অবহেলায় বেহাল ঢাবির হল অডিটোরিয়াম, থমকে সাংস্কৃতিক চর্চা



কানজুল কারাম কৌষিক, ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
অযত্ন-অবহেলায় বেহাল ঢাবির হল অডিটোরিয়াম, থমকে সাংস্কৃতিক চর্চা

অযত্ন-অবহেলায় বেহাল ঢাবির হল অডিটোরিয়াম, থমকে সাংস্কৃতিক চর্চা

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল, মাস্টারদা সূর্যসেন হল ও সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে রয়েছে বিশাল ও সুপরিকল্পিত ভাবে নির্মিত অডিটোরিয়াম। কিন্তু অডিটোরিয়াম থেকে টিভি রুম ও স্পোর্টস রুমে রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিচর্যার অভাবে বহুবছর যাবৎ পর্দা উঠছে না অডিটোরিয়ামের মঞ্চে। ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে কাঠামো এবং বিলুপ্ত হচ্ছে হলের শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক চর্চা। এটাকে ‘সাংস্কৃতিক দৈন্য দশা’ বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ১৯৩১ সালের ১১ আগস্ট উদ্বোধন করা হয়। ১৯৬৬ ও ১৯৬৭ সালে তৎকালীন সর্ববৃহৎ আবাসিক হল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় মাস্টারদা সূর্যসেন হল ও হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল। হলের অভ্যন্তরে আবাসিক শিক্ষার্থীদের সুস্থ বিনোদন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চর্চার উদ্দেশ্যে নির্মাণ করা হয় অডিটোরিয়াম। সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের অডিটোরিয়ামটি এখন টিভি রুম হিসেবে পরিচিত, সূর্যসেন হল অডিটোরিয়াম শহীদ এইচ এম ইব্রাহীম সেলিম মিলনায়তন ও মুহসিন হলেরটি মুহসিন হল অডিটোরিয়াম হিসেবেই পরিচিত। এ অডিটোরিয়ামগুলোতে রয়েছে প্রমাণ আকারের মঞ্চ ও বিশাল দর্শকসারির স্থান। মঞ্চের পাশেই রয়েছে মঞ্চ ব্যবহারকারীদের জন্যে প্রয়োজনীয় হল অডিটোরিয়াম কার্যালয়, টয়লেটসহ যাবতীয় প্রয়োজনীয় সুবিধাদি।

তবে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মুহসীন হলের অডিটোরিয়ামে হয় টেবিল টেনিস খেলা এবং বিশাল স্থান নিয়ে বিভিন্ন ধরণের কারুশিল্প নির্মাণ কাজ। কারুকাজে ব্যবহৃত উপাদান ও ছড়ানো-ছিটানো আবর্জনায় নোংরা পরিবেশ হয়ে আছে পুরো মিলনায়তন। মঞ্চে পর্দা টানিয়ে পেছনে সপরিবারে বসবাস করছেন কিছু মানুষ। তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা নিজেদেরকে হলের কর্মচারীর পরিবার বলে পরিচয় দেন। মঞ্চের পেছনেই দেখা যায় ‘হাজী মুহম্মদ মুহসিন হল অডিটোরিয়াম কার্যালয়’ যা মুহসীন হল কল্যাণ সমিতি দ্বারা স্থাপিত। এই কার্যালয়টি এখন লোকচক্ষুর অন্তরালে। অডিটোরিয়াম কার্যালয় এর অস্তিত্বের ব্যাপারে হলের অধিকাংশ শিক্ষার্থী অজ্ঞাত। দু পাশের সিড়ি বেয়ে উপরে উঠলে দেখা যায় কর্মচারীদের আবাসস্থল হিসেবে ব্যাবহার করা হচ্ছে। আবার,বিভিন্ন স্থানে ও ছাদ থেকে খসে পড়েছে সিমেন্ট। অধিকাংশ স্থানে ছাদের লোহা দৃশ্যমান।


এদিকে সূর্য সেন হলের শহীদ এইচ এম ইব্রাহীম সেলিম মিলনায়তনের অবস্থাও ভয়ংকর। এখানে ২টি প্রবেশদ্বারই তালাবদ্ধ অবস্থায় আছে দীর্ঘদিন। ভেতরে হলের যাবতীয় আসবাবপত্র রাখা আছে। দু পাশের সিড়ি বেয়ে উপরে উঠলে দেখা যায় কর্মচারীদের আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বাইরে থেকে দেখা যায় উপরের রেলিং খসে গেছে।

এ হলে বহু বছর যাবৎ কর্মরত ব্যক্তিবর্গের সূত্রে জানা যায়, বহু বছর যাবৎ এখানে কোন অনুষ্ঠান হয় না। মিলনায়তনের রেলিং ধসে কয়েক বছর আগে ছাত্র ও কর্মচারীরা আহত ও হয়েছিলেন।

এ ব্যাপারে মাস্টারদা সূর্যসেন হলের প্রাধ্যাক্ষ অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন ভূঁইয়া বলেন, মিলনায়তনটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে তাই এটি বন্ধ রাখা হয়েছে। আমাদের প্রোগ্রামগুলি টিভিরুম এবং বিভিন্ন বড় রুম আছে সেগুলোতে হয়। অডিটোরিয়ামগুলি সংস্কার যদি আমরা করতে পারি তা করব। আমি যতদূর জানি,এটা ভেঙে ২০ তালা করার কথা, একটা প্ল্যান আছে।

হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যাক্ষ ড. মাকসুদুর রহমানের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলতে চাইলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।

হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের ১৭-১৮ সেশনের আবাসিক ছাত্র মাহিন আহমেদ চান হলের অডিটোরিয়ামে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলো মঞ্চায়িত হোক।

তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক সহাবস্থান থাকলে প্রশাসনের ওপর একটা চাপ থাকে। চাপ থাকলে প্রশাসন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড চালু রাখতে এক প্রকার বাধ্য হয়। হলে অন্য কেউ নাই যদি থাকে তাহলে চাপ কারা প্রয়োগ করবে? হল সংসদগুলো অকার্যকর হয়ে আছে। হল সংসদ অকার্যকর থাকলে সাংস্কৃতিক প্রোগ্রামগুলো নেবে কারা? এদিকে সাংস্কৃতিক ছাত্র সংগঠন নাই, সাংস্কৃতিক সংগঠনের অনুপস্থিতি এই সব কিছু মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামোগুলো এক প্রকার ব্যবহারহীন হয়ে পরে থাকে। এজন্যই গণতান্ত্রিক সহাবস্থানের প্রয়োজন। নইলে প্রশাসন এখনের মতো দায়মুক্ত হয়ে থাকবে এবং দায় টা অনুভব করানোর জন্যই গণতান্ত্রিক সহাবস্থান দরকার’।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এন্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তানভির নাহিদ খান শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক ও নাট্যচর্চার গুরুত্বের ব্যাপারে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নাটকের শীর্ষ স্থান ছিল। ১৯৪৭ সালে যখন দেশভাগ হল তখন এই অঞ্চলের নাট্য চর্চা ঢাবিকে কেন্দ্র করেই হত। সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শহীদুল্লাহ হল জগন্নাথ হল এর অডিটোরিয়াম ছিল নাটকের উপযোগী। ওই সময় আমাদের দুই ধরণের নাট্য চর্চা হত। এক দল প্রগতিশীল নাট্যকারদের যারা ভাষা ও জাতীয়তাবাদ ভিত্তিক নাট্য চর্চা করত। আরেকটা দল তাত্ত্বিকদের মতে ইসলামী রক্ষণশীল নাট্যচর্চা করত। ঢাবির শিক্ষক যারা ছিলেন, মুনির চৌধুরী, আখতার ইবনে সাঈদ,সাঈদ আহমেদ, সৈয়দ ওয়ালিওল্লাহ এদের নাটক ও ঢাবিতে দারুণ চর্চা ছিল, হল ভিত্তিক এ চর্চা গুলো চমৎকার ছিল। ডাকসুর একটি নাটকের দল ছিল ‘নাট্যচক্র’। এগুলো যে হচ্ছে না তাকে এক ভাবে বলতেই পারেন ‘সাংস্কৃতিক দৈনদশা’।

কয়েকবছর আগেই উদ্যোগ নিয়ে হলে হলে নাটকের উৎব হয়েছে। ডাকসুতে যখন নির্বাচনের পর আয়োজন হল তখনো হলে হলে ডাকসু থেকে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা হত। এগুলো হওয়াতো উচিত। না হওয়ার ফলে এখন আর গুণীজন উঠে আসে না। হল ভিত্তিক নাট্য চর্চা হলে অনেকে অভিনয় করত, নাটক লিখতো, নাটকের নির্দেশনা দিত এরাই পরে মেইন স্ট্রিমে বা জাতীয় পর্যায়ে ভূমিকা রাখে। আজকে স্বাধীন বাংলাদেশের বিখ্যাত নাট্যকাররা কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল ভিত্তিক চর্চা করেই আসছেন। যেমন রামেন্দ মজুমদার,ম হামিদ, মামুনুর রশীদ এরকম গুরুত্বপূর্ণ নাট্যকাররা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এসেই আমাদের জাতীয় পর্যায়ের নাট্যচর্চা কে বেগবান করেছেন।

কিন্তু এখন শিক্ষার্থীরা নাট্যচর্চা না করে মোবাইলে ফেসবুকিং করে সময় কাটাচ্ছে। টিভি রুমেও খেলা ছাড়া শিক্ষার্থী ওইরকম যায় না। তাই নাটকের অডিটোরিয়ামগুলো নাটকের কাজেই ব্যবহার করা উচিত। এর ফলে সুস্থ সংস্কৃতির চর্চা বেগবান হবে।একজন মানুষ যখন নাটকের সাথে যুক্ত হয় তখন সে সুন্দর ভাবে কথা বলা শেখে, থিয়েটারে কাজ করার ফলে সময়ানুবর্তিতা শেখে, দলগত হয়ে কাজ করা শেখে, সৃষ্টিশীল চর্চা হয়, সমাজের সমকালীন ঘটনা গুলো নাটকের লেখায় চলে আসে। এগুলো মানুষ কে মননশীল করে তোলে। কিন্তু এ সুস্থ চর্চা না করে অনেক শিক্ষার্থী মাদকের সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে, থিয়েটার করতে হলে পড়াশোনা করতে হয় এগুলো না করার ফলে অনেকে পড়াশোনা থেকে সরে যাচ্ছে।

   

ভূমিকম্পে কুবির আবাসিক হলে ফাটল



কুবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ভূমিকম্পে কুবির আবাসিক হলে ফাটল

ভূমিকম্পে কুবির আবাসিক হলে ফাটল

  • Font increase
  • Font Decrease

ভূমিকম্পের কারণে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, কাজী নজরুল ইসলাম হল এবং নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলের দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ৯ টা ৩৫ মিনিটে এই ভূ-কম্পনটি অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে ৫.৫ মাত্রার ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল কুমিল্লার দক্ষিণে  লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে বলে জানা গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু হলের ২০৯ নম্বর কক্ষের দেয়াল, পাঁচতলার দক্ষিণ পাশের ব্লকের ৫০৪ নম্বর কক্ষের সামনের করিডোরের মেঝের দুইটি টাইলস উঠে গেছে৷ একই তলায় নতুন ও ব্লকের সংযোগস্থলের করিডোরে নতুন ফাটল দেখা গেছে। পাশাপাশি দক্ষিণ ব্লকের দুই করিডোরের মাঝের সংযোগস্থলে পুরো পাঁচ তলাব্যাপী ফাটল লক্ষ্য করা গেছে ৷


নজরুল হলের দোতলার ২০৭ নম্বর কক্ষের দেয়ালে, টিভি রুমের সামনের পিলারের সংযোগস্থলে নতুন ফাটল দেখা গেছে।

মোতালেব নামে এ হলের একজন আনসার সদস্য জানান, ‘আমি নিচতলা, দুইতলা ও তিনতলায় ফাটল দেখে এসেছি। এগুলো আগে ছিলো না।'

ফয়জুন্নেছা হলের পাঁচ তলার ৫০৩ ও ৫১১ নম্বর কক্ষে এবং চার তলার ৪০৩ নম্বর কক্ষের সামনের পিলারের নিচে নতুন ফাটল দেখা গেছে।

এছাড়া শেখ হাসিনা হলের রিডিংরুমের দেয়ালে হালকা ফাটল লক্ষ্য করা গেছে৷

বঙ্গবন্ধু হলের ৫১৯ নং কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী এমরান হোসেন বলেন, 'ভূমিকম্পের সময় আমরা নিচে নামতে পারিনি। কম্পন থামলে দক্ষিণ  ব্লকে পাশাপাশি দুইটি টাইলস উপরের দিকে হালকা উঠে থাকতে দেখা যায়।' 

নজরুল হলের ২০৭ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী এহসান জানান, ‘প্রথমে আমরা কিছু বুঝতে পারিনি৷ ঝাঁকুনির মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা সবাই দৌড়ে বাইরে চলে যাই। কিছুক্ষণ পর রুমে এসে দেখি দেওয়ালে ছোটবড় কিছু ফাটল তৈরি হয়েছে।'

হলগুলোর প্রভোস্টদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা পুরো বিষয়টা পর্যবেক্ষণ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।

যোগাযোগের পর বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট সরেজমিনে ফাটলগুলো পরিদর্শন করেছেন৷ তিনি জানান, দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরে কথা বলবেন বিষয়টি দেখার জন্য।

নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) মো: আবদুল লতিফ বলেন, 'আমি বিষয়টা জানতাম না, আপনার থেকে শুনেছি। যদি স্ট্রাকচারাল কোনো সমস্যা হয় তবে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর সাথে কথা বলে এই বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেবো। যদি সত্যিই ভূমিকম্পের কারণে স্ট্রাকচারাল কোনো সমস্যা হয়, তবে তা অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ। এই বিষয়ে আমরা নিজেরা খোঁজ নিয়ে এক্সপার্টদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।' 

;

ভূমিকম্পে ভেঙে পড়ল দরজার ফ্রেম, আতঙ্কে লাফ দিল শিক্ষার্থীরা



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ভূমিকম্পে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের রিডিং রুমের দরজা, ভঙ্গুর রেলিং এবং বিভিন্ন রুমের ছাদের পলেস্তারা ভেঙে পড়েছে। এসময় প্রাণ বাঁচাতে আতঙ্কে লাফিয়ে পড়েছেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটের দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে হলে বসবাসরত শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক শিক্ষার্থী বার্তা২৪.কমকে জানান, কিছু শিক্ষার্থী ভূমিকম্প আতঙ্কে হলের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা থেকে লাফিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেছেন। ভূমিকম্পের তীব্র কম্পনের ফলে ভয়ে তারা লাফিয়ে পড়েন বলে ধারণা করছেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ওই শিক্ষার্থীদের মধ্যে কেউ গুরুতর আহত হয় নি। তাদের কারোরই নাম-পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।

সরেজমিনে দেখা যায়, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের রিডিং রুমের দরজার ফ্রেম ভেঙে পড়েছে। তাছাড়াও ৩৫১, ২৪৪, ২৪৮, ৩৪৮, ৩৪৪ সহ আরো কিছু রুমের ছাদের পলেস্তারা খসে পূর্বেই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। তাছাড়াও ২৪৯ ও ৪৩৮ নং রুমসহ আরো কিছু রুমে ছাদের ঝুঁকি থাকায় সিলিং ফ্যান লাগানো যাচ্ছে না। এমন অবস্থায় ভূমিকম্প হওয়ায় ভঙ্গুর এ সকল স্থান থেকে পলেস্তারা খসে পড়তে শুরু করে। ফলে পুরো হলের শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিকভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ১২ নভেম্বর বার্তা ২৪.কমের 'ভেঙে পড়েছে মুহসীন হলের ছাদের পলেস্তারা,আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা' শীর্ষক এক প্রতিবেদনে হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের ঝুঁকিপূর্ণ চিত্র উঠে আসে। তখন এ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমান জানান, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত হয়েছি। আমরা হলের বাকি তলাগুলো সংস্কার করেছি। দ্বিতীয় তলা সংস্কারের কাগজপত্র ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশনে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। খুব শীঘ্রই আমরা এর ব্যবস্থা করছি।

আরও পড়ুন: ভেঙে পড়ছে মুহসীন হলের ছাদের পলেস্তারা, আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা

 

;

জাবিতে খুলনা জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির নতুন কমিটি



জাবি করেসপন্ডেট, বার্তা ২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সভাপতি আরিফুজ্জামান উজ্জল ও সাধারণ সম্পাদক নিলুফা ইয়াসমিন

ছবি: সভাপতি আরিফুজ্জামান উজ্জল ও সাধারণ সম্পাদক নিলুফা ইয়াসমিন

  • Font increase
  • Font Decrease

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অধ্যয়নরত খুলনা জেলার শিক্ষার্থীদের সংগঠন খুলনা জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির আগামী এক (০১) বছরের জন্য নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।

শুক্রবার (০১ ডিসেম্বর) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের (৪৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী আরিফুজ্জামান উজ্জলকে সভাপতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নিলুফা ইয়াসমিনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে।

কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- সহ-সভাপতি ফারিহা ইতু, ফাহমিদা হাসান তানহা, বিপ্লব সরকার, সানমুন আজাদ, সালমান রহমান, মাহাদী হাসান ও সজিব পাল রোমেন; যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আরিফ, হাফিজুর রহমান, আহসান হাবিব রাসেল, খাদিজা তাবাচ্ছুম প্রমা, ফারহান মাসুদ, মাহমুদ হাসান, মো. শামীম উসমান ও মেশান শিকদার।

এছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক আল-আমিন মৃধা; সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, শামীমা আক্তার, লাভলী আক্তার, জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, মশিউর রহমান, রিয়াছাদ আলম, খাইরুজ্জামান শাহরিয়ার ও রাকিবুল হাসান; দপ্তর সম্পাদক লামিয়া জান্নাত, উপ-দপ্তর সম্পাদক তানিয়া; কোষাধ্যক্ষ নাজমুস সাকিব, সহ-কোষাধ্যক্ষ ওশিন; প্রচার সম্পাদক আসমা নেহা, উপ-প্রচার সম্পাদক তন্ময় মন্ডল; ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক রুহুল আমিন বিশ্বাস, সহ-ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস কান্তা; ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক জয় প্রকাশ মন্ডল, উপ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক শেখ শাহনেওয়াজ ফয়সাল; আইন বিষয়ক সম্পাদক আহনাফ তাজোয়ার ও উপ-আইন বিষয়ক সম্পাদক ইমরান হোসাইন শুভ।

কমিটির তথ্য ও যোগযোগ সম্পাদক মো. আলামিন হোসাইন, উপ-তথ্য ও যোগযোগ সম্পাদক সাজিয়া ইসলাম; সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অধরা কবির, উপ-সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক সামানজা শাহাদাত মৌনি; কর্মসূচি বিষয়ক সম্পাদক শাহরিয়ার রানা, উপ-কর্মসূচি বিষয়ক সম্পাদক আরিফা আক্তার বৈশাখী, সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক হালিমা খাতুন, উপ-সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক সামির আহমেদ, ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক আহসান আহমেদ পারভেজ এবং উপ-ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক রাফিয়ান আহমেদ নয়ন। এছাড়া কার্যকরী সদস্য হয়েছেন- অর্পন মন্ডল, প্রজ্ঞা প্রতীতি, নওশাদ নেওয়াজ ও মনিরা ফারজানা।

অন্যদিকে কমিটির প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে আছেন, পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক শেখ মুহম্মদ মারুফ হাসান। এছাড়া উপদেষ্টা হিসেবে আছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের অধ্যাপক মো. তাজউদ্দিন সিকদার, বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জিনিয়া ইসলাম ও ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) সহকারী অধ্যাপক এস এম এ মওদুদ আহমেদ প্রমুখ।

 

;

জাবিতে মসজিদের নির্মাণ কাজ চালুর দাবিতে মানববন্ধন



জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শহীদ সালাম বরকত হল ও আ ফ ম কামাল উদ্দিন হল সংলগ্ন মসজিদের ৪র্থ বারের মতো বন্ধ হয়ে থাকা নির্মাণ কাজ পুনরায় চালু করার দাবিতে মানববন্ধন করেছে দুই হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। এ সময় চলতি মাসেই নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার আল্টিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (১লা ডিসেম্বর) বাদ জুমা নির্মাণাধীন মসজিদের সামনে দুই হলের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে বক্তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মাণ কাজ পুনরায় চালু করার দাবি জানান। এছাড়া আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্মাণ কাজ আরম্ভ করা না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন ও প্রকল্প অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয়ার আল্টিমেটাম দেন তারা।

মানববন্ধনে রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী ও শহীদ সালাম বরকত হলের আবাসিক ছাত্র রাফিউল ইসলাম রনি বলেন, 'মসজিদ নির্মাণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তালবাহানা শুরু করেছে। এক বছরের মধ্যে বিভিন্ন অজুহাতে বারবার এ মসজিদের নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়েছে। আমরা এই মানববন্ধন থেকে ঘোষণা দিচ্ছি, আগামী ১০ তারিখের মধ্যে কাজ শুরু না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন এবং প্রকল্প অফিসে আমরা তালা ঝুলিয়ে দিবো। যতদিন কাজ শুরু না হবে ততদিন এই তালা থাকবে। আমরা আগামী মাসের মধ্যে এই মসজিদে নামাজ শুরু করতে চাই।'

নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থী ও কামাল উদ্দিন হলের আবাসিক ছাত্র মো. মূসা ভূঁইয়া মানববন্ধনে বলেন, 'মসজিদের কাজ নিয়ে এতো তালবাহানা আমরা আর কোথাও দেখি নাই। এক বছরের মধ্যে এখনো নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেনি। আমরা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এই মসজিদে নামাজ পড়তে চাই।'

প্রসঙ্গত, আ ফ ম কামালউদ্দিন হল ও শহীদ সালাম-বরকত হলের শিক্ষার্থীদের জন্য ১৯৯০ সালে সমন্বিত একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়। তবে নির্মাণকাজ সমাপ্ত হওয়ার কিছুদিন পর থেকে পাঁচবার সংস্কার করা হয়েছিল পুরাতন মসজিদটি। পরবর্তিতে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে জরাজীর্ণ মসজিদ ভেঙে নতুন মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০২২ সালের এপ্রিলে। এর মধ্যে নকশা এবং আসন ও অর্থ জটিলতায় কয়েক দফায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। অবশেষে চলতি বছরের ১৯ আগস্ট সকালে ঢালাইয়ের কাজ চলাকালীন ছাদ ধসের ঘটনা ঘটে।

;