নেতৃত্বের ওপর ক্ষোভ থাকে, সংগঠনের ওপর নয়: লেখক

আওয়ামী লীগ, রাজনীতি

ইমরান হোসাইন, ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-30 20:19:45

পদবঞ্চিত নেতাদের উদ্দেশে ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, 'নেতৃত্বের ওপর তাদের ক্ষোভ থাকতে পারে, কিন্তু সংগঠনের ওপর কোনো ক্ষোভ নেই। গতকাল আমাদের কমিটি হওয়ার পর তারা আনন্দ মিছিল করেছেন, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমাদের সমর্থন জানিয়েছেন। এ সমর্থনকে সামনে রেখে আমাদের পক্ষ থেকে তাদের (পদবঞ্চিতদের) জন্য সমর্থন সবসময় আছে।'

রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-এর সঙ্গে এক আলাপে তিনি এসব কথা বলেন।

লেখক বলেন, 'বিভিন্ন প্রেক্ষাপটের মধ্য দিয়ে এসব সৃষ্টি হয়েছে। এটাতো আর একদিনে সৃষ্টি হয়নি। এগুলো একদিনে সমাধানও হবে না। কিন্তু আমরা চাচ্ছি একদিনে সবকিছু ঠিক হয়ে যাক। তাদের যে আপত্তি সেটা আশা করি আমরা দ্রুত সময়ে সমাধান করতে পারব।'

নতুন দায়িত্ব সম্পর্কে তিনি বলেন, 'আমরা একটা চ্যালেঞ্জিং মুহূর্তে এসেছি। তারপরও আমাদের নেতৃত্বে আসার প্রেক্ষাপটটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। অন্যবারের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা। সেজন্য আমাদের অভিজ্ঞতাও কম। তাই আমরা আমাদের সাবেক সিনিয়র বড় ভাই এবং আমাদের প্রাণ প্রিয় নেত্রীর পাশাপাশি ছাত্রলীগের দেখভাল করার দায়িত্বে থাকা নেতাদের সুপরামর্শে সংগঠন পরিচালনা করব।'

ছাত্রলীগের দায়িত্ব বড় এক প্রাপ্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দায়িত্ব পাওয়া তাও সরাসরি নেত্রীর কাছ থেকে, এর চেয়ে আসলে বড় প্রাপ্তি আর হয় না।'

ছাত্রলীগে কোনো ধরনের পক্ষ বিপক্ষ থাকবে না উল্লেখ করে ভারপ্রাপ্ত এই নেতা বলেন, 'অনেক কর্মীর মনে কষ্ট রয়েছে। শোভন -রাব্বানী ভাই নেই বলে যারা কান্নাকাটি করছেন তাদেরকে সাপোর্ট দেওয়া হবে। শোভন-রাব্বানী ভাই থাকলে তাদেরকে যে সাপোর্টটা দিতো, আমাদের পক্ষ থেকেও সে সাপোর্ট পাবে।'

শোভন রাব্বানীর পক্ষে-বিপক্ষের কারণে যেন কোনো ধরনের প্রভাব না থাকে তা কাটিয়ে ওঠার জন্য যা যা করা দরকার তা করার ঘোষণা দেন এই নেতা।

আগামীকাল সোমবার বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেওয়ার পর শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করার কথা রয়েছে ছাত্রলীগের এ নতুন নেতৃত্বের।

প্রসঙ্গত, সম্মেলনের এক বছর পর গত ১৩ মে ছাত্রলীগের ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হলে তা পুনর্গঠনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন কাঙ্ক্ষিত পদ না পাওয়া ও পদবঞ্চিত নেতারা। তারা অভিযোগ করেন, বিবাহিত, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী, চাকরিজীবী ও বিভিন্ন মামলার আসামিসহ নানা অভিযুক্তকে পদ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বঞ্চিত করা হয়েছে অনেক ত্যাগী নেতাকে।

এ নিয়ে বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে মারামারিও বাধে কমিটিতে পদ পাওয়া নেতাদের। এরপর কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার এক পর্যায়ে আশ্বাসে পিছু হটে বিক্ষুব্ধরা।

বিক্ষুব্ধদের আন্দোলনের মুখে গত ১৯ মে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিতর্কিত ১৭ জনের নাম প্রকাশ করেন। তাদেরকে নির্দোষ প্রমাণেরও সুযোগ দেন। এদিকে গত ২৮ মে বিদ্রোহীদের তোপের মুখে বিতর্কিত ১৯টি পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়। কিন্তু সেটাকে শুভংকরের ফাঁকি বলে ঘোষণা দেন তারা।

এরপর ২৯ মে পূর্ণাঙ্গ কমিটিকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা হলে ফের অবস্থানে ফেরে বিক্ষুব্ধরা; তাদের দাবি, আগে বিতর্কিত সবাইকে সরাতে হবে, তারপরই যেন কর্মসূচি নেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: ঢাবিতে তান্ত্রিক স্টাইলে 'ভূত তাড়ানোর' মিছিল!

আরও পড়ুন: রাব্বানী কি ডাকসুর পদে থাকার নৈতিকতাও হারালেন?

আরও পড়ুন: রাতের আঁধারে শেষ বিদায় শোভন-রাব্বানির!

এ সম্পর্কিত আরও খবর