জাবিতে ছাত্র ইউনিয়নের ২ নেতার বিরুদ্ধে মামলা, শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ মিছিল 



জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ধর্ষণবিরোধী গ্রাফিতি অঙ্কনের দায়ে ছাত্র ইউনিয়ন নেতা অমর্ত্য রায় ও ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলিকে ১ বছরের জন্য বহিষ্কারসহ তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর প্রতিবাদে 'নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর' এর ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রান্সপোর্ট চত্ত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ-মিছিল শুরু হয়ে চৌরঙ্গী, মেডিকেল সেন্টার হয়ে শহীদ মিনার চত্ত্বরে এসে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

এসময় শিক্ষার্থীরা ‘বহিষ্কার মামলার হুলিয়া, নিতে হবে তুলিয়া’, ‘আমাদের ক্যাম্পাসে আমরাই থাকবো, নুরুল আলম থাকবে না’, ‘ছিঃ ছিঃ ছিঃ ছিঃ, মামলাবাজ ভিসি’, ‘এই লড়াই বাঁচার লড়াই, এই লড়াইয়ে জিততে হবে’, ‘অ্যাকশন অ্যকশন, মামলাবাজ ভিসির বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘চিকা মারার স্বাধীনতা দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়।

চলচ্চিত্র আন্দোলনের সংগঠক তাহসিন ইমতিয়াজ তৌসিফ বলেন, ক্যাম্পাসে নানারকম ইস্যু নিয়ে আন্দোলন হয়, অনশন হয়। আমরা দেখেছি প্রত্যয় এম এইচ হলের সামনে সাত দিন অনশন করেছে কিন্তু প্রশাসন তার দাবি রাখতে পারে নাই, তারা সাবেক ছাত্রদের বের করতে পারে নাই। কিন্তু ছাত্রলীগের একজন অছাত্র মাত্র দুইদিন অনশনে বসার সাথে সাথেই প্রশাসন আমাদের দুই কমরেড অমর্ত্য ও ঋদ্ধর নামে মামলা করে দিল। প্রশাসন এই হঠকারী সিদ্ধান্ত বহাল রাখলে আমরা আমাদের আন্দোলন আরো তীব্র করে তুলব। 

জহির রায়হান চলচ্চিত্র সংসদের কোষাধ্যক্ষ তাসনিম নওশীন বাশার মোহনা বলেন, আমাদের কাছে এই তদন্ত কমিটি একটি ভিত্তিহীন কমিটি। ভিসির সাথে মিটিংয়ে আমরা জানতে চাই ছাত্র শৃঙ্খলা বিধির কোন অধ্যাদেশ অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তাদের বারবার জিজ্ঞাসা করার পরও তারা বলতে পারছিলেন না কোন ধারায় এই বহিষ্কার আদেশ দেয়া হয়েছে। সুতরাং এটা দিনের আলোর মত পরিষ্কার ভিসি তার বিশেষ ক্ষমতাবলে এই বহিষ্কারাদেশ দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, একটা গ্রাফিতি মুছে ফেললেই কি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মুছে দেয়া সম্ভব! সম্ভব না। বঙ্গবন্ধুর অবমাননা আমরা করিনি। কিন্তু অবমাননা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর অবমাননা হয়েছে একের পর এক নিপীড়ন বিরোধী গ্রাফিতি বঙ্গবন্ধুর ছবি দিয়ে ঢেকে ফেলার মধ্য দিয়ে হয়েছে। শিক্ষকরা বারবার বলেন আমরা তাদের সন্তানের মত কিন্তু তাদের প্রকৃত সন্তান হচ্ছে ধর্ষক চাঁদাবাজি করা ছাত্ররা যাদের ওনারা ডাবের পানি খাইয়ে অনশন ভাঙান। তাদের বিরুদ্ধে কখনো মামলা না হলেও মামলা হয় আমার কমরেড অমর্ত্য রায় ও কমরেড ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলীর বিরুদ্ধে। প্রশাসন ভাবছে তারা এভাবে আমাদের চাপে ফেলে বিল্ডিং করবে আর পকেটে টাকা ঢুকাবে! আমরা তা হতে দিবো না। আমরা আমাদের দীর্ঘদিনের মাস্টারপ্ল্যানের আন্দোলন ছাড়বো না।

জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি শরণ এহসান বলেন, গ্রাফিতি অঙ্কনের প্রেক্ষিতে দুইজন ছাত্র নেতাকে যেভাবে মামলার শিকার হতে হয়েছে। এ নিয়ে কেবল এটাই বলবো এটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে দমন করার প্রয়াস। আমরা তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা ও বহিষ্কারাদেশ তুলে নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।

ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সহ-সভাপতি আশফার রহমান নবীন বলেন, ক্যাম্পাসের রাজনীতির যে পরিস্থিতি সেটা এখন জলের মত পরিষ্কার। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে অন্যায় অবিচার হচ্ছে তার প্রতিবাদের যে সংস্কৃতি তা গলা টিপে ধরার পাঁয়তারা চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের মত একটা ঘটনার বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে কিন্তু এটা প্রশাসন চায় না। তাই তারা ধর্ষণবিরোধী গ্রাফিতি অঙ্কনের দায়ে রাতারাতি আমাদের দুইজন কমরেডকে বহিষ্কার করে দিল, মামলা করে দিল। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪১,৪২,৪৩ ব্যাচের অছাত্ররা, যারা মাদকের সিন্ডিকেট চালায় তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন মামলা করে না। মামলা করে যার নামে কোনো চাঁদাবাজির অভিযোগে নেই, নিপীড়নের অভিযোগ নেই তাদের বিরুদ্ধে। অশুভ শক্তির এই পাঁয়তারা আমরা রুখে দেব।

অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তাপসী দে প্রাপ্তি বলেন, কি পরিমাণ আস্পর্ধা হলে একটা প্রশাসন দুইজন শিক্ষার্থী যারা সবসময় দুর্নীতি অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে দেয়, বহিষ্কার করে দেয়। বন্ধুগণ আপনারা শুনছেন যে, বারবার জিজ্ঞাসা করার পরেও তারা বলতে পারছে না কোন ধারা মেনে বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রশাসন কোনোভাবেই মামলার কোনো নথি দিচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকে পুঁজি করে, বঙ্গবন্ধুকে অপব্যবহার করে তারা চায় আমরা যারা অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলি, মাস্টারপ্ল্যান চাই তাদের টুটি চেপে ধরতে। বঙ্গবন্ধুকে পুঁজি করে এহেন ন্যাক্কারজনক ঘটনার আমরা ধিক্কার জানাই। আপনারা কি মনে করেছেন যে আপনারা এই মামলা বহিষ্কার দিয়ে চলমান আন্দোলন থামাতে পারবেন? তাহলে আপনারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। যে গ্রাফিতি অঙ্কনের জন্য আমাদের বন্ধুদের মামলা খেতে হয়েছে আমরা আগামীকাল দিনব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়ে এই গ্রাফিতি অংকন করবো।

প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিক অনুষদের দেয়ালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি মুছে ধর্ষণ ও স্বৈরাচার বিরোধী গ্রাফিতি আঁকার ঘটনায় ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি অমর্ত্য রায় এবং সাধারণ সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলীর বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রীয় আইনে মামলা দায়ের করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

কোটা ইস্যুতে ঢাবির বিভিন্ন হলের ৩০০ কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কোটা ইস্যুতে ঢাবির বিভিন্ন হলের ৩০০ কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে

কোটা ইস্যুতে ঢাবির বিভিন্ন হলের ৩০০ কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে

  • Font increase
  • Font Decrease

কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিভিন্ন হলে প্রায় ৩০০টি কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। 

শুক্রবার (২৬ জুলাই) ঢাবির রোকেয়া হল এবং স্যার এ এফ রহমান হল পরিদর্শন করতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। 

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়া, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক আবু হোসেন মুহম্মদ আহসান এবং সংশ্লিষ্ট হলের প্রাধ্যক্ষদ্বয় উপস্থিত ছিলেন।

পরিদর্শন শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে প্রায় ৩০০টি কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হলসমূহের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নিকট হতে আর্থিক বরাদ্ধ পাওয়া সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্নের মাধ্যমে হলসমূহ সংস্কার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হবে বলে উপাচার্য আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

;

আন্দোলন প্রত্যাহার করলেন রাবি শিক্ষার্থীরা



রাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
রাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থীরা

রাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থীরা

  • Font increase
  • Font Decrease

আল্টিমেটাম দিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে সকল প্রকার কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে রাবি শিক্ষার্থী মোকাররম হোসেন বলেন, আমরা সারাদেশের ন্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে আন্দোলন করে বর্তমানে একটি পর্যায়ে এসে পৌঁছেছি। আমাদের একদফা দাবিটির সন্তোষজনক সমাধান হয়েছে। এতে সারা বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ সন্তুষ্ট। তবে আন্দোলনের মধ্যে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। তার প্রেক্ষিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৮দ ফা দাবি ছিলো। ৮ দফা দাবির মধ্যে কোটা নিয়ে ইতোমধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মামলার বিষয়ে আইনমন্ত্রী আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। কারফিউও শিথিল করা হচ্ছে এবং ধীরে ধীরে ইন্টারনেট সেবাও চালু হচ্ছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে রাবি থেকে নেতৃত্ব দেওয়া এই শিক্ষার্থী বলেন, এসবের বাইরে আমাদের দাবি হল- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা প্রশাসন কর্তৃক নিশ্চিত করতে হবে। অতিদ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী শুধুমাত্র ক্যাম্পাসের প্রবেশদ্বারে অবস্থান করতে হবে। আবাসিক হলগুলোতে শুধুমাত্র বৈধ শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করতে হবে। শহীদ ও ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষার্থীদের পরিবারে ক্ষতিপূরণ ও তাদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে এবং আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থীদের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের নিয়ে অতি দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, আমরা দেখতেছি সরকার ধীরে ধীরে আমাদের সকল দাবি মেনে নিচ্ছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, আজ থেকে সকল ধরণের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোনো তৃতীয় পক্ষ এসে আমাদের অহিংস আন্দোলনকে সহিংস করবে, এই সুযোগ আমরা আর দেব না। আমরা আশা করব, সরকার দ্রুত সময়ের মধ্যে আমাদের ৮দফা দাবি পরিপূর্ণ করে সারা বাংলাদেশে শান্তি ফিরিয়ে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করবে। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে আমাদের দাবি আদায় না হলে আমরা আবারও মাঠে নামব।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে রাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সুজন ভৌমিক, অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষাথী তোফায়েল আহমেদ ও মনিমুল হক এবং আরবী বিভাগের শিক্ষার্থী রেজোয়ান গাজী মহারাজ উপস্থিত ছিলেন।

;

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জাবি অধ্যাপকের পদত্যাগ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
জাবি অধ্যাপকের পদত্যাগ

জাবি অধ্যাপকের পদত্যাগ

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারি সকল চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সারাদেশে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদের স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম।

বুধবার (২৫ জুলাই) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার এর মাধ্যমে উপচার্য্য বরারর লিখিত আবেদনের মাধ্যমে তিনি এই স্বেচ্ছায় পদত্যাগপত্র জমা দেন।

জাবির এই সহযোগী অধ্যাপক পদত্যাগ লিখেন, জনাব, আমি বিগত প্রায় ১৪ বছর ধরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে শিক্ষকতা করছি। দেশের সাম্প্রতিক সহিংসতা এবং নৈরাজ্য সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ সরকারের উদাসীনতা এবং শিক্ষকদের দলীয় মনোভাব আমাকে অনেক ব্যথিত করেছে। আমি সব সময় সত্য এবং ন্যায়ের পক্ষে কথা বলেছি এবং শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে সর্বদা পাশে থেকেছি।

তিনি আরও লিখেন, শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের একটি ন্যায্য অধিকার আদায়ের আন্দোলনের বিরুদ্ধে সরকারের আগ্রাসী মনোভাবের কারণে অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীর মূল্যবান জীবন দিতে হয়েছে। সরকার চাইলে দ্রুত শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিতে পারতো, তাহলে এত প্রাণহানির ঘটনা ঘটতো না।

যে সকল শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন, তাদেরকে নিয়ে তাদের পরিবারের অনেক স্বপ্ন ছিল। সন্তান হারানোর বেদনায় তারা আজ দিশেহারা। তাদের সাথে সাথে সমগ্র জাতি আজ শোকাহত। গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ, পুলিশ, র‌্যাব এবং বিজিবি যে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, তা এই জাতির জন্য একটি কালো অধ্যায়ের জন্ম দিয়েছে। স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে হত্যা এবং কিছু সংখ্যক প্রতিবাদী শিক্ষকদের রক্তাক্ত করার মধ্যদিয়ে ১৯৭১ সালের বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। এই হত্যাকাণ্ড দেখেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং শিক্ষকদের আমি নির্লিপ্ত থাকতে দেখেছি। শিক্ষকদের ভূমিকা আজ জাতির কাছে প্রশ্নবিদ্ধ। রাজনৈতিক দলীয় করণের কারণে শিক্ষক সমাজের বিবেক লোপ পেয়েছে, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক ভুলুষ্ঠিত হয়েছে। শহীদ সকল শিক্ষার্থী এবং আহত সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা, ভালোবাসা প্রকাশ করছি এবং তাদের জন্য দোয়া করছি। সমগ্র বাংলাদেশের শিক্ষক সমাজের মূল্যবোধ এবং নৈতিকতাবোধ কে জাগ্রত করতে আমি সহযোগী অধ্যাপক, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিস বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় চাকুরী হতে স্বেচ্ছায় অব্যহতি ঘোষণা করছি।

এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য্য অধ্যাপক ড. নরুল আমীন বার্তা২৪. কমকে বলেন, শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম সেচ্চায় পদত্যাগ করার জন্য একটি আবেদন জানিয়েছে। সেটি আমাদের রেজিস্ট্রার গ্রহণ করেছে। আমি এখনো পদত্যাগপত্র দেখি নাই। বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত পরে বলবো।

;

মুখে কালো কাপড় বেঁধে বাকৃবি শিক্ষকদের প্রতিবাদ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
ছবি: মুখে কালো কাপড় বেঁধে বাকৃবি শিক্ষকদের প্রতিবাদ/বার্তা২৪.কম

ছবি: মুখে কালো কাপড় বেঁধে বাকৃবি শিক্ষকদের প্রতিবাদ/বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ছাত্র-ছাত্রী নির্যাতন এবং হত্যার প্রতিবাদে নিজেদের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) বিবেকবান সাধারণ শিক্ষক উল্লেখ করে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মৌন মিছিল করেন। বিজয় একাত্তর ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন কিছু শিক্ষক। বিভিন্ন বিভাগের সাধারণ শিক্ষকগণ ওই মিছিলে অংশগ্রহণ করেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে কৃষি অনুষদের করিডোর থেকে মৌন মিছিল শুরু হয়ে বিজয় একাত্তর ভাস্কর্যের চত্তরে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে অবস্থান করে নিহত শিক্ষার্থীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা দোআ করা হয়।

এসময় শিক্ষকরা বলেন ছাত্ররা আমাদের আন্দোলনে সহযোগিতা করছিলো কিন্তু আমরা তাদেরকে সহযোগিতা করতে পারিনি। এজন্য আমরা দুঃখিত। আমরা সাধারণ শিক্ষকরা ক্লাস শুরু হওয়ার পরে যাতে আবার শিরদাঁড়া শক্ত করে দাঁড়াতে পারি তার জন্য আজকে আমরা এই রোদের মধ্যে এসে দাঁড়িয়েছি।সবাই শিরদাঁড়া সোজা করেন বুলেট চলবেই তার মধ্যে লড়াই থাকবেই। মনে রাখবেন ৩০ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে আমরা আজ বেঁচে আছি।

;