ভুলতা ফ্লাইওভারের (ঢাকা বাইপাস অংশ), কাঁচপুর দ্বিতীয় সেতু ও গাজীপুরের লতিফপুর রেলওয়ে ওভারপাসের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (১৬ মার্চ) সকালে গণভবনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই তিন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু নিয়ে আমাদের মন্ত্রী (সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী) ওবায়দুল কাদেরের অনেক আগ্রহ ছিল। কথা ছিল সেখানে গিয়ে আমি ব্রিজটি উদ্বোধন করব। কিন্তু দুর্ভাগ্য, কাদের হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি ফিরে এলে তাকে নিয়ে ব্রিজ পরিদর্শনে যাব।
সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ওবায়দুল কাদেরের জন্য দোয়া চান শেখ হাসিনা। বলেন, ওবায়দুল কাদেরের জন্য দোয়া করবেন, যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে এসে পুরো উদ্যোমে কাজ করতে পারেন।
চালকদের কারণে অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে মন্তব্য করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘দেখা যায় চালক ক্লান্ত, গাড়ি চালাতে দেন হেলপারকে। এটাও একটা অপরাধ। হেলপারের লাইসেন্স আছে কি-না সেটাও দেখতে হবে।’
সেতুতে ওয়েট মেশিনের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক সেতুতে ওয়েট মেশিন থাকা দরকার। যানবাহনগুলো ওভারলোডেড কি না তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। এছাড়া আমাদের তো বিকল্প ব্যবস্থাও রয়েছে। যেসব পণ্য দ্রুত পচনশীল না সেসব যানবাহন ফেরির মাধ্যমে পারাপার করার ব্যবস্থা নিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য উন্নয়ন। উন্নয়নের জন্য আমরা অনেকগুলো মেগাপ্রকল্প হাতে নিয়েছি। শুধু শহর নয়, আমরা গ্রামেরও উন্নয়ন চাই।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকার ও জাইকার অর্থায়নে নির্মিত ৩৯৭ দশমিক ৩ মিটার দৈর্ঘ্যের চার লেন বিশিষ্ট দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৯৫০ কোটি টাকা। আগের কাঁচপুর সেতুর সমান উচ্চতায় এই সেতু নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। বাংলাদেশে এই প্রথম এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে।
আগের কাঁচপুর সেতু পুনর্নির্মাণের ফলে এর আয়ুষ্কাল নির্ধারিত ৫০ বছর মেয়াদের সঙ্গে আরও ৪০ বছর বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
দ্বিতীয় কাঁচপুর নির্মাণের ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট যেতে এখানকার দীর্ঘদিনের যানজট, দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেল মানুষ।
উদ্বোধন হওয়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতায় চারলেন বিশিষ্ট ফ্লাইওভার নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩৫৩ দশমিক ৩৬ কোটি টাকা। এছাড়া জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা মহাসড়কে ৫৪ দশমিক ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে লতিফপুর রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ করা হয়েছে।
উন্নয়ন প্রকল্পগুলো উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী ওইসব এলাকার জনপ্রতিনিধি, জেলা প্রশাসক ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।