বিরোধী নেতাদের বাজেট প্রত্যাশা

বিবিধ, রাজনীতি

মুজাহিদুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-24 01:36:30

বাজেট এলেই একদিকে সরকারি দল বলে উন্নয়নের বাজেট অপরদিকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বলে গরিব মারার বাজেট, চাপাবাজির বাজেট। বাজেট নিয়ে সাধারণ মানুষের তেমন কোনো আগ্রহ না থাকলেও রাজনীতিবিদ বিশেষ করে সরকারবিরোধীরা থাকেন সতর্ক। তারা চুলচেরা বিশ্লেষণ করেন। সরকারের দুর্বলতা ধরে তা ব্যবহার করে অস্ত্র হিসেবে।

কেমন বাজেট প্রত্যাশা করেন- বার্তা২৪.কম এর এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি, নাগরিক ঐক্য ও গণসংহতি আন্দোলনের শীর্ষ তিন নেতা জানান তাদের প্রত্যাশার কথা। পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘গণমূখী বাজেট প্রত্যাশা করি। যে বাজেটে অযথা জনগণের উপর কর বাড়বে না। যে বাজেটে ব্যাংকে খেলাপিদের সংখা বাড়ছে, তা বাড়বে না। ব্যাংকগুলো নিয়ন্ত্রিত হবে। চাপাবাজির অর্থনীতির চেয়ে প্রকৃত অর্থনীতি সুদৃড় হবে সেই ধরনের বাজেট চাই। চাপাবাজির বাজেট চাই না। বেহুদা বড় বাজেট দেখিয়ে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করার যে প্রক্রিয়া, সেটা যেন না থাকে বাজেটে।’

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘যে বাজেট প্রত্যাশা করি, তা এই বাজেটে হবে না। আমি একটা কল্যাণরাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখি এবং কল্যাণরাষ্ট্রের কতগুলো প্রিন্সিপাল আছে। কল্যাণরাষ্ট্র জনগণের শিক্ষা-স্বাস্থ্যের উপর নজর দেয়, সামাজিক নিরাপত্তা, খ্যাদ্যের নিরাপত্তার দিকে নজর দেয় বেশি করে। কল্যাণরাষ্ট্রের লক্ষ্য থাকে নিচের দিকের মানুষ।

তিনি বলেন, ‘সম্পদের বৈষম্য যাতে দূর হয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তার জন্য বিশেষ বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এগুলোর কোন দিক বিবেচনায় বাজেটে আছে বলে মনে হচ্ছে না। আমাদের সাড়ে চার কোটি মানুষ বেকার, শিক্ষিত বেকার এক কোটি। এদের কর্মসংস্থানের ব্যাপারে কোনো দিকনির্দেশনা আছে বলে মনে হচ্ছে না। এটা হচ্ছে নেহায়েত অংক কষার বাজেট। কত টাকা খরচ করতে হবে আমাকে, কত টাকা আমার আছে, এই টাকার ঘাটতি আছে তা পুষাবো কেমনে- এই হিসাব নিকাশের বাইরে কিছু না।’

বাম জোট ও গণ সংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘যা প্রত্যাশা করি, এই সরকারের বাজেটে তা প্রতিফলিত হবে না। লুটপাটের যে ধারা অব্যাহত আছে, তাকে সম্প্রসারিত করবে এই বাজেট। বিভিন্ন প্রকল্পের মধ্যে যে জবাবদিহিতাহীন ব্যয় চলছে, সেটাকে আরও পৃষ্টপোষকতা করা হবে। ব্যাংক সেক্টরে যে লুটপাট চলেছে, জনগণের টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে কতিপয়ের হাতে চালান করে সামগ্রিক অর্থনীতিতে যে বিপর্যয় ডেকে আনা হয়েছে, সেটা এই বাজেটের মধ্য দিয়ে আরও সম্প্রসারিত হবে।’

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘যারা ঋণখেলাপি, তাদের ঋণ বেল আউট করার জন্য বাজেটে আরও বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। এতে ঋণখেলাপিরা মনে করবেন যে তারা আরও যতই ব্যাংক ঋণ মেরে দিক এতে সরকার তাদের শেষ পর্যন্ত সহযোগিতা করবে।’

‘একদিকে টাকার অংকে ব্যয়বৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছি কিন্তু সেই বৃদ্ধি ফুটো কলসিতে ঢালা হচ্ছে, চলে যাচ্ছে লুটপাটের ধারায়। ফলে বাস্তবে অগ্রগতি, অর্থবরাদ্দ ও হাঁকডাকের মধ্যে সীমাবদ্ধ। এই বাজেট লুটপাটে সহায়তাকারী বাজেট। যথারীতি শিল্পকারখানা, দীর্ঘমেয়াদী শিল্প বৃদ্ধি ও কৃষক শ্রমিক সর্বোপরি জনগণের জীবনমানের উন্নতির লক্ষ্যে আগের বাজেটে যেমন ছিল না, তেমনি এই বাজেটেও নতুন কথা শুনিনি।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর