ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে ডাকসু নেতাদের কাজ করার আহবান প্রধানমন্ত্রীর

ঢাকা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 21:36:50

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদে নবনির্বাচিত নেতাদের ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে একসঙ্গে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, কে ভোট দিল না দিল, সেটা দেখার দরকার নেই। হলে যারা জিতেছো তাদের দায়িত্ব হলের ভালোমন্দ দেখা। ডাকসুতে যারা জিতেছো তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালোমন্দ দেখা, এটাই তাদের দায়িত্ব। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীকে যারা জিতেছে, তাদের সহযোগিতা করতে হবে।

শনিবার (১৬ মার্চ) বিকালে গণভবনে ডাকসু ও হল সংসদের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও ডাকসুর নবনির্বাচিত সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) সাদ্দাম হোসাইন।

ডাকসু নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন যেন শান্তিপূর্ণ হয়, এখানে আমি কোনো বোমার আওয়াজ, গুলির আওয়াজ বা কোনো কিছু যেন না ঘটে, এ ব্যাপারে সবাইকে সদা সতর্ক থাকতে হবে। নির্বাচনে যেই অংশ গ্রহণ করবে, কে ভোট পেল, কে পেল না, তা নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই। আগে সুষ্ঠু একটা নির্বাচন হোক। ছাত্র-ছাত্রী যা চাইবে তাই হবে। এবং সেই পরিবেশটা যেন বজায় থাকে সেদিকেই বিশেষভাবে দৃষ্টি দিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিদিন অস্ত্রের ঝনঝনানি, অস্ত্রের আওয়াজ শোনা যেত। গুলি, বোমা নিয়মিত ব্যাপার ছিল। এই অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন থাকবে? সেখানে শিক্ষার পরিবেশ থাকবে। এমনকি খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় ঘোষণা দিয়েছিল, আওয়ামী লীগকে শিক্ষা দিতে তার ছাত্রদলই যথেষ্ট। তার জবাব আমরা দিয়েছিলাম ছত্রলীগের হাতে কলম তুলে দিয়ে; বলেছিলাম, অস্ত্রের চেয়ে কলমের জোর বেশি। সেটাই আমাদের প্রমাণ করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার পরিবেশটাই এমন ছিল- প্রতিপক্ষের হাতে অস্ত্র থাকলে আমাদের হাতেও কলম থাকতে হবে। সেখান থেকে আমরা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে রক্ষার আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। অন্তত এইটুকু বলতে পারি, গত ১০ বছরে এই অশুভ প্রতিযোগিতা হয় নাই। অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধ করতে পেরেছি।

সরকারপ্রধান বলেন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস এটা শুধু বাংলাদেশ না, বিশ্বব্যাপী একটা সমস্যা। আমরা গত ১০ বছরে যতগুলো ঘটনা ঘটেছে, একটার পর একটা মোকাবেলা করে এই জঙ্গি-সন্ত্রাস দমনে সফল হয়েছি। এটাও মনে রাখতে হবে, নিউজিল্যান্ডের মতো দেশে, যেখানে মানুষ অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছে, সেখানে যে অস্ত্রধারী ৪৯ জন মানুষকে হত্যা করলো, এর তীব্র নিন্দা আমরা জানাই। তাই একটা কিছু পেলেই যারা ওঁৎ পেতে আছে, তারা যে সুযোগ নেবে না, সে কথা তো কেউ বলতে পারবে না।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ঢাবি ভিসির বাসভবনে হামলার সমালোচনা করে তিনি বলেন, আন্দোলন তো আমরাও করেছি। ভিসির বাড়িতে হামলা, আগুন দেওয়ার ঘটনা তো আমরা কখনো দেখি নাই। ভিসির বাড়িতে সরাসরি আক্রমণ কখনও হয় নাই। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সেটা ঘটেছে।

নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অন্যরা প্রবেশ করেছিল মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা ছিল সুযোগসন্ধানী। তারা যদি কোনো খুন-খারাবি করে, অশুভ কোনো ঘটনা ঘটায়, তাহলে এর দায়ভার কে নেবে? সব দায় তো সরকারের উপরেই পড়বে। এটা কি আমরা হতে দিতে পারি? সেজন্য আমাদের ব্যবস্থা নিতে হয়েছিল। ছাত্রদের আমরা ডাক দিয়েছি, তারা ফিরে গেছে। কিন্তু এই ধরনের সুযোগসন্ধানী আছে, সব সময়ই থাকবে, এটা থাকেই। আন্দোলনে এটাই সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয়। যেন কেউ ঢুকে গিয়ে অশুভ ঘটনা না ঘটায়, সেজন্য যারা এসব (আন্দোলনের) বিষয়ে নেতৃত্ব দেবে তাদের সচেতন থাকতে হবে।

বৈঠক শুরুর আগে নুরুল হক নুর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পা ছুঁয়ে সালাম করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী তার মাথায় হাত রেখে আশীর্বাদ করেন।

আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ডাকসু নেতাদের বৈঠক শুরু

আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার পাশে নুর

এ সম্পর্কিত আরও খবর