ভয়ঙ্কর ফোনির প্রভাবে সমুদ্রবন্দরে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত

ঢাকা, জাতীয়

শাদরুল আবেদীন ও আবু হোসেন ‍সুমন | 2023-08-28 23:58:21

ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় ফোনির প্রভাবে উত্তাল হয়ে উঠেছে বঙ্গোপসাগর। পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত এ ঘূর্ণিঝড়টি ক্রমেই শক্তি সঞ্চার করে অগ্রসর হতে থাকায় দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বর থেকে বাড়িয়ে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মাছ ধরার নৌযানগুলোকে উপকূলের নিকটবর্তী থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) আবহাওয়া অফিস সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। এদিন সকাল ৯ টার দিকে ভয়ঙ্কর এ ঘূর্ণিঝড় ফোনি চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে প্রায় এক হাজার ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর/উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার ঝড়ো হাওয়া ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকার উপর দিয়ে হালকা-মাঝারি ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে শুরু করলেও আকাশ এখনো রোদ্রজ্জল রয়েছে।

আবহাওয়াবিদ একেএম রুহুল কুদ্দুস জানান, ঘূর্ণিঝড় ফোনি ভয়ঙ্কর আকারে রূপ নিয়েছে। দ্রুত গতিতে বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসছে। এটি মূলত ভারতের ওড়িশায় আঘাত হানবে, তবে বাংলাদেশেও এর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। আগামী শনিবার (৪ মে) বা রোববার (৫ মে) ফোনি আঘাত হানতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় ফোনির আঘাত হানার সম্পর্কে সর্তকতা ও প্রস্তুতি গ্রহণ কার্যক্রম শুরু করেছে মংলা, কক্সবাজার, চট্টগ্রামের বন্দর ও পৌর কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রশাসন।

এ বিষয়ে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার দুরুল হুদা বার্তা২৪.কমকে বলেন, `যেহেতু ঝড়টি এখনো বেশ দূরে রয়েছে। তারপরও আমরা ঝড়ের গতিবিধি মনিটরিং করছি। বুধবার বন্দরে বিদেশি জাহাজ আগমন ও নির্গমন এবং অবস্থানরত জাহাজের পণ্য বোঝাই-খালাস কাজ স্বাভাবিক রয়েছে। বন্দরে অবস্থানরত বিদেশি জাহাজসহ সকল নৌযানগুলোকে সতর্কতাবস্থায় রাখার জন্য ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া চট্রগ্রাম থেকে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডের জাহাজগুলো মংলায় নিরাপদ স্থানে চলে এসেছে।’

বন্দরের পক্ষ থেকে সকল ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। এছাড়া বৃহস্পতিবার (২ মে) থেকে বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ কিংবা সচল রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এদিকে মংলা উপজেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. নাহিদুজ্জামান বার্তা২৪.কম বলেন, `সর্তকতা সংকেত বাড়ায় বুধবার বিকেলে এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। বৈঠকে প্রস্তুতির সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। জরুরি ওই বৈঠকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহারসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং সিপিবি’র সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘সকল সরকারি কর্মকর্তাকে কর্মস্থল ত্যাগ না করার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া যারা দূরে আছে তাদেরকেও বিকেলের মধ্যে কর্মস্থলে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছে। মংলার ৭৮টি সাইক্লোন শেল্টার ছাড়াও বহুতল ভবনগুলোকেও আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার, পর্যাপ্ত শুকানো খাবার ও ওষুধ মজুদের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া সন্ধ্যা ৬টায় রামপাল উপজেলা পরিষদেও জরুরি সভা ডাকা হয়েছে।’

মংলা পোর্ট পৌরসভার মেয়র মো. জুলফিকার আলী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘ফোনির আঘাতের আশঙ্কা মাথা রেখে বুধবার দুপুরের জরুরি সভা সকল ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। দুপুরের পর থেকে পৌরসভার সকল ওয়ার্ডে মাইকিং করে জনসাধারণকে সতর্ক থাকার জন্য প্রচারণা চালানো হবে।’ 

আরও পড়ুন: ভয়ঙ্কর 'ফোনি' ওড়িশায় আঘাত হানবে, বাংলাদেশেও প্রভাব পড়বে

আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ‘ফোনি’র প্রভাবে সমুদ্রবন্দরে ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত

আরও পড়ুন: তীব্র গরমের পর আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘ফোনি’

এ সম্পর্কিত আরও খবর