ধারাবাহিক উপন্যাস ‘রংধনু’-৩



মাহফুজ পারভেজ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

[তৃতীয় কিস্তি]

ম্যারির গোপন কষ্ট অনুভব করলেও আবেগাক্রান্ত হন না মিসেস অ্যানি। তার মতামত ও মনোভাব অন্যরকম এবং বহুলাংশে বাস্তবসম্মত। বহু মায়ের মতো তিনিও বিশ্বাস করেন, আবার নতুন সংসার শুরু করলে ম্যারির একাকীত্বের কষ্ট ও অন্যান্য সমস্যার সুরাহা হয়ে যাবে। সে লক্ষ্যে তিনি তার চেষ্টা অব্যাহত রাখেন। অন্যদিকে, তাকে ঘিরে মায়ের এসব তৎপরতার কারণে ম্যারি সারাক্ষণ তটস্থ থাকেন। অবশেষে মায়ের আতিশয্য ও উৎসাহী প্রেমিকবৃন্দের উপদ্রব থেকে বাঁচতে তিনি বাড়িতে কম সময় কাটানোর পথ খুঁজতে থাকেন। টমাস দিনে দিনে বড় হচ্ছে। একা একাই সে তার কাজকর্ম করতে পারে। এদিকে তার স্কুলিং শুরু হয়ে গেছে। ম্যারি ভাবলেন, যথেষ্ট হয়েছে, আর নয়। বাড়িতে মায়ের একতরফা কথা শোনা আর উৎসাহী প্রেমিকদের আনুষ্ঠানিক ও আতঙ্কজনক আগমনের জন্য ক্লান্তিকর অপেক্ষায় দিন কাটানোর কোনো মানে হয় না। তার যতটুকু পড়াশোনা, তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোটখাট চাকরি জুটে যাওয়ার কথা। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনি প্রাক্তনী এবং তার সাবেক স্বামী এখানে অধ্যাপনা করেছেন। নিজের পরিবারের মতোই বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সঙ্গে তার নিবিড় সম্পর্ক। ফলে অল্প-বিস্তর খোঁজ-খবর করতেই বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরিতে অনায়াসে চাকরি হয়ে গেলো ম্যারির। ম্যারি আপাতত হাফ ছেড়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস নেওয়ার ফুসরত পেলেন।

দিনের বেশির ভাগ অংশ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে লাইব্রেরির কাজে কাটিয়ে পড়ন্ত বিকেলে ক্লান্ত ম্যারি বাড়ি ফিরলে মিসেস অ্যানি ম্যার্গারেট কথাবার্তা বলার সাহস পান না। তার পরিশ্রান্ত মেয়ের দিকে তাকিয়ে কথাবার্তা বলার ভাবনায় ইতি টানেন। এদিকে, লাইব্রেরির কাজে যোগ দিয়ে এক অতলান্ত জগতের দেখা পেয়েছেন ম্যারি। কাজের ফাঁকে ফাঁকে পড়ছেন অসাধারণ নানা বই। বাস্তব জগতের কষ্ট-বেদনা থেকে তিনি যেন মুক্তির স্বাদ পান বইয়ের প্রশান্ত পাতায়। লাইব্রেরিয়ান মিসেস ন্যান্সি অনেক আগে থেকেই ম্যারিকে চেনেন। তার ব্যক্তিগত জীবনের ভাঙাগড়াও মিসেস ন্যান্সির অজানা নয়। তিনি নিজে আগ্রহী হয়ে ম্যারিকে চমৎকার সব বই পড়ার জন্য বেছে দেন। কিছু অর্ধ-পঠিত বই ম্যারি সঙ্গে করে বাসায় নিয়ে আসেন। বিশ্রাম ও নিজের কিছু কাজকর্ম করার পর সেগুলো নিয়ে বিছানায় যান তিনি। ক্রমশ তার যাপনের আটপৌরে রুটিনে বড় ধরনের রূপান্তর ঘটে। তিনি আর বই একাকার হতে থাকে দিনে দিনে। ম্যারির এমন রুটিন ভেদ করে মা কথা বলার সুযোগ পান খুবই কম। এমন পরিস্থিতি ম্যারির জন্য কম স্বস্তির বিষয় নয়।

ফলে আজকাল মিসেস অ্যানি মার্গারেট ডিনারের সময়টাতেই শুধু ম্যারির সঙ্গে আলাপের সুযোগ নিতে পারেন। তারও কাজ কম নয়। দৌড়াদৌড়িতে তার দিন শুরু হয় মেয়ে লাইব্রেরি ও নাতীর স্কুলে যাবার তাড়ার মধ্যে। তখন দম ফেলার মতো অবস্থায় থাকে না কেউই। বাকী দিন সবাই থাকে সবার কাজে ব্যস্ত। অতএব রাতের খাবারের সময়ই কিছুটা আলাপের অবসর মেলে। তখন টুকটাক কথার বেশি কিছু বলাও সম্ভব হয় না। দিনে দিনে মিসেস অ্যানি মার্গারেটের বকবকানি অনেকটাই হ্রাস পেতে থাকে। পরিস্থিতির পরিবর্তনে মনে মনে খুশি হন ম্যারি।    

কিন্তু রাত নামতেই ম্যারির নিজের মধ্যে দ্বিধা এসে ভর করে। তার মন-প্রাণ চলে যায় অন্ধকারের কালো চাদরে আচ্ছাদিত বাগানে। তিনি নিশ্চিত হতে পারেন না যে, বাগানের পাইন গাছটি তাকে টানে, নাকি তিনি নিজেই কাছে টেনে নেন পাইনকে? নাকি ক্যাভিনের স্মৃতি, যা আচ্ছন্ন হয়ে আছে পাইনের চারপাশে, তা গাছটির সঙ্গে মিলেমিশে তাকে অলক্ষ্যে ডাকে মধ্যরাতের নিশুতি প্রহরে? ম্যারি এসব প্রশ্নের মীমাংসা করতে পারেন না। তার দ্বিধা ও সংশয় বাড়তে থাকে। তথাপি তন্দ্রাচ্ছন্ন, ভূতে পাওয়া মানুষের মতো রাতের কালচে অন্ধকারে, বেগুনী, নীলাভ ফুলকির মাঝ দিয়ে তিনি প্রতিরাতে চলে আসেন বাগানে, পাইনের নৈকট্যে। 

পাইনের কাছে এলে তার শরীর ও মনে অবাক কাণ্ড ঘটে। তিনি নিবিড়ভাবে টের পান স্মৃতির অমোচনীয় স্পর্শ। আগুন দেখে পতঙ্গের ছুটে যাওয়ার মতো তিনি যেন অজানা টানে অন্ধকার বাগানে পাইন গাছের তলে চলে আসেন নিজেরই স্মৃতিকুণ্ডলীতে। তখন নিজের উপর তার কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। তিনি অতীতের লেলিহান শিখায় অনুভব করেন স্মৃতির দুর্দমনীয় দাপট। তার মনে পড়তে থাকে পাইনের তলে ক্যাভিনের সঙ্গে অতিক্রান্ত অসংখ্য দিবস ও রজনীর টুকরো টুকরো কথা ও অভিজ্ঞান। 

ক্যাভিনের সঙ্গে ম্যারি যখন প্রথম এই বাড়িতে আসেন, তখন প্রায়-জংলার মতো আগাছায় ভরা ছিল পুরো বাগান। অবহেলায় বাড়ন্ত শিশু পাইন গাছটি ছিল ঝোপের আড়ালে। বেশ কয়েক দিন কঠোর পরিশ্রম করে ক্যাভিন বাগানের চেহারা পাল্টে দেন। আগাছার কবল থেকে উদ্ধার করেন পাইন গাছটিকে। গাছের চারপাশটা সুন্দর করে গুছিয়ে বসার চমৎকার পরিবেশ তৈরি করে ফেলেন ক্যাভিন। বইপড়া, চা-খাওয়া, ম্যারির সঙ্গের গল্পের সময়গুলো তিনি কাটাতে থাকেন পাইনের তলে। সবসময় ক্যাভিনের একটি সতর্ক নজর থাকে পাইন গাছটির দিকে। গাছটির কখন কি প্রয়োজন, তা নিয়ে ক্যাভিনের আগ্রহের অন্ত নেই।

ম্যারি খেয়াল করেন পাইন নিয়ে ক্যালিনের ব্যস্ততা ও আগ্রহের বিষয়টি। একদিন তিনি সরাসরি জানতে চান,

‘পাইন গাছটিকে এতো ভালোবাসো তুমি? পাইন কি তোমার প্রিয় বৃক্ষ?’

‘না। আমার প্রিয় বৃক্ষ ঝাঁকড়া মাথার জলপাই। আমার পূর্বপুরুষ ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল থেকে এসেছিল। জলপাই তাদের স্মৃতিতে উজ্জ্বল। এই পাইনকে ভালোবাসি অন্য কারণে।’

‘কি সেই কারণ?’

‘কারণ, এই পাইন আমাদের প্রথম সন্তানের মতো। তোমার, আমার নতুন জীবনে, এই নতুন বাসগৃহে প্রথম আমরা যাকে পেয়েছি, তা এই পাইন গাছ।’

ক্যাভিনের উত্তরে দারুণ চমকে উঠেন ম্যারি। তার ভেতর মাতৃত্বের প্রবল ঢেউ আলোড়ন জাগায়। তিনি গভীর মমতায় শিশু থেকে তারুণ্যের পথে বর্ধিষ্ণু পাইনের দিকে মগ্ন চোখে তাকিয়ে থাকেন। বেশ অনেকক্ষণ পর ক্যাভিনের কথায় ম্যারির ধ্যান ভাঙে।

‘জানো তো, মা-বাবার নিবিড় সান্নিধ্যে থাকলে সন্তানের বিকাশ ভালো হয়। তাদের শৈশব, কৈশোর, বেড়ে ওঠা, সবকিছু চাপমুক্ত হয়। আমরাও যত বেশি পাইনের কাছে থাকবো, ততদ্রুত গাছটিও সাহসী মানুষের মতো সুস্থ ও সবলভাবে বড় হবে।’

এইসব স্মৃতি ও কথোপকথন প্রবলভাবে মনে পড়ে পাইনের কাছে এলে। ম্যারির কষ্টগুলোও বুনো বাতাসের  মতো হু হু করে বাড়তে থাকে। পাইনের সমান্তরালে নিজের সন্তান টমাসের অবয়ব ভাসে চোখে। পিছনের দৃশ্যপটে ক্যাভিনের উপস্থিতি। ম্যারি ভীষণ অবাক হন। যে পিতা একটি অনাথ ও অবহেলিত পাইন গাছকে পিতৃত্ব-মাতৃত্ব দিয়ে লালন করার স্বপ্ন দেখতো, দিন-রাতের অধিকাংশ সময় পাইনের আশেপাশে থাকতো, সে কি করে ঔরসজাত সন্তানের কাছ থেকে স্বেচ্ছায় দূরে চলে গেলো! এই প্রশ্নের উত্তর তিনি অনেক ভেবেও খুঁজে পান না।

ম্যারি নানাভাবে বুঝতে চেষ্টা করেন, 'আকর্ষণ' কত দূর অবধি গেলে শুধুই 'আকর্ষণ' থাকে, আবার কত দূর চলে গেলে 'অবসেশনে' পরিণত হয়? 'অবসেশন’ ও 'আকর্ষণ'-এর মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা ঠিক ঠিক জানতে না পারলেও মানুষ আকর্ষণ, বিকর্ষণ, অবসেশন নিয়েই বেঁচে থাকে। কখনো কোনো মানুষের কাছে আসে, কখনো দূরে যায়। মানুষের একা কিংবা যৌথ জীবনে এক রহস্যময় ত্রিভুজের মতো আকর্ষণ, বিকর্ষণ, অবসেশন ঘিরে থাকে।

এক সময় বাগান থেকে ঘরে ফিরে আসেন ম্যারি। বিছানায় শুয়ে টের পান তার মাথায় আগ্নেয়গিরির লাভাস্রোতের মতো বইছে প্রশ্নের স্রোত। তার আর ঘুম আসে না। সাইড টেবিল থেকে মোবাইলটা হাতে নিয়ে দেখেন সকাল হতে অনেক বাকী। তিনি ফোনের মিউজিক অপশনে গিয়ে একটি গান বেছে নেন। তাদের ক্যাম্পাসে পড়তে আসা পল্লবী নামের এক দক্ষিণ এশীয় তরুণী গানটি তাকে প্রেজেন্ট করেছে। গানের কথাগুলো বাংলায় হলেও সুর তাকে আচ্ছন্ন করে প্রবলভাবে। কখনো সুযোগ হলে গানটি তিনি ইংরেজিতে তর্জমা করার ইচ্ছা রাখেন। তিনি গানটি চালু করে চোখ বন্ধ করেন। কিন্তু তার হৃদয় যেন গানের কথাগুলোর সঙ্গে যৌথতায় গাইছে:

'যদি আর কারে ভালবাসো

যদি আর ফিরে নাহি আসো

তবে তুমি যাহা চাও তাই যেন পাও

আমি যত দুঃখ পাই গো।'

[পরবর্তী কিস্তি আগামী শুক্রবার]

আরও পড়ুন: ধারাবাহিক উপন্যাস ‘রংধনু’-২

ধারাবাহিক উপন্যাস 'রংধনু'-১

দারুণ সৌভাগ্য আমাদের



মহীবুল আজিজ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...

আমি ক্রমশ সরু হয়ে যাওয়া ইতিহাসের
গলিটার দিকে তাকাই।
ওপার থেকে ছিটকে আসে বিগত কালের আলোক,
ইহুদিদের চর্বি দিয়ে সাবান বানিয়েছিল জার্মানরা।
বাথটাবে সেই সাবানের ফেনার মধ্যে ঠেসে ধরে
ওরা ঠাপাতো ইহুদি মেয়েদের।
পাকিস্তানিরা ঐভাবেই ঠাপাতো আমাদের।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
সিন্ধু থেকে আসতো আমাদের জেলা প্রশাসকেরা,
পেশোয়ার থেকে গভর্নরেরা।
স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের হেডটিচার
প্রিন্সিপাল ভিসি'রা আসতো লাহোর করাচি মুলতান থেকে।
ফ্যালফেলে তাকিয়ে আমরা ভাবতাম,
আহা কবে জন্ম নেবে আমাদের মেসায়া!
নেপথ্যে ভেসে আসতো অদম্য কুচকাওয়াজের শব্দ।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
আমরা লম্বা লম্বা পাঞ্জাবি পরতাম গোড়ালি পর্যন্ত।
ঘরে ঘরে রবীন্দ্রনাথ নজরুলের গান বাজতো কাওয়ালির সুরে--
আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের নাম ভুলে যেতাম
কিন্তু জিন্না'কে ভুলতাম না।
ধরো তোমার যদি জন্ম না হতো...
ঢাকার মাঠে খেলা হতো পাকিস্তান ক্রিকেট টিমের।
প্রত্যেকটি খেলায় একজন করে সুযোগ পেতো
বাঙালি টুয়েল্ফথৃ ম্যান যারা মূল খেলোয়াড়দের
বিশ্রাম দেবার জন্য প্রচণ্ড দাবদাহের রোদে
প্রাণপণ ফিল্ডিঙয়ের ওস্তাদি দেখাতো।

আমাদের কাজ হতো শুধু
পাকিস্তানিদের চার-ছয়ে উদ্দাম হাততালি দেওয়া,
হাততালি দিতে দিতে তালু ফাটিয়ে ফেলা।
তীব্র হাততালির শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলে দেখি
আজ মার্চের সতেরো।
দারুণ সৌভাগ্য আমাদের তুমি জন্ম নিয়েছিলে!
১৭-০৩-২০২৩

;

বঙ্গীয়’র কিশোরগঞ্জ কমিটি গঠনের দায়িত্বে শাহ্ ইস্কান্দার আলী স্বপন



মায়াবতী মৃন্ময়ী, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বঙ্গীয়’র কেন্দ্রীয় সভা অনুষ্ঠিত

বঙ্গীয়’র কেন্দ্রীয় সভা অনুষ্ঠিত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঝদ্ধ মননের প্রাগ্রসর ভূমিপুত্র শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারম্যান ও মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপন বঙ্গীয়’র কিশোরগঞ্জ কমিটি গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি দেশের শীর্ষস্থানীয় মাল্টিমিডিয়া নিউজ পোর্টাল বার্তা২৪.কম'র কন্ট্রিবিউটিং এডিটর ও কিশোরগঞ্জ নিউজ'র নিয়মিত লেখক।

বাংলা ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি,শিল্প, সংগীত, কৃষ্টি ও ঐতিহ্যকে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরার বহুল কার্যক্রম নিয়ে দেশের প্রাচীনতম ও অগ্রণী প্রতিষ্ঠা নবঙ্গীয় সাহিত্য- সংস্কৃতি সংসদ’র এক সভা এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

শনিবার (১১মার্চ ২০২৩) বিকেল ৪-৩০ টায় রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় নাট্যশালার কনফারেন্স হলের ভিআইপি সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় দেশের বরেণ্য শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী ও উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের উপস্হিতিতে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গীয় সাহিত্য- সংস্কৃতি সংসদ’র মূখ্য উপদেষ্টা
কবি ও গীতিকার আজিজুর রহমান আজিজ। এতে সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম সঞ্চালনা করেন।

সভায় বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের সদস্য বার্তা২৪.কম'র কন্ট্রিবিউটিং এডিটর লেখক, কমামিস্ট ও গীতিকার শাহ্ ইস্কান্দার আলী স্বপনকে বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদ’র কিশোরগঞ্জ জেলা শাখা গঠনের দায়িত্ব আরোপ করে তার হাতে বঙ্গীয় সাহিত্য-সংস্কৃতি সংসদ’র ইশতেহার তুলে দেন বঙ্গীয় সাহিত্য-সংস্কৃতি সংসদ’র মূখ্য উপদেষ্টা কবি ও গীতিকার আজিজুর রহমান আজিজ এবং সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম এবং অন্যান্য নেতৃবর্গ ।

এতে আরো বক্তব্য রাখেন বঙ্গীয়'র জার্মানির সভাপতি কবি নাজমুন নেসা পিয়ারী, বিশিষ্ট রবীন্দ্র গবেষক আমিনুর রহমান বেদু, রবীন্দ্র একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সংগীতশিল্পী বুলবুল মহলানবিশ, ইউনেস্কোর ব্রান্ড এম্বাসেডর নাজমুল হাসান সেরনিয়াবাত, বঙ্গীয়'র সভাপতি পর্ষদের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. শাহিনুর রহমান, বঙ্গীয়'র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে আলী নিয়ামত, কবি নাঈম আহমেদ, বঙ্গীয়'র কেন্দ্রীয় সদস্য কবি মীনা মাশরাফী, কবি পারভিন আক্তার সহ প্রমুখ।

সভার প্রথম পর্বে আন্তর্জাতিক রবীন্দ্র সম্মিলন উদযাপন বিষয়ক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কবি আজিজুর রহমান আজিজকে আহবায়ক এবং সংগীতশিল্পী শামা রহমানকে সদস্য সচিব করে উদযাপন কমিটি গঠিত হয়। কমিটিতে বঙ্গীয়র সভাপতি পর্ষদের সকল সদস্য, রবীন্দ্র একাডেমির নির্বাহী শাখার সকল সদস্য, বঙ্গীয়র যুগ্ম সম্পাদকবৃন্দসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশিষ্টজনকে নিয়ে পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে।

দ্বিতীয় পর্বে অযুত তারুণ্যের বঙ্গবন্ধু সম্মিলন, দ্বিশতজন্মবর্ষে মাইকেল মধুসূদন দত্ত স্মরণ, অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত গ্রন্থ নিয়ে লেখক কবির আলোচনা সম্পন্ন হয়।

অনুষ্ঠানে সাংগঠনিক কার্যক্রমকে বিস্তৃত করার লক্ষ্যে ইউনাইটেড নেশন্সের ব্রান্ড এম্বাসেডর জনাব নাজমুল হাসান সেরনিয়াবাতকে সভাপতি পর্ষদের সদস্য, শিশু সাহিত্যিক হুমায়ূন কবির ঢালীকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক , সংস্কৃতি সেবক রোকনউদ্দীন পাঠানকে সাংগঠনিক সম্পাদক, কবি আনোয়ার কামালকে লিটল ম্যাগ সম্পাদক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তি সাংবাদিক শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপনকে নির্বাহী সদস্য ও কিশোরগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক, কবি মীনা মাশরাফীকে নীলফামারী জেলার সমন্বয়ক, জনাব এ এইচ এম সালেহ বেলালকে গাইবান্ধা জেলার সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়।

উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন, বীরমুক্তিযোদ্ধা লেখক কবি আবদুল হালিম খান, বীরমুক্তিযোদ্ধা রাজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, কবি মানিক চন্দ্র দে, কবি অর্ণব আশিক, কবি বাবুল আনোয়ার, দৈনিক বঙ্গজননীর সম্পাদক কামরুজ্জামান জিয়া, কবি শাহানা জেসমিন, কবি গবেষক আবু সাঈদ তুলু, চলচ্চিত্র নির্মাতা ড. বিশ্ব রায় (কলকাতা), বঙ্গীয় চট্রগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ফ্যাশন ডিজাইনার আমিনা রহমান লিপি, শিল্পী শাহরিয়ার পিউ, কবি সোহরাব সুমন, কবি সরকার পল্লব, কবি রহিমা আক্তার মৌ, কবি লিলি হক, কবি আকমল হোসেন খোকন, শাহ ইস্কান্দার আলী স্বপন, হিরা পারভেজ, ড. দিপু সিদ্দিকী, শিক্ষক ও কবি রওশন ই ফেরদৌস, কবি পারভীন আক্তার, কবি শিল্পী মাহমুদা, পূর্বধলার মো. জাকির হোসেন তালুকদার, কবি আনারকলি, কবি অপরাজিতা অর্পিতা, ডা. নূরুল ইসলাম আকন্দ, আবৃত্তিশিল্পী যথাক্রমে রূপশ্রী চক্রবর্তী, রবিউল আলম রবি সরকার, জেবুন্নেছা মুনিয়া, চন্দনা সেনাগুপ্তা, কবি সংগঠক রাজিয়া রহমান, কবি শামীমা আক্তার, শিল্পী সাদিয়া শারমিন, কবি কনক চৌধুরী, কবি তাসলিমা জামালসহ প্রমুখ।

;

কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব



মাহমুদ হাফিজ
কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব

কলকাতায় রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাহিত্য উৎসব

  • Font increase
  • Font Decrease

কলকাতায় শুরু হয়েছে রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের তিন দিনব্যাপী সাহিত্য উৎসব। শুক্রবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্দুমতি সভাগৃহে বিকালে এ উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। এবারের উৎসবে বাংলাদেশের কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন, পরিব্রাজক ও ভ্রমণগদ্য সম্পাদক মাহমুদ হাফিজ, স.ম. শামসুল আলম, নাহার আহমেদ, ড. নাঈমা খানম প্রমুখকে সম্মানিত করা হয়।

বিকালে উৎসব উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক নলিনী বেরা। বিশিষ্ট নাট্যকার চন্দন সেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক শঙ্করলাল ভট্টাচার্য ও কবি সব্যসাচী দেব। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের সাধারণ সম্পাদক কবি সুরঙ্গমা ভট্টাচার্য। এতে সমাপণী বক্তৃতা করেন সংগঠনের সভাপতি কবি স্বপন ভট্টাচার্য। উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন ইন্দ্রাণী ভট্টাচার্য।

আজ ও আগামীকাল ভবানীপুর এডুকেশন সোসাইটি হলে বিকাল থেকে কবিতা ও গল্পপাঠ, আলোচনা, শ্রুতিনাটক, সঙ্গীত অনুষ্ঠিত হবে। রাইটার্স ওয়ার্ল্ডের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, নেপাল, আসাম, ত্রিপুরার কয়েশ’ কবি লেখক অংশগ্রহণ করছেন।

;

কিশোরগঞ্জে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি



কনক জ্যোতি, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কিশোরগঞ্জে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি

কিশোরগঞ্জে মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি

  • Font increase
  • Font Decrease

করোনাকালে বন্ধ থাকার পর আবারো 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, বুদ্ধিবৃত্তিক সামাজিক উদ্যোগ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনে। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে 'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কার্যক্রমে ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মাহফুজ পারভেজ রচিত 'কোরআন-হাদিসের আলোকে মানবজীবনে রমজান' বইয়ের একশত কপি শুভেচ্ছামূলক প্রদান করা হবে। 

উল্লেখ্য, আগেও ইংরেজি নববর্ষে এবং ভাষার মাসে শত বিশিষ্টজনকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রন্থ উপহার দিয়েছিল ভাষাসৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, বরিষ্ঠ চিকিৎসক ডা. এ. এ. মাজহারুল হক ও সমাজসেবী নূরজাহান বেগম প্রতিষ্ঠিত কিশোরগঞ্জের শিল্প-সাহিত্য-সমাজ উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা 'মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন' এবং মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, আনসার বাহিনীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতার নামে গঠিত 'শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশন'। অনুষ্ঠানের মিডিয়া পার্টনার ছিল স্থানীয় নিউজ পোর্টাল কিশোরগঞ্জ নিউজ।

মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের পক্ষে জানানো হয়েছে যে, বরকতময়, নেয়ামতপূর্ণ মাহে রমজানের সঙ্গে অন্য কোনো মাসের তুলনা চলে না। রোজা হলো মাহে রমজানে অবশ্য পালনীয় ফরজ আমল, যার পুরস্কার স্বয়ং আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা নিজে দেবেন। মানবজীবনে রোজা একজন বান্দার আত্মীক ও শারীরিক কল্যাণের ও উন্নতির গুরুত্বপূর্ণ পন্থা। তদুপরি, রমজান মাসকে আল্লাহ সোবহানাহু তায়ালা তাঁর অপার ক্ষমা, দয়া আর অপরিসীম করুণা দিয়ে বান্দাদেরকে উপহার দিয়েছেন। রমজান মাসের গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত রোজা সঠিকভাবে পালন করলে রোজাদার নবজাতক শিশু মতো নিষ্পাপ হয়ে যায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাসে ঈমানের সাথে সাওয়াবের আশায় রোজা রাখবে তার পূর্বের সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’

পবিত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে মানব জীবনে ও সামাজিক ব্যবস্থায় রমজান মাস ও রোজার গুরুত্ব উপস্থাপন করা হয়েছে ফাউন্ডেশন প্রদত্ত গ্রন্থে। এ গ্রন্থ রমজান মাসের তাৎপর্য এবং রোজার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে পাঠকদের সামনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেছে ৩০টি সংক্ষিপ্ত অধ্যায়ের মাধ্যমে।

'কোরআন-হাদিসের আলোকে মানবজীবনে রমজান' বইয়ের লেখক মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. মাহফুজ পারভেজ। তাঁর পিতা: ডা. এ.এ, মাজহারুল হক, ভাষাসৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। মাতা: নূরজাহান বেগম, সমাজসেবী। ড. মাহফুজ পারভেজের জন্ম: ৮ মার্চ ১৯৬৬, কিশোরগঞ্জ শহরে। পড়াশোনা: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (পিএইচ,ডি)। পেশা: অধ্যাপনা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। লেখালেখি, গবেষণা ও সাহিত্য সাধনায় ব্রতী। প্রকাশিত গ্রন্থ কুড়িটি। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ- গবেষণা-প্রবন্ধ: বিদ্রোহী পার্বত্য চট্টগ্রাম ও শান্তিচুক্তি, দারাশিকোহ: মুঘল ইতিহাসের ট্র্যাজিক হিরো। দ্বিশত জন্মবর্ষে বিদ্যাসাগর। উপন্যাস: পার্টিশনস, নীল উড়াল। ভ্রমণ: রক্তাক্ত নৈসর্গিক নেপালে। গল্প: ইতিহাসবিদ, ন্যানো ভালোবাসা ও অন্যান্য গল্প। কবিতা: মানব বংশের অলংকার, আমার সামনে নেই মহুয়ার বন, গন্ধর্বের অভিশাপ। অধ্যাপনা ও গবেষণা ছাড়াও তিনি বাংলাদেশের শীর্ষতম মাল্টিমিডিয়া পোর্টাল বার্তা২৪.কম'র অ্যাসোসিয়েট এডিটর এবং কিশোরগঞ্জকে জানার সুবর্ণ জানালা কিশোরগঞ্জ নিউজ'র উপদেষ্টা সম্পাদক রূপে সংযুক্ত রয়েছেন।

কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, বুদ্ধিবৃত্তিক সামাজিক উদ্যোগ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের  'বইয়ের সাথে মাহে রমজান বরণ' কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে আয়োজিত হবে রমজান মাসের প্রথম সপ্তাহে। এ কার্যক্রম সমন্বয় করবেন কিশোরগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরির সম্পাদক, ইতিহাসবিদ ও পাঠাগার আন্দোলনের অগ্রণীজন মু আ লতিফ। সমন্বয় কমিটিতে আরো রয়েছেন কিশোরগঞ্জ নিউজ'র প্রধান সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, শাহ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শাহ ইসকান্দার আলী স্বপন, সাংস্কৃতিজন লুৎফুন্নেছা চিনু ও চিকিৎসক নেতা ডা. গোলাম হোসেন।

মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের পক্ষে আরো জানানো হয় যে, ইতিপূর্বে ঘোষিত ৬ষ্ঠ এবং ৭ম মাজহারুন-নূর সম্মাননা বক্তৃতা ২০২০ এবং ২০২১ করোনাকালের বিরূপ পরিস্থিতিতে স্থগিত থাকায় তা যৌথভাবে মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত হবে। ভাষা সংগ্রামী ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ডা. এএ মাজহারুল হক এবং সমাজসেবী নূরজাহান বেগম প্রতিষ্ঠিত কিশোরগঞ্জের শিল্প, সাহিত্য, শিক্ষা, সমাজসেবা ও বুদ্ধিবৃত্তিক সংস্থা 'মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন' কর্তৃক কিশোরগঞ্জের জীবিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জীবনব্যাপী বিশিষ্ট অবদানের স্বীকৃতি জানাতে ও ঐতিহাসিক মূল্যায়ন করতে ২০১৫ সাল থেকে এ সম্মাননা বক্তৃতা আয়োজন করা হচ্ছে, যা বক্তৃতা ও লিখিত আকারে প্রদান করেন মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. মাহফুজ পারভেজ।

মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন' গতানুগতিক সম্মাননার বদলে ব্যক্তির কর্ম ও কীর্তির বিশ্লেষণমূলক-মূল্যায়নভিত্তিক সম্মাননা বক্তৃতার মাধ্যমে তাঁর প্রকৃত স্বরূপ চিহ্নিত করে এবং এরই ভিত্তিতে জ্ঞাপন করা হয় যথাযথ সম্মান। সম্মাননা স্মারকের পাশাপাশি লিখিত আকারে বক্তৃতা-পুস্তিকায় চিত্রিত হন সম্মাননা প্রাপ্তগণ। মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন এই বুদ্ধিবৃত্তিক-একাডেমিক আবহে ধারাবাহিকভাবে সম্মাননা বক্তৃতার আয়োজন করে আসছে, যা কিশোরগঞ্জে তো বটেই, বাংলাদেশের মধ্যে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী। শুরু থেকে সম্মাননা বক্তৃতা প্রদান করেন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র প্রফেসর, বিশিষ্ট লেখক ও বুদ্ধিজীবী ড. মাহফুজ পারভেজ, যিনি কিশোরগঞ্জে পাবলিক লেকচার সিরিজের মাধ্যমে গণবুদ্ধিবৃত্তিক পরিসর তৈরির পথিকৃৎ।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে প্রথম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান শিক্ষাবিদ প্রাণেশ কুমার চৌধুরী, ২০১৬ সালে দ্বিতীয় মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান দীপ্তিমান শিক্ষকদম্পতি: অধ্যক্ষ মুহ. নূরুল ইসলাম ও বেগম খালেদা ইসলাম, ২০১৭ সালে তৃতীয় মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান ‘প্রজ্ঞার দ্যুতি ও আভিজাত্যের প্রতীক: প্রফেসর রফিকুর রহমান চৌধুরী’ এবং ২০১৮ সালে চতুর্থ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা পান ‘ঋদ্ধ মননের প্রাগ্রসর ভূমিপুত্র: শাহ্ মাহতাব আলী’। ২০১৯ সালে পঞ্চম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা দেয়া হয় 'স্বাস্থ্যসেবা-শিক্ষায় পথিকৃৎ চিকিৎসক-দম্পতি' প্রফেসর ডা. আ ন ম নৌশাদ খান ও প্রফেসর ডা. সুফিয়া খাতুনকে। ৬ষ্ঠ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা-২০২০ প্রদান করা হয় নাসিরউদ্দিন ফারুকী, ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন ও শাহ আজিজুল হককে। এ উপলক্ষে ‘কিশোরগঞ্জে আইন পেশার নান্দনিক বিন্যাস’ শীর্ষক সম্মাননা বক্তৃতা বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদান করা সম্ভব হয়নি।

৭ম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা-২০২১ প্রদান করা হয়েছে ইতিহাসবিদ, সাংবাদিক, পাঠ ও পাঠাগার আন্দোলনের অগ্রণীজন মু.আ. লতিফ,  মুক্তিযোদ্ধা-শিক্ষাবিদ ঊষা দেবী এবং শতবর্ষ অতিক্রমকারী ১২০ বছরের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান আলীমুদ্দীন লাইব্রেরীকে, যারা কিশোরগঞ্জের সামাজিক ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক বিন্যাসে স্বকীয় কৃতিত্বের প্রভায় উজ্জ্বল। জীবনব্যাপী কিশোরগঞ্জের মাটি ও মানুষের জন্য শৈল্পিক দ্যোতনায় নান্দনিক বর্ণালী সৃজন করেছেন এই তিন গুণান্বিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।

ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর ড. মাহফুজ পারভেজ জানান, ৬ষ্ঠ মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা ২০২০ এবং ৭ম মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন সম্মাননা ২০২১ একসাথে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদান করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে, যা মার্চ মাসের শেষ দিকে আয়োজিত হবে।

;