বন বিভাগের আতঙ্ক কে এই মনির!



সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
মনিরুজ্জামান মনির

মনিরুজ্জামান মনির

  • Font increase
  • Font Decrease

ভালুকা (ময়মনসিংহ) থেকে ফিরে: কে এই মনিরুজ্জামান মনির। নিরস্ত্র বন কর্মীদের কাছে তিনি মূর্তিমান আতঙ্ক। বনের জমি দখলের কারণে এ পর্যন্ত তার নামে ২৯ টি মামলা দায়ের করেছে তবুও তাকে ঠেকানো যাচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।

বন বিভাগ ছাড়াও আরও অনেক মামলা চলমান তার নামে। পুলিশের নাকের ডগা দিয়ে ঘোরাফেরা করলেও তার লোমও ছোঁয়ার সাহস করেনা থানা পুলিশ। আবার ক্ষেত্র বিশেষে পুলিশের দুর্বল চার্জশীটে আইনের ফাঁকগলে বেরিয়ে গেছে মনির। এভাবেই দিনে দিনে এলাকার ডনে পরিণত হয়েছেন। বিশেষ করে বন বিভাগের কাছে।

এমনও ঘটনা ঘটেছে সকালে বন বিভাগের লোকজন অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দিয়ে এসেছেন। সন্ধ্যায় আবার লাঠিয়াল বাহিনী দাঁড় করে রেখে দখল নিয়েছেন। বন বিভাগের কর্মীরা সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হয়েছে তার দ্বারাই। যেই তার বিরুদ্ধে কথা বলেছে তার উপরেই নেমে এসেছে নানা রকম নির্যাতন।


আরও পড়ুন, বনের জমি দখলের খেলার নাম ‘ডিমার্কেশন’ 

কে এই বাউন্ডারি শহীদ


সবচেয়ে বেশি হামলার শিকার হয়েছেন রাতে বনে টহল দিতে থাকা বন কর্মীরা। রাস্তায় তাদের আটক করে কিলঘুষি দিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন। আবার কখনও কখনও অস্ত্র ঠেকিয়ে ভয় দেখিয়েছে। ক্ষেত্র বিশেষে হয়তো বিষয়টি কাকতালীয় হতেও পারে। তবে মুনিরের সঙ্গে মুখোমুখি হওয়ার পরেই এমন ঘটনাকে কোনো ভাবেই কাকতাল ভাবতে পারেনা বনের লোকজন। যে কারণে তাকে সমীহ করেই চলেন নিরস্ত্র বনকর্মীরা। মনিরের নাম মুখে আনার আগে আশপাশে দেখে নেন কেউ শুনছে কি না।

ভালুকা রেঞ্জের একজন বিট অফিসার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বার্তা২৪.কমকে বলেন, গত ১২ অক্টোবর হবিরবাড়ি মৌজায় বনের গাছ কেটে ঘর নির্মাণ করে মনির। বন বিভাগের লোকজন পরে গিয়ে ভেঙে দিয়ে আসে। পরদিনেই আবার লাঠিয়াল বাহিনী দাঁড় করে রেখে ইটের ঘর নির্মাণ করে। এ দফায় অনেকটা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে অগ্রিম ঘোষণা দিয়ে গিয়ে ঘর নির্মাণ করেন। বন বিভাগের লোকজন জানলেও দুর্গম এলাকা হওয়ায় যাওয়ার সাহস দেখায় নি।


আরও পড়ুন, ১৫৯৯ একর জমির মালিক মল্লিকবাড়ি বন বিট নিজেই ভূমিহীন


কে এই মনির!

তার পুরো নাম মনিরুজ্জামান মনির। বাবার নাম আবুল হোসেন। বারশ্রী গ্রামের বাসিন্দা। হবিরবাড়ি ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। ভালুকা রেঞ্জের সদ্য বিদায়ী ফরেস্টার মোস্তাফিজুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ২০০২ সাল পর‌্যন্ত ছিচকে গাছ চোর ছিলো মনির। এখন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছে। কমপক্ষে একশ বিঘার মতো বনের জমি দখল করে রেখেছে বলে অভিযোগ বন বিভাগের।

মনিরের নামে প্রথম মামলা হয় ২০০২-০৩ অর্থবছরে। হবিরবাড়ি বিটের মামলা নম্বর ০১/হবি। এর কিছুদিনের মাথায় আবার আরেকটি মামলা দয়ের করে বন বিভাগ। ২০০৩-০৪ অর্থবছরে ১টি, ২০০৪-০৫ অর্থবছরে ৪টি, ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ৬টি। এক এগারোর সময়ে ভয়ে বনের জমির ধারেও কাছেও ঘেষেন নি। এরপর ২০০৮-০৯ অর্থবছরে গিয়ে আবার শুরু করেছেন বনের জমি দখল। এই বছরে তার নামে মামলা হয়েছে ২টি, সবচেয়ে বেশি মামলা হয়েছে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে। এই বছরে তার বেপরোয়া মনিরকে ঠেকাতে হিমশিম খেতে হয় বন বিভাগকে।

প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থাকায় তার টিকিটি ছোয়ার চেষ্টা করেনি পুলিশ। অভিযোগ রয়েছে বন বিভাগ চাইলেও অনেক সময় পুলিশ তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি। বনের জমি দখল হচ্ছে খবর পেয়ে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা চাওয়া হলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে পুলিশ সাড়া দেয়নি। সীমাবদ্ধতার কথা জানিয়ে সময়ক্ষেপণ করেছে।

আবার মামলা দিতে গেলে কয়েকদিন ঘুরিয়ে তবেই মামলা নিয়েছে দায়সারা ভাবে। অর্থাৎ তার বিরুদ্ধে ২৯টি মামলা দায়ের হলেও অনুপ্রবেশের ঘটনা কয়েক শতাধিক হবে বলে দাবী করেছে বন বিভাগের কর্মীরা। একজনতো বলেই বসলেন, ওর যত কীর্তি যদি সবগুলোর মামলা হতো, তাহলে এক দিনেই আট-দশটি মামলা হওয়ার কথা।

অনেক অফিসার ছিলেন যারা তার সাথে সখ্য গড়ে নিজের আখের গুছিয়ে নিয়েছেন। তারা মামলা দেওয়ার পথে এগোয় নি। আবার মামলা দিলেও কঠোর ধারা না দিয়ে সহজ ধারা দিয়েছেন যাতে সহজেই পার পেয়ে যায়। বন বিভাগের মামলা নিয়েও রয়েছে ভানুমতিন খেল। একই আইনজীবীর সঙ্গে বছরের পর বছর কন্ট্রাক্ট। তার নামেরও রয়েছে নানা রকম মুখরোচক আলোচনা।

বনের জায়গা দখলের পাশাপাশি বনের জমি কেটে মাটি বিক্রি তার অন্যতম পেশা। শুষ্কমৌসুম এলেই তার কাছে অসহায় হয়ে পড়ে বনের লোকজন। সন্ধ্যায় যখন বনের লোকজন কাজ শেষ করে নিদ্রায় যায়, তখন গহীন বনে শুরু হয় ভেকু দিয়ে মাটি কাটার মহোৎসব। বনের লোকজন অনেক সময় খবর পেলেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাতে মুখোমুখি হতে চায় না।

বন বিভাগ ও স্থানীয়রা মনে করে অস্তিত্ব সংকটে থাকা  ভালুকা বনকে রক্ষা  করতে হলে মনির ও শহীদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। আর তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন। না হলে, হয় ভয় দেখিয়ে, না হয় টাকার প্রভাবে পার পেয়ে যাবে।

মনিরুজ্জামান মনির বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমি একটু উট্টা যাচ্ছি, যে কারণে মানুষের চোখ পড়েছে। অনেকে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তারাই আমার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলায় ইন্ধন দিয়েছিলো। বাদী নিজেই মামলা তুলে নিয়েছে।

বনের ২৯ মামলা প্রসঙ্গে বলেন, আমার নামে এতো মামলা নেই। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমুলক সাত-আটটির মতো মামলা দেওয়া হয়। ৮০ ভাগ মামলায় আমি নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছি। বনের কোনো জমি আমি দখল করিনাই। আমি যেগুলো জমি ভোগ দখল করি সেগুলো আমার বাব-দাদার পৈত্রিক।

ময়মনসিংহ বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা একেএম রুহুল আমিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, আগে কি হয়েছে জানি না। আমি সম্প্রতি এসেছি, বনের জমিতে যেই আসুক তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। প্রশাসনে অনেক ভালো ভালো অফিসার রয়েছে, যারা আমাদের দারুণভাবে সহযোগিতা করছে। আমরা এরই মধ্যে অনেক জমি উদ্ধার করে বনায়ন করেছি। এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।

   

বাজেটে সিগারেটে কার্যকর করারোপে গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান সংসদ সদস্যদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বাজেটে সিগারেটে কার্যকর করারোপে গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান সংসদ সদস্যদের

বাজেটে সিগারেটে কার্যকর করারোপে গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান সংসদ সদস্যদের

  • Font increase
  • Font Decrease

তামাকের ব্যবহার নির্মূল করে তামাক মুক্ত দেশ গড়তে আসন্ন ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে বাজেটে সিগারেটে কার্যকর করারোপে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সংসদ সদস্যরা।

তামাক পণ্যের কর থেকে যে রাজস্ব আসে তার থেকে অনেক বেশি তামাক ব্যবহারজনিত অসুস্থতায় স্বাস্থ্য খাতে সরকারের খরচ হয় উল্লেখ করে সংসদ সদস্যরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে 'তামাকমুক্ত বাংলাদেশ' গড়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা বাস্তবায়ন করতে দেশে সিগারেটের সহজলভ্যতা কমাতে হবে। যে কারণে সিগারেটে কার্যকর করারোপ এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সম্প্রতি মূল্যস্ফীতি এবং আয়ের প্রবৃদ্ধির কথা মাথায় রেখে আসন্ন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে নিম্ন, মধ্যম, উচ্চ, ও প্রিমিয়াম স্তরের সিগারেটের খুচরা মূল্য যথাক্রমে ৩৩ শতাংশ, ১৯ শতাংশ, ১৫ শতাংশ, এবং ১৩ শতাংশ বাড়ানোর আহ্বান জানান তারা।

বৃহস্পতিবার (২ মে) রাজধানীর বাংলামোটরস্থ বিয়াম মিলনায়তনে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন সমন্বয়ে আয়োজিত জাতীয় সংলাপে তারা এ আহ্বান জানান।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, সিগারেটের ওপর কার্যকর করারোপের বিষয়ে যে ঐক্যমত আমাদের সংসদ সদস্যদের মধ্যে রয়েছে তা এবারের বাজেট আলোচনায় ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে।

রাজশাহী ৩ আসনের সংসদ সদস্য মোহা. আসাদুজ্জামান আসাদ এবং নীলফামারী ১ আসনের সংসদ সদস্য মো. আফতাব উদ্দিন সরকার মনে করেন, নিম্ন আয়ের মানুষ এবং কিশোর-তরুণদের সিগারেট ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করতে হলে এই বাজেটে বেশি বেশি করারোপের মাধ্যমে সিগারেটের খুচরা মূল্য বাড়ানো প্রয়োজন এবং উপজেলা পর্যায়ে এর চাষ নিরুৎসাহিত করতে সরকারের ইনসেনটিভ মেকানিজম তৈরি করা জরুরি। জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যগুলো অর্জনের জন্য নাগরিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা একান্ত জরুরি।

মহিলা সংরক্ষিত ৭ আসনের সংসদ সদস্য জারা জাবীন মাহবুব বলেন, সিগারেটের ব্যবহার কমিয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বাজেটে যথাযথ উদ্যোগ থাকা বাঞ্ছনীয়।

ঢাকা-১০ আসনের এমপি ফেরদৌস আহমেদ বলেন, সিগারেটের দাম ২০০ থেকে ৩০০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর পাশাপাশি তামাকের উপর কার্যকর করারোপে গুরুত্ব দিতে হবে।

এ সময় সিগারেটে কার্যকর করারোপের বিষয়ে প্রস্তাবনাগুলো তুলে ধরেন তামাক-বিরোধী সংগঠনের পক্ষে উন্নয়ন সমন্বয়ের গবেষণা পরিচালক আব্দুল্লাহ নাদভী।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অর্থনীতিবিদ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান।

তিনি বলেন, সিগারেটে কার্যকর করারোপই এই ক্ষতিকারক পণ্যের ব্যবহার কমিয়ে আনার সবচেয়ে কার্যকর উপায়। এ কারণেই দেশের তামাক-বিরোধী নাগরিক সংগঠনগুলো সিগারেটে কার্যকর করারোপের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তবে সিগারেটের ব্যবহার কমলেও যেন সরকারের রাজস্ব আয়ে বড় চাপ না পড়ে- সে বিষয়টি মাথায় রেখেই কার্যকর করারোপের প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে।

এই প্রস্তাবনাগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে একদিকে সিগারেট ব্যবহারের হার ৯ শতাংশ কমবে, অন্যদিকে সিগারেট বিক্রি থেকে আসা করের পরিমাণ ২৮ শতাংশ বাড়বে বলে জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, জামালপুর ৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. আব্দুর রশিদ, এবং সিরাজগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. শফিকুল ইসলাম।

এছাড়াও বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতিবিদ ও রিসার্চ ডিরেক্টর ড. এসএম জুলফিকার আলী এবং বিইইটিসি ফোরামের সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন অধ্যাপক ড. নাজমুল ইসলাম এবং অধ্যাপক গোলাম আহমেদ ফারুকী।

;

কালুরঘাট সেতুতে জাহাজের ধাক্কা, কোয়ার্টার মাস্টারসহ গ্রেফতার ৩



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামের শতবর্ষী কালুরঘাট রেলসেতুতে লাইটার জাহাজের ধাক্কার ঘটনায় তিন নাবিককে গ্রেফতার করেছে নৌ পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২ মে) নগরীর কালুরঘাট এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তিনজন হলেন- জাহাজে কর্মরত ২৪ বছর বয়সী কোয়ার্টার মাস্টার ফেরদৌস রহমান, ২১ বছর বয়সী সুকানি কোয়াটার ইয়ামিন মোল্লা ও গ্রীজার শাহাদাত হোসেন।

জানা গেছে, কালুরঘাট সেতুর পশ্চিমে হামিদচর এলাকায় একে খান ডকইয়ার্ডে জাহাজটি নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল। কিন্তু জোয়ার এবং প্রবল বাতাসের মধ্যে জাহাজটি ভারসাম্য হারিয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে কালুরঘাট সেতুতে আঘাত করে আটকে যায়। জাহাজের মাস্টারের অনুপস্থিতিতে কোয়ার্টার মাস্টার সেটি ডকইয়ার্ডে নেয়ার চেষ্টা করছিলেন বলে তথ্য পায় পুলিশ।

মামলা উল্লেখ করা হয়েছে, খালি জাহাজটি বেপোরোয়া গাতিতে এসে সংস্কারাধীন কালুরঘাট সেতুর ৯ ও ১০ নম্বর স্প্যানে ধাক্কা দেয়। এতে ব্রিজের ৯ ও ১০ নম্বর স্প্যানের আন্ডার স্ল্যাং গার্ডার, ওয়াকওয়ে, রেলিং ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে। মামলা দায়েরের আগেই জাহাজটি জব্দ করে নৌ পুলিশ। জাহাজটির দৈর্ঘ্য ৬৬ দশমিক ৬৫ মিটার এবং ১১ মিটার প্রস্থ।

সদরঘাট নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একরাম উল্লাহ বলেন, কালুরঘাট সেতুতে জাহাজের ধাক্কা দেওয়ার ঘটনায় রেলওয়ে থানায় একটি মামলা হয়। এ ঘটনার পরপরই আমরা জাহাজটি জব্দ করেছি। এরপর ওই মামলায় জাহাজের তিন নাবিককে গ্রেফতার করেছি।

এর আগে, মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে এমভি সমুদা-১ নামে লাইটারেজ জাহাজটি কালুরঘাট সেতুতে ধাক্কা দিয়ে সেখানে আটকে যায়। জাহাজটি মেসার্স রোকনুর মেরিটাইম লিমিটেড নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন। এদিন রাতে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সেতু বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী লিমন মজুমদার বাদি হয়ে চট্টগ্রামের জিআরপি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এতে সেতুর ৫০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। মামলায় জাহাজের মাস্টার, সুকানি, গীজারম্যানসহ অজ্ঞাত আরও দুই-তিন জনকে আসামি করা হয়েছে।

;

গাজা যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাজ্যকে পাশে চায় বাংলাদেশ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

  • Font increase
  • Font Decrease

শান্তিপূর্ণ ও সংঘাতমুক্ত বিশ্ব প্রতিষ্ঠা এবং গাজা ও ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটাতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা দিতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

লন্ডনের স্থানীয় সময় বুধবার (১ মে) সন্ধ্যায় বাংলাদেশের ৫৪তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত কূটনৈতিক সম্বর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

এতে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী গাজা এবং ইউক্রেনসহ বিশ্বব্যাপী সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনের ওপর জোর দিয়ে বলেন, মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা পুনরুদ্ধার এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য নিরীহ মানুষ হত্যা বন্ধ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিকটবর্তী ঐতিহাসিক চার্চিল হলে এ অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের স্পিকার স্যার লিন্ডসে হোয়েল প্রধান অতিথি এবং হাউস অব কমন্সের নেতা পেনি মর্ডান্ট, যুক্তরাজ্যের মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া ও জাতিসংঘের এফসিডিও মন্ত্রী লর্ড তারিক আহমেদ, পরিবেশ, খাদ্য ও গ্রামীণ বিষয়ক ছায়াসচিব স্টিভ রিড  এবং বাংলাদেশ নিয়ে সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপের চেয়ারম্যান রুশনারা আলী এমপি বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।

প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী প্রমুখের উপস্থিতিতে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান তার বক্তব্যে জাতির পিতা, সকল শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সমর্থনের জন্য যুক্তরাজ্য সরকার, সেদেশের নাগরিক এবং ব্রিটিশ-বাংলাদেশি প্রবাসীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্যের ঐতিহাসিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে লন্ডনের ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে উষ্ণ অভ্যর্থনাকারী এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তার নৃশংস হত্যাকাণ্ডে শোক প্রকাশকারী প্রয়াত সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার হ্যারল্ড উইলসনকে কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

মন্ত্রী যুক্তরাজ্যকে বাংলাদেশের সত্যিকারের বন্ধু হিসেবে অভিহিত করেন এবং রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসনে যুক্তরাজ্যের সহায়তার গুরুত্বের ওপর জোর দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অসামান্য প্রবৃদ্ধি অর্জনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বিশ্বের নজর এখন ২০৩০ সালের মধ্যে ৯ম বৃহত্তম ভোক্তা বাজার এবং ২০৪১ সালের মধ্যে প্রযুক্তিনির্ভর 'স্মার্ট বাংলাদেশ' হতে চলা আমাদের দেশের দিকে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান এ সময় ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন পত্রে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়ায় ব্রিটিশ  প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনককে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি তিনি 'বঙ্গবন্ধু-এডওয়ার্ড হিথ ফ্রেন্ডশিপ অ্যাওয়ার্ড' এবং 'বঙ্গবন্ধু-হ্যারল্ড উইলসন ফ্রেন্ডশিপ অ্যাওয়ার্ড' চালু করার জন্য যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনারের প্রশংসা করেন।

যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের স্পিকার স্যার লিন্ডসে হোয়েল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ব্রিটিশ-বাংলাদেশিদের অবদানের কথা স্মরণ করেন। পেনি মর্ডান্ট এমপি বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন। লর্ড তারিক আহমেদ বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে সমুন্নত রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টার  প্রশংসা করেন। তারা প্রত্যেকেই  যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি ও সমাজে  ব্রিটিশ-বাংলাদেশি প্রবাসীদের ভূমিকার প্রশংসা করেন ও বলেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের উন্নয়নে অবিচল অংশীদার থাকবে।

;

বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার সামনে শ্রমিকদের অবস্থান



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা জেলার সাভারে বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা।

বৃহস্পতিবার (২ মে) সন্ধ্যায় সাভারের কলমা এলাকায় রেবেলা অ্যাপারেলস নামে কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা যায় তাদের।

শ্রমিকরা জানান, তিন বছর আগে কারখানাটি চালু হয়। তখন থেকেই বেতন, ওভার টাইম পরিশোধ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি করে আসছিল কর্তৃপক্ষ। এ বছরও একইভাবে বেতন বকেয়া রাখছিল তারা। সম্প্রতি ঈদ-উল-ফিতরের দুই দিন আগে অর্ধেক বেতন পরিশোধ করা হয় শ্রমিকদের। ঈদের পরে পুরো বেতন পরিশোধের কথা থাকলেও তা কয়েকবার ঘুরিয়ে পরিশোধ করা হয়নি। সবশেষ ২৮ এপ্রিল বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। এরই জেরে বৃহস্পতিবার অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা।

কোলে শিশু সন্তানকে নিয়ে বসেছিলেন এক শ্রমিক। তিনি বলেন, দুই মাস হয়ে গেছে বেতন পাই না। বারবার ঘুরাচ্ছে। বাসার খরচ, বাসা ভাড়া মেটাতে পারছি না। সংসার চালাতে পারছি না। এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। বেতন না দিলে বাসায়ও যেতে পারবো না।

আরেক শ্রমিক বলেন, বেতন দেয় না দুই মাস হলো। ওভারটাইম ডিউটি করালেও সেটার পুরো টাকা দেয় না। এখন ডেট দিয়েও ঘুরাচ্ছে। এজন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ দাবি করেন তিনি।

রেবেলা অ্যাপারেলস ব্যবস্থাপনা পরিচালক রায়হান আহমেদ বলেন, ঈদের আগে একটি শিপমেন্ট না পাওয়ায় বেতন দেরিতে দেওয়া হয়েছে। তবে ঈদের আগে অর্ধেক বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। বাকিটাও করা হবে। তবে সেজন্য বিক্ষোভ করা শ্রমিকদের ইস্তফা দিতে হবে।

শিল্প পুলিশ ১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম বলেন, বিষয়টি জানা নেই। সম্ভবত কারখানাটি নিবন্ধিত নয়। সাব-কন্ট্রাক্টে কাজ করছে। শ্রমিকরা অভিযোগ করলে বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

;