যেমন ছিলো গুচ্ছের বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা



সাগর হোসেন, জবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
যেমন ছিলো গুচ্ছের বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা

যেমন ছিলো গুচ্ছের বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের ২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (৩০ জুলাই) দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত বিজ্ঞান ইউনিটের ১০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, উচ্চতর গনিত, বাংলা এবং ইংরেজি থেকে যে কোনো ৪ বিষয়ে মোট ১০০ নম্বরের উত্তর করেন শিক্ষার্থীরা। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় যেসব শিক্ষার্থী কেন্দ্র হিসেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে পছন্দের তালিকায় রেখেছিলেন, তাঁদের এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রাজধানীর নয়টি উপকেন্দ্রে আসন বিন্যাস করা হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট ৯টি কেন্দ্রে ৬৪ হাজার ৪শ ৫৮ জন অংশ নেয়। বাকি কেন্দ্রগুলো হচ্ছে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ, গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সাইন্স, ইডেন মহিলা কলেজ, নটরডেম কলেজ, ভিকারুন্নেছা নুন স্কুল এন্ড কলেজ, (ভবন-১, গেইট-১) এবং ভিকারুন্নেছা নুন স্কুল এন্ড কলেজ, (ভবন- ২, গেইট- ৮)।

দেশের ১৯ কেন্দ্রে ১ লক্ষ ৬০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। অন্যান্য কেন্দ্রের মত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসও সকাল থেকে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর ছিল। এদিকে সার্বিক শৃঙখলা রক্ষায় তৎপর ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও আশেপাশে মোতায়েন ছিল পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য। একই সাথে রেঞ্জার ইউনিট, বিএনসিসি ও রোভার স্কাউটসহ অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোও পরীক্ষার্থীদের সহায়তায় সচেষ্ট ছিল। পরীক্ষা ১২টায় শুরু হলেও শনিবার সকাল ৯টা থেকেই ভর্তিচ্ছুরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেইট, দ্বিতীয় গেইট, তৃতীয় গেইট এবং পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের গেইট দিয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে প্রবেশে সুযোগ করে দেওয়া হয়। প্রবেশপথের পাশেই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সহায়তা ডেস্ক ছিল। যেখান থেকে ভর্তিচ্ছুরা পরীক্ষা রুম ও অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে জানতে পেরেছে।

এদিকে ভর্তি পরীক্ষাকে ঘিরে পুরান ঢাকার যানজট নিরসনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে চিঠি দেওয়া হলেও তার তেমন কার্যকারিতা চোখে পড়েনি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সামনে ও আশেপাশের এলাকায় যানজট ছিল। যাতে করে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের কিছুটা ভোগান্তি হয় কেন্দ্রে পৌঁছাতে।

অন্য কেন্দ্রের ৮০ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেন:

এদিকে অন্য উপকেন্দ্রের প্রায় ৮০জন পরীক্ষার্থী ভুলবশত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে আসলে মানবিক দিক বিবেচনায় তাঁদের পরীক্ষাও বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হয়। কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একটি রুমে সেই শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থাপনায়।

শর্ট সিলেবাসের বাহিরে প্রশ্নের অভিযোগ:

পরীক্ষার প্রশ্ন এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার সিলেবাসের আলোকে করার কথা বলা হলেও পুর্ণাঙ্গ সিলেবাসে প্রশ্ন করা হয়েছে বলে ভর্তিচ্ছুরা অভিযোগ করেছেন। ভর্তিচ্ছুরা অভিযোগ করে বলেন, করোনার কারণে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সংক্ষপ্তি সিলেবাসে হয়েছে। গুচ্ছ কমিটিও এই সিলেবাসেই ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন করবেন বলে জানিয়েছেন। আমরাও এ সিলেবাসে প্রস্তুতি নিয়েছি। তবে পরীক্ষার হলে গিয়ে দেখি, পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস থেকেই বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ক’ ইউনিটের প্রশ্ন হয়েছে। শর্ট সিলেবাসের বাইরে প্রশ্ন হওয়াতে বেশ সমস্যাই হয়েছে। তবুও, স্টান্ডার্ড মানের প্রশ্ন ছিল। সংক্ষিপ্ত সিলেবাস থেকে প্রশ্ন হলে পরীক্ষা আরও ভালো হতো। শিক্ষার্থী জানান, উচ্চতর গনিত বিষয়ে ৪০-৫০% প্রশ্ন শর্ট সিলেবাসের বাইরে ছিল। এছাড়াও পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান বিষয়েও অনেক প্রশ্ন শর্ট সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে রসায়ন বিষয়ে শর্ট সিলেবাস থেকে প্রশ্ন করা হয়।

কেন্দ্র এলাকায় যানজটে ভোগান্তি:

পুরান ঢাকার যানজটের জন্য যাতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি না হয় যানজট নিরসনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছে চিঠি দেওয়া হলেও তার তেমন কার্যকারিতা চোখে পড়েনি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সামনে ও আশেপাশের এলাকায় যানজট ছিল। যাতে করে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের কিছুটা ভোগান্তি হয় কেন্দ্রে পৌঁছাতে। এতে একাধিক শিক্ষার্থীকে নির্ধারিত সময়ের পরও কেন্দ্রে ডুকতে দেখা যায়।

মিশ্র প্রতিক্রিয়া অভিভাবকদের:

গুচ্ছের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অভিভাবকরা। উত্তরা থেকে আসা নাসিমা আক্তার বলেন, মেয়েকে নিয়ে সেই সকালে রওনা দিয়েছি। ১২টা থেকে পরীক্ষা শুরু হলেও পরীক্ষার কেন্দ্রে পৌঁছেছেন সকাল ১০টার দিকে। তিনি বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা আমাদের মত অভিভাবকদের মুক্তি দিয়েছে চরম ভোগান্তি থেকে। এ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার কারনে আমাদের ছেলেমেয়েরা একটা পরীক্ষা দিলেই ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিক্ষা দেয়ার সুযোগ পায়। এটা আমাদের আর্থিকভাবে অনেকটা স্বস্তির। অন্যদিকে মিরপুর থেকে ছেলেকে নিয়ে পরীক্ষার হলে আসছেন জামিল হোসেন নামে আরেক ব্যক্তি। তিনি বলেন, এ পদ্ধতি একদিকে পরীক্ষার্থী ও আমাদের মত অবিভাবকদের ভোগান্তি লাঘব ও আর্থিকভাবে সাশ্রয় করলেও অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীদের মাঝে তৃপ্তি ও হতাশার কাজ করে। কারণ, এ একটি পরীক্ষা দিলে একসাথে অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেয়া হয়ে যায় কিন্তু সেই একটি পরীক্ষাই যদি কোন কারনে খারাপ বা দিতে মিস করে তাহলে সে ছেলেটি এতগুলো বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হতে পারবে না। আবার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় ও পছন্দের বিভাগে ভর্তি হওয়াটাও ভাগ্যের উপর নির্ভর করতে হয়।

প্রশ্নপত্র নিয়ে প্রশ্ন:

পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছে খোদ শিক্ষকরাই। জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয় সহযোগী অধ্যাপক জগদীশ চন্দ্র সরকার বলেন, প্রশ্নপত্রের গেটাপ দেখে আমরা পুরোপুরি হতাশ। আমার চোখের আন্দাজ প্রশ্নের ফন্ট সাইজ ছিলো অতি ক্ষুদ্রকার। ৮-৯ মানের। স্পেস মাত্র ১, মার্জিন ০.২। উত্তরের অপশনগুলো (ধ-ফ) পাশাপাশি দেওয়া। প্রশ্নপত্রের কোথাও তিল পরিমান ফাঁকা জায়গা নেই। আবার কোন আলাদা কাগজও দেয়া হয়নি পদার্থ, গনিত, রসায়ন রাফ করার জন্য। আমার আশংকা অনেক ভর্তি পরীক্ষার্থী বিভিন্ন রকম ভুল করেছে শুধুমাত্র এরকম একটা ঘিঞ্জি প্রশ্নপত্রের কারণে। একটা স্ট্যান্ডার্ড প্রশ্নপত্রের গেটাপটাও আজ আমরা আপটুদা মার্ক করতে পারি না? ঊাংলা বিভাগের অধ্যাপক হোসনে আরা জলি বলেন, ৩০ বছরের শিক্ষকতা জীবনে এমন সাইজের অ্যালফাবেট এ এমন হিজিবিজি প্রশ্ন কখনো দেখিনি। এতো ছোট সাইজের ফন্টে প্রশ্ন করা এবং সাইন্সের অংকের রাফ করার জন্য সামান্যতম ফাঁকা জায়গা না রাখার কারণ কী? এমন প্রশ্নের কারণে পরীক্ষার্থীরা কতোটা ক্ষতিগ্রস্ত হলো এবং অন্যরা কতোটা লাভবান হলো? এই শিক্ষার্থীরাই যদি হয় জাতির ভবিষ্যত আর যদি শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড হয়, তাহলে সত্যিই ভেবে দেখার বিষয়! কিন্তু ভাবার কেউ কি আছে?

পরীক্ষার ফলাফল:

ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা গেছে, খাতা মূল্যায়নের জন্য ৩ আগস্ট পর্যন্ত সময় পাবে টেকনিক্যাল কমিটি। ৩ আগস্টের মধ্যে ফল তৈরি করে কোর কমিটির কাছে জমা দিতে হবে। এরপর কোর কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে ফল প্রকাশ করা হবে। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত টেকনিক্যাল কমিটির আহবায়ক এবং চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতার বলেন, আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ‘ক’ ইউনিটের ফল প্রকাশ করবো। ফল তৈরির জন্য আমাদের ৩ আগস্ট পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। আশা করছি এর আগেই ফল তৈরির কাজ শেষ হবে। এরপর গুচ্ছের মূল কমিটি ফল প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেবে।

পরীক্ষার সার্বিক বিষয় পর্যবেক্ষণ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক। তিনি জানান, গতবারে আমাদের আসন নিয়ে যে সমস্যাগুলো হয়েছিল, এবারে কষ্টের বিনিময়ে হলেও আমরা সমাধানের চেষ্টা করেছি। শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, নটরডেম কলেজসহ বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে আমরা পরীক্ষা নিয়েছি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন নির্ধারিত ৬৪ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীদের জন্য আমাদের এই উদ্যোগ। ঢাকার বাইরে অন্যান্য কেন্দ্রগুলোতে খবর নিয়েছি। সুষ্ঠু পদ্ধতিতে পরীক্ষা সংঘটিত হয়েছে।

গুচ্ছভুক্ত ২২টি বিশ্ববিদ্যালয় হলো:

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় (নেত্রকোনা), বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (গোপালগঞ্জ), কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় (কিশোরগঞ্জ) এবং চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।প্রসঙ্গত, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে দেশের ২০টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতিতে অংশ নিলেও এবার নতুন যুক্ত হয়েছে কিশোরগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

আগামী ১৩ আগস্ট মানবিক বিভাগ (বি) এবং ২০ আগস্ট বাণিজ্য বিভাগের (সি) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সব পরীক্ষাই দুপুর ১২টায় শুরু হয়ে ১টায় শেষ হবে।

   

টাইমস হায়ারের র‍্যাঙ্কিংয়ে দেশে শীর্ষ অবস্থানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়



জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

সম্প্রতি যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী ‘টাইমস হায়ার এডুকেশন (THE)’ এশিয়ার ৩১টি দেশের মোট ৭৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে একটি র‌্যাংকিং তালিকা প্রকাশ করেছে। 'THE' কর্তৃক প্রকাশিত এই তালিকায় ৩০১-৩৫০ এর মধ্যে অবস্থান নিয়ে বাংলাদেশ থেকে যৌথভাবে প্রথম হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)।

গত ৩০ এপ্রিল (মঙ্গলবার) এলসেভিয়ার জার্নালের সাথে যৌথ প্রযোজনায় ‘এশিয়া ইউনিভার্সিটি র‍্যাংকিং-২০২৪’ এর তালিকা প্রকাশিত হয়৷ এ তালিকায় এশিয়া মহাদেশে প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে যথাক্রমে রয়েছে চীনের শিংহুয়া ইউনিভার্সিটি ও পিকিং ইউনিভার্সিটি৷ তৃতীয় অবস্থানে আছে সিঙ্গাপুরে অবস্থিত ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর। এছাড়া সেরা দশের মধ্যে চীনের ৫টি, হংকং ও সিঙ্গাপুরের ২টি করে এবং জাপানের ১টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।

এবারের প্রকাশিত র‍্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ থেকে স্থান পেয়েছে ২১টি বিশ্ববিদ্যালয়৷ গতবার সংখ্যাটি ছিল ১৮টি। তবে প্রকাশিত তালিকার প্রথম ৩০০ এর মধ্যে বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় না থাকলেও পরবর্তী ৩০১ থেকে ৩৫০ এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

তালিকার ৩৫১-৪০০ এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়। তালিকার ৪০১-৫০০ এর মধ্যে রয়েছে অবস্থান করছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া ৫০১-৬০০ এর মধ্যে অবস্থান করছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

এদিকে প্রকাশিত তালিকায় বাংলাদেশ থেকে আরও ১২টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেলেও তাদের র‌্যাংকিং প্রকাশ করেনি ’টাইমস হায়ার এডুকেশন'৷ এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে আছে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় এবং ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ।

শিক্ষা ও গবেষণার মান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীর অনুপাত, সাইটেশন, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীসহ মোট ১৮টি পারফরম্যান্স সূচকের ওপর ভিত্তি করে প্রকাশিত হয় এ র‌্যাংকিং৷ এ বছর প্রকাশিত তালিকায় যৌথভাবে বাংলাদেশের মধ্যে শীর্ষ অবস্থান অর্জনকারী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কোর যথাক্রমে শিক্ষায় ২৮ দশমিক ৯, গবেষণার পরিবেশে ১০ দশমিক ৯, গবেষণার মানে ৬৩ দশমিক ০১, শিল্পে ১৯ দশমিক ৫ এবং আন্তর্জাতিক আউটলুকে ৪৯ দশমিক ৭।

এদিকে র‌্যাংকিংয়ে দেশসেরা হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্টরা। র‌্যাংকিংয়ে তথ্য-উপাত্ত কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির (IIT) পরিচালক অধ্যাপক এম শামীম কায়সার বলেন, ‘বিভিন্ন সূচকের উপর ভিত্তি করে আমরা এশিয়া মহাদেশের র‌্যাংকিংয়ে স্থান লাভ করেছি। সম্প্রতি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশী শিক্ষক নিয়োগে একটি নীতিমালা পাশ হয়েছে। সর্বোপরি আন্তর্জাতিক র‌্যাংকিংয়ে আমাদের অবস্থান ভালো করার জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার ইম্প্যাক্ট খুবই ভালো। গতবারের চেয়ে আমাদের এবারের র‌্যাংকিং অবস্থা একটু বেটার। আমরা এশিয়াতে ভালোর দিকে যাচ্ছি। আশা করি নেক্সট ওয়ার্ল্ড র‌্যাংকিংয়ে আমরা আরও ভালোর দিকে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও এ নিয়ে যথেষ্ট প্রচেষ্টা চলমান রেখেছে।’

র‌্যাংকিংয়ে তথ্য-উপাত্ত কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট আরেক শিক্ষক সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজ ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং স্কলার ও পোস্ট ডক্টরাল ফেলো ড. মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম বলেন, এশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‍্যাংকিংয়ে দেশসেরা হওয়া আমাদের জন্য বড় অর্জন। তবে র‍্যাংকিং দেখে আত্মতুষ্টিতে না ভুগে আগামীতে র‍্যাংকিংয়ে কীভাবে আরও এগিয়ে আসা যায় তা নিয়ে ভাবতে হব, কাজ করতে হবে।

তিনি আরও জানান, এ লক্ষ্যে বিদেশি শিক্ষার্থীদের বেশি সংখ্যায় অন্তর্ভুক্তির পাশাপাশি বিদেশি শিক্ষকদেরও সীমিত পরিসরে নিয়োগের ব্যাপারে ভাবতে হবে। মানসম্মত গবেষণা নিশ্চিতের জন্য গবেষণায় বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে৷

র‍্যাংকিংয়ে শীর্ষ অবস্থানে আসার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম বলেন, টাইমস হায়ারের র‍্যাংকিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দেশ সেরা হওয়া আমাদের জন্য গর্বের৷ শিক্ষা ও গবেষণায় আমরা যে এগিয়ে যাচ্ছি এর প্রমাণ এ র‍্যাংকিং৷ এই অনন্য নজির স্থাপনে তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহযোগীতা করার জন্য শিক্ষক-গবেষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানাই। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আগামীতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আরও এগিয়ে যাবে এবং সে লক্ষ্যে আমাদের সবাইকে একসাথে একযোগে কাজ করতে হবে৷'

;

হল ছাড়ার নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করে শিক্ষার্থীদের অবস্থান



কুবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

  • Font increase
  • Font Decrease

অনির্দিষ্টকালের জন্য হল বন্ধের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান হলে অবস্থান করছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা। এদিকে প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করে হলের প্রাধ্যক্ষরা জানিয়েছে, শিক্ষার্থীরা চাইলে হলে থাকতে কোন বাধা নেই।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) জরুরি এক সিন্ডিকেট সভা ডেকে বিশ্ববিদ্যালয় এবং হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এসময় শিক্ষার্থীদের আজ বিকেল ৪টার মধ্যে হল ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

হলে থাকার প্রসঙ্গে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের আবাসিক শিক্ষার্থী জয় রায় বলেন, আমরা হল ছাড়ছি না। প্রাধ্যক্ষ স্যারও থাকার পক্ষে। তাছাড়া হলের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এখানে টিউশনি করিয়ে পড়াশোনা করতে হয়। এক্ষেত্রে আমাদের দাবি, পরিবহন ব্যবস্থা যেন অবিলম্বে চালু করা হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ফরহাদ কাউসার জানান, প্রশাসন থেকে হল ছাড়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এটা সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ বলেন, গতকাল হল বন্ধের বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা যদি হলে থাকতে চায়, মনে হয় না কোন সমস্যা হবে। আমি শিক্ষার্থী এবং প্রশাসনের সাথে কথা বলে এই বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নিব।

শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রাধ্যক্ষ জিয়া উদ্দিন বলেন, হল কেন্দ্রিক কোন ঝামেলা না হলে প্রশাসন হলের শিক্ষার্থীদের বের করে দিবে না। তাই শিক্ষার্থীরা চাইলে হলে অবস্থান করতে পারবে।

;

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান কুবি শিক্ষার্থীদের



কুবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৩তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধের ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা হল চালু রাখার ও ক্লাসে ফেরার দাবি জানান। এছাড়া এই মানববন্ধনের একাত্মতা পোষণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রাধ্যক্ষ নাসির হোসাইন ও শেখ হাসিনা হলের হাউজ টিউটর আল-আমিন হোসেন।

বুধবার (১ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বর সংলগ্ন রাস্তায় এ মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪তম আবর্তনের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলাম পড়াশোনা করার জন্য, তবে বিগত কয়েক মাস যাবত বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি চলছে। কখনো শিক্ষক সমিতি ক্লাস বর্জন করছে, তো এখন আবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনিদির্ষ্ট কালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিচ্ছে, হল বন্ধ করার নির্দেশ দিচ্ছে। একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আমার প্রশ্ন শিক্ষকদের এই দ্বন্দ্বে আমরা শিক্ষার্থীরা কিভাবে দোষী? আমরা কেন ভুক্তভোগী? এখানে অনেক শিক্ষার্থী অর্থাভাবে হলে থাকে টিউশন করিয়ে নিজের আর পরিবারের ভরণপোষণ সামলায়, তারা কোথায় যাবে?

আমরা যে পড়াশোনায় পিছিয়ে যাচ্ছি এর দায়ভার কে নিবে। আমি একটাই দাবি করতে চাই, আমাদের একাডেমিক কার্যক্রম চালু করা হোক, হলগুলো বন্ধ না করা হোক।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫তম আবর্তনের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহমিদা সুলতানা বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন সার্কাস চলছে। প্রথমে প্রশাসন সিদ্ধান্ত দিল ২রা মে পর্যন্ত সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে, অনলাইনে ক্লাস চলবে। প্রশাসনের সিদ্ধান্তঃকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে শিক্ষক সমিতি আবার এই মগজ গলা গরমে সিদ্ধান্ত দিল ২৮ এপ্রিল থেকে স্বশরীরে ক্লাসে ফিরবে, এর আগে তারা আবার ক্লাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বর্জন করেছিলো। এখন আবার প্রশাসন আমাদেরকে হল থেকে বের করে দিচ্ছে, অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ করে দিচ্ছে। এমনিতে বেশ কিছু বিভাগ করোনার কারণে পিছিয়ে আছে তার ওপর তাদের এ ধরণের সিদ্ধান্ত কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। শিক্ষক সমিতি আর উপাচার্যের দ্বন্দ্বে আমরা বলির পাঠা হয়ে আছি। এ পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান আশা করছি।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪তম আবর্তনের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আনাস আহমেদ বলেন, 'আজকে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা এখানে মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছি নিজেদের কিছু ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য। আমাদের ক্লাস, পরীক্ষা চালু করতে হবে, হলগুলো খোলা রাখতে হবে। শিক্ষকদের ওপর বহিরাগতদের হামলার তদন্ত করে সঠিক বিচার করতে হবে দোষীদের। চলমান পরিস্থিতির দ্রুত সমাধান করতে হবে, অন্যথায় আমরা আমাদের কর্যক্রম চালিয়ে যাব।'

শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনে একাত্মতা পোষণ করে নাসির হোসাইন বলেন, ‘বর্তমানে চলমান সংকট সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে সর্বোচ্চ পর্যায়ে গিয়ে পৌছেছে। শিক্ষার্থীদের সংকটের মুখেই এরকম সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আমার মনে হয় না, এমন কিছু ঘটেছে। আর কাজী নজরুল হলে কোনরকম অবৈধ অস্ত্র বা টাকা ঢুকেনি। আমার হল খোলা থাকবে। আমার হলের শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব আমি নিচ্ছি।'

শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষক আল-আমিন বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি, আমার হলে কোনপ্রকার অবৈধ অস্ত্র নেই। আমার হল স্বাভাবিক আছে। আমি শিক্ষার্থীদের বলেছি, তারা তাদের মতো করে হলে থাকতে পারবে। শিক্ষার্থীদের কেউ জোরপূর্বক হল থেকে বের করতে পারবে না।'

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, 'প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত একটি স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত। বিভিন্ন হল প্রভোস্টদের সাথে কথা বলেছি তারা বলেছে হল খুব সুন্দরভাবেই চলছে। আর একাডেমিক কার্যক্রম চলুক সেটাও আমি চাই। আমি মনে করি এই উপাচার্য একজন অদক্ষ প্রশাসক। তার পদত্যাগই সবকিছুর সমাধান।'

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, 'আমরা শিক্ষার্থীদের পক্ষেই আছি। যখন কোন একটা ছুটি হয় তখন কিন্তু প্রতিবার একই নোটিশ যায় যে হল ছাড়তে হবে। অনেক সময় হল সিলগালা করে দেয়া হয় সেক্ষেত্রে সবাইকে সেটা মানতে হবে। যেহেতু এই নোটিশে সিলগালার কথা বলা নাই সেক্ষেত্রে কেউ যদি বিকাল চারটার মধ্যে হল ত্যাগ না করে তাহলে নিশ্চই হল প্রসাশন শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত নিবে।'

;

'ফিলিস্তিনের ২০ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদানসহ ঢাবিতে ভর্তি করা হবে'



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছর কমপক্ষে ২০ জন ফিলিস্তিনি মেধাবী শিক্ষার্থী বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি ও আবাসিক সুবিধাসহ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট এবং মাস্টার্সে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে। 

বুধবার (১ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ অধিদপ্তর হতে জানা যায়, মঙ্গলবার বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত মি. ইউসুফ এস, ওয়াই, রামাদান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় ঢাবি উপাচার্য এসব কথা বলেন।

ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী ভর্তি, বৃত্তি এবং আবাসিক সুবিধা প্রদানের বিষয় নিয়ে তারা দীর্ঘ আলোচনা করেন। এসময় ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নে আগ্রহী ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের ভর্তি ও বৃত্তি প্রদানের জন্য উপাচার্যকে অনুরোধ করেন।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের মধ্যে ১৯৭১ সালে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তারই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ও আন্তর্জাতিক ফোরামে ফিলিস্তিনি জনগণের পক্ষে জোড়ালো অবস্থান নিয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূতকে আশ্বস্ত করে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছর কমপক্ষে ২০ জন ফিলিস্তিনি মেধাবী শিক্ষার্থী বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি ও আবাসিক সুবিধাসহ আন্ডারগ্র্যাজুয়েট এবং মাস্টার্সে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে। ঢাবিতে অধ্যয়নকালে ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হবে বলে তিনি রাষ্ট্রদূতকে জানান।

উপাচার্য ফিলিস্তিন বিশেষ করে গাজা'র অধিবাসীদের উপর ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর বর্বর ও নির্মম হামলা, গণহত্যা ও অমানবিক অত্যাচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সকল জনগণ ফিলিস্তিনি বন্ধুদের প্রতি সবসময় সহানুভূতিশীল বলে তিনি উল্লেখ করেন। উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা এবং ঢাবিতে ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের ভর্তির বিষয়ে গভীর আগ্রহ প্রকাশের জন্য রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান।

উল্লেখ্য, এ সময় আর্থ এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান, রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স অফিসের পরিচালক অধ্যাপক ড. সামসাদ মুর্তুজা এবং জনসংযোগ দফতরের পরিচালক মাহমুদ আলম উপস্থিত ছিলেন।

;