হজের সফরে যাদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা দরকার



ইসলাম ডেস্ক, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের দৃশ্য, ছবি: সংগৃহীত

সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের দৃশ্য, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ফরজ ইবাদত হজের মধ্যে ইসলামের সামগ্রিকতা ফুটে ওঠে। হজে ধর্মীয় চিন্তা ও বিশ্বাসগত দিক ছাড়াও রাজনৈতিক-সামাজিক দিকটিও প্রকাশ পায়। আল্লাহতায়ালাকে জানা এবং আল্লাহর প্রিয়জন তথা মানবজাতিকে ভালোভাবে জানা ও এসবের আলোকে নিজের দায়-দায়িত্ব পালন ছাড়া কোনো মানুষ প্রকৃতভাবে আল্লাহর প্রিয়ভাজন হতে পারে না। আল্লাহর প্রিয়ভাজন ও একনিষ্ঠ বান্দা হওয়ার জন্য যেসব আত্মত্যাগ ও ধৈর্য দরকার- তার অন্যতম অনুশীলন ক্ষেত্র হচ্ছে পবিত্র হজ।

হজ আল্লাহর দিকে ফিরে যাওয়ার পথ। নামাজি যেমন নামাজ পড়ার আগে অজুর মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করেন, তেমনি হজযাত্রীকে পবিত্রতা অর্জনের লক্ষ্যে বৈধ উপায়ে অর্জিত ইহরামের পোশাক পরতে হয় এবং গোসলের মাধ্যমে সবধরনের বাহ্যিক ও আত্মিক গোনাহ বর্জনের অঙ্গীকার করতে হয়। মৃত্যুপথযাত্রী যেমন সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন এবং সবার পাওনা বুঝিয়ে দেন, তেমনি হজযাত্রীকেও এ কাজ করতে হয়, অতীতের গোনাহের জন্য তওবা করতে হয়। তাকে ভাবতে হয়, এটাই তার অন্তিম সফর। হজযাত্রী মৃত ব্যক্তির মতো এমন এক স্থানে যাচ্ছেন যেখানে সবাই সমান, শুধু যার সৎকর্ম বেশি তিনি সেখানে আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয়, কিন্তু দুনিয়াতে আল্লাহর সৃষ্টি মানুষ হিসেবে প্রত্যেকেই সমান। হজের মধ্যে সবাই পবিত্রতার প্রতীক শ্বেতশুভ্র কাফনের পোশাক পরে ইসলামের সাম্যের চেতনা তুলে ধরেন।

হজযাত্রী সেলাইবিহীন সাদা পোশাক পরে কেবল আল্লাহর অনুগত থাকার শপথ নেন। সেলাইবিহীন সাদা কাপড় পরে এটা বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে যে, মৃত্যুর পরে এ পোশাক পরেই আল্লাহর কাছে উপস্থিত হতে হবে। সৎকর্ম ছাড়া গর্বের রংবেরংয়ের পোশাক, পদমর্যাদা, আভিজাত্য ও অহংকার সেখানে কোনো কাজে আসবে না।

ইহরামের তাৎপর্য হলো, আল্লাহর নির্দেশিত হালাল ও হারামকে সবসময় মেনে চলার অঙ্গিকারে অটল থাকা। আল্লাহর ঘর তাওয়াফের অর্থ হলো, তার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষে মানুষের সমস্ত তৎপরতার চালানোকে লক্ষ্য বানানো, দুনিয়ার ঘর-বাড়ী নয়, আল্লাহর ঘরই মানুষের প্রকৃত ঠিকানা। হাজরে আসওয়াদে হাত রাখা বা চুমো দেওয়ার তাৎপর্য হলো- আল্লাহর যেকোনো নির্দেশ পালনের অঙ্গিকার করা ও তার নিদের্শকে শিরোধার্য মনে করা। সাফা ও মারওয়াতে দৌঁড়ানোর অর্থ হলো- ভয় ও আশার মাঝামাঝি অনুভূতি নিয়ে ইহকালীন এবং পারলৌকিক কল্যাণ লাভের জন্য চেষ্টা সাধনা করা।

আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের তাৎপর্য হলো- আল্লাহ সম্পর্কে জানা, তিনি সর্বশক্তিমান এবং সবকিছু জানেন, সবকিছু তারই কাছে চাওয়া উচিত- এসব বিষয়ে চেতনাকে শানিত করা।

মুজদালিফার খোলা প্রান্তরে রাতযাপন হজের আরেকটি বড় দিক। এখানে রাতযাপনের দর্শন হলো- নিজের মধ্যে খোদাভীতির চেতনা ও স্লোগানকে বদ্ধমূল করা। মিনায় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের অর্থ হলো- শয়তানের প্রবঞ্চনাকে চিরতরে দমন করা।

আমরা জানি, সন্তান-সন্ততি মানুষের সবচেয়ে প্রিয়। কিন্তু প্রয়োজনে তাও আল্লাহর জন্য বিলিয়ে দেওয়ার শিক্ষা দিয়ে গেছেন হজরত ইবরাহিম ও হজরত ঈসমাইল (আ.)। কাবা ঘর তাওয়াফ শেষে হাজিকে মাকামে ইবরাহিমের পেছনে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়তে হয়। এর প্রতীকী তাৎপর্য হলো- হাজিকে ইবরাহিম (আ.)-এর মতো পবিত্র হতে হবে এবং একনিষ্ঠ একত্ববাদী হয়ে নামাজ পড়তে হবে। এভাবে নিজেকে শুদ্ধ, পবিত্র ও যোগ্য করার পরই একজন হাজি সাহেব প্রকৃত ঈমানদারে পরিণত হন।

বস্তুত মহান আল্লাহর পথে জীবন, সম্পদ ও আমিত্বকে বিসর্জন দেওয়ার এবং সাম্য, ভ্রাতৃত্ব ও ইসলামি ঐক্যের চেতনাকে শানিত করার বার্ষিক মহড়া অনুষ্ঠিত হয় হজে। রাজনৈতিক ও সামাজিক কল্যাণের দিক থেকে হজ ইসলামের শীর্ষস্থানীয় ইবাদত। পবিত্র কোরআনে সূরা হজের ২৭ ও ২৮ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘মানুষকে হজের দিকে আহ্বান করো যাতে তারা নিজের বিভিন্ন কল্যাণগুলো দেখতে পারে।’ হজ সব ধরনের খোদাদ্রোহী শক্তিকে অস্বীকার করার পাশাপাশি ইসলামি ভ্রাতৃত্ব, ঐক্য ও সংহতির আলোকোজ্জ্বল প্রকাশ ঘটায়। হজের মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ইসলামের পবিত্রতম স্থানে এবং সেখানে একই পোশাকে একই স্লোগান ‘লাব্বাইক...’ বলে সমবেত হয় সারা বিশ্বের সব জাতি ও বর্ণের মুসলিম নর-নারী।

ধর্মীয় কর্তব্য পালনের সঙ্গে সঙ্গে হজের আরেকটি দিক আছে- এর আন্তর্জাতিকতা। বিভিন্ন জাতি, ভাষা, গোত্র, বর্ণ ও সংস্কৃতির অধিকারী মুসলমানরা মক্কায় সমবেত হন এবং তাদের সবাই খোদার প্রতি বিনম্র ও ভীতবিহ্বল থাকেন। এমন দৃশ্য আর কোনো ইবাদতের ক্ষেত্রে দেখা যায় না। এত ভিড় আর জমায়েতের মাঝে নেই কোনো বিশৃঙ্খলা। কারণ, এখানে কোনো ব্যক্তির ডাকে কেউ আসেনি, সবাই এসেছে আল্লাহর ডাকে। তাদের লক্ষ্য একটাই, আল্লাহর নির্দেশ ও আইনকে সবকিছুর ওপরে প্রাধান্য দেওয়া।

পথহারাদের সুপথে ফিরে আসার মাধ্যম হজ। হজের লক্ষ্য শুধুমাত্র আল্লাহর সান্নিধ্য। যেহেতু হজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত তাই তা পালন করতে হবে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে। বিশেষ করে হজের সফরে।

ইসলামি চিন্তাবিদরা তাই পরামর্শ দিয়ে থাকেন, যাদের কথা-বার্তা ও চাল-চলনে সম্পদ, ক্ষমতা, উচ্চবংশ, আভিজাত্য, শিক্ষা-ডিগ্রি, পদ-পদবী ও রূপ-লাবন্যের অহংকার প্রকাশ পায় এবং যারা নিজের প্রশংসা ও পরিবারের বিজ্ঞাপন দিয়ে বেড়ায় তাদের থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকবেন। অহংকার ও আত্নপ্রশংসা শয়তানি চরিত্র। কিয়ামতের দিন নবী করিম (সা.) এই ভয়ংকর চরিত্রের মানুষের প্রতি খুব অসন্তুষ্ট থাকবেন এবং কাছে আসতে দেবেন না।

যারা পরনিন্দা করে, মিথ্যা কথা বলে, মানুষকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে কটূ কথা বলে, বেশি কথা বলে, গালা-গালি করে, অন্যের দোষ খুঁজে বেড়ায়, অন্যকে পিয়নের মতো হুকুম করতে থাকে, খুব কৃপণতা করে এবং উগ্র মেজাজ দেখায়- এ জাতীয় মানুষকে কৌশলে এড়িয়ে চলুন।

হজের সফরে যাদের সাথী হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন- হজের সফরে কোনো ভালো-অভিজ্ঞ আলেমকে একান্ত সাথী বানাতে পারেন। সম্ভব হলে ব্যক্তিগতভাবে বা সমমনা কয়েকজনে মিলে খরচ বহন করে কোনো অভিজ্ঞ মুক্তাকি আলেমকে নিয়ে হজ করুন, তাকে মেনে চলুন। সহিহ মাসয়ালা ও আমলের কারণে আপনার হজ অর্থবহ হবে- ইনশাআল্লাহ।

এক কথায়, হজের সফরে ভদ্র, সভ্য, মার্জিত, স্বল্পভাষী, শান্ত ও নরম প্রকৃতির ব্যক্তিকে হজ সফরের ঘনিষ্ঠ সাথী বানান।

   

হাফপ্যান্ট পরা বিষয়ে ইসলাম কী বলে?



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ইসলামে পোশাক কেমন হবে এমন নীতিমালা রয়েছে, ছবি : সংগৃহীত

ইসলামে পোশাক কেমন হবে এমন নীতিমালা রয়েছে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাস্তাঘাটে নানা বয়সী হাফপ্যান্ট পরা মানুষের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে, যা আগে কল্পনাও করা যেত না৷ অথচ হাঁটু ঢেকে কাপড় পরা ফরজ, হাঁটু খোলা রাখা হারাম৷ আর এটা এমন হারাম যা গোপনে নয়, প্রতিনিয়ত জনসম্মুখে পাপে লিপ্ত হতে হয়৷ সমাজের মুসলমানদের মাঝে সেই হারামে লিপ্ত হওয়ার প্রবণতা ও ঝোঁক বেড়েই চলেছে৷ যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

ইসলামি স্কলারদের অভিমত হলো, কোনো গোনাহ প্রকাশ্য করতে করতে একসময় ভেতর থেকে অনুশোচনাবোধের অনুভূতিটুকু নষ্ট হয়ে যায়৷ হাদিসে এসেছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমার উম্মতের সবাইকে মাফ করে দেওয়া হবে, কেবল প্রকাশ্য গোনাহকারী ছাড়া৷’ -সহিহ বোখারি

হাফপ্যান্ট পরা কি জায়েজ?
ইসলাম একজন মুসলিমকে শালীন পোশাক পরিধান বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে। ইসলাম ঘোষণা করেছে, পুরুষকে আবশ্যকীয়ভাবে ঢাকতে হবে নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত। আর নারীর জন্য হাতের কব্জি মুখমণ্ডল পায়ের পাতা ছাড়া সব সতর (মানব শরীরের যেসব অংশ অপরের সামনে ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক, সেটাকে সতর বলে)।

ইসলামে পোশাক কেমন হবে এমন নীতিমালা রয়েছে। প্যান্ট, পায়জামা ইত্যাদি হাঁটুর নিচ অবধি থাকবে, তবে টাখনুর নিচে নয়। আবার পোশাক এতটা আঁটসাঁট হবে না যে, সতরের আকৃতি কাপড়ের ওপর প্রকাশ পায়। হ্যাঁ, পরিধানের প্যান্ট-শার্ট যদি উপর্যুক্ত খারাবি থেকে মুক্ত হয়, তাহলে পরিধান করা নাজায়েজ নয়। অবশ্য এরপরও তা পরিধান করা মাকরুহ। তা ব্যবহার না করাই বাঞ্ছনীয়। -দরসে তিরমিজি : ৫/৩৩২

জ্ঞানের অভাবে অনেকে সঠিক পোশাক নির্বাচন ও অবলম্বন করতে পারেন না। এ প্রসঙ্গে কিছু নীতি ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা নারী-পুরুষ সবার জন্য প্রযোজ্য। আবার কিছু স্বতন্ত্র বিষয় রয়েছে। এর কয়েকটি হলো-

সতর আবৃত করা
পোশাক এমন হতে হবে যা পুরোপুরি সতর আবৃত করে। পুরুষের জন্য নাভি থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত আর নারীর পুরো শরীর সতর। পোশাকের প্রধান উদ্দেশ্যই হলো- সতর ঢাকা। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে বনী আদম! আমি তোমাদের জন্য অবতীর্ণ করেছি পোশাক, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং সৌন্দর্য দান করে।’ -সুরা আরাফ : ২৬

সুতরাং যে পোশাক এই উদ্দেশ্য পূরণে ব্যর্থ তা শরিয়তের দৃষ্টিতে পোশাক নয়। তা নাজায়েজ পোশাক। এটা পরিত্যাগ করে পূর্ণরূপে সতর আবৃত করে এমন পোশাক গ্রহণ করা জরুরি। যেমন পুরুষের জন্য হাফ প্যান্ট পরা। নারীদের পেট-পিঠ উন্মুক্ত থাকে এমন পোশাক পরিধান করা।

পোশাক অধিক পাতলা ও আঁটসাঁট না হওয়া
যে পোশাক পরিধানের পরও সতর দেখা যায় কিংবা সতরের আকৃতি পোশাকের ওপরে প্রকাশ পায়, তা সতর আবৃত না করার কারণে নাজায়েজ পোশাকের অন্তর্ভুক্ত। এ ধরনের পোশাক পরিধান হারাম।

অহংকার প্রকাশ পায় এমন পোশাক না হওয়া
এমন পোশাক পরিধান করা নিষিদ্ধ, যেগুলোকে শরিয়ত অহংকারীদের নিদর্শন সাব্যস্ত করে। যেমন পুরুষের জন্য রেশমি কাপড় ব্যবহার। হজরত আবু মুসা আশআরি (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, আমার উম্মতের পুরুষের জন্য রেশম এবং স্বর্ণ হারাম করা হয়েছে। আর নারীদের জন্য এগুলো হালাল করা হয়েছে। -জামে তিরমিজি : ১/৩০২

হজরত আবু জুরাই (রা.)থেকে বর্ণিত, নবী কারিম (সা.) বলেন, টাখনুর নিচে কাপড় পরিধান থেকে বিরত থাকো। কেননা এটা অহংকারবশত হয়ে থাকে। আর আল্লাহতায়ালা অহংকারীকে ভালোবাসেন না। -সুনানে আবু দাউদ : ২/৫৬৪

হাফপ্যান্ট পরে অজুর বিধান
নামাজের মতো মৌলিক ইবাদত ছাড়াও সবসময় অজু করার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বলেছিলেন, ‘হে আমার বেটা! সম্ভব হলে সবসময় অজু অবস্থায় থাকবে। কেননা মৃত্যুর ফেরেশতা অজু অবস্থায় যার জান কবজ করেন তার শাহাদাতের মর্যাদা লাভ হয়।’ -শোয়াবুল ঈমান, বায়হাকি : ২৭৮৩

স্বাভাবিক শালিন পোশাকে অজু করা উচিত। কারণ, সতর ঢাকা প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর ওপর আবশ্যক। অপরদিকে হাফপ্যান্ট পরলে সতর অনাবৃত থাকে। তাই হাফপ্যান্ট পরা এবং পরিধান করে অজু করা উচিত নয়।

হাদিসে এসেছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, তোমরা নগ্নতা থেকে বেঁচে থাক। কেননা তোমাদের এমন সঙ্গী আছেন (কিরামান-কাতিবীন) যারা পেশাব-পায়খানা ও স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের সময় ছাড়া অন্যকোনো সময় তোমাদের হতে আলাদা হন না। সুতরাং তাদের লজ্জা কর এবং সম্মান কর।’ -সুনানে তিরমিজি : ২৮০০

তারপরও কেউ যদি হাফপ্যান্ট পরে করে অজু করে তাহলে তার অজু হয়ে যাবে। তবে কাজটি অনুচিত এবং এ ব্যাপারে কাউকে উৎসাহিত না করা।

;

এক সপ্তাহে মসজিদে নববিতে ৬০ লাখ জিয়ারতকারী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মসজিদে নববি, ছবি : সংগৃহীত

মসজিদে নববি, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতারের পর এবার সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনায় ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে এ দুই শহরে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে দেশটির জাতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর। এমন আশঙ্কার মাঝে এক সপ্তাহে মদিনার মসজিদে নববিতে প্রায় ৬০ লাখ জিয়ারতকারী নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা মোবারক জিয়ারত করেছেন।

সৌদি বার্তা সংস্থা এসপিএ-এর বরাতে জানা যায়, রমজান পরবর্তী সময়ে গত এক সপ্তাহে মসজিদে নববিতে রেকর্ড সংখ্যক জিয়ারতকারী বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে নবী কারিম (সা.)-এর রওজা জিয়ারত করতে এসেছেন। তাদের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে ৫৯ লাখ ৬০ হাজার ৭২৪ জন।

এসপিএ আরও জানায়, গত এক সপ্তাহে ১ লাখ ৮০ হাজার পবিত্র জমজমের পানির বোতল মসজিদে নববিতে আসা মুসল্লিদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।

রিয়াজুল জান্নাত তথা হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মিম্বর ও কামরার (নবী কারিম সা.-এর বাসস্থান) মধ্যবর্তী স্থানে ২ লাখ ৫৪ হাজার ২০৯ জন নামাজ আদায় করেছেন। যার মধ্যে ১ লাখ ২৩ হাজার পুরুষ ও ১ লাখ ৩০ হাজার ২৭৭ জন নারী রয়েছে।

পবিত্র উমরা পালনকারীরা মক্কায় যাওয়ার আগে বা পরে মদিনা ভ্রমণ করেন। মদিনায় মসজিদে নববিতে নামাজ আদায়ের পাশাপাশি রাসুলে কারিম ( সা.)-এর রওজায় সালাম পেশ, রিয়াজুল জান্নাতে নামাজসহ অন্যান্য নফল ইবাদত পালন করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান ঘুরে দেখেন।

উল্লেখ্য, এ বছর এপ্রিল মাসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে দেখা দিয়েছে নজিরবিহীন আবহাওয়া বিপর্যয়। বিরল বৃষ্টিতে প্লাবিত হচ্ছে একের পর এক মরুর দেশ।

সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে, আগামী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে উত্তর রিয়াদ ও পূর্ব প্রদেশের পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার তালিকাভুক্ত অঞ্চলের বাসিন্দাদের এই সময়ে আবহাওয়ার পূর্বাভাস ও আগাম সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে।

উর্দু নিউজ অবলম্বনে মুফতি উমর ফারুক আশিকী

;

বিপদাপদ কাটছেই না, কারণ জেনে নিন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ফজরের নামাজ আদায়কারী আল্লাহর জিম্মায় থাকে, ছবি : সংগৃহীত

ফজরের নামাজ আদায়কারী আল্লাহর জিম্মায় থাকে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নানাবিধ আমল, চিকিৎসা ও চেষ্টা-তদবির সত্ত্বেও অসুস্থতা থেকে সুস্থ হতে বিলম্ব হয় কিংবা নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়- ফরজ নামাজ ঠিকমতো আদায় না করার কারণে। বিশেষ করে ফজরের নামাজ।

ফজরের নামাজ আদায়কারী দয়াময় আল্লাহর জিম্মায় থাকে। আল্লাহতায়ালা তাকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রাখেন। সুতরাং তাকে যে অযথা কষ্ট দেবে, অন্যায়-অবিচার করবে, আল্লাহ তাকে কঠোর শাস্তি দেবেন। এ সম্পর্কে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ আদায় করল, সে আল্লাহর নিরাপত্তা লাভ করল। আর আল্লাহতায়ালা যদি তার নিরাপত্তা প্রদানের হক কারও থেকে দাবি করে বসেন, তাহলে সে আর রক্ষা পাবে না। তাই তাকে মুখ থুবড়ে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করবেন।’ -সহিহ মুসলিম : ৬৫৭

এর মানে হলো, যে ফজরের নামাজ আদায় করল না; সে আল্লাহর নিরাপত্তায় থাকে না। তো যে ব্যক্তি আল্লাহর নিরাপত্তায় থাকে না, তাকে পৃথিবীর কে নিরাপত্তা দেবে? তাকে কে সুস্থ করবে?

সমাজের অনেকেই আছেন, বাকি চার ওয়াক্ত নামাজ ঠিকমতো আদায় করেন। ফজরের নামাজ মাঝে-মধ্যে ছাড়েন কিংবা মাঝে-মধ্যে পড়েন। তাদের নিরাপত্তায় তো সমস্যা হবেই।

সারা বছরে একদিনও ফজরের নামাজ ছাড়া যাবে না। কখনও ঘুম থেকে উঠতে দেরি হলে উঠেই সর্বপ্রথম ফজরের নামাজ পড়তে হবে- যদি সেটা নিষিদ্ধ সময় না হয়। এভাবে চলতে থাকলে আমল ও প্রচেষ্টার ফল দ্রুত পাওয়া যাবে- ইনশাআল্লাহ।

আরেকটি কথা, আমল নিয়মিত করতে হবে এবং কাঙ্ক্ষিত জিনিসটি চাইতে হবে। আমরা অনেকেই অনেক আমল করি, কিন্তু আমলের বিনিময়ে আমি কী চাচ্ছি; এটাই জানি না। প্রত্যেকটি আমলের বিনিময়ে আখেরাতের ফজিলত তো পাবেনই, দুনিয়ার কোনো নেক উদ্দেশ্যও হাসিল করতে পারেন।

মনে রাখতে হবে, আমল, নিয়ত, ফজরের নামাজ ও দীর্ঘদিনের বদ অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসা সহজ ও সুন্দর জীবনের অন্যতম নিয়ামক।

;

সৌদি আলেমদের অভিমত

অনুমোদন ছাড়া হজ করা পাপ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আরাফাতের ময়দানে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল হজপালনকারীরা, ছবি : সংগৃহীত

আরাফাতের ময়দানে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল হজপালনকারীরা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র হজপালন করার ক্ষেত্রে যথাযথভাবে রাষ্ট্রীয় অনুমতি নেওয়াকে বাধ্যতামূলক ঘোষণা করেছে সৌদি সরকার। পবিত্র স্থানগুলোর পবিত্রতা নিশ্চিত করতে শরিয়া আইনের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সৌদি আরব।

সৌদির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, সৌদির সর্বোচ্চ ধর্মীয় সংস্থা ‘সিনিয়র কাউন্সিল অব উলামা’ মতামত দিয়েছে, যারা রাষ্ট্রীয় অনুমতি ছাড়া হজ করতে যাবেন তাদেরকে হজ করার সুযোগ দেওয়া হবে না। তা সত্ত্বেও যারা হজ করবেন তারা এর মাধ্যমে পাপ করবেন।

শুক্রবার (২৬ মার্চ) সৌদির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় এবং দুই পবিত্র মসজিদের দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিরা এ ব্যাপারে আলেমদের কাছে তাদের মতামত তুলে ধরেন। এরপর আলেমরা ঘোষণা দেন, হজ করতে হলে অবশ্যই পূর্বে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে।

‘সিনিয়র কাউন্সিল অব উলামা’ জানায়, হজ আয়োজনের দায়িত্বে থাকা সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো একটি বিস্তৃত পরিকল্পনা সাজিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, খাবার সরবরাহ এবং অন্যান্য সেবা। যারা সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিবন্ধন করে হজ করবেন তারা আরও ভালো ও উন্নত সেবা পাবেন।

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম একটি হলো- হজ। প্রতি বছর জিলহজ মাসে হজ করেন বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। যেসব মুসল্লির আর্থিক ও শারীরিক সক্ষমতা রয়েছে, তাদের জীবনে অন্তত একবার হলেও হজ করার বিধান রয়েছে।

মুসল্লিরা যেন নির্বিঘ্নে হজ করতে পারেন, সেজন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে সৌদি আরব। এবার তারা হজ করার জন্য অনুমতির বিষয়টি আবশ্যিক করে দিয়েছে।

;