বিদ্যুৎ সংযোগের দোহাই দিয়ে বৃক্ষ নিধন

রংপুর, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, রংপুর | 2023-08-27 07:09:12

কারমাইকেল কলেজে ডালপালা কাটার নামে অর্ধ শতাধিক বৃক্ষ নিধন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ বৃক্ষ নিধনের বিষয়টি অস্বীকার করেছে। বিদ্যুৎ বিভাগের প্রয়োজনে গাছের ডালপালা কাটার অনুমতি দেয়া হয়েছে বলে জানান কলেজ অধ্যক্ষ।

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে কলেজের প্রধান ফটকের দুই পাশে প্রায় অর্ধ শতাধিক কাটা গাছ দেখা গেছে। এরমধ্যে বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল সংলগ্ন কাঁঠাল বাগান ও মধুবনের গাছ রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কলেজের মূল ফটকের দুইপাশে গাছের ডালপালা কাটার নামে বৃক্ষ নিধনযজ্ঞ চালানোর চিত্র। অধিকাংশ গাছের ডালপালা কাটার সাথে সাথে মূল গাছের বেশিরভাগ অংশ কেটে ফেলা হয়েছে। কোথাও কোথাও গাছের গোঁড়া থেকেও কেটে নেয়া হয়েছে।

কলেজ ক্যাম্পাসের জিএল হোস্টেলের সামনে কিছু কাটা গাছ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এছাড়াও কিছু গাছ ও কেটে ফেলা ডালপালা লালন নামে এক ছাত্রনেতা ক্রয় করেছেন বলে জানা গেছে।

কলেজ-ক্যাম্পাসের-ভিতরে-জিএল-হোস্টেলের-সামনে-পড়ে-আছে-কাটা-গাছ
কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে জিএল হোস্টেলের সামনে পড়ে আছে কাটা গাছ

এদিকে, হঠাৎ এভাবে বৃক্ষ নিধনে হতাশ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কলেজের সচেতন শিক্ষার্থীরা। কেবি আবাসিক হোস্টেলের দুই শিক্ষার্থী নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘কলেজ প্রশাসন ডালপালা কাটার নামে নিধনযজ্ঞ চালিয়েছে। যেভাবে গাছের ডালপালা কাটার কথা, সেভাবে কাটা হয়নি। এটাতো ডালপালা কাটার নতুন সিস্টেম মনে হচ্ছে।’

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্স শেষ পর্বের ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘ডালপালা কাটতে গিয়ে গাছগুলোকে নিশ্চিত মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এটা অন্যায়। বৃক্ষ রোপণে উৎসাহিত না করে কিভাবে ডালপালা কাটার নামে বৃক্ষ নিধন করা যায়, কলেজ প্রশাসন সেটাই দেখিয়ে দিল।’

গাছ ক্রয়ের ব্যাপারটি অস্বীকার করেছেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাব্বি হক লালন। তিনি বলেন, ‘আমি কোনো গাছ ক্রয় করিনি। বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে কলেজে কিছু গাছের ডালপালা কাটা হয়েছে। সেখানে থেকে আমি দুই হাজার টাকা অধ্যক্ষকে দিয়ে খড়ির জন্য দুই ভ্যান ডালপালা ক্রয় করেছিলাম। পরে অধ্যক্ষ স্যারের নির্দেশে বাকি ডালপালাগুলো কলেজের গোডাউনে রেখেছি। স্যার পরে আমাকে দুই হাজার টাকা ফেরতও দিয়েছেন।’

এ ব্যাপারে কারমাইকেল কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. শেখ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কলেজ প্রশাসন কোনো গাছ কাটেনি। কিছু দিন আগে তিনজন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন। এজন্য বিদ্যুৎ বিভাগ তাদের প্রয়োজনে আমাদের অনুমতি নিয়ে কিছু গাছের ডালপালা কেটেছে। সেই ডালপালা কলেজের গোডাউনে সংরক্ষণ করা হয়েছে। আর কিছু জ্বালানি খড়ি হিসেবে বিক্রি করা হয়েছে। এসব গাছ কাটা এবং বিক্রির জন্য কোনো দরপত্র আহ্বান করা হয়নি বলেও জানান তিনি।

কলেজের-মূল-ফটকের-পাশে-মধুবন-থেকে-এভাবে-গাছের-ডালপালা-কাটা-হয়েছে
কলেজের মূল ফটকের পাশে মধুবন থেকে এভাবে গাছের ডালপালা কাটা হয়েছে

এদিকে, নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানী লিমিটেড (নেসকো-৩) এর নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম মন্ডল জানান, গাছ কাটা আমাদের কাজ নয়। বাতাসে গাছের ডালপালা বৈদ্যুতিক তারে যেন না লাগে, সেই অনুপাতে ডালপালা কাটার নিয়ম রয়েছে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর