৬ দফা দাবিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিক্ষার্থীর অনশন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসার মান উন্নয়ন ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য ৬ দফা দাবিতে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই ওই মেডিকেল সেন্টারে অনশনে বসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী। অনশনে বসা মহিউদ্দিন রনি বিশ্ববিদ্যালয়টির থিয়েটার অ্যান্ড পারফর্ম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের অধ্যায়নরত ও শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
শনিবার (৯ এপ্রিল) নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে তাঁর দাবি আগামী ১২ ঘণ্টায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দাবি পূরণের নিশ্চয়তা, এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ শুরু না করলে আমরণ অনশনের হুঁশিয়ারি দেন। এর কয়েকদিন আগে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে পায়ের চিকিৎসা নিতে গিয়ে নানা অসুবিধা ও অব্যবস্থাপনার শিকার হন মহিউদ্দিন।
মহিউদ্দিন রনির সঙ্গে মফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বার্তা২৪.কম’কে বলেন, আমি গত কয়েকদিন যাবৎ এখানে চিকিৎসার জন্য পড়ে আছি। এখানে নেই কোনো নিয়মিত চিকিৎসা সেবা, নেই কোনো ওয়ার্ড বয়। আমার পায়ের সমস্যার কারণে লো কমোড টয়লেট ব্যবহার করতে পারছি না। কিন্তু শতবর্ষের একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে কোনো হাই কমোড নেই! ভাবা যায় এগুলো!
তিনি আরো বলেন, বাথরুমের জন্য আমার বন্ধুরা এসে টিএসসিতে নিয়ে যায়। আমাকে হাই কমোডের জন্য এত বড় ভোগান্তির শিকার হতে হবে অসুস্থ না হলে জানতামই না। এটা শুধু আমার একার সমস্যা নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০ হাজার শিক্ষার্থীর সমস্যা এটা।
ভুক্তভোগী এ শিক্ষার্থী বলেন, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমি প্রয়োজনে একটি পা স্যাক্রিফাইস করার জন্য প্রস্তত আছি তবুও আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়ন না দেখে যাবো না।
তার ৬ দফা দাবিগুলো হলো:
১. মেডিকেল সেন্টারের এন্ট্রি পয়েন্টে ইনফরমেশন ডেস্ক স্থাপন করতে হবে।
২. প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক লিফ্ট, র্যাম্প, হুইল চেয়ার ও অন্যান্য এক্সেসোরিজ প্রদান করতে হবে।
৩. মেয়ে শিক্ষার্থীদের অন্তর্বর্তীকালীন শারীরিক সমস্যার সকল চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় টিকা প্রদান করতে হবে।
৪. অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় আধুনিক চিকিৎসা সামগ্রী ও ওষুধ প্রদান এবং প্রয়োজনীয় ইকুইপমেন্ট বা মেশিন স্থাপন করতে হবে।
৫.অতিদ্রুত মেডিকেল সেন্টার কর্তৃক নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার প্রদান ও ক্যান্টিন স্থাপন নিশ্চিত করতে হবে।
৬. অতিদ্রুত হাইকমোড, তথা হাইলি ডেকোরেটেড স্যানিটেশন সিস্টেমে টয়লেট, বাথরুম তৈরি করতে হবে।
এ ব্যাপারে ঢাবি শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা মেডিকেল সেন্টারের পরিচালক ডা. হাফেজা জামান বার্তা২৪.কম’কে বলেন, রনির অনশনের বিষয়টি আমি জানতাম না। গতকাল (শুক্রবার) আমি ওর সমস্যাগুলো শুনেছি। যেসব বিষয় আমার হাতে আছে সেগুলো দ্রুত করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছি। আর বাকি বিষয়গুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে যত দ্রুত সম্ভব করে দেওয়ার কথা বলেছি।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায় নি