নবজাতকের ১৮ ভাষা



মরিয়ম সুলতানা, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
নির্দিষ্ট কিছু আচরণ শিশুদের ভাষা হিসেবে কাজ করে

নির্দিষ্ট কিছু আচরণ শিশুদের ভাষা হিসেবে কাজ করে

  • Font increase
  • Font Decrease

সম্ভবত পৃথিবীর প্রায় সকল মা-বাবার জন্য সবচেয়ে হতাশাজনক অভিজ্ঞতা হলো নবজাতকের ভাষা বুঝতে না পারা। শিশু কথা বলতে না পারা পর্যন্ত তার মনোভাব বুঝে ওঠা আসলেই ভীষণ কঠিন এক কাজ। কখনো তো একে অসম্ভব বলেও মনে হতে পারে। কিন্তু শিশু কী বলতে চাইছে, তার ঠিক কী প্রয়োজন; এটা বোঝা নাকি আবার ততটা কঠিনও নয়, যতটা আমরা ভাবি। শিশুর হাসি, কান্না এবং আরো কয়েকটি লক্ষণ আছে যা তাদের বিকল্প ভাষা হিসেবে কাজ করে। অনেক মা-বাবারাই হয়তো তা বুঝতে পারেন না বা লক্ষ করেন না।

শিশুর কান্না, শব্দ, অঙ্গভঙ্গি ঠিক কী অর্থ বহন করছে; প্রিসিলা দান্সতানের বিখ্যাত “দান্সতান বেবি ল্যাঙ্গুয়েজ” তত্ত্ব আপনাকে তা মুহূর্তেই বুঝতে সহায়তা করবে এবং আপনার সাথে আপনার শিশুর যোগাযোগকে আরো সহজ করে দেবে। যদিও “দান্সতান বেবি ল্যাঙ্গুয়েজ” বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। তবে ২০০৬-এর নভেম্বরে ‘অপেরা উইনফ্রে শো’র হাত ধরে এই তত্ত্ব তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। বিজ্ঞানীরা সংশয় পোষণ করতেই পারেন কিন্তু প্রিসিলা দান্সতান বাজি ধরে বসে আছেন—অনেক মা বাবা তার এই তত্ত্বের সাথে একমত হবেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/14/1563098052713.jpg
প্রিসিলা দান্সতান ◢

 

উপায় ১ | শিশুর কান্নার ধরন

ক্ষুধার কান্না : শুরুতে শিশু মৃদুভাবে কাঁদে। কিন্তু যখন তার কান্না কেউ শোনে না অথবা তাকে খাওয়ানোও হয় না, তখন সে গগনবিদারী কান্না জুড়ে দিতে পারে। আপনি যদি দেখেন আপনার শিশু তার মাথা ঘোরাচ্ছে, মুখ দিয়ে টিক টিক জাতীয় শব্দ করছে, নিশ্চিত থাকুন এটা ক্ষুধার কান্না।

ডাকার কান্না : যদি দেখেন আপনার শিশু থেমে থেমে ৫-৬ বার কাঁদছে এবং প্রতিবার কান্নার মাঝে ২০ সেকেন্ড করে অপেক্ষা করছে, এর অর্থ আপনার শিশু অপেক্ষা করছে যেন তাকে কোলে তুলে নেওয়া হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত কেউ না আসে, নির্দিষ্ট বিরতিতে তার এই কান্নাকাটি চলতেই থাকে।

ঘুমানোর কান্না : আমরা যখন অতিরিক্ত ক্লান্ত থাকি, আমরা কিছুটা ভেঙে পড়ি, একটু ঘুমাতে চাই। শিশুদের ক্ষেত্রেও তাই। যখন তারা ঘুমাতে চায় কিন্তু পারে না, তখন তারা তাদের দুই চোখ বন্ধ করে কাঁদতে থাকে, কখনো কানও ঘষতে পারে।

ব্যথার কান্না : এই কান্না অবিরাম চলতে পারে এবং অন্যান্য কান্নার চেয়ে অনেক বেশি জোরালো হতে পারে। শিশু যত বেশি ব্যথার মধ্যদিয়ে যাবে, কান্নার আওয়াজও তত বেশি জোরালো হবে। কিন্তু শিশু যখন ক্লান্ত থাকে এবং কাঁদার শক্তি পায় না, তখন তাদের কান্না ক্লান্তিকর এবং নিস্তেজ মনে হতে পারে।

অস্বস্তির কান্না : যখন শিশুর কান্না একঘেয়ে মনে হয় এবং সে অবিরাম কাঁদতেই থাক; এর অর্থ, হয় তার অতিরিক্ত গরম লাগছে, না হয় ঠান্ডা লাগছে, অথবা তার ডাইপার পরিবর্তন করা দরকার। এসময় শিশু অস্বাচ্ছন্দ্যবোধ করার কারণে ধনুকের মতো করে শরীর বাঁকাতে পারে।

শরীরবৃত্তীয় কান্না : শারীরিক অস্বস্তির (পেটে ফাঁপা, মূত্র কিংবা মলত্যাগ) জন্য এই কান্না হয় ক্লান্তিকর এবং তারস্বরের।

পরিবেশগত কান্না : সবচেয়ে বিড়ম্বনাপূর্ণ কান্না হলো এটা। উপরের সবগুলোই কোনো না কোনো কিছু সম্বন্ধে ধারণা দেয়। কিন্তু এ বেলায় আপনার শিশু যদি একটু বিরক্ত কিংবা হতাশ বোধ করে, পরে সে তার সেই হতাশা কিংবা বিরক্তি প্রকাশের জন্য নিরলসভাবে কাঁদতেই থাকবে।

উপায় ২ | শিশুর নড়াচড়া

মুষ্টিবদ্ধ : আপনি লক্ষ্য করে দেখবেন, যখন শিশু ক্ষুধার্ত থাকে তখন তার হাত মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় থাকে। যদি আপনি সময় মতো তার সেই মুষ্টিবদ্ধ অবস্থা লক্ষ করতে পারেন, তবে সে যাত্রায় আপনি তার সেই তুমুল কান্নার দমক এড়াতে পারবেন।

পিঠ বাঁকানো : এটা সাধারণত ২ মাসের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যখন শিশুর পেটে পীড়া হয় তখন সাধারণত সে এটা করে। কিন্তু এটা যদি সে খাওয়ার পরে করে, তবে বুঝতে হবে যে তার পেট ভরে গেছে। আর যদি খাওয়ানোর সময় করে, অর্থ হলো সে খেতে চাচ্ছে না। এক্ষেত্রে শিশুর বয়স যদি ২ মাসের বেশি হয়, তবে এটা কিছুটা তাদের খামখেয়ালিপনা কিংবা ক্লান্তি নির্দেশ করে।

মাথা ঘুরানো : অধিকাংশ শিশুদের জন্য এটা হলো একপ্রকার প্রশান্তিময় নড়াচড়া। এভাবে হয় তারা ঘুমিয়ে যায়, অথবা ধীরে ধীরে শান্ত হয়।

পা ছোঁড়া : এটা পেটের পীড়া নির্দেশ করে। পা ছুঁড়ে তারা তাদের ব্যথা কমানোর চেষ্টা করে।

হাত ঝাঁকানো : যখন শিশুরা বিকট কোনো শব্দ শুনে, উজ্বল আলো দেখে হঠাৎ ঘুম থেকে জেগে যায়; তখন তারা তাদের বাহু ঝাঁকায়, এটা বোঝানোর জন্য যে তারা ভয় পেয়েছে।

কান ধরে রাখা : কান ধরা সাধারণত একটা শিশুসুলভ বৈশিষ্ট্য। কিন্তু যদি আপনি দেখেন যে আপনার শিশু লাগাতরভাবে তার কান আঁকড়ে ধরে রাখছে, তবে আপনি শিশুরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হন।

উপায় ৩ | শিশুর তৈরিকৃত শব্দ

নেহ—জিহ্বা তালুর উপরিভাগে ঠেলে তারা একজাতীয় শব্দ তৈরি করে, এরমাধ্যমেও তারা এটা প্রকাশ করার চেষ্টা করে যে তারা ক্ষুধার্ত।

আও—যদি শিশু ঠোঁট ভাঁজ করে এ জাতীয় শব্দ করে তবে বুঝতে হবে সে ক্লান্ত এবং ঘুমে কাতর।

এহ—যদি শিশু ঢেঁকুর তোলে, তবে বুঝতে হবে তার অন্ননালীতে আর কোনো অতিরিক্ত গ্যাস নেই।

ইরররহ—যখন শিশু অস্বস্তির মাঝে থাকে, যেমন ব্যথা কিংবা পেটে ফাঁপা; এই শব্দ তৈরি করে সে তখন তার বিরক্তি দূর করার চেষ্টা করে।

হেহ—যখন শিশু স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না, অসন্তুষ্ট থাকে, তখন সে এই শব্দ তৈরি করবে। অস্বাভাবিকভাবে নড়াচড়া করবে এবং হাত পা ছুঁড়বে।

এগুলি হয়তো সবসময় সব পরিস্থিতিতে মনে রাখাও সম্ভব নয়। তবে ভাষা রপ্ত করার আগে নবজাতকের সাথে যোগাযোগ রক্ষায় বিকল্প ভাষা হিসেবে এসবের কার্যকারিতা রয়েছে বলে অনেক মা বাবা অন্তত একমত।

   

বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?



কবির য়াহমদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?

বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?

  • Font increase
  • Font Decrease

‘পথের কেনারে পাতা দোলাইয়া করে সদা সঙ্কেত/ সবুজে হদুদে সোহাগ ঢুলায়ে আমার ধানের ক্ষেত/ ছড়ায় ছড়ায় জড়াজড়ি করি বাতাসে ঢলিয়া পড়ে/ ঝাঁকে আর ঝাঁকে টিয়ে পাখিগুলে শুয়েছে মাঠের পরে/ কৃষাণ কনের বিয়ে হবে, তার হলদি কোটার শাড়ী/ হলুদে ছোপায় হেমন্ত রোজ কটি রোদ রেখা নাড়ি/ কলমী লতার গহনা তাহার গড়ার প্রতীক্ষায়/ ভিনদেশী বর আসা যাওয়া করে প্রভাত সাঁঝের নায়।’ পল্লীকবি জসীম উদদীনের ‘ধান ক্ষেত’ কবিতার অপূর্ব চিত্রায়ন কৃষকের শ্রম-ঘাম আর প্রকৃতির তরফে। কাব্যে-পঙক্তির বিমূর্ত চিত্র মূর্ত হয়েছে বিস্তীর্ণ মাঠে। কিষান-কিষানির বুক ভরা আশার সার্থক রূপায়ন হতে চলেছে এ-মৌসুমে।

এখন ভরা বৈশাখ। এ-সময়টা বোরো ধানের। বোরো ধান দেশের খাদ্যচাহিদার অন্তত ৫৫ শতাংশ মিটিয়ে থাকে। দেশের হাওরভুক্ত ৭টি জেলা সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাওরে এই বোরোর চাষ বেশি হয়ে থাকে। এই ধান অতিবৃষ্টি, বন্যা ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে দেশের খাদ্যচাহিদায় ঘাটতি পড়ে না। তাই এই ধান চাষ থেকে শুরু করে ঘরে ফসল তোলা পর্যন্ত অনুকূল আবহাওয়া, বিশেষ করে রোদের উপস্থিতি অতি জরুরি। বর্তমানে সে পরিস্থিতি চলছে।

সিলেট অঞ্চলের মানুষ বলে এই অঞ্চলের মানুষের চাওয়া-পাওয়া, হতাশা-উচ্চাশার সঙ্গে আমি পরিচিত। তাদেরকে উদাহরণ হিসেবে টানছি। তাদের সঙ্গে থেকে জেনেছি, বোরো মৌসুমে নির্বিঘ্নে ঘরে ফসল তোলা কতটা জরুরি। গবাদি পশুর খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে জরুরি খড় সংরক্ষণও। তীব্র রোদ এখানে সমস্যার নয়, এটা বরং আনন্দের। কারণ এই রোদ গা পোড়ালেও বুক ভরা আশার সার্থক বাস্তবায়নের পথ দেখায়। দেশের যে খাদ্যচাহিদা, যে খাদ্যনিরাপত্তা সেটা এই বোরো ধানের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। তাই চাষ থেকে শুরু করে প্রতিটি পর্যায়ে দরকার হয় প্রকৃতির সহায়তা। এবার এখন পর্যন্ত সে সহায়তা আছে, যদিও এ মাসের শুরুর দিকে একবার ঝড়বৃষ্টিসহ শঙ্কার কালমেঘ হাতছানি দিয়েছিল। সেটা আপাতত দূরে সরেছে।

কিষান-কিষানির দরকার এখন তীব্র রোদ। তারা এটা পাচ্ছে। দেশে তীব্র তাপদাহ। এখানেও এর ব্যতিক্রম নয়। তবু তারা এই রোদের প্রার্থনায় রয়েছে। বৃষ্টি এখন তাদের কাছে দুর্যোগ-সম। কারণ এই বৃষ্টি এবং অতি-বৃষ্টিসৃষ্ট বন্যা তাদের স্বপ্নসাধ গুঁড়িয়ে ভাসিয়ে নিতে পারে সব। ২০১৭ সালের দুঃসহ স্মৃতি এখনও বিস্মৃত হয়নি সুনামগঞ্জের কৃষকেরা। সে বছর সুনামগঞ্জের ছোট-বড় ১৩৭ হাওরের ফসল বন্যায় এবার ভেসে গিয়েছিল। গতবার কৃষক নির্বিঘ্নে ফসল ঘরে তুলেছেন। এরআগের বছর অন্তত ২০টি হাওরের ফসলহানি হয়েছিল বন্যায়।

প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল ক্ষেতের ফসল, দেশের খাদ্যনিরাপত্তা। এখানে প্রচণ্ড তাপদাহ তাই প্রভাব ফেলে সামান্যই। রোদে পুড়ে, প্রয়োজনে ছাতা মাথায় দিয়ে কিষান-কিষানিরা স্বপ্ন তোলেন ঘরে। তারা বৃষ্টির জন্যে প্রার্থনা না করে বরং রোদ আরও কিছুদিন অব্যাহত রাখার প্রার্থনায় বসেন। কৃষকেরা পরিমিত বৃষ্টি চায় চৈত্র মাসে, বৈশাখে চায় খাঁ খাঁ রোদ্দুর, কারণ এই রোদে সোনালী ধান ঘরে ওঠে। লোককথার প্রচলিত, ধান তোলার মৌসুমে ঝড়বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে ফসল রক্ষা করার জন্য হাওরবাসীরা তন্ত্রসাধক বা ‘হিরাল’ ও ‘হিরালি’-দের আমন্ত্রণ জানাতেন। তারা এসে মন্ত্রপাঠ করে ঝড়বৃষ্টি থামানোর জন্য চেষ্টা করতেন। লোকায়ত বিশ্বাস থেকে আগেকার মানুষজন এমন আচার পালন করতেন। এসবে সত্যি কাজ হতো কিনা সেটা বিতর্ক এবং ব্যক্তি-বিশ্বাসসাপেক্ষ, তবে এই হিরাল-হিরালিদের আমন্ত্রণ বলে বৈশাখে একদম বৃষ্টি চায় না হাওরের কৃষক।

হাওরপারের মানুষেরা যখন রোদ অব্যাহত থাকার প্রার্থনায়, তখন দেশজুড়ে তীব্র তাপদাহে পুড়তে থাকা মানুষেরা আছেন বৃষ্টিপ্রার্থনায়। দেশের জায়গায়-জায়গায় বৃষ্টি প্রার্থনায় ইস্তিস্কার নামাজ পড়া হচ্ছে, গণমাধ্যমে সচিত্র সংবাদ আসছে এর। কোথাও প্রবল বিশ্বাসে কেউ কেউ ‘ব্যাঙের বিয়ে’ দিচ্ছেন, এটাও বৃষ্টি প্রার্থনায়। সামাজিক মাধ্যমে গরমের তীব্রতার আঁচ মিলছে, বৃষ্টি নাকি ধান—কোনটা জরুরি এই প্রশ্নও তুলছেন কেউ কেউ। কেবল তাই নয়, বাংলাদেশের প্রচণ্ড তাপদাহ নিয়ে বিশ্বমিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে দেশের মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে প্রতিবেদন করেছে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, বিবিসি, এএফপি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া। গণমাধ্যমগুলো বলছে, প্রচণ্ড গরমের কারণে টানা দ্বিতীয় বছর বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধের ঘোষণাও এসেছে। বৃষ্টি-প্রার্থনায় নামাজের আয়োজনের কথাও এসেছে বিশ্বমিডিয়ায়।

একদিকে প্রচণ্ড তাপদাহ, অন্যদিকে খাদ্যনিরাপত্তার প্রধান উপকরণ ধান ঘরে তোলার অনিশ্চয়তা—তবু অনেকের কাছে সাময়িক স্বস্তিই যেন মুখ্য। অথচ আর দিন দশেক বেরো আবাদ-এলাকায় বৃষ্টি না নামলে ধানগুলো ঘরে ওঠত কৃষকের। নিশ্চিত হতো খাদ্যনিরাপত্তার।

প্রকৃতির ওপর আমাদের হাত নেই, নিয়ন্ত্রণ নেই; তবু মনে করি আমাদের আকাঙ্ক্ষার প্রকাশে কৃষকদের গুরুত্ব থাকা উচিত। আমাদের চাওয়ায় হয়তো প্রকৃতির রীতি বদলাবে না, তুমুল রোদ্দুরের দেশে হঠাৎ বৃষ্টি নামবে না, তবে ধান ঘরে তোলার আগ পর্যন্ত রোদ্দুর কামনায় কৃষক স্বস্তি পাবে; ভাবতে পারবে এই দেশ আছে তাদের সঙ্গে।

কৃষকের জয় হোক। অন্তত বোরো-এলাকায় প্রকৃতি কৃষকের সঙ্গে থাকুক।

;

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;