পিডিএফ জবি শাখার নেতৃত্বে রায়হান-রাইসাতুল জান্নাত



জবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ফিজিক্যালি-চ্যালেঞ্জড ডেভলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (পিডিএফ) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ২০২৪-২৫ সেশনের নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে রসায়ন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রায়হান ব্যাপারীকে সভাপতি এবং ইসলামিক শিক্ষা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের রাইসাতুল জান্নাত জোইয়াইরিয়াকে সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।

সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) পিডিএফ এর প্রতিষ্ঠাতা মিজানুর রহমান কিরণ, জবি পিডিএফ এর প্রধান উপদেষ্টা ও পরিচালক (ছাত্র কল্যাণ) ড. জি এম আল আমিন ও পিডিএফের টিম লিডার মো. নাজমুস সাকিব স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।

কমিটিতে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নিযুক্ত হয়েছেন সমাজকর্ম বিভাগের নাহিদ হাসান রাসেল এবং ইসলামিক শিক্ষা বিভাগের শিহাব মোর্শেদ সোহান।

অন্যান্য সদস্যরা হলেন, জয়েন্ট সেক্রেটারি নাঈম আকন (সমাজবিজ্ঞান বিভাগ), ফাইন্যান্স সেক্রেটারি নিসরাত জাহান লিজা (সমাজবিজ্ঞান বিভাগ), অফিস সেক্রেটারি রূপা আক্তার (লোক প্রশাসন বিভাগ), অর্গানাইজিং সেক্রেটারি সিন্দিদ চৌধুরী (সমাজবিজ্ঞান বিভাগ), ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সেক্রেটারি মো. আফজাল হোসেন (অর্থনীতি বিভাগ), স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেক্রেটারি মোছা. উম্মে মাবুদা (সমাজকর্ম বিভাগ), কমিউনিকেশন সেক্রেটারি সাদিয়া খানম (লোকপ্রশাসন বিভাগ), প্রেস সেক্রেটারি মোছা. রোকাইয়া আক্তার (ভূগোল ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগ), কর্পোরেট নেটওয়ার্কিং সেক্রেটারি মোছা. ফারিয়া ইয়াসমিন (শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট), পলিসি অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি সেক্রেটারি মেজবা সুলতানা জ্যোতি (লোক প্রশাসন বিভাগ), লজিস্টিকস সেক্রেটারি মেহেদী হাসান (ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগ), আইটি সেক্রেটারি নওরিন আক্তার (সমাজবিজ্ঞান বিভাগ), ভলেন্টিয়ার ম্যানেজমেন্ট সেক্রেটারি তনিমা বিনতে সাইফ (লোকপ্রশাসন বিভাগ), কালচারাল সেক্রেটারি রহনুমা নূরাইন বুশরা ( সমাজবিজ্ঞান বিভাগ), লিটারেচার অ্যান্ড পাবলিক সেক্রেটারি মো. সাজ্জাদ হোসেন (অর্থনীতি বিভাগ), স্পোর্টস সেক্রেটারি বিপুল চন্দ্র (উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ), মো. সাজ্জাদ হোসেন (অর্থনীতি বিভাগ), এক্সিকিউটিভ মেম্বার মিন্টু মিয়া (ইতিহাস বিভাগ)।

২০০৮ সালে পিডিএফ প্রতিষ্ঠার পর থেকে ঢাবি, রাবি, জবি, জাবিসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সার্বিক সহযোগিতা ও মঙ্গলের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। জবি পিডিএফ এর প্রধান উপদেষ্টা ও পরিচালক (ছাত্র কল্যাণ) ড. জি এম আল আমিন , জবি পিডিএফ এর উপদেষ্টা মন্ডলীর আহ্বায়ক এবং সমাজকর্ম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুহা. শহীদুল হক, সদস্য সচিব অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাজেশ কুমার দেব ও সদস্য সচিব লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহ মো. আজিমুল এহসান এর তত্ত্বাবধানে জবি পিডিএফ দীর্ঘদিন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সার্বিক উন্নয়নের জন্য সফল ভাবে কাজ করে আসছে।

এরই ধারাবাহিকতায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে অধ্যয়ন, বিভিন্ন বৃত্তির ব্যবস্থাকরণ, আবাসন নিশ্চিতকরণ, সফট স্কিল ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রামসহ নানান সাংস্কৃতিক কার্যক্রম সফলতার সাথে পরিচালনা করে যাচ্ছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা থেকে বিভিন্ন সময় আর্থিক সহায়তা পেয়েছে ১৫জন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী। ৬২ জন প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সহয়তায় কাজ করে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক ভলেন্টিয়ার্স৷ যারা তাদের কর্মক্ষেত্রের মধ্যে দিয়ে মানবতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছে।

উল্লেখ্য, পিডিএফ এর প্রতিষ্ঠাতা মিজানুর রহমান কিরণ এ সংগঠনের সফলতার জন্য ২০১৭ সালে “FORBES 30 UNDER 30” পুরষ্কারে ভূষিত হোন।

   

ডোনাল্ড লু'র আগমনের প্রতিবাদে জাবিতে মানববন্ধন



জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ডোনাল্ড লু'র আগমনের প্রতিবাদে জাবিতে মানববন্ধন

ডোনাল্ড লু'র আগমনের প্রতিবাদে জাবিতে মানববন্ধন

  • Font increase
  • Font Decrease

মার্কিন সরকারের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী 'ডোনাল্ড লু'র ঢাকা আগমনের প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের একাংশের নেতা-কর্মীরা।

মঙ্গলবার (১৪ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার সংলগ্ন মূল সড়কে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধন শেষে শহীদ মিনার থেকে একটি মিছিল বের হয়ে মূল সড়ক দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবন সংলগ্ন মুরাদ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

মানববন্ধনে ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার একদিকে গাল ভরে বলছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার প্রশ্নে আপোষহীন, এই যুদ্ধ বন্ধ হওয়া দরকার। আরেকদিকে হোটেল শেরাটনে বসে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কিভাবে বাণিজ্য করা যায় সেটা নিয়ে কথা বলছে। এই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই ইসরাইলের একমাত্র মদদদাতা ও অস্ত্র সরবরাহদাতা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবে ফিলিস্তিনের একের পর এক বোমাবর্ষণ হচ্ছে এবং নারী ও শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। ফিলিস্তিনের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইসরায়েল গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কিভাবে বাণিজ্য করা যায় বাংলাদেশ সেই আলাপ-পরামর্শ করছে। এছাড়া আওয়ামী লীগ সরকার সারাদেশে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে গণসমর্থন গড়ে তোলার কাজ করছে সেই সরকার আরেকদিকে ইসরায়েলের কাছ থেকে নজরদারির যন্ত্রপাতি কিনছে। আমরা এই দ্বিচারিতার প্রতিবাদ জানাই।

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বুকে দাঁড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারকে অগ্রাহ্য করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের স্বার্থে তাদেরকে বিনামূল্যে পড়াশোনার সুযোগ করে দিতে স্কলারশিপ দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যদি ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদেরকে সমর্থন জানাতে পারে তাহলে ফিলিস্তিনিদের প্রতি ঐতিহাসিক সংহতিবোধের জায়গা থেকে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কেন নিশ্চুপ? জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন হল ও পর্যাপ্ত অবকাঠামোগত সুবিধা থাকা সত্বেও প্রশাসন কেন ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেওয়ার ব্যাপারে নিশ্চুপ তা আমাদের অজানা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপে পড়ার সুযোগ দিয়ে উদারতা ও সম্মান দেখিয়েছে। আমরা চাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের ডেকে এনে পূর্নাঙ্গ স্কলারশিপে পড়াশোনার সুযোগ দেওয়া হোক। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই তাদেরকে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হোক। সম্ভব হলে বিশেষ বিবেচনায় এই শিক্ষাবর্ষেই তাদেরকে সুযোগ দেওয়া হোক।

ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের একাংশের সহ-সভাপতি আশফার রহমান নবীন বলেন, বাংলাদেশের শাসক শ্রেণি কি চায় আমরা সেটি নিশ্চিত নয়। বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে আমরা তাদের দ্বিচারিতা লক্ষ্য করি। তারা একদিকে ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলছি, অন্যদিকে গোপনে ইসরায়েলের কাছ থেকে নজরদারি প্রযুক্তি কিনছে। যাতে তারা বাংলাদেশের গণমানুষের, বিরোধী মতের, বিরোধী পক্ষের ও সরকারের গঠনমূলক সমালোচকদের মুখ চেপে ধরে রাখতে পারে ।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী) জবি শাখার সংগঠক সজীব আহমেদ বলেন, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বর্বর হামলায় প্রতিদিন অসংখ্য নারী ও শিশু নিহত হচ্ছে। ইসরায়েল যুদ্ধের নীতি ভঙ্গ করে হাসপাতালসহ বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালাচ্ছে। মূলত যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধ জারি রেখেছে। ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। আমরা এই মানববন্ধন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদেরকে সংহতি জানাচ্ছি।

এছাড়াও মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী জাবি শাখার সংগঠক আবিদ ইসলাম, নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফারিয়া জামান ও ইমরান হাসান শুভ।

;

তপ্ত ক্যাম্পাসে কৃষ্ণচূড়া, সোনালু আর জারুলের মুগ্ধতা



আছিয়া খাতুন, রাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে

কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে

  • Font increase
  • Font Decrease

গ্রীষ্মের তাপদাহে তপ্ত প্রকৃতি। প্রখর রোদে প্রকৃতি যখন পুড়ছে, সেই সময়ে আবির রাঙা রঙে সৌরভ ছড়াচ্ছে রক্তিম কৃষ্ণচূড়া। কেড়ে নিচ্ছে সূর্যের সবটুকু উত্তাপ।

কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে-আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে’ গানটির মতো যেন ভুবন ভুলাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পরতে পরতে ফুটেছে এই টুকটুকে লাল কৃষ্ণচূড়া।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি খ্যাত এই ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে আরও কয়েকগুন। ঈদের ছুটি শেষে ক্যাম্পাসে আসা শিক্ষার্থীদের প্রকৃতির অপরূপ রূপে রাঙিয়ে দিতেই যেন পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে লাল কৃষ্ণচূড়ার পসরা সেজেছে। নয়নাভিরাম এসব দৃশ্য দেখে দাবদাহের মাঝে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মনে এনে দিচ্ছে শিল্পের দ্যোতানা। এ যেন সিঁদূর লাল রঙে শিল্পীর রঙ-তুলিতে রাঙানো ক্যানভাস।

বছর জুড়ে সেজে থাকা মতিহারের ৭৫০ একরের এই সবুজ চত্ত্বরে আগুনঝড়া কৃষ্ণচূড়ায় এক নতুন নান্দনিকতা যোগ করেছে। শুধু কি কৃষ্ণচূড়া! এর সঙ্গে আরও ডানা মেলেছে ‘বাংলার চেরি’ খ্যাত বেগুনি জারুল আর ঝরনার ন্যায় হলদে সোনালি আভা ছড়ানো সোনালু। তপ্ত গ্রীষ্মের প্রখর তাপে সকল রুক্ষতা ছাপিয়ে কৃষ্ণচূড়া, জারুল আর সোনালুতে পুরো ক্যাম্পাস সেজেছে বর্ণিল সাজে। চোখ ধাঁধানো এসব ফুলের বর্ণিল আভায় প্রত্যেকের নয়ন জুড়ায়। এ যেন হলুদ, লাল আর বেগুনি রঙে রাঙানো এক স্বর্গরাজ্য।

সোনালুর দোল লেগে প্রকৃতির প্রাণ দোলে

ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেটের ডান পাশের দুটি গাছে, ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের পেছনে বৃহদাকার প্রায় ১৫টি গাছে, পূর্বপাড়া মসজিদের সামনে, বধ্যভূমি এলাকার পুকুর পাড়ে, নির্মাণাধীন শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান হলের পশ্চিম পাশে, স্টেশন বাজারে, পরিবহণ মার্কেটে, সত্যেন্দ্রনাথ বসু একাডেমিক ভবনের প্রবেশ পথে, শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ সিনেট ভবনের সামনে, উপাচার্য বাসভবনের ভেতরে এবং প্যারিস রোড সংলগ্ন বাইরের প্রাচীরের ধার ঘেষে প্রায় ১১টি গাছে, মন্নুজান হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হল, বেগম খালেদা জিয়া হল, তাপসী রাবেয়া হল এবং রোকেয়া হলের সামনেসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় ফুটে থাকা লাল কৃষ্ণচূড়া তার আশপাশের এলাকাকে রাঙিয়ে তুলেছে।

কৃষ্ণচূড়া ছাড়াও ক্যাম্পাসের জারুল স্ট্রিট খ্যাত প্যারিস রোড থেকে বেগম খালেদা জিয়া হল হয়ে নির্মাণাধীন শেখ হাসিনা হলের রাস্তার দুই ধারে এবং চারুকলা থেকে ফ্লাইওভার পর্যন্ত রাস্তার দুই ধারে শোভা পাচ্ছে বেগুনি জারুলের ঝুমকো। এছাড়া ক্যাম্পাসের জুবেরী মাঠের পশ্চিম পাশে ফুটেছে কিছু সোনালু। শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী বা দর্শনার্থীদের যেন হৃদয় কেড়ে নিচ্ছে নয়ন জুড়ানো এসব কৃষ্ণচূড়া, জারুল ও সোনালু ফুল। সকালে এসকল গাছের নিচে ঝরে পড়া রক্ত লাল, বেগুনি এবং হলুদ পাপড়ি যেন বর্ণিল পুষ্পশয্যা। এসব গাছের নিচে শিক্ষার্থীরা আড্ডা আর খুনসুটিতেও মেতে উঠার পাশাপাশি বাহারি পোশাকে ফ্রেমবন্দিও করছেন নিজেদেরকে।

কৃষ্ণচূড়ার সাথে নিজেদেরও ফ্রেমবন্দি করছেন শিক্ষার্থীরা

কৃষ্ণচূড়া, জারুল ও সোনালুর এই বর্ণিল সময়টা উপভোগ করছেন জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী পরমা পারমিতা বলেন, ‘বর্তমানে ক্যাম্পাসের বেশিভাগ জায়গায় সবুজের মধ্যে তপ্ত রোদে আগুনের মতো জ্বলছে লাল কৃষ্ণচূড়া। অসম্ভব সুন্দর বেগুনি রঙের থোকা থোকা জারুল ফুলও এসময় ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় দেখি সবুজ পাতা ছাপিয়ে সোনালি রঙের ফুলে সেজেছে সোনালু গাছ। বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে কৃষ্ণচূড়া আর জারুল যে রং ছড়িয়েছে তা চোখে না দেখলে ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সব মিলিয়ে সুন্দরভাবে উপভোগ করছি এই সময়টা।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী সুমাইয়া বিনতে নূর বলেন, গ্রীষ্মের তপ্ত রোদে রক্তের মতো টকটকে লাল কৃষ্ণচূড়া আর জারুল ফুল দিয়ে আচ্ছাদিত হয়েছে পুরো ক্যাম্পাস। রাস্তার পাশ দিয়ে হেটে গেলে মনে হয় এক টুকরো স্বর্গ। এসব দৃশ্য স্বচক্ষে দেখলে, কেউ মুগ্ধ না হয়ে পারবে না। সকালের দিকে মেয়েদের হলের রাস্তাগুলোতে পড়ে থাকা কৃষ্ণচূড়ার পাপড়ি দেখে যেন পুষ্পশয্যা মনে হয়। এককথায়, কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম আভা আর জারুল ফুলের বেগুনি পাপড়ির নমনীয়তা ক্যাম্পাসকে রাঙিয়ে তুলছে।

উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা বলছেন, কৃষ্ণচূড়ার বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিক্স রেজিয়া। এর আদিনিবাস মাদাগাস্কার হলেও ভারত, নেপাল, মিয়ানমার, পাকিস্তানসহ অনেকে দেশেই এর বিস্তৃতি। কৃষ্ণচূড়া লাল, হলুদ ও সাদা রঙেরও হয়ে থাকে। তবে আমাদের দেশে লাল ও হলুদ রঙের ফুল দেখা গেলেও সাদা রঙের কৃষ্ণচূড়া দেখা যায় না। জারুল ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম লেজারস্ট্রোমিয়া স্পেসিওসা। জারুল ভারতীয় উপমহাদেশের নিজস্ব বৃক্ষ। বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও চীন, মালয়েশিয়া প্রভৃতি অঞ্চলে জারুলের সন্ধান মেলে এবং সোনালু ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম ক্যাসিয়া ফিস্টুলা; যা ভারতীয় উপমহাদেশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় পাওয়া যায়। এটি অমলতাস নামেও পরিচিত।

গাছজুড়ে শুধু ফুল আর ফুল, এ যেন প্রকৃতির অলংকার

বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. এ এইচ এম মাহবুবুর রহমান বলেন, কৃষ্ণচূড়া, সোনালু, ক্যাসিয়া প্রজাতির বেশকিছু ফুলসহ জারুল এবং রুদ্রপলাশ এ সময়ে ফোটে। গ্রীষ্মকালে এসকল ফুল প্রকৃতিকে শোভামন্ডিত করে। এগুলো উদ্ভিদগুলো মূলত শোভাবর্ধনকারী বা অর্নামেন্টাল প্ল্যান্ট। এসব উদ্ভিদের কাঠের তেমন গুরুত্ব নেই। যেহেতু ফুল সকলেরই ভালো লাগে। ফুল দেখলে সকলেরই মন ভালো হয়ে যায়। তাই এই উদ্ভিদের ফুলগুলো গ্রীষ্মকালে সকলের মন প্রফুল্ল রাখে।

শিক্ষার্থী হিসেবে একটাই চাওয়া, বসন্তের শেষে গ্রীষ্মের আগমনী বার্তা নিয়ে বার বার ক্যাম্পাসের প্রকৃতিকে নতুন করে সাজিয়ে তুলুক রক্তিম কৃষ্ণচূড়া, বেগুনি জারুল ও সোনালী আভা ছড়ানো সোনালু। প্রখর রোদের তপ্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছড়াক নান্দনিক সৌন্দর্য। বুক ভরা স্বপ্ন নিয়ে কঠিন সময়েও কৃষ্ণচূড়া, জারুল আর সোনালুর মতো সুভাস ছড়াক এখানের শিক্ষার্থীরাও।

;

ব্লাড ক্যান্সারে ঝরে গেল ইবির মেধাবী শিক্ষার্থী ‘ফুল’



ইবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। ওই শিক্ষার্থীর নাম সামিয়া আক্তার ফুল। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের প্রথম স্থান অধিকারী শিক্ষার্থী।

মঙ্গলবার (১৪ মে) সকালে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার বাসা পাবনা জেলার সদর উপজেলায়। ৩ ভাইবোনের মধ্যে সে দ্বিতীয়। গণিত বিভাগের সভাপতি তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সহপাঠী সূত্রে জানা যায়, ভর্তি পরীক্ষার সময় থেকেই সামিয়া অসুস্থ ছিল। তবে তখন ক্যান্সার ধরা না পড়লেও এবছর রোজার মাস থেকে সে আবারও অসুস্থ হয়ে যায়। চিকিৎসাকালীন সময়ে তার কাশির সাথে ব্লাড যাচ্ছিলো, রক্তের ক্রিয়েটিনিন বেড়ে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রক্ত জমাট বাধছিল। সর্বশেষে বমির পাশাপাশি সে শক্ত কোনো খাবারও খেতে পারছিলো না। এছাড়াও সে এনিমিয়াতেও আক্রান্ত ছিল।

সামিয়ার বান্ধুবি জেরিন আক্তার মিম বলেন, সামিয়া আমার ছোটবেলার বান্ধবী। ফুলের মতোই হাসিখুশি মেয়ে হওয়ায় ওর ফুল নামটা সবার পছন্দের ছিল। আমাদের স্কুল, কলেজ একসাথে ছিল। ইবিতেও আমরা একসাথেই এসেছিলাম। আমি এখনো বিশ্বাস করতে পারছিনা যে ও আর নেই। সবাই ওর জন্য দোয়া করবেন।

সামিয়ার মৃত্যুতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিভাগের পক্ষ থেকে শোক জানানো হয়েছে। বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. সজীব আলী বলেন, সে বিভাগের প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় প্রথম হয়েছিল। রোজার আগে সে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতে যাবে বলে জানায়। কিন্তু আজ সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছে। তার মতো এমন এক মেধাবী শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে আমরা গভীর শোকাহত। তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।

;

মধ্যরাতে রাবিতে ফের অস্ত্রের মহড়া, হলে পুলিশের তল্লাশি



রাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের দুপক্ষের মধ্যে ফের উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। নেতাকর্মীরা রামদা, রড ও দেশীয় অস্ত্র হাতে ফের মহড়া দিয়েছে।সোমবার (১৩ মে) মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ সোহরাওয়ার্দী ও মাদার বখস হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, 'উদ্ভুত এই সমস্যা একটি সংগঠনের। এই সংগঠন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যা নিরসনের চেষ্টা চলছে। তবে তদন্ত কমিটি গঠন ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার বিষয়টি হল প্রশাসন দেখছে।'

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৩ মে মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ সোহরাওয়ার্দী হলে নেতাকর্মী নিয়ে শাখা ছাত্রলীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মোর্শেদ প্রবেশ করেন। পথে হল ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত নেতা আতিকুর রহমানের সঙ্গে দেখা হয়। আতিকুরের অভিযোগ, 'নিয়াজ মোর্শেদ বহিরাগতদের নিয়ে হলে প্রবেশ করেন এবং আমাকে হত্যার হুমকি দেন। হলে হাত-পা ভেঙে ফেলতে চান। তখন আমি হলের বাহিরে আসি।'

এ ঘটনায় রাত ২টার দিকে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের অনুসারীরা লাঠিসোটা, রড, রামদা সহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হলের সামনে অবস্থান নিয়ে শেষ রাত পর্যন্ত মহড়া দেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অতিরিক্ত পুলিশ এনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং হলে পুলিশসহ তল্লাশি চালিয়ে অনাবাসিক ২০ শিক্ষার্থীকে নামিয়ে দেয় হল কর্তৃপক্ষ।

হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করে নিয়াজ মোর্শেদ বলেন, 'পূর্বপরিকল্পিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এই ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছেন। তারা পরবর্তী সম্ভাব্য পদপ্রার্থীদের বিতাড়িত করে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে চান। এজন্য তারা হলের চলমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের পরিবর্তে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতার পদ সৃষ্টি করে রাজনৈতিকভাবে অন্যদের হেয় করছেন। আমাদের নেতাকর্মীদের ডেকে ডেকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে অভিযোগ তুললে উল্টো বিভিন্ন ট্যাগ দেয়া হচ্ছে। পরিকল্পিত না হলে এমন হতো না।'

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, 'কাউকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করা হচ্ছে না। বরং তিনিই (নিয়াজ) দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চেষ্টা করছে।'

অস্ত্রের মহড়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'বহিরাগত নিয়ে হলে কোনো বিশৃঙ্খলা যাতে না করতে পারে সেজন্য আমরা অবস্থান নিয়েছি। সার্বিক বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে অবিহিত করা হয়েছে। তাদের নির্দেশনা অনুসারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।'

হল প্রাধ্যক্ষ ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, 'পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশসহ হলকক্ষগুলোতে অভিযান চালিয়ে অনাবাসিক ২০ শিক্ষার্থীকে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িতদের বিষয়ে বিকেলে হল প্রশাসনের সভা হবে। এতে তদন্ত কমিটি গঠন সহ অন্যান্য সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।'

এর আগে, গত ১১ মে শহিদ সোহরাওয়ার্দী হলে অতিথি কক্ষে বসাকে কেন্দ্র করে রাতভর সংঘর্ষে জড়ায় শাখা ছাত্রলীগের দু'পক্ষ। এতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ সহ ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে সাত ছাত্রলীগকর্মী আহত হয়। এ ঘটনায় ১৩ মে সভা ডেকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের কথা বলেই ক্ষান্ত থাকেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

;