ঈদের দিনেও অবস্থান কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতরা

আওয়ামী লীগ, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-28 16:35:31

ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর সারা দেশে বুধবার (৫ মে) উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর।

নাগরিক জীবনের কোলাহল ছেড়ে নগরবাসী গ্রামে ছুটে গেছে স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে। অন্যান্যদের মতো ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে নিজ নিজ এলাকায় চলে গেছেন। শুধু ব্যতিক্রম গোটা বিশেক নেতাকর্মী।

তাদের বলা হচ্ছে পদবঞ্চিত। আর এই পদবঞ্চিতরা রোদ, ঝড়, বৃষ্টি উপেক্ষা করে টানা ১১তম দিনের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। এমনকি ঈদের দিনও তারা কর্মসূচি স্থগিত করেননি। নিজেদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা এ অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলেও জানিয়েছেন।

ঈদের দিন সকালে রাজু ভাস্কর্যের সামনে গিয়ে দেখা যায়, রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সামিয়ানা টাঙানো হয়েছে। তার নিচেই ছাত্রলীগের ২০ থেকে ২৫ জন নেতাকর্মী অবস্থান করছেন। কারো পরনেই নেই ঈদের পাঞ্জাবি। দুয়েকজন পুরনো পাঞ্জাবি গায়ে দিলেও বেশির ভাগই সাধারণ পোশাক পরে অবস্থান করছেন। কেউ শুয়ে প্রিয়জনের সঙ্গে কথা বলায় ব্যস্ত, কারো নজর মোবাইলের স্ক্রিনে ছিল, কেউ কেউ আগের দিনের ঈদের স্মৃতিরোমন্থনে মশগুল ছিলেন।

জানতে চাইলে সংগঠনের সাবেক স্কুলছাত্র বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমাদের মনে ঈদের আনন্দ নেই। বাবা-মাকে বাদ দিয়ে ঈদের অভিজ্ঞতা প্রথম না হলেও এমনটা কখনোই হয়নি। নতুন পাঞ্জাবি, ঈদের সালামি কিংবা সেমাই খাওয়া- কোনোটাই হয়নি এবার।

সাবেক উপদফতর সম্পাদক নকিবুল ইসলাম সুমন বলেন, আজ ১১ দিনের মতো আমরা টানা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। কিন্তু ঈদের আগে আওয়ামী লীগ কিংবা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা কেউ আমাদের খোঁজ নিতে আসেননি। আসলে নেত্রী (শেখ হাসিনা) ছাড়া আমাদের দেখার কেউ নেই।

বর্তমান কমিটির উপসম্পাদক আল মামুন বলেন, ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতা একজন কুড়িগ্রামে, অন্যজন মাদারীপুরে নেতাকর্মী ও পরিবার নিয়ে ঈদ উদযাপন করছেন। এদিকে, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা যে রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে, তাদের দিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। তারা আন্তরিক হলে আমাদের দাবি পূরণ করতেন। আসলে নেত্রী ছাড়া আসলে সমাধানের আর কেউ নেই।

জসীম উদ্দিন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহেদ খান বলেন, রাজনৈতিক জীবনে বঙ্গবন্ধু কারাগারে ঈদ করেছেন। ছাত্রলীগের শুদ্ধির জন্য আমাদের অবস্থান কর্মসূচি। এবার ঈদ না করে যদি ছাত্রলীগের শুদ্ধতা নিশ্চিত হয়, তাতেই আমাদের স্বার্থকতা।

উল্লেখ্য, শোভন-রাব্বানী নেতৃত্বাধীন ছাত্রলীগের কমিটিতে বিতর্কিতদের পদায়ন করা হয়েছে অভিযোগ করে কমিটি ঘোষণার পর থেকেই আন্দোলন করছেন এই নেতাকর্মীরা। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে শোভন-রাব্বানী ১৯ জন বিতর্কিতকে চিহ্নিত করে তাদের পদশূন্য করা হয়েছে বলে ঘোষণা দেন। কিন্তু তারা সেই ১৯ জনের নাম প্রকাশ করেননি। এতে করে কমিটিতে বিতর্কিতদের টিকে থাকার আরো সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পদবঞ্চিত নেতাদের। তাই তারা এখন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছেই সব অভিযোগ-অনুযোগ তুলে ধরতে চান।

এ সম্পর্কিত আরও খবর