নিউজিল্যান্ডকে হারালেও পাকিস্তান এখনো বাংলাদেশের নিচে

ক্রিকেট, খেলা

এম. এম. কায়সার, স্পোর্টস এডিটর, বার্তা২৪.কম, বার্মিংহ্যাম, ইংল্যান্ড থেকে | 2023-08-13 15:23:23

বিশ্বকাপের মাঠে নিউজিল্যান্ডকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেলেই কেন যেন বদলে যায় পাকিস্তান!

বার্মিংহ্যামের এজবাস্টনেও পাকিস্তান সেই বদলে যাওয়া ক্রিকেট খেলেই ম্যাচ জিতলো ৬ উইকেটে। যে উইকেটে লাঞ্চের আগে ২৩৭ রান তুলতেই নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং হাঁসফাঁস করলো; সেই একই উইকেটে পাকিস্তানের ব্যাটিং দেখে মনে হলো তারা বুঝি বিকালে বাগানে ঘুরে এলো!

এমন সহজ ভঙ্গির ব্যাটিং করেই পাকিস্তান এই ম্যাচ জিতলো। এবং এই জয়ের সঙ্গে আপাতত দুটো ব্যাপার ঘটলো। প্রথমত নিউজিল্যান্ডের সেমিফাইনালের অপেক্ষায় আরো বাড়লো। আর পাকিস্তান বিশ্বকাপের হারিয়ে ফেলা পথের দিশা খুঁজে পেলো যেন!

৭ ম্যাচে পাকিস্তান ৭ পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনালে খেলার রানিং ট্র্যাকে। নিউজিল্যান্ডের সঞ্চয় ৭ ম্যাচে ১১ পয়েন্ট। একটু জানিয়ে দেই ৭ ম্যাচে বাংলাদেশের পয়েন্টও ৭। এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র অস্ট্রেলিয়ার সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়েছে। সেমিফাইনালের বাকি তিনের লড়াইয়ে আরো অনেকের সঙ্গে এই দৌড়ে আছে বাংলাদেশও।

এজবাস্টনে জয়ের জন্য ২৩৮ রান তাড়া করতে নেমে পাকিস্তান যে ব্যাটিং করলো তাকে বলে ‘সুস্থির’ ব্যাটিং! যা পাকিস্তান ক্রিকেটের সঙ্গে খুব একটা মানান সই নয়। শুরুতে দুই উইকেট হারালেও পরের দুই উইকেট জুটিতে বড়ো রানই পাকিস্তানকে ম্যাচ জিতিয়ে দেয়। ওয়ান ডাউন ব্যাটসম্যান বাবর আজমের অপরাজিত সেঞ্চুরি এবং আরেক মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান হ্যারিস সোহেলের হাফসেঞ্চুরি পাকিস্তানকে এই ম্যাচে বড় জয় এনে দেয়।
 
ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দশম সেঞ্চুরি পেলেন বাবর আজম এই ম্যাচে। চতুর্থ উইকেটে  বাবর আজম ও হ্যারিস সোহেলের ২৩.৪ ওভারে ১২৬ রানের জুটি পাকিস্তানের জয়ের কাজটুকু করে দেয়। জয় থেকে পাকিস্তান যখন মাত্র ২ রান দুরে তখনই হ্যারিস সোহেল ৬৪ রানে রান আউট হন।

৪৪ রানে পাকিস্তানের দুই ওপেনার ফিরে গেলে বাবর আজম অভিজ্ঞ মোহাম্মদ হাফিজের সঙ্গে তৃতীয় উইকেট জুটিতে যোগ করেন ৬৬ রান। ৩২ রান তুলে হাফিজ নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক উইলিয়ামসনের স্পিনে ক্যাচ তুলে ফিরেন। ম্যাচে বাকি সময়ের কাহিনীর পুরোটুকু শুধু বাবর আজম ও হ্যারিস সোহেলের ব্যাটিং।

পাকিস্তান যখনই কোনো বিশ্বকাপে সমস্যায় পড়ে সঙ্গে সঙ্গে ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ থেকে অনুপ্রেরণা নেয়ার চেষ্টা করে। সেই বিশ্বকাপেও পাকিস্তান গর্তের মধ্যে পড়েও উঠে দাড়িয়ে শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো। ২৭ বছর আগের সেই বিশ্বকাপেও গ্রুপ পর্যায়ের লড়াইয়ে পাকিস্তান এমন কায়দায় নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে টুর্নামেন্টে ফিরে এসেছিলো।

এবারো এই ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপের সেই জনপ্রিয় ‘গল্প’ আরেকবার গলা ফাটিয়ে বলা শুরু করছে পাকিস্তান।

তবে পাকিস্তানের জানা উচিত-ইতিহাস কখনো ম্যাচ বা ট্রফি জেতায় না। পয়েন্ট সমান হলেও এখনো বাংলাদেশের নিচেই পাকিস্তানের অবস্থান। রানরেটে বাংলাদেশ এগিয়ে।

 ৫ জুলাই লর্ডসে ম্যাচ আছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। সেদিন আরেকবার এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ!

সংক্ষিপ্ত স্কোর: নিউজিল্যান্ড : ২৩৭/৬ (৫০ ওভারে, গাপটিল , মনরো ১২, উইলিয়ামসন ৪১, টেলর ৩, লাথাম ১, নিসাম ৯৭*, গ্র্যান্ডহোম ৬৪, স্যান্টার ৫, শাহীন আফ্রিদি ৩/২৮, আমির ১/৬৭, শাদাব খান ১/৪৩)। পাকিস্তান: ২৪১/৪ (৪৯.১ ওভারে, ইমাম উল হক ১৯, ফকর জামান ৯, বাবর আজম ১০১*, হাফিজ ৩২, হ্যারিস সোহেল ৬৪, উইলিয়ামসন ১/৩৯, বোল্ট ১/৪৮, ফার্গুসন১/৫০)। ফল: পাকিস্তান ৬ উইকেটে জয়ী। ম্যাচ সেরা: বাবর আজম।

এ সম্পর্কিত আরও খবর