মিয়ানমারে রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়েছে বিমানের ফ্লাইট



সেন্ট্রাল ডেস্ক, বার্তা২৪
রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়েছে বিমান, ছবি: সংগৃহীত

রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়েছে বিমান, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বৈরি আবহাওয়ার কারণে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়েছে বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ। এই দুর্ঘটনায় বিমানটির মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। ফ্লাইটটির পাইলট শামীম নজরুল গুরুতর আহত হয়েছেন। 

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/08/1557325338176.jpg

আবহাওয়া খারাপ থাকায় ইয়াঙ্গুন এয়ারপোর্টে অবতরণের সময় বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টা ২২ মিনিটে রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়েছে বাংলাদেশ বিমানের বিজি-060 ফ্লাইট। এই তথ্য নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষ।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/08/1557325361177.jpg

দুর্ঘটনায় পাইলটসহ ৩৩ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৫ জনকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে একজন শিশুও রয়েছে। আহতদের তালিকায় কেবিন ক্রু ও পাইলটসহ ৪ জন রয়েছেন। মিয়ানমারে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/08/1557327682861.jpg

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জি এম (পি আর) শাকিল মেরাজ বার্তা২৪.কমকে জানিয়েছেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঢাকা থেকে ইয়াঙ্গুনগামী ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজের একটি ফ্লাইট বিজি ০৬০ বিকাল ৩টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা ত্যাগ করে। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টা ২২ মিনিটে ইয়াঙ্গুনে অবতরণের সময় বৈরি আবহাওয়ার কবলে পড়ে রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে। এতে এক শিশুসহ ২৮ জন যাত্রী আহত হয়েছেন। আহতের মধ্যে ২ জন পাইলট ও ২জন কেবিন ক্রু রয়েছেন।'

তিনি আরও জানিয়েছেন, বর্তমানে সবাই নিরাপদে রয়েছেন। যাত্রী ও কেবিন ক্রুদের ফেরত আনার জন্য বাংলাদেশ সময় রাত ১০টার দিকে বিমানের পক্ষ থেকে একটি স্পেশাল ফ্লাইট পাঠানো হবে। 

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/08/1557325377974.jpg

মিয়ানমার টাইমসের বরাতে জানা গেছে, বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট নাম্বার S2-AGQ- Bombardier Dash 8Q400 উড়োজাহাজটি রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়েছে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/08/1557325393974.jpg

এদিকে, মিয়ানমার টাইমস পত্রিকা একটি ছবি প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা গেছে রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে আছে বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ।

   

পরাজিত প্রার্থীর সমর্থক-পুলিশ সংঘর্ষ, গুলিতে নিহত ১



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম দিনাজপুর
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দিনাজপুরের বিরল উপজেলার আজিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে পরাজিত মেম্বার প্রার্থীর সমর্থক ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় গুলিতে একজন নিহত হয়েছেন।

রবিবার (২৮ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টায় উপজেলার চৌরঙ্গীবাজার এলাকায় সিঙ্গুল হামিদ-হামিদা উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে তিনজন গুলিবিদ্ধ ও চার পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ আলী (৬৫)। তার বাড়ি উপজেলার সিঙ্গুল ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে। নির্বাচনে বিজয়ী ইউপি সদস্য প্রার্থী (টিউবওয়েল) জোবায়দুর রহমানের চাচা মোহাম্মদ আলী।

পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ জানান, ভোট গণনায় আজিমপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার নির্বাচিত হন জোবায়দুর রহমান। এর পর পরাজিত প্রার্থী সাইফুল ইসলামের সমর্থকরা ফলাফল না মেনে জোরপূর্বক ভোটকেন্দ্রে ঢুকে ব্যালট বাক্স ছিনতাই ও পুলিশের ওপর হামলা চালায়।

পুলিশ সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে প্রথমে ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এর পর ওই প্রার্থীর সমর্থকরা হামলা চালাতে থাকলে ৬০ থেকে ৭০ রাউন্ড শটগান থেকে গুলি ছোড়ে পুলিশ। গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন ঘটনাস্থলে পড়ে যায়।

পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। সংঘর্ষে পুলিশের চার সদস্য আহত হয়েছে।

জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ বলেন, এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জানে আলমকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, রবিবার বিরল উপজেলার ফরক্কাবাদ, বিরল ও আজিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন ছিল। সকাল ৮টায় ব্যালটে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। শেষ হয় বিকেল ৪টায়।

;

প্রকল্প বসবাসের উপযোগী না হওয়ায় সংসদীয় কমিটির ক্ষোভ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ঢাকা
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর ও ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্প এখনও বসবাসের অনুপযোগী হওয়ায় ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। এত বছরেও এই দুটি প্রকল্প বসবাসের উপযোগী না হওয়ার কারণ খতিয়ে দেখতে জুলাই মাসে সরেজমিনে পরিদর্শন করবেন কমিটির সদস্যরা।

এছাড়াও তারা ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের পরিত্যক্ত জমিতে ফ্ল্যাট নির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করে।

রবিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত অনুমতি হিসাব সম্পর্কিত কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম।

বৈঠকে জানানো হয়, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ১৯৯৫ সালে। কাজ শুরুর পর প্রকল্পের মেয়াদ এখনও পর্যন্ত সাত বার বাড়ানো হয়েছে। সবশেষ প্রকল্পের মেয়াদ দেড় বছর বাড়িয়ে ২০২২ সালের জুন থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়।

এছাড়া কেরানীগঞ্জে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের পাশে ঝিলমিল আবাসিক এলাকার প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ১৯৯৭ সালে।

বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি বলেন, পূর্বাচল ও ঝিলমিল প্রকল্প দুটো যাতে দ্রুত বসবাসের উপযোগী করা হয়, মন্ত্রণালয়কে সেই পরামর্শ দিয়েছি। শুধু রাস্তা করলেই হবে না। সেখানে ওয়াসার সুযোগ-সুবিধা লাগবে, বিদ্যুৎ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান লাগবে। এগুলো হলেই মানুষ বাড়িঘর করে সেখানে থাকবে। তা না হলে কেউ থাকবে না।

বৈঠকে বৈঠকে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয় এবং চলমান প্রকল্পগুলো সমাপ্ত না করে নতুন প্রকল্প গ্রহণ না করার জন্য সুপারিশ করে কমিটি। এছাড়াও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত এবং গ্রামীণ মাটির রাস্তাগুলো টেকসই করার লক্ষ্যে হেরিং বোন বন্ডকরণ বর্ষাকালের পরিবর্তে শীতকালে করার জন্য সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধিদপ্তরের টেন্ডার আহ্বান করার কার্যক্ষমতা ও বিধিবিধান রয়েছে কি না তার তথ্য-উপাত্ত আগামী এক মাসের মধ্যে কমিটির কাছে উপস্থাপনের জন্য সুপারিশ করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য ও চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, মাহবুবউল আলম হানিফ, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রাণ গোপাল দত্ত, অপরাজিতা হক, শাহরিয়ার আলম এবং খাদিজাতুল আনোয়ার।

;

লক্ষ্মীপুরের ইউপি নির্বাচনে ৩ নতুন ২ পুরাতন মুখ বিজয়ী



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম লক্ষ্মীপুর
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ৫ টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দিনব্যপী শান্তিপূর্ন ও উৎসবমুখর পরিবেশের ভোটে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন নতুন ২ জন পুরাতন মুখ বিজয়ী হয়েছেন।

রবিবার (২৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে দশটায় উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষনা করা হয়।

এদিন সকাল থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দক্ষিণ হামছাদী, দালাল বাজার, বাঙ্গাখাঁ, লাহারকান্দি ও তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নে ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

ভোটগ্রহন ও গননা শেষে কেন্দ্রে কেন্দ্রে প্রাপ্ত ভোটে দক্ষিণ হামছাদী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হন বর্তমান চেয়ারম্যান মীর শাহ আলম। তিনি ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৬২৪৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সৈয়দ আবুল কাশেম আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ২৬০১ ভোট।

দালাল বাজার ইউনিয়নে বিজয়ী হয়েছেন নজরুল ইসলাম। চশমা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৬৩৫৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নুর নবী অটোরিকশা প্রতীকে পেয়েছেন ৪৭৬০ ভোট।

বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নে মিজানুর রহমান চশমা প্রতীকে ৬৪০১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্বী শেখ জামান রিপন পেয়েছেন ৩৩৯০ ভোট।

লাহারকান্দি ইউনিয়নে টেলিফোন প্রতীকে আশরাফুল আলম বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৫৫৮৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী খোরশেদ আলম অটোরিকশা প্রতীকে পেয়েছেন ৩৭৭৩ ভোট।

তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নে ওমর হুসাইন ভুলু আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৭৫৪২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বোরহান চৌধুরী পেয়েছেন অটোরিকশা প্রতীকে ৬২৩৯ ভোট।

প্রসঙ্গত: সীমানাজনিত মামলা জটিলতা শেষে দীর্ঘ ১৩ বছর পর জেলার সদর উপজেলার ২নং দক্ষিণ হামছাদি, ৩নং দালাল বাজার, ৬ নং বাঙ্গাখাঁ, ১৫ নং লাহারকান্দি ও ১৯ নং তেয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো।

এ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসনের ব্যাপক প্রস্তুতি ছিল। নির্বাচনে ভোটাররা শান্তিপূর্ন উৎসবমুখর পরিবেশে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রদান করেন।

;

রিসোর্টে তরুণী ধর্ষণের ২৫ দিনেও গ্রেফতার নেই মালিক ও কথিত প্রেমিক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম ঢাকা
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর মোহাম্মদপুর বসিলা গার্ডেন সিটি হাউজিং আবাসিক এলাকায় গড়ে ওঠা একটি রিসোর্টে এক তরুণী ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর প্রায় এক মাস পার হলেও গ্রেফতার হয়নি মামলার মূল দুই আসামি। এদের একজন ওই তরুণীর কথিত প্রেমিক মো. আকাশ (২৮), অপরজন রিসোর্টের মালিক আব্বাস আলী (৪৫)। মামলার অপর আসামি রিসোর্টের ম্যানেজার ইমরান (৩৫) গ্রেফতার রয়েছেন।

পুলিশ বলছে, দুই আসামি পলাতক রয়েছে। অথচ সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, রিসোর্টের মালিক আব্বাস হোটেলে উপস্থিত থেকে ব্যবসা সামলাচ্ছেন। এমনকি দাবি করছেন, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।

এ ব্যাপারে পুলিশের বক্তব্য, যেকোনো সময়েই ধরা হবে এই ধর্ষণ মামলার আসামিদের।

মোহাম্মদপুর থানার বসিলা ৪০ ফিট সড়কের এসবিপিএন পুলিশ ব্যারাকের পাশেই এই রিসোর্ট। প্রায় এক বিঘা জমির উপর গড়ে তোলা ‘জলতরঙ্গ সুইমিংপুল ও রিসোর্ট’-এ গত ২ এপ্রিল ওই তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

ধর্ষণের শিকার তরুণী বাদী হয়ে জলতরঙ্গ রিসোর্টের মালিক, ম্যানেজার ও তার কথিত প্রেমিকের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় ধর্ষণ মামলা করেন।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২ এপ্রিল রাতে আকাশ নামে এক যুবক তার বান্ধবী ভুক্তভোগী তরুণীকে নিয়ে ঘুরতে যান। সেখানে মেয়ে বান্ধবীকে রিসোর্টের মালিক ও ম্যানেজারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। রাতে সুইমিংপুলে সাঁতার কাটার পর খাওয়া দাওয়া শেষে রিসোর্টটির দ্বিতীয় তলায় একটি রুমে বিশ্রামের জন্য ভূক্তভোগীকে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেখানে ধর্ষণের শিকার হন ওই তরুণী। তরুণীকে ধর্ষণ শেষে রুমে রেখেই পালিয়ে যান কথিত প্রেমিক আকাশ। ওই সময় ভূক্তভোগী তরুণী জাতীয় জরুরী সেবা-৯৯৯ এ ফোন দিলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভূক্তভোগী ওই তরুণী থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।

ঘটনার ২৫ দিন পর গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের বসিলায় এলাকার জলতরঙ্গ রিসোর্টে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এর এক পাশে তিন তলা ভবন। আরেকপাশে বিশাল সুইমিংপুল। প্রবেশ পথের পাশেই রিসোর্টের অফিস কক্ষ। ভেতরে একটি হলুদ সন্ধ্যার আয়োজন চলছে। রিসোর্টে প্রবেশ করতেই এক কর্মী এসে পরিচয় জানতে চান। নিজেদের একটি অনুষ্ঠানে বুকিং দেওয়ার কথা বলে রিসোর্টে প্রবেশ করেন এই প্রতিবেদক। তিন তলা ভবনের নিচতলায় ডাইনিং ও রান্না ঘর। দোতলায় প্রতিটি রুমের দরজায় পদ্মা, মেঘনা, যমুনাসহ দেশের উল্লেখযোগ্য বড় নদীর নামে ৮টি রুম। মাওলানা ভাসানীর নামে একটি কনফারেন্স হলও রয়েছে। ভবনের তৃতীয় তলায় রয়েছে রুফটপ রোস্তোরার আয়োজন। রিসোর্টে আসা অতীথিদের জন্য ছাদে চেয়ার টেবিলে বসে খাওয়ার জন্য ছোট ছোট টেবিল ও ছাতা রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বললে তারা অভিযোগ করে বলেন, নানা অপকর্ম চলে তলতরঙ্গ রিসোর্টে। এখানে নানা বয়সি ছেলে মেয়ের অবাধ মেলামেশা, মদ পান করে মাতলামি করতে দেখা যায়। তাদের মতে, এসব সেখানকার প্রতিদিনের ঘটনা। বিশেষ করে ইয়াবা বিক্রি হয়। গাজার দূর্গন্ধ পান বাসিন্দারা, অভিযোগ তাদের।

এই প্রতিবেদকের অবস্থানকালে সন্ধ্যার দিকে রিসোর্টে গোসল করতে আসেন দুই তরুণ ও কয়েকজন তরুণী তবে সুইমিং পুলিশের পাশে হলুদ সন্ধ্যা চলায় গোসলের অনুমতি মেলেনি সেদিন। রিসোর্টের অফিসে দেখা গেলো ম্যানেজারের চেয়ারে বসে আছেন এক ব্যক্তি। জানালেন তার নাম আব্বাস আলী।

প্রথমে নিজেকে রিসোর্টের ম্যানেজার পরিচয় দিলেও এক পর্যায়ে তিনি দাবি করেন রিসোর্টের মালিক তার ভাই। মালিক কোথায়? জানতে চাইলে বলেন, ব্যবসার কাজে তিনি বিদেশে গেছেন। ভাই না থাকায় আব্বাস সাময়িক দায়িত্ব পালন করছেন।

আব্বাস বলেন, আমি দক্ষিণ সিটিকর্পোরেশনের অঞ্চল-৫ এর কর কর্মকর্তা। আমার ভাইয়ের অনুপস্থিততে আমি এখানে এসে বসেছি।

অথচ এই আব্বাসই ধর্ষণ মামলার তিন নম্বর আসামি এবং আব্বাস নিজেই এই রিসোর্টের মালিক। ওই মামলা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। আব্বাস বলেন, ‘আমরা যাদের কাছ থেকে জমি ভাড়া নিয়েছি তারাই এখন আমাদের ব্যবসায় বাধা দিচ্ছে। আমার এখানে নিজেরা ভবন তৈরি করেছি। অনেক কষ্টে ব্যবসা গড়ে তুলেছি এখন জমির মালিকের চোখ পড়েছে।’

পুলিশের ভাষ্যমতে আপনি পলাতক। কিন্তু, আপনি নিয়মিত রিসোর্টে বসেই অফিস করছেন, কিভাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই মামলা একটি বানোয়াট মামলা। এটা পুলিশ বুঝতে পেরে আমাকে মামলা থেকে অব্যহাতি দিয়েছে।’

ম্যানেজারের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে জানতে চাইলে আব্বাস দাবি করেন, ‘আসামি ইমরান রিসোর্টের ম্যানেজার না। সে ইলেকট্রিক মিস্ত্রী। সে স্থায়ী কর্মী নয়, কোনো সমস্যা হলে খন্ডকালীন কর্মী হিসেবে এসে কাজ করে দিয়ে যায়। আকাশের সঙ্গে তার সখ্যতা থাকায় সে অবৈধ কাজের সুযোগ করে দিয়েছে। তাই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে।’

আবাসিক এলাকায় রিসোর্ট কোনো? জানতে চাইলে আব্বাস বলেন, ‘আবাসিক এলাকা হলেও এখানে সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাই রিসোর্ট করা অবৈধ না। সিটি করপোরেশনসহ সব কর্তৃপক্ষ আমাদের অনুমতি দিয়েছে।’

ভূক্তভোগী তরুণীর দাবি, মামলার ২৫ দিন পার হয়ে গেলেও এখনও অধরা রয়েছে রিসোর্ট মালিক আব্বাস আলী ও আকাশ। পুলিশ একজনকে আটক করলেও বাকিরা এখনও আটক না হওয়ায় আতঙ্কে দিন পার করছেন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজুল হক ভূঞা জানান, ‘এ ঘটনায় ভূক্তভোগী তরুণী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনায় একজনকে আমরা আটক করেছি। বাকি আসামীরা পলাতক রয়েছে। আমরা পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা করছি।

পরে রবিবার (২৮ এপ্রিল) আসামি গ্রেফতার না করার বিষয় জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অনিক ভক্ত বলেন, ‘আমরা কাজ করছি। যেকোনো সময় ধরে ফেলবো।’

পুলিশের চোখে পলাতক আসামি নিয়মিত অফিসে বসছে কিভাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা আসামির মোবাইলের সিডিআর নিয়েছি। অনলাইন অফলাইনে কাজ করছি। কিন্তু, কে কখন অফিসে আসে বা বসে এতো কিছু তো দেখা সম্ভব না। তবে আমরা কাজ করছি। ধরে ফেলবো।’

;