জাপাকে তরুণরা গ্রহণ করছে না: জিএম কাদের

জাতীয় পার্টি, রাজনীতি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-27 09:20:10

জাতীয় পার্টিকে (জাপা) তরুণ সমাজ সেভাবে গ্রহণ করছে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের। বুধবার (২৬ জুন) মতিঝিল এজিবি কলোনি কমিউনিটি সেন্টারে জাপা’র সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সভার সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

জিএম কাদের বলেন, আজকের সভায় তরুণদের উপস্থিতি কম। তরুণরা আমাদের সেভাবে গ্রহণ করছে না। আমরা সেভাবে সংগঠিত করতে পারিনি। এমন কর্মসূচি দেব যাতে তরুণ সমাজকে আকৃষ্ট করতে পারি। এর নেতৃত্ব দিতে হবে তরুণ সমাজকেই। দৃঢ় প্রত্যয় থাকলে সাহায্য পাওয়া যাবে, মানুষ গ্রহণ করবেই।

তিনি বলেন, বিএনপি থেকে অনেকে জাতীয় পার্টিতে আসতে চাইছেন। বিশেষ করে যারা জাতীয় পার্টি থেকে চলে গিয়েছিলেন, তারা ফিরতে চান। ফিরে তারা বড় পদ চাইতে পারে। দরকষাকষির বিষয় রয়েছে। তাদেরকে জায়গা দিতে হবে। তবে আমি জাতীয় পার্টিতে যারা ত্যাগী আছেন, যতদূর সম্ভব তাদের মূল্যায়ন করতে চাই।

জাপা নেতা বলেন, একজন বক্তৃতা দিয়েছেন হঠাৎ হঠাৎ কমিটি, প্রার্থী আবিষ্কার ও প্রার্থী বহিস্কার করা যাবে না। এই কথার মধ্যে সুর আছে যুক্তিও আছে। এটা পার্টির জন্য অনেক ক্ষতি করেছে। কথা দিচ্ছি আমি প্রার্থী আবিষ্কার ও বহিষ্কার করব না। কমিটি করা হবে তৃণমূলের সুপারিশ অনুযায়ী। কমিটি নিয়ে বাণিজ্য করতে দেওয়া হবে না। আমি ভাড়া করা লোক দিয়ে লোকসমাগম দেখাতে চাই না। সেই রাজনীতি করব না।

গত নির্বাচনের আগে আমাদের অনেক নেতাকর্মী দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। আওয়ামী লীগের হয়ে কাজ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি উঠেছে। আমি বলব- গত নির্বাচনে কেউ কেউ কনফিউজড ছিলেন, কোথাও মহাজোট হয়েছে, কোথাও উন্মুক্ত। এ কারণে বিভ্রান্তি ছিল, সেন্ট্রালের কন্ট্রোলিংয়ে সমস্যা ছিল। চেয়ারম্যান অসুস্থ ছিল, আমি কোনো দায়িত্বে ছিলাম না। এ কারণে বিষয়টি ছাড় দিতে হবে।

তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে, সব সময় পরিস্থিতি অনুকূলে থাকে না। আমরা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেব। প্রার্থী যারা আছেন তাদের উৎসাহ দিতে চাই। রাজনীতি শিখতে গেলে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে।

সভায় বক্তৃতা দেওয়া নিয়ে বেশ কয়েক দফা হট্টগোল হয়। এর রেশ ধরে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে জাপার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, শুধু মানুষ থাকলেই হবে না, দলের মধ্যে শৃঙ্খলা থাকতে হবে। নেতৃত্বের প্রতি আস্থা থাকতে হবে এবং নির্দেশনা মানতে হবে। দলে শৃঙ্খলা রাখা দরকার ঐক্যের জন্য।

মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, একজন বক্তৃতা করতে ধরলে আপনারা হৈ চৈ করছেন। কেন রে ভাই! হৈ চৈ করেন! তিনি তো কথাই বলবে, আর তো কিছু না। শামসুল আলম বক্তৃতা দিয়েছেন, তা কি খুব বেশি ক্ষতি হয়েছে। আমি শ্রমিকের সংগঠন করি, সেখানে অনেক গোলমাল হয়, ট্যাঙ্ক-কামান ছাড়া সবই বের করে। এখানে তো কিছুই নেই।

রাঙ্গা বলেন, কথা দিচ্ছি রাস্তা-বাজারের লোক দিয়ে কারো পকেট কমিটি করতে দেওয়া হবে না। কার কতো ক্ষমতা আছে, কাউন্সিলে দেখাবেন। ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, থানা তারপর জেলা কমিটির কাউন্সিল হবে। কাউন্সিলর কারা হবেন, কেন্দ্র থেকে অনুমোদন দেওয়া হবে। জেনুইন ছাড়া কেউ কমিটি করতে পারবেন না।

তিনি বলেন, আজকের সাংগঠনিক সভায় যাদের ডাকা হয়েছিল কিন্তু আসেনি, যৌক্তিক কারণ ছাড়া কেউ অনুপস্থিত থাকলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শোকজ করা হবে। নেতাকর্মীদের বলি, আপনারা অন্যায় করবেন না। আওয়ামী লীগের লোকজন যদি হয়রানি করে নির্যাতন করে আমরা প্রতিহত করব। আপনাদের পাশে দাঁড়াব, প্রয়োজনে হরতাল-অবরোধ পালন করা হবে।

বৈঠকে জেলা ও উপজেলার নেতারা সংসদে জাতীয় পার্টিকে প্রকৃত বিরোধীদলের ভূমিকা পালনের দাবি জানান। এক্ষেত্রে এমপিদের সামলোচনাও করেন অনেক নেতা।

আরও পড়ুন: এরশাদের অবর্তমানে জাপার কী হবে, জানালেন জিএম কাদের

আরও পড়ুন: ‘চিকিৎসা নেওয়ার পয়সা নেই এরশাদের’

এ সম্পর্কিত আরও খবর