২ টন যুবরাজের প্রিয় খাবার কলা, দাম ৪০ লাখ



শাহরিয়ার হাসান, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
যুবরাজ, ওজন ২ টন, দাম ৪০ লাখ

যুবরাজ, ওজন ২ টন, দাম ৪০ লাখ

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর গাবতলী পশুর হাটে ঝিনাইদহ থেকে এসেছে যুবরাজ। যার ওজন ২ টন। যুবরাজের মালিক আনোয়ার হোসেন ৪০ লাখ টাকা দাম হাঁকাচ্ছেন তার জন্য।

বুধবার (৭ আগস্ট) সরেজমিন গাবতলী গবাদি পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ গরুগুলোর আকৃতি বড়। তবে তাদের মধ্যে যুবরাজ বেশি আকর্ষণীয়।

যুবরাজকে ঘিরে ধরে আছে অন্য গরুর ক্রেতারসহ হাটে ঘুরতে আসা সাধারণ মানুষেরা। যুবরাজের নাম নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই।

তবে দুইদিন ধরে গরুটি বাজারে তুললেও কিনতে আসেনি কেউই। মালিক আনোয়ার দুটি গরু নিয়ে এসেছেন। তার মধ্যে যুবরাজ বড়। ৪০ লাখ টাকা দাম চাইলেও ৩৫ লাখ টাকায় নিচে বিক্রি করবেন না যুবরাজকে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/07/1565177605364.jpg

৯ ফুট লম্বা যুবরাজের খাবার, গম, ভুট্টা, ধান, ভুসি, আপেল। তবে তার সবচেয়ে প্রিয় খাবার কলা। আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রতিদিন যুবরাজের পিছনে এক হাজার টাকা খরচ হয়। যত দ্রুত বিক্রি করবো তত ভাল আমাদের জন্য।

এদিকে প্রায় এক মাসের প্রস্তুতি পর, আজ থেকে গাবতলী হাটের গরু কেনাবেচা শুরু হয়েছে। গরু ছাগল মহিষ দিয়ে ভরে উঠেছে হাট।

প্রথম দিনে এখন পর্যন্ত ৩২ টি গরু, ৫টি ছাগল ও একটি মহিষ বিক্রি হয়েছে বলে হাট ইজারাদার সূত্রে জানা গেছে।

হাট ইজারাদারের কমিটির প্রধান লুৎফর রহমান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, আজকে বিক্রি শুরু হলো। সকাল থেকে প্রায় ৪০ টির মত গবাদি পশু বিক্রি হয়েছে। এখন ঘণ্টা যাবে আর এই বিক্রি বেড়ে যাবে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/07/1565177621413.jpg

তিনি আরো বলেন, আমাদের কাছে সঠিক সংখ্যা নেই, যে কতগুলো পশু হাটে উঠেছে। মূল চত্বর এর বাহিরেও  অনেক গরু ছাগল নিয়ে ব্যবসায়ীরা অপেক্ষা করছেন। কেউ জায়গা পেয়েছেন আবার কেউ পাননি। সবকিছু মিলে জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে চলছে গাবতলীর এই ঐতিহ্যবাহী পশুর হাটের বেচাকেনা।

অন্যদিকে এই গরুর হাটের ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের নিরাপত্তার জন্য র‍্যাব পুলিশের সদস্যরা অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করেছে। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার এড়াতে তারা তৎপর রয়েছে।

   

দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদুল আজহার ত্যাগের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ ও জনগণের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আগামীকাল দেশে উদযাপিত হবে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব ঈদুল আজহা।

ঈদুল-আজহার প্রাক্কালে রোববার (১৬ জুন) তিনি দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানাতে এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘প্রিয় দেশবাসী, আসসালামু আলাইকুম,এক বছর পর আবারো আমাদের জীবনে ফিরে এসেছে পবিত্র ঈদুল-আজহা। আমি আপনাদের সবাইকে ঈদুল-আজহার শুভেচ্ছা জানাই। ঈদ মোবারক।’

শেখ হাসিনা আরো বলেন,‘আসুন ঈদুল আজহার শিক্ষা গ্রহণ করে ত্যাগের মহিমায় উজ্জ্বীবিত হয়ে আমরা সকলে দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করি।’

বার্তার শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন,‘পবিত্র ঈদুল আজহা আপনার জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল আনন্দ, সুখ, শান্তি ও স্বাচ্ছন্দ। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, নিরাপদ থাকুন। ঈদ মোবারক।’

;

ফেনীতে শেষ মুহূর্তে হাঁকডাকে জমজমাট কোরবানি পশুর হাট



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল আজহা। শেষ মুহূর্তে কোরবানি পশুর হাটগুলো ক্রেতা-বিক্রেতার সরগম হয়ে উঠেছে। শুরুতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পশু থাকলেও ক্রেতার সংকটে ছিলো কোরবানির হাটগুলোতে। শুরুর দিকে গরুর দাম বাড়তি থাকায় শেষদিকের বাজারের জন্য অপেক্ষায় ছিল ক্রেতারা কিন্তু শেষ দিকেও দাম চড়া রয়েছে। শেষ বাজার হওয়াতে বাড়তি দাম হলেও ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে জমজমাট ভাবে শেষ হচ্ছে এ বছরের কোরবানির পশুর বাজার।

রোববার (১৬ জুন) ফেনীর ফাজিলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে কোরবানি পশুর হাট, মুহুরীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, কসকা বাজার ও শহরের বিভিন্ন হাটে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতা বিক্রেতাদের হাঁকডাকে জমে উঠেছে কেনাবেচা। একের পর এক ক্রেতা দর্শনার্থীদের সঙ্গে অনবরত দামদর চলছে বেপারি, খামারি কিংবা ঈদকে কেন্দ্র করে মৌসুমী গরু ব্যবসায়ীদের।

ফাজিলপুর বাজার কমিটির সূত্রে জানা যায়, বাজারে ৫ থেকে ৬ হাজার গরু ছাগল উঠেছে। শেষদিন হওয়াতে বেশিরভাগ মানুষ ইতোমধ্যে গরু কিনে ফেলছে। এরপরেও দাম ও হাসিল নাগালের মধ্য থাকায় অধিক পরিমান গরু বিক্রি হয়েছে বলে জানান তারা।

ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শুরুতে পর্যাপ্ত পরিমাণে গরু হাটে থাকলেও ক্রেতার সংখ্যা কম ছিল। মাঝে দুইদিন গরুর দাম সীমিত ছিল কিন্তু গতকালকের বৃষ্টি পর হঠাৎ দাম বেড়ে যায়। দাম বাড়তি হওয়ার কারনে ক্রেতারা শেষ সময়ের জন্য অপেক্ষা করেছিল যার কারণে শুরুর দিলে বিক্রি কম হলেও শেষ দুই দিনে ভালো বেচাবিক্রি হয়েছে।

কালা মিয়া নামে এক বিক্রেতা বলেন, বাজারে ৫টি গরু নিয়ে এসেছি। এরমধ্যে ৪টি বিক্রি করেছি। বাজারে প্রচুর ক্রেতা আছে। বেচাবিক্রি ভালোই হয়েছে। তিনি জানান, ৯০ হাজার থেকে শুরু করে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা দামের গরু আছে। শেষ মুহুর্তে এসে ক্রেতার সংখ্যা অনেক বেড়েছে।

নূর নবী নামের এক খামারি বলেন, হাঁটে ৬টা গরু নিয়ে এসেছি। এখন পযর্ন্ত ৪টা গরু বিক্রি করেছি। শুরুতে তেমন ক্রেতা ছিল না যার কারণে বিক্রি করা সম্ভব হয়নি। শেষ দুই দিনে গরুগুলো বিক্রি হওয়ায় খুশি।

ফয়সাল মাহমুদ নামে এক ক্রেতা বলেন,রাত পোহালেই কোরবান। বাজারে প্রচুর পরিমাণ গরু উঠেছে। তবে ক্রেতা অন্যদিনের তুলনায় কম। কারণ অনেকে গরু কিনে ফেলেছে। আমাদের রাখার জায়গায় সমস্যা যার কারনে আজ দাম কিছুটা বেশি হলেও কোরবানির গরু আল্লাহর নামে নিয়ে ফেলেছি।

আরিফ নামের নামের আরেক ক্রেতা বলেন, শুরুতে বাড়তি দাম বাড়তি ছিল, মাঝে কিছুটা কমেছে। তবে শেষ মুহুর্তে দাম আবার বাড়তি রাখছে বিক্রেতারা। হঠাৎ করে গরু প্রতি ২০ থেকে ৩০ হাজার বেড়ে গেছে। আমি একটা কিনেছি গরুটির দাম ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পড়েছে। কিন্তু এর দুদিন আগেও এ গরু ১ লাখ পর্যন্ত মূলামুলি হয়েছে।

সাইফুল নামের আরেক ক্রেতা বলেন, ৯৮ হাজার টাকা দিয়ে একটি দেশি গরু কিনেছি। শুরুতে দাম নাগালের বাইরে ছিল তাই শেষ দিকের জন্য অপেক্ষা করছিলাম, এখন আবারও বেড়ে গেছে।

উল্লেখ্য জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও স্থানীয় চাহিদার তুলনায় পশু বেশি রয়েছে। এবার জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ৮৭ হাজার ২০০টি। তারমধ্যে বাণিজ্যিক ও পারিবারিক ভাবে লালন-পালন করা হচ্ছে ৯০ হাজার ২৫০টি গবাদি পশু। এরমধ্যে ৬৮ হাজার ৮০৪টি গরু, ৫ হাজার ৭২৮টি মহিষ এবং ১৫ হাজার ৭১৮টি ছাগল ও ভেড়া প্রস্তুত ছিল।

;

ফেনীতে মহাসড়কে বাস উল্টে নারী-শিশুসহ আহত ২৫



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ফেনীতে মহাসড়কে বাস উল্টে নারী-শিশুসহ আহত ২৫

ফেনীতে মহাসড়কে বাস উল্টে নারী-শিশুসহ আহত ২৫

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী অংশের পুরাতন মুহুরীগঞ্জ এলাকায় একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের ওপর উল্টে নারী ও শিশুসহ বাসের অন্তত ২৫ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। দিগন্ত পরিবহন বাসটি সকালে চট্টগ্রাম থেকে সিলেটের উদ্দেশে যাচ্ছিল।

রোববার (১৬ জুন) দুপুরে মহাসড়কের মুহুরীগঞ্জ মুহুরী নদীর ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত ৮ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং বাকিরা ফেনী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

আহতরা হলেন- সাইফুল (২৩), দুলাল মিয়া (৪৮), আলেয়া বেগম (৪০), আবদুল করিম (৩০), কিরণসহ (২৮), জুয়েল বড়ুয়া (৪৫), তার স্ত্রী টিকলি বড়ুয়া (৪০), আমির আলী (৩৫), তার স্ত্রী মুর্শেদা বেগম (৩২), সোহেল (২০), জুয়েল (৮), সালমা (১৮), রাকিব (১৮), হেলাল মিয়া (২৬) সহ অন্তত ২৫ জন। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই সিলেটের হবিগঞ্জ, মাধবপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দিগন্ত পরিবহনের বাসটি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে সিলেটের উদ্দেশে ছেড়ে দুপুরের দিকে মুহুরীগঞ্জ ব্রিজে ওঠার আগে হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের ওপর উল্টে যায়। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। আহতদের মধ্যে আটজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

টিকলি বড়ুয়া নামে আহত এক যাত্রী বলেন, হঠাৎ বিকট শব্দ শুনে ঘুম ভাঙে। এরপর কিছু বুঝে উঠার আগেই দেখি বাসটি উল্টে রাস্তায় কাত হয়ে গেছে। আমার ডান হাতের একটি অংশ ভেঙে গেছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে কেটে গেছে। জানালার পাশে বসা যাত্রীরা বেশি আঘাত পেয়েছেন।

চট্টগ্রাম থেকে আসা জুয়েল নামের এক যাত্রী বলেন, পুরো সড়কেই চালক বেপরোয়া গতিতে বাসটি চালান। ফেনীর মুহুরীগঞ্জ ব্রিজ এলাকায় আরেকটি বাস অতিক্রম করতে গিয়ে সড়কের ওপর বাস উল্টে যায়। গাড়িতে বিভিন্ন বয়সী ৪০-৪৫ জন যাত্রী ছিল। সবাই কমবেশি আহত হয়েছেন।

ঈদ করার জন্য স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবার নিয়ে হবিগঞ্জের মাধবপুরে যাচ্ছিলেন কিরণ মিয়া। দুর্ঘটনায় স্ত্রী, দুই সন্তানসহ পরিবারের অন্যরাও গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, আমি কিছুটা আঘাত পেলেও আমার স্ত্রী নাসিমা ও দুই ছেলে গুরুতর আহত হয়েছেন। চিকিৎসকের পরামর্শে তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি।

ফেনী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক সুজন বলেন, বাস দুর্ঘটনায় আনুমানিক ২০ থেকে ২৫ জন হাসপাতালে এসেছেন। অধিকাংশ যাত্রীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাটাছেঁড়া ও ভেঙে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আটজনকে চট্টগ্রামে রেফার্ড করা হয়েছে।

ফাজিলপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদ খান চৌধুরী বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত বাসটি পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত প্রক্রিয়া চলছে।

;

ক্রেতাশূন্য পশুর হাট, লোকসানে ব্যবসায়ীরা



মেহেদী হাছান মাহীম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪. কম, ঢাকা
ক্রেতাশূন্য পশুর হাট, লোকসানে ব্যবসায়ীরা

ক্রেতাশূন্য পশুর হাট, লোকসানে ব্যবসায়ীরা

  • Font increase
  • Font Decrease

রাত পোহালেই মুসলমানদের দ্বিতীয় বড় উৎসবের দিন পবিত্র ঈদুল আজহা। আর এ মুহূর্তে আসন্ন এই ঈদকে কেন্দ্র করে হাটগুলোতে চলছে গবাদি পশু বিক্রি। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, কমলাপুর হাটসহ বিভিন্ন হাটে পশু বিক্রি প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে কোরবানি পশুর হাট। ক্রেতারা কোরবানির জন্য নিয়ে যাচ্ছেন পছন্দের গরু-ছাগল ও ভেড়া। ক্রেতারা তাদের সাধ্যের মধ্যে বড়, মাঝারি এবং ছোট সাইজের পশু কিনছেন। কিন্তু, পশু বিক্রি করলেও তেমন লাভ হয়নি বলে জানিয়েছেন খামারিরা। অনেকে আবার লোকসানেও বিক্রি করেছেন পশু। 

মাতুয়াইল থেকে বাবা মো. শাহজাহানের সাথে যাত্রাবাড়ী হাটে গরু বিক্রি করতে এসেছেন মো: রাকিব। চারদিন ধরে দুইটি গরু নিয়ে হাটে তিনি। ঈদের আগের দিনেও গরু বিক্রি না হওয়ায় চোখে-মুখে হতাশার ছাপ ফুটে উঠেছে রাকিবের। রাকিব নিজ বাড়িতে গরু দুইটি পালন করে আসছেন। শখের দুটি গরুকে বিক্রি করতে না পারায় মন খারাপ তার।

গরু বিক্রি না হওয়া প্রসঙ্গে রাকিব বার্তা ২৪. কমকে বলেন, ক্রেতারা গরুর দাম একেবারেই কম বলে। এর চাইতে কসাইয়ের কাছে গরু বিক্রি করলে আরও ভালো দাম পাবো। ক্রেতার কাছে গরু দুইটির মূল্য চেয়েছে ৩ লাখ টাকা। কিন্তু, কোনো রকমের সাড়া না পেয়ে গরুগুলোকে পুনরায় বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন রাকিব।

রাকিব আরও বলেন, দীর্ঘ আড়াই বছর ধরে গরু দুইটাকে লালন-পালন করে আসছি।


এ-পর্যন্ত গরু দুইটির পেছনে প্রায় দুই লাখ টাকার মতো খরচ করেছি। কিন্তু, হাটে নিয়ে আসার পর ক্রেতারা একেবারেই কম দাম বলছে।

একইরকম অভিজ্ঞতা কিশোরগঞ্জ থেকে আসা মো. রুবেল মিয়ার। টানা তিন বছর যাত্রাবাড়ী হাটে তিনি তার গরু নিয়ে আসেন। এবারের বাজার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টানা তিনবছর পশুর হাটে গরু বিক্রি করতে এসেছি আমি। তবে, গত দুই বছরের তুলনায় এবারের অভিজ্ঞতা সবচেয়ে খারাপ। গো-খাদ্যের প্রচুর দাম হওয়ার কারণে এবারে গরুর দাম বিগত কয়েকবছরের তুলনায় অনেক বেশি।

তিনি আরও বলেন, মাত্র দুইদিন হয়েছে আমি এখানে এসেছি। এই হাটে মোট ১২ টা গরু নিয়ে এসেছি। তারমধ্যে একেবারেই সীমিত লাভে মাত্র ৪ টি গরু বিক্রি করেছি। খামার থেকে যাত্রাবাড়ী পশুর হাটে আসতে এপর্যন্ত আমার ২৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।    

কমলাপুর হাটেও দেখা যায় একই চিত্র। হাট ফাকা তবে ব্যবসায়ীদের চোখেমুখে নেই আনন্দের ছাপ। এই হাট ঘুরতে ঘুরতে দেখা হয় মো. আনোয়ারুল হোসেনের সাথে। জামালপুর থেকে ১২টি গরু নিয়ে ৪ দিন আগে এসেছেন কমলাপুর পশুর হাটে। মোট ২৫ লাখ টাকার গরু নিয়ে এসেছেন। ১২ টি গরুর মধ্যে গতকাল রাতে তিনি ৪টি গরু সীমিত লাভে বিক্রি করে দিয়েছেন। ঈদের আগের দিনও হাটে ক্রেতা কম দেখে ৫ টি গরু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা লসের মধ্যেই বিক্রি করে দিয়েছেন।

লোকসানে গরু বিক্রি করে হতাশায় ভুগছেন আনোয়ার। তিনি বলেন, যে পরিমাণ আশা করেছি তার কিছুই হয়নি। যা লাভ হয়েছে তা দিয়ে কিছুই হবে না। এখনও ৩টি গরু বাকি আছে। বিক্রি না হলে আবার নিয়ে যেতেও খরচ। এবারে ঈদ আর ঈদ রইল না।


কেন লোকসান?

যাত্রাবাড়ী হাটের গরু বিক্রেতা মো: রাকিব বলেন, ২০২৩ সালে গো খাদ্যের দামের তুলনায় এই বছর গো খাদ্যের দাম অনেক বেড়েছে। আগে এক বস্তা ভুসির দাম ছিল ১৯০০ থেকে ২০০০ টাকা। কিন্তু, এখন তা প্রায় ২৩০০ থেকে ২৫০০ টাকা। ভালো স্বাস্থ্যের জন্য গরুকে বিভিন্ন ধরণের সবজি-ফলমূল খাওয়াতে হয়। সেই খাবারের দামও আগের থেকে অনেকগুন বেড়েছে।

একই বিষয়ে কমলাপুর হাটের গরু বিক্রেতা মো: আনোয়ার বলেন, দিন যত যাচ্ছে বিদ্যুতের দাম বাড়ছে। সবাই বলে খামারিরা বাড়তি দাম বলে কিন্তু কেন বাড়ায় এটা জিজ্ঞেস করে না! আগে মাসে কারেন্ট বিল আসতো ৩০০ টাকা এখন তা বাইড়া আসে ৫০০ টাকা।

ক্রেতারা খুশি

গেন্ডারিয়ার এলাকাবাসী মুফিদুল ইসলাম। গত দুদিন ধরে হাট ঘুরছিলেন। আজ একটি ষাড় গরু নিলেন ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা দিয়ে।

বার্তা২৪.কমকে তিনি জানান, সাধ্যের মধ্যে আজকে গরুটি কিনতে পারলাম। গত দুদিনের চেয়ে আজ দাম অনেকটাই কম। দামের তারতম্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের দাম যে পরিমাণ বেড়েছে তাতে গরুর দাম খামারিরা বেশি চায়নি। কিন্তু আমাদেরওতো আর বেতন বাড়ে না। সারাবছর টাকা জমাই কোরবানির জন্য। তবে দিন দিন নিত্যপণ্যের দাম হু হু করে বাড়লে এই খামারিরা আরও মাঠে মারা যাবে। এর প্রভাব আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতাদের উপরেই পড়বে। জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে সরকারের আরও যত্নবান হওয়া উচিত।

;