সারা দেশে যাচ্ছে টেকনাফ স্থলবন্দরে আসা পেঁয়াজ
চলমান সংকট মোকাবিলার পাশাপাশি ভারতের বিকল্প হিসেবে মিয়ানমার ও অন্যান্য দেশে থেকে পেঁয়াজ আমদানি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত কয়েকদিনে কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরে আবারো বৃদ্ধি পেয়েছে পেঁয়াজ আমদানি। নৌ-পথে আসা এসব পেঁয়াজ চট্টগ্রাম, ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবারহ করছেন আমদানিকারকরা।
টেকনাফ স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত এ বন্দরে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে এক হাজার ৩৯৫ দশমিক ৭৬২ মেট্রিক টন। যা পর্যায়ক্রমে খালাস করছেন শ্রমিকরা। এরপর ট্রাকে করে দেশের বিভিন্নস্থানে পাঠানো হচ্ছে।
এছাড়াও স্থলবন্দরের আটজন ব্যবসায়ী ৫৪৮ মেট্রিক টন বড় পেঁয়াজ আমদানি করেছেন। এ পেঁয়াজ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানোর কথা বলছেন ব্যবসায়ীরা। গত দু'দিনে ৫০টি ট্রাকে সরবরাহ করা হয়েছে এক হাজার মেট্রিক টনের বেশি পেঁয়াজ। আরও প্রায় ৮০০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে।
শুল্ক বিভাগ জানায়, এ বন্দর দিয়ে চলতি নভেম্বর মাসের ২৭ দিনে ১৯ হাজার ৮৯ দশমিক ২৯২ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। গত অক্টোবর মাসে ২০ হাজার ৮৪৩ মেট্রিক টন। সেপ্টেম্বর মাসে আমদানি হয় ৩৫৭৩ দশমিক ১৪১ মেট্রিক টন পেঁয়াজ এবং আগস্ট মাসে এসেছে ৮৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবস্থাপক জসিম উদ্দিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের ট্রলার বন্দরে পৌঁছার সাথে সাথে খালাস করা হচ্ছে। হঠাৎ আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় একটু চাপ বেড়েছে। তাছাড়া এখন যেসব পেঁয়াজ আসছে তা বড় আকৃতির। ভারতীয় পেঁয়াজের মতো।
টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবছার উদ্দিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, আগের থেকে পেঁয়াজ আমদানি আবারো বেড়েছে। দুইদিনে এক হাজার ৩৯৫ দশমিক ৭৬২ মেট্রিক টন পেঁয়াজ স্থলবন্দরে আসে। এসব পেঁয়াজ দ্রুত খালাস করা হয়, ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে, যাতে তারা পেঁয়াজ আমদানি বৃদ্ধি করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে টেকনাফ স্থলবন্দরের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, গত কয়েকদিনে যে পেঁয়াজ এসেছে সবই বড়। এরপর যেসব পেঁয়াজ আসবে, সেগুলোর আকৃতিও এমন হবে। তবে ধারণা করা হচ্ছে বড় পেঁয়াজ চীন থেকে মিয়ানমার হয়ে বাংলাদেশে আসছে।
সর্বোচ্চ পেঁয়াজ আমদানিকারক এমএ হাশেম জানান, দেশে পেঁয়াজের সংকট মোকাবিলায় মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। বাজারের চাহিদা মেটানোর জন্য পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রেখেছেন। আমদানি করা পেঁয়াজগুলো দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হচ্ছে। কয়েকদিনের মধ্যে পেঁয়াজের দাম বেশ কমবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই ব্যবসায়ী।
হঠাৎ করে আমদানির পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে টেকনাফ স্থলবন্দর। তবে পেঁয়াজ সারাদেশে দ্রুত পরিবহনের ক্ষেত্রে বন্দরে অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো এবং পুলিশি হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন আমদানিকারক ও পরিবহন শ্রমিকরা।