মনে হয়েছে বিধায় তারা আমার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের বিষয়ে আমাকে আশ্বস্ত করেছেন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘অভিযুক্তদের থেকে লিখিত অঙ্গীকারনামা নিয়েছেন কি না, জানি না। তবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাইলে অবশ্যই লিখিত অঙ্গীকারনামা থাকা উচিত।’ 

বুধবার (২০ মার্চ) ডিবি কার্যালয়ে অভিযুক্ত দুই শিক্ষক ও অভিযোগকারী মীমকে মুখোমুখি করে উভয়পক্ষের বক্তব্য শোনেন ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ। 

মিমের অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত দুজন শিক্ষককে ডিবি কার্যালয়ে ডাকা হয়। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন অভিযুক্ত শিক্ষকরা। 

অভিযোগের বিষয়ে দীর্ঘ ফোনালাপে অভিযুক্ত শিক্ষক আবু শাহেদ ইমন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘২০১৯ সালে একটি ঘটনা ঘটেছিল। আমার ক্লাসে তাকে একদিন আমি বকা দিয়েছিলাম। সেই ক্ষোভ থেকেই সে প্রতিশোধ-প্রবণ হয়ে উঠে। কিন্তু মিম ২০১৯ সালে অভিযোগ না দিয়ে ২০২২ সালে এসে কাল্পনিক অভিযোগ দেয়; যার নেপথ্যে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে। 

তিনি আরো বলেন, মিমের অভিযোগের প্রেক্ষিতে যখন তদন্ত কমিটি গঠন হয়, সেখানে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজনীতির শিকার হই। সেই তদন্ত প্রতিবেদনে আমাকে বার বার দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এর ফলে আমি সুষ্ঠু বিচারের জন্য উচ্চ আদালতে যাই। উচ্চ আদালতে আমার বিপক্ষে কোনো যৌন নিপীড়নের অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। সে মামলা এখনও নিষ্পত্তি হয়নি। নিষ্পত্তি হয়নি এমন কোনো বিষয় নিয়ে মিডিয়ার সামনে কথা বলা ইমম্যাচিউর ব্যক্তির কাজ; যেটা মিম করেছে।   

নিজের সম্মানহানির বিষয় উল্লেখ করে বলেন, কাল্পনিক একটি অভিযোগের মাধ্যমে আমার সম্মানহানি করা হচ্ছে, আমাকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে। মেয়েটি এতদিন চুপ থাকলো। এখন যখন নতুন একটি ইস্যু সামনে এসেছে সেটার এডভান্টেজ কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। অবন্তিকার মৃত্যুতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যখন শক্ত অবস্থানে আছে, তখন সে এই পরিস্থিতিতে সুযোগে সৎ ব্যবহারের চেষ্টা করছে। 

যৌন নিপীড়ন একটি জঘন্য অপরাধ উল্লেখ করে শাহেদ ইমন বলেন, যৌন নিপীড়ন একটি জঘন্য ও ঘৃণিত অপরাধ। আমিও চাই যারা এই ঘৃণিত অপরাধের সাথে জড়িত তাদের বিচার হোক। আমি যদি আদালতের বিচারে দোষী প্রমাণিত হই তবে আমারও শাস্তি হোক। 

ডিবি অফিসে তলবের বিষয়ে বলেন, মিমের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডিবি প্রধান আমাদের ডেকে পাঠিয়েছিলেন। আমরা যথা সময়ে উপস্থিত হই। সেখানে মিমের বাবাও ছিলেন। ডিবির দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তারা আমাদের থেকে যা যা তথ্য চেয়েছেন আমরা সবকিছুই দিয়েছি। বাকিটা তারা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন। 

অভিযোগের বিষয়ে ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ আহমদ হালিম বার্তা২৪.কম-কে বলেন, মেয়েটি ক্লাস-পরিক্ষায় অনিয়মিত ছিল। সে আমার একটি কোর্সের ৩ ঘণ্টা করে ১০ টা ক্লাসের মধ্যে ৩ টা ক্লাসে উপস্থিত ছিল। ফলে সেখানে সে ৩ মার্ক পেয়েছে। এরপর ২ টি মিড সেমিস্টার ও একটি এসাইনমেন্টে ৩০ এর মধ্যে ২০.৫ পেয়েছে। মোট হিসাব করলে কন্টিনিউয়াস এসেসমেন্টে ৪০ এর মধ্যে ২৩.৫ পেয়েছে। আর ৬০ মার্কের লিখিত পরিক্ষায় সে অংশগ্রহণই করে নি। ফলে সেখানে সে শুন্য পেয়েছে। যেহেতু ১০০ তে ৪০ মার্ক পেলে পাশ হয়ে সেখানে সে পেয়েছে ২৩.৫ যা ফেল হিসেবে গণনা হয়েছে। আর এগুলো তো সফটওয়্যারের কাজ। আমরা তো শুধু মার্ক পাঠিয়ে দেই। বাকি কাজ তো পরিক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের।  

তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী একটা কোর্সের পরিক্ষা ২ জন শিক্ষক থাকেন পরিক্ষার খাতা পর্যবেক্ষণের জন্য। একজন ফেল দিলেও অন্য শিক্ষক তো আর ফেইল দিবেন না। আবার মার্কের ব্যবধান যদি ২৫ শতাংশের বেশি হয় তখন খাতা চলে যায় ৩য় শিক্ষকের হাতে। ফলে এখানে ইচ্ছা করে ফেল করানোর কোনো সুযোগ নেই। 

ভাইবা তে মিমের ফেল করার বিষয়ে তিনি বলেন, ভাইবা বোর্ডে আমিসহ ৩ জন শিক্ষক ছিলাম। আমরা যা মার্কিং করি তার এভারেজ করে মার্ক দেওয়া হয়। সেখানে সে একটি প্রশ্নের উত্তরও দিতে পারেনি। ফলে সকল শিক্ষকদের মার্ক এভারেজ করেও তাকে পাশ করানো যায়নি। ফলে সে ফেল করেছে। 

ফাতিমা আমিনের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ফাতিম আমিনের কোর্সে মিম নিয়মিত ক্লাস করেনি। আবার তাকে ৩ বার সুযোগ দেওয়া হলেও সে মিড সেমিস্টার পরিক্ষা দেয়নি। এবং সে ফাইনাল এক্সামেও বসেনি। তাই সে ফেল করেছে। নিজের দোষে ফেইল করে সে ফাতিমা আমিনকে যৌন নিপীড়নের সাহায্যকারী বানিয়ে দিয়েছেন, যার কোনো সত্যতা নেই। 

দুই শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, দু'পক্ষকে আমরা ডেকেছি, তাদের বক্তব্য শুনেছি। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফারজানা মীম আমাদের কাছে আবদার করেছেন যে তিনি যেন স্বাধীনভাবে চলাচল করতে পারেন। আমরা তার আবদারের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে তার নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য বিষয়টি শিক্ষকদের বলেছি। 

তিনি আরও বলেন, এরপরও যদি কেউ হুমকি বা ভয়-ভীতি করে, তাহলে মিমকে বলা হয়েছে তিনি যেন আমাদের ডিবির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তৎক্ষনাৎ জানান। আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। 

যৌন হয়রানির বিষয়ে ডিবি প্রধান বলেন, এটি আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। তদন্ত শেষ হলে পরে জানাতে পারব। 

ডিবি প্রধান আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিষয় সমাধান করা আমাদের কাজ নয়। মিমকে ফেল করানোর বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দেখবে। তবে তাকে হুমকি দেয়ার বিষয়টি গোয়েন্দা পুলিশ দেখবে। আইনশৃংখলা বা ফৌজদারি অপরাধ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিষয়ে সমাধানের এখতিয়ার পুলিশের নেই।

   

কুবিতে শিক্ষকদের উপর হামলার ঘটনায় তিন মানববন্ধন



কুবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের উপর হামলার ঘটনায় শিক্ষার্থীদের দুইটি ও শিক্ষক সমিতির একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের সামনে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসানের সঞ্চালনায় শিক্ষকরা মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা সেখানে বক্তব্য রাখেন।

মানববন্ধনে অংশ নেয়া অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীরা অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শামীমুল ইসলামের উপর হওয়া হামলার বিচার চান। এ ব্যাপারে মানববন্ধনে অংশ নেয়া উক্ত বিভাগের শিক্ষার্থী নাইমুর রহমান বলেন, 'শিক্ষকরা আলোর দিশারী, সেই শিক্ষকদের উপর যখন অছাত্র বহিরাগতদের দ্বারা হামলার শিকার হয় আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা তা মেনে নিতে পারি না। অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শামিমুল ইসলাম স্যারের উপর আমিনুর রহমান যে বর্বরোচিত হামলা করেছে, আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই, আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। আমাদের যে বিচারের দাবি সে দাবি যদি না মানা হয় তাহলে শিক্ষক সমিতি যেমন উপাচার্যকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরাও এই প্রশাসনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করতে বাধ্য হব।'

সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে মানববন্ধনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা গত ২৮ এপ্রিল শিক্ষকদের উপর হামলাকারী অছাত্র, বহিরাগত সন্ত্রাসী ও খুনের মামলার আসামিদের সনদপত্র বাতিল, গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এ ব্যাপারে ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী লাবিবা ইসলাম বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে বিগত কয়েকদিন যাবত শিক্ষক প্রশাসনের বিভিন্ন দাবি নিয়ে দ্বন্দ চলছে। শিক্ষক সমিতি তাদের ন্যায্য দাবি নিয়ে প্রশাসনের সামনে বারবার দাঁড়িয়েছে। কিন্তু এবার প্রশাসন কিছু বহিরাগত, অছাত্রদের দিয়ে আমাদের শিক্ষকদের গায়ে হাত তুলেছে। এমনকি প্রশাসনের উচ্চ কর্মকর্তারাও শিক্ষকদের গায়ে হাত তুলতে পিছপা হয়নি। যা আমরা সবাই ভিডিওতে দেখেছি। এর আগেও এই সকল বহিরাগত, অছাত্রের হাতে শিক্ষার্থীরা হেনস্তা হয়েছে। এবার শিক্ষকরা লাঞ্ছিত হয়েছে। এরকম চলতে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করা দুষ্কর হয়ে যাবে। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে ভয় পাবো। যা আমাদের কারোই কাম্য নয়।

আমরা চাই যে বা যারা আমাদের শিক্ষকদের গায়ে হাত তুলেছে তাদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হোক। সকল বহিরাগত, অছাত্রের ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হোক। সাধারণ শিক্ষার্থীরা যাতে সুষ্ঠুভাবে ক্লাস করতে পারে সেই পরিবেশ ফিরিয়ে দেওয়া হোক।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, আইকিউএসি'র পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রশিদুল ইসলাম শেখ, প্রক্টর ড. কাজী ওমর সিদ্দিকীর অপসারণ বা পদত্যাগ চেয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন। মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী হাসান বলেন, 'দুই বছর ধরে উপাচার্য যে অপশাসন, স্বৈরশাসন আর মাতাল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে তার জন্য আজ শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কমকর্তা-কর্মচারী সবার দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। আপনি সবসময় আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে, নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে অন্যায়ের পথ বেছ নিয়েছন, অসত্যের পথ বেছে নিয়েছেন তাই আপনি আজকে অন্ধকারে নিমজ্জিত আছেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বাংলাদেশের সকল উপাচার্যের জন্য এক কলঙ্কের অধ্যায় তৈরি করেছেন, তিনি এক শীর্ষ সন্ত্রাসিতে পরিণত হয়েছেন।'

মনববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, 'এই উপাচার্য প্রথমদিন থেকে বহিরাগত সন্ত্রাসদের সাথে যুক্ত এবং কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধ ছাত্রলীগের কমিটির বিলুপ্ত করার প্রচেষ্টা করছেন। শিক্ষক সমিতি যখন থেকে শিক্ষকদের দাবি নিয়ে কথা বলা শুরু করেছে তখন থেকেই উপাচার্য ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন। আমাদের দাবিগুলো নিয়ে মৌখিক ও লিখিত জানিয়েছি কিন্তু তিনি কোনো কর্ণপাত করেননি।'

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের একজন শিক্ষককে উপাচার্য নিজে কনুই দিয়ে ধাক্কা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করেছেন, এই সন্ত্রাসী হামলা উনি নিজেই পরিচালিত করছেন এবং ট্রেজারার, প্রক্টরও বহিরাগতদের ইশারা দিয়েছেন শিক্ষকদের উপর হামলা করার জন্য। শিক্ষার্থীদের যতটুকু ক্ষতি হয়েছে আমরা এই ক্ষতি দিনরাত কাজ করে প্রয়োজনে অনলাইন ক্লাস করে নিব। উপাচার্য ও ট্রেজারার এর অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখবো।'

এর আগে শিক্ষকদের সাত দফা দাবি না মানায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ এবং প্রক্টরের দপ্তরে তালা ঝুলিয়ে দেন এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামানের পথ অবরুদ্ধ করেন। সর্বশেষ গত ২৮ এপ্রিল উপাচার্য, শিক্ষক এবং ছাত্রলীগের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলে শিক্ষক সমিতি কুবি উপাচার্য-কোষাধ্যক্ষ-প্রক্টরসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন এবং তাদের পদত্যাগ দাবি করে একাডেমীক ও প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম বর্জন করার ঘোষণা দেন। হাতাহাতির ঘটনায় উপাচার্যপন্থী ও শিক্ষক সমিতি কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় পাল্টাপাল্টি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

;

জবি ছাত্রলীগ সহ-সভাপতির বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগ



জবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের ১নং সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন অনির বিরুদ্ধে ২ লক্ষ ১৯ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ করেছেন বাদামতলীর ফল ব্যবসায়ী ফয়সাল ওরফে হেলাল। তিনি পটুয়াখালী সদর উপজেলার মৃত শাহ আলমের ছেলে।

জানা যায়, শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে পুরান ঢাকার বাংলা বাজারের কিশোরী লাল জুবিলী স্কুল এন্ড কলেজের সামনে এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ সময় ছাত্রলীগের ১নং সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন অনি এবং সাংগঠনিক সম্পাদক হাসিবুল হাসান হৃদয়সহ ৬ জন ঐ ব্যবসায়ীর পথ রোধ করে তাকে মারধর শুরু করেন। এক পর্যায়ে তার কাছে থাকা নগদ ২ লক্ষ ১৯ হাজার টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়। প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে পাশের এক রেস্তোরায় প্রবেশ করেন। এরপর মহিউদ্দিন অনি ও হাসিবুল হাসান হৃদয় সেই রেস্তোরায় প্রবেশ করে তাকে পুনরায় চড়-থাপ্পর শুরু করেন এবং ছিনতাইয়ের ঘটনা কারোকে জানালে প্রাণনাশের হুমকি দেন।

তবে আসামিপক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় উক্ত ঘটনায় সূত্রাপুর থানা পুলিশ মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। ফলে ভুক্তভোগী ফয়সাল ওরফে হেলাল আদালতে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

রাজ্য মহল কাচ্চি বিরিয়ানি হাউজ নামের সেই রেস্তোরার ভেতরের ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ এসেছে বার্তা২৪.কম এর হাতে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মহিউদ্দিন অনি ও হাসিবুল হাসান হৃদয় ওই ব্যক্তির সাথে আঙ্গুল উঁচিয়ে কথা বলছেন। একপর্যায়ে মহিউদ্দিন অনি উত্তেজিত হয়ে তাকে চড়-থাপ্পড় শুরু করেন। এরপর রেস্তোরার কর্মীরা হেলালকে রক্ষা করতে আসলে তারা আরও মারমুখী হয়।

রাজ্য মহল কাচ্চি বিরিয়ানি হাউজ নামের সেই রেস্তোরার মালিক মিন্টু শেখ বলেন, গত শুক্রবার রাতে একজন আশ্রয় চেয়ে আমার দোকানে প্রবেশ করেন। আমরা ঐ ব্যক্তিকে ভেতরে আসতে দিলে তার পিছু পিছু দৌড়ে আরও ২ জন দোকানের ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর তারা বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে হেলালকে (পরে নাম জানতে পারি) চড়-থাপ্পড় দিতে থাকেন একজন। আমরা বাঁধা দিতে গেলে দোকান-পাট ভাঙচুরের হুমকি দেন। পরে আমরা তাদেরকে অনুরোধ করলে তারা চলে যায়।

ভুক্তভোগী ফয়সাল ওরফে হেলাল ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, গত শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন অনি ও সাংগঠনিক সম্পাদক হৃদয়ের নেতৃত্বে ৬ জন আমার উপর অতর্কিত আক্রমন করে। শুক্রবার সাপ্তাহিক বন্ধ থাকায় আমি পুরোনো টাকা কালেকশন করতে সদরঘাট এলাকায় ছিলাম। ফোনে কথা বলতে বলতে আমি জুবিলী স্কুলের সামনে চলে যাই। সেখানে তারা বাইক নিয়ে যাওয়ার সময় হৃদয় আমাকে দেখতে পায়। সে অনিকে আমার কথা বললে অনি বলে ওরে ধরে ওর পকেটে কত টাকা আছে দেখ। তারা এসেই আমাকে মারধর শুরু করেন। তখন আমার সাথে প্রায় দুই লাখ ছয়ত্রিশ হাজারের মতো টাকা ছিলো। মারধর করতে করতে তারা আমার পকেট থেকে ২ লাখ ১৯ হাজার টাকা জোরপূর্বক ছিনায়ে নেয়। বাকি টাকা আমার মানিব্যাগে থাকায় তা আর নিতে পারে নাই। টাকা নেয়ার পর তারা আমার ওয়ান প্লাস মোবাইলকে আইফোন ভেবে কেড়ে নিতে চাইলে আমি তাদের থেকে ছুটকাড়া পেয়ে দৌঁড়ে পাশের এক হোটেলে যাই। হোটেলের মধ্যেও অনি আমারে মারধর করে। একপর্যায়ে হোটেলে থাকা লোকজন আমাকে রক্ষা করে।

ভুক্তভোগী হেলাল আরও বলেন, গতকাল রাতে বাইকে করে ৩ জন ব্যক্তি আমাকে ফলো করতে করতে ওয়ারী পর্যন্ত আসে। তারা আমারে ইশারায় ডাকতে থাকে এবং বলে আমার সাথে কথা আছে। আমি তাদেরকে দেখে রিকশা করে দ্রুত চলে যাওয়ায় চেষ্টা করি। আমি সাড়া না দেওয়ায় আমাকে মারধরের হুমকি দেয় তারা।
পুলিশের অসহযোগিতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি ঘটনার পর রাত সোয়া ১২ টায় মামলা করার জন্য সূত্রাপুর থানায় যাই। পুলিশ আমার মামলা নেয়নি। তারা আমাকে ১০ হাজার টাকা দিয়ে বিষয়টি সমাধান করে ফেলতে বলে। আমি অস্বীকৃতি জানালে অনি পুলিশকে বলে আমাকে পাঁচ মিনিটের জন্য তার কাছে ছেড়ে দিতে।

টাকার নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে মহিউদ্দিন অনি বলেন, সে আমার পূর্ব পরিচিত। ২০১৪-১৫ সাল থেকে তার সাথে আমার পরিচয়। সে নাকি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজী ভাইকে টাকা দেয়। তার সাথে এবিষয়ে কথা বলতেছিলাম। একপর্যায়ে সে আমার বাবা-মার নাম ধরে গালি দেয়। পরে আমিও তাকে দুইটা থাপ্পড় দিসিলাম। যেহেতু সে আমার পূর্ব পরিচিত তাই তাকে আমি সরি বলেছি। সেও আমাকে সরি বলেছিল। সূত্রাপুর থানার এসআই আসাদ ভাই, রবিউল ভাই ছিলো সামনে। তারা বিষয়টা জানে, আমাদের মধ্যে বিষয়টি সমাধান হয়ে গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজী বলেন, টোকাই-ছিনতাইকারী কখনো ছাত্রলীগ হতে পারে না। যেহেতু ছাত্রলীগের নাম এখানে এসেছে আমরা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে কথা এবং সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব। ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে কোনো অন্যায়কারী পার পাবে না।

এ বিষয়ে সূত্রাপুর থানার ওসি মো. মাসুদ আলম বলেন, এমন ছিনতাইয়ের ঘটনায় আমাদের কাছে কোন ধরনের অভিযোগ আসেনি। আমরা এ বিষয়ে অবগত না। সংশ্লিষ্ট যারা দেখেছে তারা বলতে পারবে।

;

তীব্র তাপদাহের মধ্যেও সশরীরে ক্লাসে ফিরছে জবি 



জবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
তীব্র তাপদাহের মধ্যেও সশরীরে ক্লাসে ফিরছে জবি 

তীব্র তাপদাহের মধ্যেও সশরীরে ক্লাসে ফিরছে জবি 

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশজুড়ে চলমান তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে গত ২ সপ্তাহ অনলাইনে ক্লাসের পর আবারও সশরীরে ক্লাসে ফিরছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। তবে কমিয়ে এনেছে ক্লাসের সময়কাল।

নতুন সময়সূচি অনুযায়ী, সপ্তাহে চারদিন হবে সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা ও প্রতি মঙ্গলবার হবে অনলাইন ক্লাস। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলবে ক্লাস-পরীক্ষা।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে চলমান তাপপ্রবাহের কারণে স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষার সময়সূচী পুনঃনির্ধারণের বিষয়ে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপাচার্য অধ্যাপক সাদেকা হালিম, পিএইচডি'র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক আগামী ৫ মে, ২০২৪ রবিবার হতে সকাল ৮টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাস ও পরীক্ষা চলবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ৭ মে, ২০২৪ হতে সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার অনলাইনে ক্লাস চলবে। এছাড়াও বিজ্ঞপ্তিতে তীব্র তাপদাহে স্বাস্থ্য ঝুকি এড়াতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাফেরা করার জন্য সকলকে অনুরোধ করা হয়েছে।

;

ঢাবির ভূতত্ত্ব বিভাগের ৭৫ বছর পূর্তি উদযাপন



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ভূতত্ত্ব বিভাগের ৭৫ বছর পূর্তি উদযাপিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) এ উপলক্ষ্যে বিভাগের উদ্যোগে র‍্যালি, বেলুন উড্ডয়ন, কেক কাটা ও আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং ঢাবি ভূতত্ত্ব অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম প্রধান অতিথি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সুব্রত কুমার সাহা'র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার এবং আর্থ এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম স্মৃতিচারণ করে বলেন, জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি ভূতত্ত্বের বিষয়গুলো অনেক উপভোগ্য। ভূতত্ত্ববিদদের সমতলে, পাহাড়ে, ভূ-অভ্যন্তরে এমনকি মহাকাশে সমভাবে কাজ করতে হয় এবং সকল বিষয়ে পারদর্শী হতে হয়। সকল ধরণের সক্ষমতা অর্জন করে ভূতত্ত্ববিদরা দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অ্যালামনাইসহ সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ভূতত্ত্ব শুধু অর্থনীতির সাথে সম্পৃক্ত নয়, এটি মানুষের জীবনের সাথে গভীরভাবে মিশে আছে। সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভূতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক, গবেষক ও অ্যালামনাইরা প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন। ভূতত্ত্বের পরিধি ও কার্যক্রম বৃদ্ধির লক্ষ্যে শিক্ষা ও গবেষণার পাশাপাশি এর প্রায়োগিক দিক আরও জোরদার করার জন্য শিক্ষক, গবেষক ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি উপাচার্য আহ্বান জানান।

প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার ৭৫ বছরের পথচলায় বিভাগের সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে দেশের উন্নয়নে এই বিভাগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের মেধা ও জ্ঞানের মাধ্যমে দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

উল্লেখ্য, এ অনুষ্ঠানে বিভাগের শিক্ষক, গবেষক, শিক্ষার্থী এবং অ্যালামনাইবৃন্দ অংশ নেন।

;