সন্তান কোলে নিয়ে অনাগত ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তা ইয়াসমিনের

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-31 22:16:57

কোলে তিন বছরের কন্যা সন্তান লামিয়া, পাশে বসে আছে আরেক কন্যা সন্তান ফাতেমা। ধ্বংস স্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে অনাগত ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বারবার শিউরে উঠছেন গার্মেন্টস কর্মী ইয়াসমিন।

আর কেনইবা হবেন না। নিজে গার্মেন্টসে চাকরি করেেএবং স্বামীর রিকশা চালানোর আয় দিয়ে তিলে তিলে যে স্বপ্নের সংসার গড়েছিলেন তা নিমেষেই আগুনে পুড়ে ছাই। এখন মাথার ওপর ছাদ হারিয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে পথে বসতে হয়েছে ইয়াসমিনকে।

আরও পড়ুন: ঘর নয়, স্বপ্ন পুড়ে গেছে মালতীর

সর্বস্ব হারানোর বেদনা ও অনাগত ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বারবার বিলাপ করে ইয়াসমিন বলছেন, এখন কই যামু। আমার দুই মাইয়ার কী হইব। চোখের সামনে সব পুড়ে শেষ হয়ল। আমাগো এহন কে বাঁচাইব।

শুক্রবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর মিরপুরের-৭ নাম্বার সেকশনের চলন্তিকা বস্তির অগ্নিকাণ্ডে নিজের ঘর পুড়ে যাওয়ার বেদনায় কথাগুলো বলছিলেন।

আরও পড়ুন: ঘর পুড়েছে, বিশ্বাস করেন না আখি

ইয়াসমিন জানান, সাত বছর আগে বিয়ে করে স্বামীকে নিয়ে এই বস্তিতে এক রুমের একটি বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন। স্বামী কালো মিয়া রিকশা চালায় আর সে একটি গার্মেন্টসে চাকরি করে। দুই জনের স্বল্প আয়ের টাকা দিয়ে স্বপ্নের সংসার গড়েন বস্তিতে। কিন্তু এখন আগুনে পুড়ে সব শেষ হয়ে যাওয়ায় নিজের দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত সে।

ইয়াসমিন বলেন, 'যদি জামাই বৌ হয়তাম তাহলে তেমন চিন্তা ছিল না। এহন দুই মাইয়ারে নিয়ে কই দাঁড়ামু, যামু। আমার নতুন কইরা কিভাবে সংসার পাতুম। বড় মেয়াটা স্কুলে যায় হেরেই বা কেমনে পড়ামু। দুই চোখে সামনে শুধু অন্ধকার দেখছি। আমার ঘর যখন পুড়ে যায় তহন খালি দাঁড়ায়া চিল্লাইছি, কিন্তু কিছু করতে পারি নাই।'

আরও পড়ুন: 'স্বাধীনতার পর এমন আগুন আর দেখিনি'

ইয়াসমিনের স্বামী কালো মিয়া বলেন, 'দুই জন মিলা অল্প টেহা আয় করি। হেন তো সব শেষ। এহন যদি সরকার আমাগো সাহায্য না করে তাইলে রাস্তায় বইসা না খায়া দুই মাইয়া লইয়া মরতে হইব।'

ইয়াসমিন ও কালোর মতো সর্বস্ব হারিয়ে ধ্বংস স্তূপের দাঁড়িয়ে এমনইভাবে আহাজারি করছেন হাজারো মানুষ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর