ঢাবির ফার্মেসি অনুষদের সাবেক দুই ডিনের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফার্মেসি অনুষদ

ফার্মেসি অনুষদ

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফার্মেসি অনুষদের সাবেক দুই ডিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একটি অভিযোগ পাঠানো হয়েছে। অভিযোগটি কে করেছেন, চিঠিতে তার পূর্ণ নাম লেখা নেই।

১৫ এপ্রিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বরাবর পাঠানো অভিযোগের চিঠিটি ১১ মে গ্রহণ করে দুদক। অভিযোগের অনুলিপি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও জাতীয় প্রেসক্লাবেও পাঠানো হয়।

ওই চিঠিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের তহবিল থেকে টাকা আত্মসাতের মামলায় গত ২২ মার্চ শাহবাগ থানা পুলিশ অনুষদের অফিস সহকারী সাজ্জাদ হোসেন ও পিয়ন সুজনকে গ্রেফতার করে। দুর্নীতি সংক্রান্ত বিষয় হওয়ায় শাহবাগ থানার পক্ষ থেকে তা দুদককে অবহিত করে চিঠি পাঠানো হলে গ্রেফতারকৃত আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।

তথ্য অনুযায়ী, অগ্রণী ব্যাংকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় পরিচালিত ফার্মেসি অনুষদের উন্নয়ন তহবিল ও ফার্মেসি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ব্যাংক হিসাব থেকে অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক আব্দুর রহমানের সইয়ে বিভিন্ন সময়ে টাকা সরানো হয়। টাকা আত্মসাতের বিষয়টি নজরে আসার পর গত ১০ জানুয়ারি ফার্মেসি বিভাগের চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তদন্ত কমিটি এ ঘটনায় নিয়মিত মামলার সুপারিশ করলে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া ডিনের দায়িত্ব শেষ হওয়ার দুদিন পরও ব্যাকডেট দিয়ে অধ্যাপক আবদুর রহমান ১৩ লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। সাবেক ডিন অধ্যাপক এস এম আব্দুর রহমান ২০২০ সালে করোনা শুরু হলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরির নামে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে অনুদান বাবদ পাওয়া ৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। এ সংক্রান্ত তথ্য জানেন গ্রেফতার হওয়া কর্মচারীরা।

গত চার বছরে অধ্যাপক রহমান ঢাকার বাড্ডায় কয়েক কোটি টাকা খরচ করে ছয়তলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। ঢাকার উত্তরার একটি অভিজাত এলাকায় ফ্ল্যাট কিনেছেন। রয়েছে বিলাসবহুল গাড়ি। তার স্ত্রী একজন গৃহিণী হওয়া সত্ত্বেও তার নামে রয়েছে ঢাকায় ফ্ল্যাট ও কোটি কোটি টাকার এফডিআর। বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক হয়ে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের বাড়ি-ফ্ল্যাট, নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকার এফডিআরসহ এসবের উৎস কী, তা এনবিআরের মাধ্যমে তদন্ত করলেই বের হয়ে আসবে। অনুষদের সদ্য সাবেক ডিন এস এম আব্দুর রহমানের সইয়ে টাকা উত্তোলন করা হলেও তাকে এখনও গ্রেফতার না করায় দুদকের সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেন ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে।

গ্রেফতারকৃত দুই কর্মচারী অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক আ ব ম ফারুকের নিকট আত্মীয় হওয়ায় তিনি ডিন থাকাকালীন তাদের চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিতে নিয়োগের আবেদনের রেফারি হিসেবে অধ্যাপক আ ব ম ফারুকের সুপারিশ রয়েছে। এদের মধ্যে পিয়ন সুজন তার স্ত্রীর ভাগ্নে হওয়ায় তার মাধ্যমে বিভিন্ন মাধ্যম থেকে ঘুষ নিয়েছেন অধ্যাপক আ ব ম ফারুক ও অধ্যাপক আব্দুর রহমান। পিয়ন সুজনের কোটি টাকার সম্পদের হিসাব নিলেই এর সত্যতা মিলবে।

অধ্যাপক আ ব ম ফারুক ডিন থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতি সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে। ঢাকা শহরে তার ও তার আত্মীয়-স্বজনদের নামে-বেনামে একাধিক বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, গাড়ি ও বাড়ি রয়েছে। এমনকি তার দুই মেয়ে বিদেশে থেকে পড়াশোনা করছেন, যা কোনোভাবেই তার আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। কয়েক বছর আগে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানীর বেসরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ হিসেবে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে এবং বাংলাদেশ ফার্মেসি কাউন্সিলের সদস্য থাকার কারণে বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্সপেকশনের নামে অনৈতিকভাবে লাখ লাখ টাকার আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন এবং তাদের নানাভাবে হয়রানি করেছেন।

তাছাড়া ২০১৫ সালের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির অধীনে সারাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলোর উৎপাদনের সার্বিক বিষয় তদারকির টিম লিডার থাকাকালীন অনেকগুলো কোম্পানির উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া এবং তাদের বিরুদ্ধে নেগেটিভ রিপোর্ট দেওয়ার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে কোটি কোটি টাকার অনৈতিক সুবিধা ও ঘুষ নিয়েছেন। শুধুমাত্র ব্যক্তিগত জিঘাংসা চরিতার্থ করার ঘৃণ্য মানসে খোঁড়া অজুহাতে অনেক কোম্পানির উৎপাদন বন্ধ করার সুপারিশ করেছেন। যদিও পরবর্তীতে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয়ে কোম্পানিগুলো আবার উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে।

অন্যদিকে অনুষদের সদ্য সাবেক ডিন অধ্যাপক আবদুর রহমান অধ্যাপক ফারুকের ঘনিষ্ঠ ও আস্থাভাজন হওয়ার সুবাদে দুই কর্মচারীকে বিভিন্ন সময়ে এসব কাজে ব্যবহার করেছেন। সাবেক এ দুই ডিনের বিরুদ্ধে শাহবাগ ও রমনা থানায় ঘুষ গ্রহণসহ বিভিন্ন অনৈতিক সুবিধা গ্রহণের অভিযোগে জিডিও রয়েছে। তাই দুই কর্মচারীকে রক্ষার্থে এবং অর্থ আত্মসাতের পুরো বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দফতরে নানাভাবে তদবির করে চালিয়েছেন অধ্যাপক আ ব ম ফারুক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর একে আজাদ চৌধুরী। আদালতে সাক্ষ্য দিলে অধ্যাপক আ ব ম ফারুক ও অধ্যাপক আব্দুর রহমানসহ অনেকে ফেঁসে যেতে পারেন। এজন্য তারা অনুষদের বর্তমান ডিনকে বিষয়টি সুরাহা করতে এবং মামলা প্রত্যাহারে চাপ দিচ্ছেন বলেও জানা গেছে।

এ ছাড়া ছয় মাস কিংবা এক বছর পর পর অডিট করার প্রয়োজন থাকলেও ফার্মেসি অনুষদে বিগত কয়েক বছরেও কোনো অডিট করা হয়নি বিধায় বিভিন্ন সময়ে এ ধরনের অর্থ আত্মসাৎ ও অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে। অতএব শিগগিরই অধ্যাপক রহমান ও অধ্যাপক আ ব ম ফারুককে গ্রেফতার করে ফরেনসিক রিপোর্টসহ তদন্ত করা হলে অর্থ আত্মসাৎ সংক্রান্ত সব দুর্নীতি বের হয়ে আসবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফার্মেসি অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. এস এম আবদুর রহমান বলেন, এসব অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমরাই আত্মসাতের ব্যাপারে অভিযোগ করলাম, তদন্ত কমিটি গঠন করলাম। সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনতে বললাম, এর পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের গ্রেফতারও করা হলো। আমরাই আবার এদের মুক্ত করতে চাইছি- এটা সম্পূর্ণ বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও হাস্যকর অভিযোগ।

তিনি আরও বলেন, এ অভিযোগ শুনে আমি রীতিমতো অবাক হচ্ছি। যারা এ ধরনের অভিযোগ দিয়েছে, তাদের অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে। আমি সিনেট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি এবং আমি ১১ মে নির্বাচনের জন্য নমিনেটেড হয়েছি, আর সেদিনই এ অভিযোগপত্র দুদকে দেওয়া হয়েছে। এতেই বুঝা যাচ্ছে আমার ক্ষতি করতেই এসব প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে।

এ দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. একে আজাদ চৌধুরী বলেন, আমি তো এসব ব্যাপারে কিছুই জানি না। এসবের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।

এ বিষয়ে জানতে ফার্মেসি অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক আ ব ম ফারুক ও উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হয়। কিন্তু তারা কল রিসিভ করেননি।

উল্লেখ্য, অনুষদটির সদ্য সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. এস এম আবদুর রহমানের সই জালিয়াতি করে ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত, অগ্রণী ব্যাংকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার A/C 0200009379565 এবং A/C 0200000947674 একাউন্ট থেকে আনুমানিক ২০টি চেকের মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে অনুষদের ডেভেলপমেন্ট ফান্ড থেকে ৭ লাখ ৭৬ হাজার টাকা এবং ফার্মেসি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের ৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা হয়। ছয় মাস কিংবা এক বছর পর পর অডিট করার প্রয়োজন থাকলেও অনুষদে প্রায় দুই বছরেও তা করা হয়নি।

পরবর্তীতে গত ১০ জানুয়ারি ফার্মাসি বিভাগের চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন তৎকালীন ডিন আবদুর রহমান। কমিটির প্রতিবেদনে দুজনকে সন্দেহ করা হয়েছিল। তদন্ত কমিটি এই ঘটনায় নিয়মিত মামলার সুপারিশ করা হয়। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়টির সিন্ডিকেটে মামলা করার সিদ্ধান্তটিও অনুমোদিত হয়।

পরবর্তীতে ফার্মাসি অনুষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন ও অফিস সহায়ক মো. সুজনের সংশ্লিষ্টতা পেলে বিভাগ তাদের আটক করে। পরে তাদের আদালত পাঠানো প্রেরণ করা হয়।

   

মধ্যরাতে জবির ছাত্রী হলে আগুন, ভয়ে অসুস্থ ১



জবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ছাত্রী হল বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে হঠাৎ গ্যাস লিকেজ থেকে গ্যাসের চুলায় আগুন ধরে যায়। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো হলে। তবে দ্রুতই আগুন নেভাতে সক্ষম হয় ছাত্রীরা।

শুক্রবার (০৩ মে) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলেও ভয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে এক ছাত্রী। তবে প্রাথমিকভাবে ওই ছাত্রীর নাম পরিচয় জানা যায়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রী হলের এক শিক্ষার্থী জানান, হলের অধিকাংশ অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র নষ্ট অথবা মেয়াদোত্তীর্ণ। আগুনের ঘটনায় সবাই আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করে। অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র না থাকায় ভেজা কাথা দিয়ে আগুন নেভানো হয়।

ওই ছাত্রী আরও জানান, আজ হলের কোনো ফ্লোরেই কোনো হাউজ টিউটর নেই। যে ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েছে তাকে ট্রিটমেন্ট দেওয়ার মতোও পরিস্থিতি নাই। হলের ম্যাক্সিমাম গ্যাস লাইনে লিকেজ আছে। লাল টেপ দিয়ে লিকেজ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এগুলো ঠিক না করলে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। 

;

জাবিতে খাবার হোটেলে দাম বেশি রাখার অভিযোগ: ১৫ হাজার টাকা জরিমানা



মাহমুদুল হাসান, বার্তা২৪.কম, জাবি করেসপন্ডেন্ট
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বটতলাস্থ ‘রাঁধুনী’ হোটেলের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপকের কাছ থেকে খাবারের দাম বেশি রাখার অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও কনজ্যুমার ইয়ুথ বাংলাদেশ (সিওয়াইবি)।

শুক্রবার (৩ মে) বটতলায় এবং সালাম-বরকত হল সংলগ্ন খাবারের দোকানগুলোতে খাবারের মান নিয়ন্ত্রণ, মূল্য তালিকা পর্যবেক্ষণ ও হোটেল মালিকদের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পরিবেশনে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও কনজ্যুমার ইয়ুথ বাংলাদেশ (সিওয়াইবি) জাবি শাখার উপদেষ্টা ইখতিয়ার উদ্দিন ভূঁইয়া।

অভিযান পরিচালনাকালে ইখতিয়ার উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘রাঁধুনী’ হোটেলের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি এবং যথোপযুক্ত জরিমানা করেছি। প্রত্যেক দোকানে খাবারের মান ঠিক রাখতে সতর্ক করা হয়েছে। নিয়মিত আমাদের এই অভিযান চলবে। ভবিষ্যতে পচা-বাসি খাবার খাওয়ানোর কিংবা দাম বেশি রাখার অভিযোগ পেলে দোকান বন্ধ করে দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত বুধবার (১ মে) দর্শন বিভাগের এক অধ্যাপক ‘রাঁধুনী’ হোটেলে খাবার খেতে গেলে খাবার মূল দামের দ্বিগুণ রাখেন হোটেল মালিক রিপন মিয়া।

ভাউচারে দেখা যায়, ৩০ টাকা মূল্যের তিন প্লেট ভাতের দাম রাখা হয়েছে ৯০ টাকা। ৩৫ টাকা মূল্যের দইয়ের দাম রাখা হয়েছে ১০০ টাকা। ৬০ টাকা মূল্যের টেংরা মাছের দাম রাখা হয়েছে ৮০ টাকা। শাক ও কচুর লতির দাম ৮০ টাকা হলেও রাখা হয়েছে ৩শ ৪০ টাকা। ১শ টাকা মূল্যের দুই পিস রুই মাছের দাম রাখা হয়েছে ৩শ টাকা।

;

চাকরির বয়স ৩৫ বছর করার দাবিতে ১১ মে ঢাবিতে সমাবেশ



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর চেয়ে আন্দোলন জোরদার করতে আগামী ১১ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমাবেশের ডাক দিয়েছে ‘চাকরিতে ৩৫ প্রত্যাশী সাধারণ শিক্ষার্থী সমম্বয় পরিষদ’।

শুক্রবার (৩ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের মুখপাত্র শরিফুল হাসান শুভ এ ঘোষণা দেন।

শরিফুল হাসান শুভ বলেন, চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা স্থায়ীভাবে বৃদ্ধি চাই। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, ৩৫ বছর চাই। তারই ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালের ৩০ আগস্ট থেকে লাগাতার কর্মসূচির অংশ হিসেবে দাবি বাস্তবায়নের জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বরাবর ডিও লেটার প্রদান, জাতীয় পার্টির মহাসচিব অ্যাডভোকেট মো. মুজিবুল হক চুন্ন, এমপি জোর সুপারিশ করেছেন এবং সেই সঙ্গে দাবি বাস্তবায়নে ৩৫ জন স্থানীয় সংসদ সদস্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে নীতিগত সমর্থন করে জোর সুপারিশ করেন।

সেই সঙ্গে দাবি বাস্তবায়নে ৫ জন পেশাজীবী সংগঠন ও ৩ জন ছাত্র সংগঠনের লিখিত সুপারিশের ভিত্তিতে দ্রুত প্রজ্ঞাপন চেয়ে আগামী ১১ মে শিক্ষার্থী সমাগম পর্যন্ত আলটিমেটাম দেওয়া হলো।

তিনি আরো বলেন, চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা স্থায়ীভাবে বাড়াতে হবে অর্থাৎ আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী এটা নির্ধারণ করতে হবে। এ দাবি নিয়ে আমরা অনেকদিন ধরে লাগাতার কর্মসূচি পালন করে আসছি। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।

উল্লেখ্য, এ সময় তিনি চাকরির বয়স ৩৫ বছর চাওয়ার নানাবিধ যৌক্তিকতা ও উপকারিতা উপস্থাপন করেন।

;

জবি শিক্ষককে দেখে নেয়ার হুমকি, সতর্ক করেই দায় সেরেছে প্রশাসন



জবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহ মো. নিস্তার জাহান কবিরকে প্রকাশ্য হেনস্থা ও হুমকির ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী সাঈদুল ইসলাম সাঈদকে সতর্ক করেই দায় সেরেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এ নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। তাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দীর্ঘদিনের দায়সারা কাজের ফলশ্রুতিতেই এখন শিক্ষককেও হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। এভাবে অপরাধ করেও পার পেয়ে যাওয়ার ফলে অপরাধ প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিচারহীনতার সংস্কতির ফলে ভবিষ্যতে কোনো শিক্ষক মারধরের শিকার হলেও সেটিতে কেউ অবাক হবে না।

গত সোমবার (২৯ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বছরের ২৮ আগস্ট, সোমবার বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধ ভাস্কর্যের সামনে শিক্ষকদের বাস ছাড়ার পূর্ব মুহূর্তে আপনি (সাঈদুল ইসলাম সাঈদ) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শাহ মোঃ নিসতার জাহান কবিরের সঙ্গে চরম ধৃষ্টতামূলক আচরণ করেন। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির মতামত অনুসারে আপনাকে ভবিষ্যতে এ ধরণের কর্মকান্ড না করার এবং করলে কঠিনতম শাস্তি প্রদান করা হবে মর্মে সর্তক করা হলো।

এই ঘটনায় গত বছর ৩১ আগস্ট তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. অশোক কুমার সাহা, সদস্য হিসেবে সাবেক সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার হেদায়েতুল্লা তুর্কিকে মনোনীত করা হয়।

এভাবে প্রকাশ্যে একজন শিক্ষককে হেনস্তা ও হুমকির ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল। এ ঘটনায় জড়িত শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী সাঈদুল ইসলাম সাঈদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানিয়েছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। এছাড়া সাঈদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বরাবর আলাদা লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছিল। পরে সাঈদের বিরুদ্ধে মানববন্ধনের ডাক দিলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে মানববন্ধন স্থগিত করে বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. অশোক কুমার সাহা বলেন, তদন্ত কমিটি প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানি নিয়ে একটি লিখিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সেই অনুযায়ী কিছু সুপারিশমালা দেওয়া হয়েছে৷ এখন প্রশাসন এটাকে কীভাবে নিষ্পত্তি করবে সেটা তাদের ওপর নির্ভর করছে। এখন বাকী দায়িত্ব প্রশাসনের ওপর, তদন্ত কমিটির না। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন তাদের পছন্দ না হলে তদন্ত আবার করতে পারে। তদন্ত একাধিক বার হতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ও সুপারিশের সাপেক্ষে উপাচার্যের নির্দেশে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে৷ অপরাধের ধরনের উপর ভিত্তি করেই তাকে প্রাথমিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। ভুক্তভোগী শিক্ষক যদি এই বিচারে সন্তুষ্ট না হোন তবে পুনরায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক ড. শাহ মো. নিসতার জাহান কবির বলেন, সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টির বিষয়ে কিছু বলবো না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সকল সিদ্ধান্তকে আমি সম্মান করি। তবে মতামত প্রকাশ বা সমালোচনার অধিকার সকলেরই রয়েছে। প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে ইতিবাচক কিছুই হয় নি। এর ফলে অন্যায়কারীরা আরও শক্তিশালী হবে, তারা আরও সাহস পাবে। তারা ভাববে অন্যায় করে কিছু হয় না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তো কিছু করতে পারে না, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ক্ষমতা নেই।

তিনি আরও বলেন, ছেলেটি আমাদের বিভাগের এসে বিভাগের সিদ্ধান্তকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছে। বিভাগের সিদ্ধান্তকে পরিবর্তন করার ক্ষমতা বা শক্তির উৎস কোথায় সেটি খুঁজে বের করা উচিত ছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।

জানা যায়, ডিবেটিং সোসাইটির নির্বাচনের জন্য সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে অভিযুক্ত সাঈদুল ইসলাম সাঈদ তার পছন্দের ২ জনকে ভোটার করার জন্য অধ্যাপক শাহ নিস্তারকে অনুরোধ করেন। এ সময় অধ্যাপক নিস্তার বলেন, প্রতিনিধি মনোনয়নের জন্য আলাদা শিক্ষক রয়েছেন। তারা বাছাই করে তা নির্ধারণ করেন। তবে সাঈদ অধ্যাপক নিস্তারকে নিজের পছন্দের লোককে ভোটার করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। পরে তিনি অস্বীকৃতি জানালে প্রকাশ্যে 'দেখে নেয়ার' হুমকি দেন।

;