খুলনা রেলস্টেশনে বসানো হচ্ছে নিম্নমানের কাঠের স্লিপার

, জাতীয়

কান্ট্রি ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 06:30:38

খুলনা: খুলনায় নির্মাণাধীন আধুনিক রেলস্টেশনে বসানো হচ্ছে নিম্নমানের কাঠের স্লিপার। নগরীর জোড়াগেট থেকে নতুন এই স্টেশনের প্লাটফর্মের রেললাইনের স্লিপারগুলোর অধিকাংশই পুরাতন, ফাটা এবং পচন ধরা। অবশ্য কিছু নতুন স্লিপারও বসানো হয়েছে। তবে তার মধ্যেও কয়েকটি ফাটা রয়েছে।

অন্যদিকে রেল স্টেশনের সীমানা প্রাচীরে (খুলনা-যশোর রোড) ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের রঙ করার পূর্বেই বেদখল হয়ে গেছে।

মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) সকালে সরেজমিনে নির্মণাধীন খুলনা আধুনিক রেলস্টেশন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

নিম্নমানের স্লিপার লাগানো হচ্ছে কেন এমন প্রশ্নের জবাবে রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী বিরবল মণ্ডল জানান, নগরীর জোড়াগেট থেকে রেলস্টেশনের প্লাটফর্ম পর্যন্ত স্লিপার ও রেললাইন লাগানোর কাজ চলছে। স্লিপারগুলো অনেক আগেই এসেছে। তবে এর মান ভালো রয়েছে। এ কারণে স্লিপারগুলো বসানো হয়েছে। রেললাইন এবং স্লিপার লাগানোর কাজ দু-সপ্তাহের মধ্যে শেষ হবে।

তিনি বলেন, ‘সীমানা প্রাচীরের বাইরের দিকে একটি প্রতিষ্ঠানের পণ্যের বিজ্ঞাপন অঙ্কন করা হচ্ছে। এটি দেখে ইতোমধ্যে ৫ বার আমরা মৌখিক নোটিশ দিয়েছি। ওই স্থানে গিয়ে তাদের কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। অথচ আমাদের লোক চলে আসলে ফের বিজ্ঞাপনের কাজ শুরু করে। এ বিষয়ে দু-এক দিনের মধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে তাদের চিহ্নিত করে মামলা দায়ের করা হবে।’

এ বিষয়ে খুলনা রেলওয়ের আই ডব্লিউ মো. হাফিজুর রহমান জানান, সীমানা প্রাচীরের এসব বিজ্ঞাপন দু’একদিনের মধ্যে মুছে দিয়ে নতুন করে রঙ করা হবে।

সরেজমিন ঘুরে আরও দেখা যায়, পুরোদমে চলছে নির্মাণাধীন রেল স্টেশনের নির্মাণ কাজ। নগরীর পাওয়ার হাউজ মোড়ের অদূরে খুলনা-যশোর রোডের পাশে প্রবেশপথের কাজ চলছে। সেখানে ফুটপথ ও কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। স্টেশন ভবনের ফ্লোরে মার্বেল টাইলস বসানো হচ্ছে। ওই ভবন এলাকার রাস্তার পাশ দিয়ে যাত্রীদের চলাচলের জন্য ফুটপথ বসানো হচ্ছে। প্লাটফর্মে পানির পাইপ, রেলপথ বসানোর কাজ চলছে। এসব কাজ সম্পন্ন হলে আগামী আগস্টের মধ্যেই আধুনিক রেল স্টেশনের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে।

এ বিষয়ে রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী বিরবল মণ্ডল জানান, নির্মাণাধীন রেলে স্টেশনের ৯৬ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজ আগস্টে শেষ হবে। এরপর ট্রেন চলাচলের জন্য রেলস্টেশন উদ্বোধন করা হবে।

রেলস্টেশনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশনের প্রকৌশলী মোসাব্বির হক বিপ্লব জানান, স্টেশনের মূল কাজ শেষ। এখন শুধু ফিনিশিং কাজ বাকি। প্লাটফর্মের ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রবেশ গেট এবং ফুটপথের কাজ চলছে। এরপর সীমানা প্রাচীরে রঙয়ের কাজ করা হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, খুলনাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৫ সালের ৪ মার্চ ঠিকাদার নিয়োগ সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদন দেয় সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এপ্রিল মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় খুলনার আধুনিক রেলস্টেশনের কাজ। শর্ত ছিল ১৮ মাসের মধ্যে সব কাজ শেষ করতে হবে। কিন্তু ৩৯ মাস পার হলেও এখনো অনেক কাজ শেষ হয়নি। অবশ্য এ জন্য নকশা জটিলতা ও জমি না পাওয়ার জন্য সময়ক্ষেপণ হয়েছে বলে দাবি করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীলরা।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, এ প্রকল্পে মোট ব্যয় হচ্ছে ৯৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। আর এর মধ্যে শুধুমাত্র স্টেশন ভবনের নির্মাণ ব্যয় ৬০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। প্রকল্প এলাকায় প্রায় ২২ হাজার বর্গফুট আকারের একটি তিনতলা স্টেশন ভবন, ১ হাজার ২০০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩০ ফুট প্রস্থের তিনটি প্লাটফর্ম, ৭৮৪ বর্গমিটারের একটি লিংক করিডোর নির্মাণ হয়েছে। ভবনের ভেতরে ৮৬০ বর্গমিটারের ফাঁকা জায়গা রয়েছে। এছাড়া চার হাজার বর্গমিটার জায়গাজুড়ে কারপার্কিং, ফুটপথ ও রাস্তা থাকার কথা রয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর