হকির নির্বাচনে হঠাৎ ভেন্যু বদল! কূটচালের শঙ্কায় একপক্ষ

বিবিধ, খেলা

আপন তারিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 21:10:22

শঙ্কা কাটিয়ে অবশেষে সোমবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের নির্বাচন। মুখোমুখি দুই পক্ষ। কিন্তু নির্বাচন শুরু হতে যখন ২৪ ঘন্টারও কম বাকী তখন হঠাৎ বদলে গেল ভোটের ভেন্যু। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে (এনএসসি) নয়, ধানমন্ডি সুলতানা কামাল মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে সকালে শুরু ভোটগ্রহণ।

৮৪ জন কাউন্সিলরের ভোটে নির্ধারিত হবে ভোট ভাগ্য! বিজয়ীরা চার বছরের জন্য হকি ফেডারেশনের দ্বায়িত্ব নেবেন। ৫টি সহ-সভাপতি, ১টি সাধারণ সম্পাদক, ২টি যুগ্ম সম্পাদক, ১টি কোষাধ্যক্ষ ও ১৯টি কার্যনির্বাহী সদস্য পদে লড়বেন ৫৩ জন প্রার্থী!

গত দুই বছর ধরেই বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের নির্বাচন নিয়ে সরব কর্মকর্তারা। কিন্তু নানা অজুহাতে পিছিয়ে যাচ্ছিল সেই নির্বাচন। ২০১৭ সালে প্রার্থীরা মনোনয়ন পত্র তুললেও জমা দিতে পারেননি! বন্যার কারণে নির্বাচন স্থগিত করে এনএসসি। তারপর অ্যাডহক কমিটি দ্বায়িত্ব পালন করে গেছে। গত কয়েক মাসেও নির্বাচন নিয়ে জলঘোলা হয়েছে। অবশেষে যখন সব চূড়ান্ত তখনই ভোটকেন্দ্র বদলে ফেলায় প্রতিবাদে সোচ্চার একপক্ষ।

ভোটে প্রভাব বিস্তার করতেই ভেন্যু বদল-দাবী বাঁচাও হকি পরিষদের প্রার্থীদের। আবদুর রশিদ শিকদার-মমিনুল হক সাঈদ প্যানেল এনএসসির এই সিদ্ধান্তে হতাশ। যদিও নির্বাচন কমিশনার শাহ আলম সরদার রোববার জানিয়ে দিলেন, কাউন্সিলরদের উদ্বেগের কারনেই ভেন্যু বদলেছেন তারা।

কিন্তু কিছুতেই এই দাবীর সঙ্গে একমত নন বাঁচাও হকি পরিষদের সংগঠন মোহামেডান-মেরিনার্স-উষা জোটের প্রার্থীরা। বার্তা২৪.কমকে রোববার সন্ধ্যায় মেরিনার ইয়াংস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হাসানউল্লাহ খান রানা বলছিলেন, ‘এটা অবশ্যই নজিরবিহীন এক পরিবর্তন। নির্বাচনের যখন ১৫ ঘন্টার বাকী তখন কোথাও এভাবে ভেন্যু বদলে ফেলা হয়? এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাই আমরা। দেখুন হকির নির্বাচন নিয়ে একটি পক্ষ অনেক দিন ধরেই চক্রান্ত করছে। এটা তারই অংশ।’

নির্বাচনে রশিদ-সাঈদ প্যানেলের প্রতিপক্ষ সাজেদ আদেল-আব্দুস সাদেক প্যানেলের আপত্তির মুখেই পাল্টে গেছে ভেন্যু। এর আগে তাদেরই আবেদনের মুখে স্থগিত হয়েছিল নির্বাচন। হাসানউল্লাহ খান রানা বার্তা২৪.কমকে জানান, ‘কূটচালের অংশ হিসেবেই হঠাৎ এই ভেন্যু বদল। ধানমন্ডিতে ওই পক্ষের এলাকায় ভোট কতটা নিরাপদে হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে।’ তবে নির্বাচন বয়কটের পথে হাটবে না হকি বাঁচাও পরিষদ।

সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মমিনুল হক সাঈদ জানিয়ে রাখলেন, ‘দেখুন, আমরা শঙ্কায় আছি। একটা পক্ষ নির্বাচন বানচাল করতে উঠে পড়ে লেগেছে। সাধারণ ভোটারদের অধিকার কেড়ে নিতে চায় ওরা। নির্বাচন যেখানেই হবে আমরা সেখানেই অংশগ্রহণ করব। ভোট অনুষ্ঠিত হলে আমরাই জিতব।’

জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী বিভাগীয় ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সমর্থন মাঠে নামা আদেল-সাদেক পরিষদও। সহ-সভাপতি প্রার্থী সাজেদ এ আদেল স্পষ্ট জানিয়ে রেখেছেন, ‘দেখুন, নির্বাচনে লড়তে আমরা প্রস্তুত। সবার সমর্থন রয়েছে আমাদের সঙ্গে। আশা করছি, পূর্ণ পরিষদে নির্বাচিত হব আমরা।’

বাংলাদেশ হকি পথ হারিয়েছে অনেকদিন ধরেই। মাঠে খেলা নেই। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও নেই সাফল্য। এমন কী ফেডারেশনেও নেই কোন উদ্যোগ। হকিতে শেষবার নির্বাচন হয়েছে ২০০৫ সালে। তারপর ২০১০ সালে একটি প্যানেল হওয়াতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাধারণ সম্পাদক হন খন্দকার জামিল উদ্দিন। ২০১৩ সালে শফিউল্লাহ মুনীর সরে দাঁড়ালে খাজা রহমতউল্লাহ সাধারণ সম্পাদক পদে আসেন।

অবশেষে আবারেও ভোটযুদ্ধ হকি ফেডারেশনে। দুই পক্ষই দেশের এক সময়ের জনপ্রিয় এই খেলাটির সোনালী দিন ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। কিন্তু আগের দিন ভেন্যু বদলে নানা শঙ্কা উঁকি দিচ্ছে-ভোট সুষ্ঠু হবে তো?

আরো পড়ুন-

হকি ফেডারেশনের নির্বাচন ২৯ এপ্রিল

হকিতে নতুন দিগন্ত সূচনার প্রতিশ্রুতি

‘বাঁচাও হকি পরিষদে’ থাকছেন যারা

এ সম্পর্কিত আরও খবর