খুবির প্রশাসনিক ভবনে তালা, শিক্ষার্থীদের অবস্থান

খুলনা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, খুলনা | 2023-08-26 09:33:12

বর্ধিত বেতন কমানো, আবাসন সংকট নিরসন, পরীক্ষার খাতায় কোডিং পদ্ধতি চালুসহ পাঁচ দফা দাবিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে সেখানে অবস্থান করছেন শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (০২ জানুয়ারি) সকাল থেকে খুবির ভিসিকে অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুরে তারা শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে সামনে অবস্থান নেন। ভিসির কার্যালয় ওই একই ভবনে। তিনি তার কার্যালয়েই আছেন সকাল থেকে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে গত কয়েক বছর ধরে অস্বাভাবিক হারে বেতন বেড়েছে। আগামী নতুন টার্ম রেজিস্ট্রেশনের আগেই বেতন সহনীয় মাত্রায় কমাতে হবে। একই সঙ্গে রেজিস্ট্রেশন ফি কমিয়ে সহনীয় মাত্রায় আনা না হলে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় অংশ নেবেন না তারা। এছাড়া পরীক্ষার খাতা দ্বিতীয় পরীক্ষক দ্বারা মূল্যায়ন এবং প্রয়োজন অনুসারে তৃতীয় পরিক্ষণের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি পরীক্ষার খাতায় কোডিং পদ্ধতি চালু, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম, বিনোদন ব্যবস্থা, ম্যাগাজিন, বুলেটিন, পোস্টার প্রকাশনায় শিক্ষার্থীদের স্বাধীনতা ও সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা, গল্প, উপন্যাস, জার্নাল, একাডেমিক গ্রন্থসহ সব ধরনের বই বাড়ানোর পাশাপাশি সার্বক্ষণিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসক ও খুবির মেডিকেলে প্রয়োজনীয় সব সরঞ্জাম কেনার দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৯০ এর পঞ্চম খণ্ড, দাগ নম্বর ৪৫, পৃষ্ঠা ৬৬১৫-এ উল্লেখ আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক ছাত্র সংবিধান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ দ্বারা নির্ধারিত স্থান ও শর্তাধীনে বসবাস করবে। অথচ মোট শিক্ষার্থীর মাত্র ৩১.৫৯ শতাংশ আবাসন সুবিধা পান। আবাসন সংকট নিরসনে কত দিনের মধ্যে নতুন হল হবে, তা লিখিত আকারে জানানোর পাশাপাশি নতুন হল নির্মাণের আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে হোস্টেল ব্যবস্থার দাবি করেন তারা।

এদিকে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবিসহ সামগ্রিক বিষয় খতিয়ে দেখে সুপারিশ দিতে ডিনদের সমন্বয়ে নয় সদস্যের একটি কমিটি করেছে খুবি প্রশাসন। কমিটির সভাপতি কলা ও মানবিক স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. শেখ মো. রজিকুল ইসলাম। কমিটিকে জরুরি ভিত্তিতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে তাদের সঙ্গে মৌখিক কথা বলতে রাজি হননি শিক্ষার্থীরা।

এর আগে বছরের প্রথম দিন বুধবার (০১ জানুয়ারি) শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদি চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন ও প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটক অবরুদ্ধ করে রাখেন। দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বলেন, অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন-ফি তালিকা সংগ্রহের কাজ চলছে। যদি অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় আমাদের এখানকার ফি অস্বাভাবিক বেশি হয়ে থাকে, তা কমানো হবে।

তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার জন্য গঠিত কমিটি যেসব সুপারিশ করবে, সেগুলো দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়ন করা হবে।

উল্লেখ্য, গত ১৩ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরে শিক্ষার্থীরা ছাত্র বিষয়ক পরিচালকের মাধ্যমে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেন। এরপর ২১ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেয়। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যাশিত সাড়া না পাওয়ায় শিক্ষার্থীরা এ আন্দোলন শুরু করেছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর