‘সমাবেশে বক্তব্য রাখা মানেই ঐক্য প্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়া নয়’

বিবিধ, রাজনীতি

মুজাহিদুল ইসলাম ও তপন কান্তি রায়, বার্তা২৪.কম | 2023-12-11 18:29:05


‘জাতীয় ঐক্যের সমাবেশে বাম গণতান্ত্রিক জোটের হয়ে নয়, দলীয় উদ্যোগে অংশ নিয়েছিলাম। কোনো সমাবেশে বক্তব্য রাখা মানেই ওই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়া নয়।’

সম্প্রতি বার্তা২৪.কম‘কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। তরুণ এই রাজনীতিবিদের সঙ্গে আলাপচারিতায় উঠে আসে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি, নির্বাচন ও নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বাম জোটের ভুমিকাসহ সাম্প্রতিক নানা ইস্যু।

সম্প্রতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে নাগরিক সমাবেশ করে। সেখানে বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বে যুক্তফন্ট, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ওই নাগরিক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জোনায়েদ সাকি। পরবর্তীতে সমাবেশে তার অংশগ্রহণ নিয়ে জোট ও জোটের বাইরে নানামুখী সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ড. কামাল হোসেন নিজে আমাকে ফোন করে সমাবেশে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান। তাই আমি সেখানে দলের বক্তব্য তুলে ধরতে গিয়েছিলাম। ‘ওখানে (নাট্য মঞ্চের সমাবেশ) বক্তব্য রাখা মানেই ওই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাওয়া নয়। এটা একটা নির্বাচন কেন্দ্রীক জোট। তবে সেই জোট রাস্তায় কী ধরনের আন্দোলন করবে সেটার ওপর আমাদের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নির্ভর করছে।  তবে বাম জোট এখনও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।’

জাতীয় সনদের প্রয়োজনতায় তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সমাবেশে দলের পক্ষ থেকে আমরা বলতে চেয়েছি, এই মুহূর্তে বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা কায়েম করা প্রয়োজন। এজন্য আমাদের জাতীয় ঐক্যমত তৈরি করতে হবে। কারণ রাজনৈতিক বিভাজন থেকে বের হতে হলে আমাদের একটা নতুন রাজনৈতিক চুক্তিতে পৌঁছাতে হবে। যেটা জাতীয় সনদের মধ্যে দিয়ে হতে পারে।’


গণসংহতির এই নেতা বলেন, ‘আমরা যদি অভ্যন্তরীণ বিভাজনের মধ্যে থাকি তাহলে আমাদের দেশ সামগ্রিকভাবে বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে। তাই আমাদের রাজনৈতিক ব্যবস্থাটাকে একটা ইনক্লুসিভ বা  কার্যকর এবং জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা করার মতো জায়গায় আনতে হবে। সেটার জন্যই একটা নতুন রাজনৈতিক চুক্তি বা ব্যবস্থায় পৌঁছাতে হবে। সেক্ষেত্রে কোন কোন ক্ষেত্রে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমাঝোতার জায়গা তৈরি হতে পারে সে বিষয়ে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা যেতে পারে।’


 ‘নির্বাচন কেন্দ্রীক অনাস্থা দূর করতে আগামী তিনটি জাতীয় নির্বাচন একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীন হতে হবে। নিরপেক্ষ সরকার মানে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে একটা সরকার গঠন করতে হবে।’

সরকার সংলাপ বা সমঝোতায় রাজি না হলে করণীয় বিষয়ে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমরা জাতীয় ঐক্যের সমাবেশে এটা বুঝাতে চেয়েছি আগে সংলাপ ও সমঝোতা হতে হবে। কিন্তু সরকার যদি সংলাপ বা সমঝোতা করতে রাজি না হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। সেই আন্দোলনে রাজনৈতিক দলগুলো কে কার সাথে ঐক্যবদ্ধ হবে সেটা যার যার অবস্থান থেকে সিদ্ধান্ত নেবে।’

বাম গণতান্ত্রিক জোট অন্য কোনো দলে যোগ দিচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা বাম গণতান্ত্রিক জোট ঐক্যবদ্ধ আছি। আমরা বাম দলের মধ্যে দিয়ে আন্দোলন করছি।’

প্রসঙ্গত, মো. জোনায়েদ আব্দুর রহমান সাকি, যিনি জোনায়েদ সাকি নামে পরিচিত। ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তার সক্রিয় রাজনীতিতে আসা। ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর