উচ্চ শিক্ষায় প্রতিবন্ধীদের ভর্তিতে বন্ধু সুলভ নয় ঢাবি!



আরিফ জাওয়াদ, ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
উচ্চ শিক্ষায় প্রতিবন্ধীদের ভর্তিতে বন্ধু সুলভ নয় ঢাবি!

উচ্চ শিক্ষায় প্রতিবন্ধীদের ভর্তিতে বন্ধু সুলভ নয় ঢাবি!

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রতিবন্ধীদের উচ্চ শিক্ষায় ভর্তিতে বন্ধু সুলভ নয় দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) সেই সঙ্গে ভর্তি পরীক্ষায় প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের নানা জটিলতায় সম্মুখীন হতে হয় বলে অভিযোগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) অধ্যয়নরত ও ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়া প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের। শ্রুতিলেখক নিয়ে পরীক্ষার হলে পড়তে হয় পরীক্ষায় নিয়োজিতদের জেরা সহ নানা জটিলতায়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সরকার ও রাজনীতি বিভাগের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী আসিফ করিম পাটোয়ারী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাতে আসিফ তাঁর শ্রুতি লেখক’ক নিয়ে জেরার সম্মুখীন হতে হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন। শুধু আসিফ না, নাম প্রকাশে ডজন খানেক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে শ্রুতি লেখক নিয়ে বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়েছে বলে অভিযোগ আছে বার্তা২৪.কমের কাছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইসলামিক স্টাডিজের তৃতীয় বর্ষে পড়ছেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী আনোয়ার হোসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষায় তাঁর রয়েছে তিক্ত অভিজ্ঞতা। তিনি বার্তা২৪.কম’কে বলেন, আমি যেই স্কুল থেকে শ্রুতিলেখক নিয়েছিলান, সেখানকার প্রত্যায়নপত্রটি শ্রুতি লেখকের ছবি আঠা দিয়ে লাগিয়ে তার উপর স্বাক্ষর না থাকায়, পরীক্ষার একদিন আগে তাঁকে বড় রকমের এক ভোগান্তি পোহাতে হয়। পরে পুনরায় তাঁকে বাসায় গিয়ে আবারও নতুন করে শ্রুতিলেখকের স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে সেই ইস্যুটি সমাধান করতে হয়। অথচ সেটি তেমন কোন সমস্যা ছিল না, বলে অভিযোগ ওই শিক্ষার্থীর।

এ দিকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান বলেন, ভর্তির পরীক্ষায় বন্ধু সুলভ আচরণে ঢাবি একটি উদাহরণ হতে পারে। হয় তো শীগ্রই এ জটিলতা কাটিয়ে উঠে বন্ধু সুলভ হয়ে উঠবে বলে তাঁর প্রত্যাশা।

ভর্তি পরীক্ষায় প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শ্রুতিলেখকদের নিয়ে ভোগান্তির ব্যাপারে বার্তা২৪.কমের কথা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক মোহাম্মদ তারিক আহসানের সঙ্গে।

তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি সাপোর্ট সেন্টার থাকে, তাঁরাই প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের যাবতীয় বিষয় দেখে থাকেন। যেখানে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য শ্রুতিলেখকদের একটি পোল রয়েছে, যাঁদেরকে যথাযথা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গড়ে তোলা হয়। এমনকি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীী সাথে যার পূর্ব কোন পরিচিতি নেই। যাঁর যখন প্রয়োজন পড়বে সে সেখান থেকেই সহায়তা নিতে পারবেন। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এনন সাপোর্ট সেন্টারগুলো আমাদের দেশে চালু করা বেশ জরুরী বলে মনে করেন তিনি।

জানা গেছে এছাড়া দেশের প্রথম সারির একটি বিশ্ববিদ্যালয় তাঁর প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী সংগ্রহে পরীক্ষা নয়, ভাইবার মাধ্যমে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়ে থাকে। এ অধ্যাপক অধ্যাপক তারিক বলেন, লিখেই কেন একজন মানুষের শিখন যাচাই করা হবে। মুখস্থ করিয়ে লিখিয়ে পরীক্ষা দুয়ে প্রমাণ করতে চাই যে সে পারে। গতানুগতিক ব্যবস্থা থেকে বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ শিক্ষায় সমস্যা সমাধান ও প্রজেক্টবেজ শিখনের উপর গুরুত্ব দিতে হবে, যেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীও উপকৃত হবেন।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়টির একই ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালগুলো তাঁদের আইন ও ঐতিহ্যের কারণে এমনটা হয়ে থাকে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর যেমন খুশি তেমন শ্রুতি লেখক আনার সুযোগ রাখা উচিত। কারণ একজন শ্রুতি লেখকের সঙ্গে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর যেমন এডজাস্টমেন্টের প্রয়োজন হয়, তেমনি শ্রুতিলেখকের যথাযথ প্রশিক্ষণেরও প্রয়োজন আছে বলে তিনি মনে করেন।

২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসনসংখ্যা ৬ হাজার ৮৫। এর ১ শতাংশ (৬১ জন) প্রতিবন্ধী কোটায় ভর্তির সুযোগ পাবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) একাধিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর সাথে কথা হলে ; তাঁরা অভিযোগ করেন, অনেক বড় একটা অংশ আমাদের জন্য বরাদ্দ থাকলেও তা পূরণ হচ্ছে না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষায় সুযোগে সদিচ্ছার অভাব।

অভিযোগের মাঝে প্রতিবন্ধীদের উচ্চ শিক্ষায় সুযোগ বৃদ্ধি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) তাঁর প্রতিবন্ধী কোটাতে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তিতে নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডারস (স্নায়ু-বিকাশগত প্রতিবন্ধিতা) যুক্ত করেছে। অনেক শিক্ষাবিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এ পদক্ষেপ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষায় নিয়ে আসার পদক্ষেপ’কে বন্ধুসুলভ ভাবে দেখছেন।

এ ব্যাপরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, এটি জাতীয় ইস্যু, তাছাড়া সদিচ্ছার অভাব থাকলেও আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অভাবগুলো পূরণে কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়া আমরা বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে উদ্যেগও নিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, ২০০৬ সালে জাতিংঘের Convention on the Rights of Persons with Disabilities, এটার কারণে ভারত তার আইনকে সংশোধন করেছে কিন্তু আমরা সংশোধন না করে আইন করেছি। ২০১৩ সালের প্রতিবন্ধী অধিকার ও সুরক্ষা আইন পাশ করি। যেখানে ভারত সকল প্রতিষ্ঠানের জন্য একই আইন রেখেছে কিন্তু আমাদের তা নেই। এছাড়া ওই সুরক্ষা আইনের পরবর্তীতে বিধিগুলোও আমরা পাইনি।

এ থেকে উত্তরণের জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে মাঠ পর্যায় থেকে বিভিন্ন জিও, এনজিও, বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধি নিয়ে একটি নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। সেটি যদি মন্ত্রিপরিষদের অনুমোদন সাপেক্ষে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়, তাহলে শুধু বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি না। সকল প্রকারের বাঁধা থেকে প্রতিবন্ধীরা মুক্ত হবেন, বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এ অধ্যাপক।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সাথে কথা হয় বার্তা২৪.কমের। তিনি জানান, আমরা প্রতিবন্ধীদের উচ্চ শিক্ষার ব্যাপারে যথেষ্ট যত্নশীল। তবে আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সেগুলো কাটিয়ে উঠতে আমাদের উদ্যেগ চলমান রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, শ্রুতি লেখক নিয়ম নীতি অনুসরণ করলে, সমস্যা হওয়ার কথা না। এমন কখনও সমস্যা হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। এ ব্যাপারে ভাল কোন সুপারিশ থাকলে সেগুলো বিশ্ববিদ্যালয়কে দেয়ার আহ্বান জানান উপাচার্য।

   

চবির ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের দিতে হবে ডোপ টেস্ট



চবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
চবির ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের দিতে হবে ডোপ টেস্ট

চবির ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের দিতে হবে ডোপ টেস্ট

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের ডোপ টেস্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ডোপ টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসলে ভর্তি বাতিল করবে প্রশাসন।

রোববার (০৫ মে) চবি উপাচার্য প্রফেসর মো. আবু তাহেরের সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটির সভায় ডোপ টেস্টের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের চবিতে চূড়ান্ত ভর্তির আগে ডোপ টেস্টে উত্তীর্ণ হতে হবে। পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে চবি উপাচার্য অধ্যাপক মো. আবু তাহের গণমাধ্যমকে বলেন, মাদক আমাদের সমাজ, পরিবার ও সংস্কৃতিকে ধ্বংস করছে। তাই আমরা এ বছর ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের ডোপ টেস্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রথমে যারা সফলভাবে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন, তাদের ডোপ টেস্ট করা হবে। তারপরে আমরা পর্যায়ক্রমে আমাদের অন্যান্য শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং কর্মীদের জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ধীরে ধীরে এর আওতায় আনব।

উপাচার্য আরও বলেন, এই প্রক্রিয়া শুরু করতে আমরা চমেক হাসপাতালের সঙ্গে কথা বলেছি। কে এই খরচ বহন করবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে আমরা একটি সীমা—২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা—নির্ধারণ করার চেষ্টা করছি।

সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌলা গণমাধ্যমকে বলেন, 'আমরা দেশের স্বার্থে এই উদ্যোগ নিয়েছি। পুরুষ ও নারী সব শিক্ষার্থীকেই তাদের রক্তের বা ইউরিনের নমুনা চমেকে দিতে হবে এবং পরীক্ষার ফলাফল চূড়ান্ত তালিকার জন্য প্রশাসনের কাছে জমা দেওয়া হবে। যদি কেউ পজিটিভ হন, তাহলে তিনি ভর্তি হতে পারবেন না।'

উল্লেখ্য, ডোপ টেস্ট বা ড্রাগ টেস্ট হলো কোনো প্রাণীর শরীরের কোনো অংশের নমুনা থেকে ঐ প্রাণীর শরীরে কোনো নির্দিষ্ট মাদকের উপস্থিতি আছে কিনা তা পরীক্ষা করা। যারা নিয়মিত মাদক বা অ্যালকোহল গ্রহণ করেন তাদের শরীরে ওই নেশাজাতীয় পদার্থের কিছুটা হলেও থেকে যায়। আর সেটিই ডোপ টেস্টের মাধ্যমে ধরা পড়ে। কোনো ব্যক্তি আদৌ মাদকাসক্ত কি না তা যাচাইয়ের জন্য যে মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়।

এক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির মূত্র বা রক্ত, আবার কখনো দুটিরই নমুনা পরীক্ষা করা হয়। মাদক গ্রহণ করা ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শেষ ১ সপ্তাহে মুখের লালার মাধ্যমে, শেষ ২ মাস রক্তের মাধ্যমে, শেষ ১২ মাস বা ১ বছরে চুল পরীক্ষার মাধ্যমে পাওয়া যায় মাদকের নমুনা।

;

জাবিতে ডিন নির্বাচনে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ



জাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অনুষদগুলোর আসন্ন ডিন নির্বাচনে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসানের বিরুদ্ধে।

রোববার (৫ মে) রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু হাসানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে পক্ষপাতিত্বমূলক কার্যক্রমের প্রতিকার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন নির্বাচনের বৈধপ্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়া ৪ জন শিক্ষক।

পক্ষপাতিত্বমূলক কার্যক্রমের বিষয়ে অভিযোগকারী শিক্ষকরা হলেন- বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের বর্তমান ডিন ও ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের অধ্যাপক নীলাঞ্জন কুমার সাহা ও সহযোগী অধ্যাপক ইউসুফ হারুন, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক কাশেদুল ওহাব তুহিন ও সহযোগী অধ্যাপক রাকিবুল হাসান। এছাড়া উপাচার্য বরাবর দাখিলকৃত অভিযোগপত্রে অবৈধভাবে বাছাইকৃত প্রার্থী তালিকা বাতিল করে আইনানুগভাবে প্রার্থীদের উপস্থিতিতে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান এই শিক্ষকবৃন্দ।

অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের আসন্ন ডিন নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে গত ২৯ এপ্রিল মনোনয়নপত্র দাখিল করেন প্রার্থীরা। কিন্তু বৈধ প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পূর্বে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য গত ৩০ এপ্রিল ই-মেইলে এবং ১ মে সশরীরে রিটার্নিং অফিসারকে অবহিত করে আবেদনপত্র জমা দেন তারা। কিন্তু রিটার্নিং অফিসার তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করে প্রার্থীদের অনুপস্থিতিতে মনোনয়নপত্র বাছাই করেন। এরপর তড়িঘড়ি করে গত ২ মে বৈধ প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা করে। দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় কোন ত্রুটি বিচ্যুতি পরিলক্ষিত হলে তা প্রার্থীকে অথবা মনোনীত প্রতিনিধিকে দেখানোর কথা এবং তা প্রতিকারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তা এ ধরনের কোনো ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।

আরও জানা যায়, গত ২৯ এপ্রিল মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ এ মামুন কর্তৃক প্রস্তাবিত এবং সে সময়ে উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ কর্তৃক সমর্থিত এক প্রস্তাব গ্রহণ করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। প্রস্তাবটি ছিল, মনোনয়নপত্রে কোন ধরনের ভুল ত্রুটি থাকলে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্টদের ডেকে তা প্রতিকার করে দাখিলকৃত সব মনোনয়নপত্র বৈধ হিসেবে গ্রহণ করার। কিন্তু রিটার্নিং অফিসার আইন এবং সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুসরণ করেননি। এছাড়া ঠিক কি কারণে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে অথবা কি কারণে আবেদন গ্রহণ করা সম্ভব হলো না তা ওই শিক্ষকদের পক্ষে বোঝা সম্ভব হয়নি বলে উল্লেখ করা হয়।

ডিন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবু হাসানকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্রে বলা হয়, তফসিল ঘোষণার সময় থেকে এখন পর্যন্ত রিটার্নিং অফিসার ডিন নির্বাচন সংক্রান্ত কোন নীতিমালা, আইন, বা প্রচলিত নিয়মসমূহের সংকলন লিখিত অথবা মৌখিকভাবে অবহিত করেননি। মনোনয়নপত্রেও এধরনের কোন নির্দেশনা বা বিশেষ দ্রষ্টব্য ছিলো না। এছাড়া বৈধতালিকা প্রকাশের আগে প্রচারণা চালানো প্রার্থীদের প্রার্থিতাও বাতিল করা হয়নি।

অভিযোগপত্রে উপাচার্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলা হয়, বৈধতালিকা প্রকাশের আগেই একজন যখন নিজেকে প্রার্থী হিসেবে পরিচয় দেয় তা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অবজ্ঞা করা অথবা রিটার্নিং কর্মকর্তার ওই সকল প্রার্থীদের প্রতি পক্ষপাতিত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। এমতাবস্থায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের এ সংক্রান্ত সংবিধির ১.২৪ ধারা মোতাবেক এ বিষয়ে প্রতিকার প্রার্থনা করছি।

;

ঢাবিতে যৌন হয়রানির অভিযোগের প্রতিবেদন প্রকাশের দাবিতে আল্টিমেটাম



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে আনিত যৌন হয়রানির অভিযোগের বিষয়ে গঠিত তথ্যানুসন্ধান কমিটি দুই মাসেও কোনো প্রতিবেদন না দেওয়ায়, দ্রুত প্রতিবেদন প্রকাশের দাবিতে তিন দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন একই বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (৬ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা এই আল্টিমেটাম ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে তারা জানান, এ বছরের ৩ মার্চ অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধ যৌন নিপীড়নের অভিযোগ যাচাইয়ে আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সীমা জামান, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমান এবং সহকারী প্রক্টর সঞ্চিতা গুহকে নিয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কর্তৃপক্ষ এ কমিটিকে ২ সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বললেও ২ মাস পার হলেও এ ঘটনায় দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখা যায় নি। এতে ন্যায়বিচার ব্যহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা আরো জানান, আমাদের কাছে প্রতীয়মান হচ্ছে, প্রশাসন বিষয়টিকে ধামাচাপা দিয়ে ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীকে যথাযথ বিচার থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করছে অথবা বিষয়টি নিয়ে আলোচনার কমে গেলে লঘু দণ্ড দিয়ে অভিযুক্ত অধ্যাপককে বাঁচিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থী ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আহ্বান জানান এবং তিন দিনের মধ্যে তথ্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন দেওয়ার দাবি করেন। অন্যথায় পুনরায় আন্দোলনে নামার ঘোষণা দেন এই শিক্ষার্থীরা।

;

ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে চবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন



চবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরায়েল বাহিনী কর্তৃক ফিলিস্তিনিদের নির্বিচারে হত্যা ও স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে।

সোমবার (৬ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীরা এই মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এ সময় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করা মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ধরপাকড়ের তীব্র নিন্দা জানান শিক্ষার্থীরা।

গণিত বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. রাকিব হোসেনের সভাপতিত্বে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী এতে অংশ নেয়। এ সময় তারা ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন, ফিলিস্তিন জিন্দাবাদ- ইহুদিবাদ নিপাত যাক, বয়কট ইসরায়েল, ফিলিস্তিনে হামলা কেন আমেরিকা জবাব দে সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।

এ সময় অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, ফিলিস্তিনের চলমান স্বাধীনতা আন্দোলন শুধু মুসলিমদের ইস্যু নয়, এটা গোটা মানবজাতির, মানবতার ইস্যু। আজকের এই মানববন্ধনে উপস্থিত হতে পারাটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ঘটনা। সবচেয়ে বড় মূল্যবান বিষয় হলো ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানো, অন্যায়ের বিপক্ষে দাঁড়ানো।

ফ্যাইন্যান্স বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী মো. ইশতিয়াক হোসেন মজুমদার বলেন, সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক বিষয় হলো ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিশেষত স্বয়ং ইসলরাইলের সবচেয়ে বড় দোসর আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে ও ইসলরাইলের সাথে যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য আন্দোলন করছে। অথচ আরবরা জাতি ভাই হয়েও আজ নির্বিকার, আরব শাসকগোষ্ঠীসহ জনগণ পর্যন্ত ভোগবিলাসের মত্ত হয়ে আছে। তাদের এই ভন্ডামী একদিন তাদের পতনের কারণ হবে, ইনশাআল্লাহ। যে জাতি একজন খ্রিষ্টান নারীর জন্য স্পেন বিজয় করতে পারে, সে জাতি আজ নিজের বোনের আর্তনাদ শুনতে পায় না।

অন্যদিকে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিশ্বব্যাপী চলমান ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে পদযাত্রা ও সংহতি সমাবেশ করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের একাংশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে তারা ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন ও পদযাত্রা করেন।

এ ব্যাপারে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব সোপান বলেন, আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিশ্বব্যাপী চলমান ছাত্র আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে পদযাত্রা ও সংহতি সমাবেশ করেছি। ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানাতে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সহ সকল শেণি পেশার মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।

;