দেশি কবুতরের বাচ্চার চাহিদা বেশি
মেহেরপুরে দেশি জাতের কবুতরের হাট এখন জমজমাট। গাংনী উপজেলা শহরে প্রতিদিন সকালে কবুতর বেচাকেনা হয়। এখানকার কবুতরের বাচ্চা যাচ্ছে ফেনী ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। স্থানীয় বাজারে ভালো দরে কবুতরের বাচ্চা বিক্রি হওয়ায় এ খাতে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন হয়েছে।
জানা গেছে, গাংনী বাজারে প্রতিদিন সকালে কবুতরের হাট বসে। তবে শুধুমাত্র হাটের দিন শনি ও মঙ্গলবার জায়গা সংকুলান না হওয়ায় কাঁচাবাজারে (মরিচ আড়ত) কবুতরের হাট বসে।
ধানখোলা গ্রামের কবুতর ব্যাপারী তোহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এ উপজেলায় শৌখিন ভাবে অনেকে বিদেশি কবুতর পালন করেন। তবে গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে দেশি কবুতর বেশি পালন করা হয়। মাংস হিসেবে দেশি কবুতরের বাচ্চার চাহিদা বেশি। উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কবুতর পালন করতে পারায় খরচও অনেক কম। বর্তমানে এটি একটি লাভজনক ব্যবসা। আর আমরা গ্রামের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কবুতর কিনে আনায় পালনকারীদের অনেক সুবিধা হয়।’
গাংনী বাজারে চলতি সপ্তাহে একজোড়া কবুতরের বাচ্চা পাইকারি বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকা। যার খুচরা মূল্য ১৬০ টাকা। পূর্ণাঙ্গ বয়সী প্রতি জোড়া কবুতরের দাম ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা।
কবুতর পালনকারী কয়েকজন জানান, দেশি কবুতর বছরে ৭-৮ বার ডিম দেয়। ডিম থেকে বাচ্চা ফোটার ১২-১৭ দিনের মধ্যে মাংস হিসেবে খাওয়া যায়। এ সময়ের মধ্যে বাচ্চা বিক্রি করে দিলে ওই মা কবুতর আবারো ডিম দেয়। দেশীয় কবুতরের বাচ্চার কদর বেশি। তাই কবুতর পালনকারীরা এর বাচ্চা বিক্রি করতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।
জানা গেছে, প্রতিদিন সকালে বিভিন্ন গ্রাম থেকে কবুতর পালনকারী ও ফড়িয়ারা কবুতর তোলেন গাংনী হাটে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বাইরের জেলায় বিক্রি হয় এখানকার কবুতরের বাচ্চা। বিশেষ করে বাইরের জেলার ব্যাপারীরা কবুতর কিনে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম ও ফেনী জেলা শহরে বিক্রি করে। এ বাজার থেকে সরাসরি বড় ব্যবসায়ীরা কবুতর কেনায় ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে পালনকারীরা।
কুষ্টিয়ার মিরপুরের আজিবর রহমান বলেন, ‘মেহেরপুর জেলায় গত কয়েক বছরে ব্যাপকভাবে কবুতর পালন বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিন গাংনী হাট থেকে আমি ২০০-৩০০ জোড়া কবুতর ক্রয় করি। সরাসরি বাইরের জেলায় কবুতর পাঠাতে পারায় লাভ বেশি।’
গাংনী বাজারের আড়তদার আব্দুস সামাদ জানান, প্রতিদিন সকালে কবুতরের হাট বসে। সকাল ১০-১১টার মধ্যে বেচাকেনা শেষ হয়। জেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে কবুতর নিয়ে আসে ফড়িয়া ও এর পালনকারীরা।