নাতনিদের সঙ্গে খাবার খেলেন খালেদা জিয়া



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপি'র চেয়ারপারসন কারাবন্দী খালেদা জিয়া তার দুই নাতনিকে নিয়ে বাসায় রান্না করা খাবার খেয়েছেন।

সোমবার (১২ আগস্ট) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর দুই কন্যা জাহিয়া ও জাফিয়াসহ পরিবারের ছয় সদস্য দেখা করতে যান।

পরে স্বজনদের কাছ থেকে জানা গেছে, কোকোর দুই কন্যা, স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি, খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার, স্ত্রী কানিজ ফাতেমা ও ছেলে অভিক এস্কান্দার দেখা করেন। অসুস্থ খালেদা জিয়া দুই নাতনিকে দেখে খুশি হন। দাদিকে পায়ে ধরে সালাম করার পর দুই নাতনিকে বুকে জড়িয়ে আদর করেন খালেদা জিয়া।

এ সময় প্রায় দুই ঘণ্টা নাতনি, ছোট ছেলে বউসহ ছোট ভাইয়ের পরিবারের সাথে সময় কাটান তিনি।

পরিবারের সদস্যরা জানান, 'খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। তিনি কারো সাহায্য ছাড়া একা হাঁটতে পারেন না, হুইল চেয়ারে করে তাকে চলাচল করতে হয়। ডায়াবেটিস থাকায় প্রতিদিনই তাকে ইনসুলিন নিতে হবে। দাঁত ও চোখের সমস্যা, হাত-পায়ে আর্থারাইটিসের ব্যথাও রয়েছে।

উল্লেখ্য দুর্নীতির অভিযোগে করা মামলায় সাজা প্রাপ্ত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দী হন খালেদা জিয়া। এখন অসুস্থ্য হয়ে বিএসএমএমইউ'তে ভর্তি আছেন। 

   

গাজায় যুদ্ধের উস্কানিতে সাহায্য করছে যুক্তরাষ্ট্র: ওবায়দুল কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তারা (ইসরায়েল) কারো কথা শোনেনা। আবার আমরা দেখছি, কংগ্রেস থেকে যে ফান্ড ইসরায়েলের অংশটা ইতিমধ্যে দিয়ে দিছেন। তার মানে যুদ্ধের উস্কানিতে সাহায্য করছেন। এই গণহত্যার ব্যাপারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে নিকৃষ্টতম নমুনা এই ব্যাপারে তারা তাদের অবস্থান পরিষ্কার করুক।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি একথা বলেন।

বাংলাদেশের মানবাধিকারে কোন উন্নতি হয়নি যুক্তরাষ্ট্রের এমন রিপোর্টের বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, সারা পৃথিবীতে যেভাবে মানবাধিকারের অবনতি হচ্ছে, আজকে যুক্তরাষ্ট্র কথা বলছেন। তাদের ম্যাথিউ মিলার, জন কিডনি এরা এইসব নিয়ে কথা বলছেন হোয়াইট হাউসে। আমার বক্তব্য হচ্ছে তাদেরই পাশে গাজায় ইসরায়েল যা করছে সেটা মানবাধিকারের কোন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। ১৪ হাজার শিশু, ৩৫ হাজার মানুষ কে হত্যা করা হয়েছে এবং প্রতিদিনই হত্যাকাণ্ড হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র নেতানিয়াহুকে সিজ ফায়ারের কথা বলেও শোনাতে পারেননি। তারা কারো কথা শোনেনা। আবার আমরা দেখছি, কংগ্রেস থেকে যে ফান্ড ইসরায়েলের অংশটা ইতিমধ্যে দিয়ে দিছেন। তার মানে যুদ্ধের উস্কানিতে সাহায্য করছেন। এই গণহত্যার ব্যাপারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে নিকৃষ্টতম নমুনা এই ব্যাপারে তারা তাদের অবস্থান পরিষ্কার করুক।

মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের এক নেত্রীর বহিষ্কার প্রত্যাহারে সেই নেত্রীর কাছ থেকে দপ্তর সম্পাদক ১০ লাখ টাকা চেয়েছেন, এই বিষয়ে কি ব্যবস্থা নিবেন এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এইটার সত্যতা কি? তখন ফোন রেকর্ড আছে এমন জবাবে তিনি বলেন, তাহলে দিন, আমরা ব্যবস্থা নিবো।

বিএনপির আন্দোলন নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, গণঅভ্যুত্থান থেকে লিফলেট বিতরণে নেমে আসা এটা কি আন্দোলনের উত্তাল হবার লক্ষণ? না আন্দোলন ধীরে ধীরে ফিজল আউট হচ্ছে এমন লক্ষণ।

মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের উপজেলা নির্বাচন থেকে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের নির্দেশনা ছিলো তবে সে নির্দেশনা তেমন কেউ ই মানেনি। তাহলে দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙে গেছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রত্যাহার করার এখনো সময় আছে। যে কোন সময় প্রত্যাহার করতে পারে। শেষ টা দেখেন। দলের নির্দেশ অমান্য হলে সময় মতো ব্যবস্থা নেয়া হবে এমন কথা কিন্তু আমি বলেছি।

দল হিসেবে কাউকে নির্বাচন থেকে সড়ে দাড়াতে আওয়ামী লীগ বাধ্য করতে পারে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, কোনটা করলে প্রশংসা করবেন? আপনাদের মধ্যে কেউ কেউ আছে সবসময় একটা উল্টা প্রশ্ন করতে অভ্যস্ত। আমাদের কৌশল নিয়ে আপনার কথা বলার দরকার নেই।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনে সংঘাতের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু নির্বাচনে তো অন্য কোন বিরোধী দল অংশ নেয়নি শুধু আওয়ামী লীগই আছে। তারপরও সংঘাতের শঙ্কা প্রকাশ কিভাবে দেখেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংঘাতের আশঙ্কা হয়তো করতে পারেন। সংঘাত যেনো না হয় আমাদের দায়িত্ব আছে, আমাদের প্রয়াস অব্যাহত থাকবে।

বিএনপি থেকে এখন পর্যন্ত উপজেলা নির্বাচনে ৬৭ জন অংশ নিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। তাদের দল থেকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত বিএনপি নিয়েছে। এই বিষয়টিকে কিভাবে দেখছেন এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা এখানে সমর্থনও করছি না, বিরোধীতাও করছি না। বিএনপির ব্যাপার বিএনপি দেখবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।

;

দিল্লির দাসত্ব গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি: ফারুক



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪. কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

দিল্লির দাসত্ব গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও জাতীয় সংসদের সাবেক বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ জয়নুল আবেদিন ফারুক।

ভারতকে উদ্দেশ করে তিনি বলেছেন, আধিপত্যবাদ, আগ্রাসন, গণতন্ত্র হত্যার জন্য বাংলাদেশের মানুষ সামাজিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে আপনাদের বিরুদ্ধাচরণ করার জন্য। কারণ বাংলাদেশের মানুষ একাত্তর সালে খালি পায়ে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিল, রাওয়াল পিন্ডি থেকে মুক্ত হয়েছিল দিল্লির দাসত্ব গ্রহণ করার জন্য নয়।

শুক্রবার (২৬ এ‌প্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র ফোরামের উদ্যোগে সীমান্তে বাংলা‌দেশী নাগ‌রিক হত‌্যা ও ভারতীয় আগ্রাস‌নের প্রতিবা‌দে এক অবস্থান কর্মসসূচি‌তে তি‌নি এসব কথা ব‌লেন।

অবস্থান কর্মসূচিতে জয়নুল আবেদিন ফারুক আরও বলেন, আমি একটি পত্রিকায় দেখেছি, ভারতের ৫২৭টি পণ্যের মধ্যে বিষক্রিয়া পাওয়া গেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সেগুলো নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। আরেকটি পত্রিকায় দেখালাম, তাদের দুইটি ওষুধে ক্যান্সারের মিশ্র উপাদান পাওয়া গেছে। সিঙ্গাপুর, হংকং সেগুলো বন্ধ করে দিয়েছে।

আজকেও সীমান্তে একজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, যদি বন্ধু হও, যদি আমাদের প্রিয় ব্যক্তি হও, যদি আমাদের প্রতিবেশী হও, তাহলে সীমান্তে অহরহ গুলি কেন? তাই আজকে বাংলার জনগণ, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য লড়াই শুরু করেছে।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, আমরা ভারতের জনগণের বিরুদ্ধে নই, আমরা ভারতের বন্ধু হতে চাই। কিন্তু যে বন্ধু আমাদের শোষণ করবে, যে বন্ধু আমাদের টিপাইয়ের ন্যায্য হিস্যা দেয় না, সে কি বন্ধু হতে পারে? কোনোদিনও বন্ধু হতে পারে না। তাই আমরা ভারতীয় পণ্য বর্জন করে বলতে চাই, সীমান্ত হত্যা বন্ধ করো, আগ্রাসন নীতি পরিহার কর, বাংলাদেশের রাজনীতিতে নগ্ন হস্তক্ষেপ বন্ধ করো। কারণ আপনার দেশে গণতন্ত্র থাকবে, আর আমার দেশে গণতন্ত্র যাতে না থাকে সেই ব্যবস্থা করবেন, বাংলার মানুষ তা কোনদিন গ্রহণ করবে না।

এ সময় তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আমরা আগ্রাসন মানি না, আমরা সীমান্ত হত্যা মানি না, আমরা ভারতীয় পণ্য বর্জন করব এই সামাজিক আন্দোলন ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, লজ্জা হয় না আপনাদের? ক্ষমতাসীন দল হিসেবে বলেন, সব ক্ষেত্রে নাকি বিএনপির ষড়যন্ত্র আছে। আমারা নাকি ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় যেতে চাই। ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় আপনারা (আওয়ামী লীগ) গেছেন। ওয়ান ইলেভেন সৃষ্টি করেছেন আপনারা। মঈন-ফখরুদ্দিনের সাথে রাতের অন্ধকারে আঁতাত করেছেন আপনারা। আমরা (বিএনপি) ষড়যন্ত্র বিশ্বাস করি না। আমার নেত্রী ষড়যন্ত্র বিশ্বাস করে না। আমার নেতা তারেক রহমান ক্ষমতায় যেতে চায়, এক মাথা এক ভোটে, জনগণকে নিয়ে, ষড়যন্ত্র করে নয়।

বিএন‌পির সাংগঠ‌নিক সম্পাদক আবাদুস সালাম ব‌লেন, প্রতিবছর আমরা বর্ডার থেকে দুই তিনটা লাশ উপহার পাই। মোদি সরকার হচ্ছে একটি জংলি সম্প্রদায়ের নেতা। এই মোদি ভারতে হাজার হাজার মুসলমানদেরকে খুন করেছে। এই মোদি সরকারের সাথে বন্ধুত্ব করেছে আমাদের সরকার। ২০০৮ সালে এসরকারের নেতৃত্বে আমাদের দলের প্রায় ৬৬০০ নেতাকর্মীকে হত্যা, গুম করা হয়েছে। বর্ডারে হত্যা করছে মোদি সরকার আর অভ্যন্তরে আমাদের খুন, গুম, নির্যাতন, নিপীড়ন, হামলা-মামলা সবকিছু করছেন শেখ হাসিনা।

বিএন‌পির নির্বাহী ক‌মি‌টির সদস‌্য আবু না‌সের মো. রহমতুল্লাহ বলেন, ভারত বাংলাদেশকে তথাকথিত সহযোগিতার কথা বলে আর সিমা‌ন্তে মানুষ হত‌্যা ক‌রে। বাংলা‌দে‌শের বর্তমান সরকার দে‌শের গণতন্ত্র হত‌্যা ক‌রে‌ছে আর ভারত তা‌তে সমর্থন ক‌রে‌ছে। বাংলা‌দে‌শের মানুষদের ভারতীয় মানুষের প্রতি কোনো ক্ষোভ নেই ভারতীয় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ কারণ তারা আমাদের বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সমস্যাকে দীর্ঘায়িত করতে চায়। ভারত আমাদের দে‌শের গণতন্ত্র বিরোধী যে মানসিকতা পোষণ করে সেই মানসিকতার আমরা বিরোধিতা করি, ভারতের জনগণকে না।

গণতন্ত্র ফোরা‌মের সভাপ‌তি আলহাজ্জ ভি‌পি ইব্রা‌হিম এর সভাপ‌তি‌ত্বে অবস্থান কর্মসূচি‌তে আরও উপ‌স্থিত ছি‌লেন সংগঠ‌নের সাধারণ সস্পাদক ব‌্যা‌রিস্টার ওবায়দুর রহমান টিপু, ওলামা দ‌লের নব‌নির্বা‌চিত সদস্য সচিব এ্যাড. মাওলানা কাজী আবুল হোসেন,তাতী দ‌লের যুগ্ন আহ্বায়ক কাজী ম‌নিরুজ্জামান, মৎস্যজীবী দ‌লের সদস‌্য ঈসমাইল হো‌সেন সিরাজী, কৃষকদ‌লের সহ সাধারণ সম্পাদক ম‌ফিজুর রহমান লিটন, শিল্প কু‌টি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নাঈম, যুব জাগপার সভাপ‌তি আমির হো‌সেন আমু প্রমুখ।

;

বাংলাদেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে অথচ বিরোধী দল দেখে না: কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে পাকিস্তান প্রশংসা করে অথচ বিরোধী দল উন্নয়ন দেখতে পায় না। তারা দিনের আলোতে রাতের অন্ধকার দেখে। দেশের উন্নয়ন নিয়ে এত হীন মনোবৃত্তির পরিচয় তারা দিচ্ছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে তাদের বাস্তবতা বুঝা উচিৎ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। 

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি একথা বলেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের যে উন্নতি, উচ্চতা এটা দেখে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ লজ্জিত হন। তখন পূর্ব পাকিস্তান কে তাদের কাছে মনে হতো বোঝা। এখন সে বোঝা অনেক উন্নয়নে এগিয়ে গেছে। সে উন্নয়ন দেখে তিনি লজ্জিত হন। বিএনপি যতটা অপপ্রচার করে তাদের শাহবাজ শরিফের বক্তব্য থেকে প্রকৃত সত্য শিক্ষা নেয়ার অনেক কিছু আছে। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, সারা বিশ্ব যুদ্ধ সংঘাতে ভয়ংকর পরিস্থিতিতে দাড়িয়েছে। আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি রাশিয়া-ইউক্রেন, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন-হামাস পৃথিবীকে উত্তপ্ত করে রেখেছে। বিশ্ব জনমতকে উপেক্ষা করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু রাফায় আগ্রাসী অভিযান শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের নেত্রী যুদ্ধের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে চলছেন। সকল প্রকার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ও যুদ্ধকে না বলার জন্য বিশ্বের সকল নেতাদের আহ্বান  জানিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।

;

‘স্বজন’ সংজ্ঞায় ধোঁয়াশা আওয়ামী লীগের



রুহুল আমিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক দেয়নি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। উপরন্তু বর্তমান মন্ত্রী-এমপিদের সন্তান ও স্বজনদের নির্বাচনে অংশ নিতে দিয়েছে নিষেধাজ্ঞা। তবে ‘স্বজন’ বলতে কাদের বুঝানো হয়েছে সে বিষয়ে ধোঁয়াশা রেখে দিয়েছে দলটি।

এবার চার ধাপে দেশের মোট ৪৮১টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন করবে নির্বাচন কমিশন। সে লক্ষ্য ইতোমধ্যে প্রতিটি ধাপের নির্বাচনের জন্য পৃথক তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী ৮ মে অনুষ্ঠিত হবে প্রথম ধাপের নির্বাচন। যা শেষ হবে ৫ জুন চতুর্থ ধাপের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। তবে এরইমধ্যে প্রথম দফা নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষ হলেও স্বজনদের অনেকেই মানেননি দলীয় নির্দেশনা।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, দলীয় নির্দেশনা অনুযায়ী যে সব উপজেলায় মন্ত্রী-এমপির স্বজনরা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তাদের তালিকা ইতোমধ্যে দপ্তরে পাঠিয়েছেন দায়িত্বশীল নেতারা । যেখানে ৫০ জনেরও অধিক স্বজনের নাম পেয়েছে কেন্দ্র। তবে নিষেধাজ্ঞা না মানা স্বজনদের নিয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে সে বিষয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি দলটি।

সূত্রটি জানায়, একটি প্রতিযোগিতামূলক, অংশগ্রহণমূলক ও প্রভাবমুক্ত একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষেই মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ফলে স্বজন সংজ্ঞায় যাই থাকুক, বর্তমান চেয়ারম্যান যারা পুনরায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারা এই নিষেধাজ্ঞার আওতার বাহিরে থাকছেন। এছাড়াও যারা সরাসরি রাজনীতির সাথে জড়িত ও রাজনৈতিক কারণেই নির্বাচনে লড়ছেন তাদের বিরুদ্ধেও নেওয়া হবে না কোন সাংগঠনিক ব্যবস্থা।

গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে স্বজনদের কীভাবে সংজ্ঞায়িত করা হবে, এ-প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, সেটা আমাদের উপর ছেড়ে দিন। আপনারা (সাংবাদিকরা) সব কিছু নির্ধারণ করলে আমরা পার্টি করতেছি কেন? এরপর আবারও অন্য আরেক সাংবাদিক একই প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আপনারা একটা সংজ্ঞা তো লিখে ফেলেছেন। না, আমি আর বলব না। আমাদেরটা আমাদের কাছে থাক; আমাদেরটা আমাদের কাছে আছে।

জানা যায়, প্রথম দফার ১৫২ উপজেলার নির্বাচনে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৬ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নির্দেশনা মেনে নিয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন মাত্র ৩ জন প্রার্থী। তাদের মধ্যে আছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক লুৎফুল হাবিব, চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগারের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে সহিদুল ইসলাম ও নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী আয়েশা ফেরদৌস।

আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর কঠোর বার্তাকে উপেক্ষা করে এখনো যারা মাঠে আছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছে আওয়ামী লীগের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র। সূত্রটি জানায়, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে আগামী ৩০ এপ্রিলের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা থেকে। দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার শোকজ করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-এমপিদের দেওয়া হতে পারে চিঠি। প্রথম দফায় যারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেন খোঁজ-খবর নেওয়া হবে তাদের বিষয়েও।

দলীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে এখনো মাঠে আছেন কয়েক ডজন প্রার্থী। চালিয়ে যাচ্ছেন নির্বাচনি কার্যক্রম। তাদের মধ্যে আছেন নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার প্রার্থী আতাহার ইশরাক সাবাব চৌধুরী। তার বাবা স্থানীয় সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী। তার মা কামরুন নাহার শিউলী কবিরহাট উপজেলার টানা তিনবারের চেয়ারম্যান। তিনি প্রার্থী হয়েছেন এবারও।

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস ও ছেলে আশিক আলী। বর্তমান চেয়ারম্যান এমপির ছোট ভাই মাহবুব মোর্শেদ লিটন। লিটন এবার ভাতিজাকে সমর্থন দিয়ে দাখিল করেননি মনোনয়ন।

মাদারীপুর সদর উপজেলা পরিষদে প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খানের বড় ছেলে আসিবুর রহমান খান। এছাড়াও প্রার্থী হয়েছেন তার ছোট ভাই অ্যাডভোকেট ওবাইদুর রহমান খান ও চাচাতো ভাই পাভেলুর রহমান শফিক খান।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর আসনের এমপি মাহবুব-উল আলম হানিফের চাচাতো ভাই ও বর্তমান চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা। কুমিল্লার বরুয়ায় প্রার্থী হয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর শ্যালক মো. হামিদ লতিফ ভূঁইয়া কামাল। তবে তার কোন দলীয় পদ-পদবি নেই। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য রেজাউল হক চৌধুরীর ছোট ভাই বুলবুল আহমেদ টোকেন চৌধুরী।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের ফুফাতো ভাই সাইদুর রহমান স্বপন, বরিশালের আগৈলঝাড়ায় এমপি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছেলে আশিক আবদুল্লাহ, পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় এমপি মো. মকবুল হোসেনের ছেলে গোলাম হাসনায়েন রাসেল, পাবনার বেড়া উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন পাবনা-১ আসনের এমপি ও ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর ছোট ভাই আব্দুল বাতেন ও ভাতিজা আব্দুল কাদের সবুজ।

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়নের ভগ্নীপতি বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ, তার মামা হুমায়ুন কবির পাটোয়ারী সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু এমপির ফুফাতো শ্যালক। তিনি আবারও প্রার্থী হয়েছেন। নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন নড়াইল-১ আসনের এমপি কবিরুল হক মুক্তির ভাগ্নি সোহেলী পারভিন নিরী। তিনি উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের এমপি আলী আজগার টগরের আপন ভাই বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আলী মুনছুর বাবু, চাচা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সহিদুল ইসলাম ও মো. আবু তালেবও জমা দিয়েছেন মনোনয়নপত্র। মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচন করছেন বর্তমান সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ইসরাফিল হোসেন। তিনি মানিকগঞ্জ-৩ আসনের এমপি ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ফুফাতো ভাই। কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মো. মহব্বত আলী পুনরায় এ পদে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের শ্যালক।

পিরোজপুরের নাজিরপুরে উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন এস এম নূরে আলম সিদ্দিকী। তিনি পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য শ ম রেজাউল করিম এর ভাই। শরীয়তপুর সদর উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন শরীয়তপুর-১ আসনে এমপি ইকবাল হোসেন অপুর চাচাতো ভাই বিল্লাল হোসেন দিপু মিয়া। বোরহানউদ্দিন উপজেলার প্রার্থী আবুল কালাম সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদের ভগ্নীপতি। ভোলার লালমোহনে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হোসেন রিমন ভোলা-৩ আসনের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের ফুফাতো ভাই। আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী নজরুল ইসলাম লাবু এমপির চাচাতো ভাই।

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন চাঁদপুর-২ আসনের এমপি মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার ভাতিজার স্ত্রী লাভলী চৌধুরী। তিনি ছাড়া আর কেউ এই পদে মনোনয়নপত্র জমা দেননি।

কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, দলের সর্বোচ্চ জায়গা থেকে নির্দেশনা দেয়ার পরও প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করা ভাবনার উদ্রেক করে। আমরা চাই, যে সব নেতাদের ত্যাগ, তিতিক্ষার বিনিময়ে আওয়ামী লীগ তার জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পেরেছে দলের সে সব ত্যাগী নেতাকর্মীরাই নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আসুক। তবে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের অফিসিয়াল সময় শেষ হলেও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সুযোগ এখনো আছে। এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের উচিত নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো।

স্বজন বলতে কাদের বুঝানো হবে সে বিষয়ে কোন সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হয়নি জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, উপজেলা নির্বাচনে স্বজন বলতে কাদের বুঝানো হবে সে বিষয়ে আমাদের কোন সংজ্ঞা নির্ধারণ হয়নি। এই বিষয়ে আমরা এখনো কোন ব্যাখ্যা দিইনি।

আগামী ৩০ এপ্রিল ডাকা কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে স্বজনদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করার বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত আসতে পারে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের এ সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, আমাদের বৈঠকের এজেন্ডায় এ বিষয়টি দেওয়া নেই, তবে কেউ যদি বিষয়টি নেত্রীর (আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা) সামনে তুলে ধরেন তাহলে আলোচনা হতে পারে, অথবা নেত্রীও কথা বলতে পারেন।

;