ময়মনসিংহে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সামনে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ, বিচার বহির্ভূতভাবে আদালতের এজলাস বন্ধ রাখার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) আদালত বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন আইনজীবীরা।
বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন খান। বর্তমান জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রেজাউল করিম কর্তৃক কর্মচারীদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের প্রতিবাদে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানান তিনি। এ সময় সকল দলের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, শান্তা রহমান সঞ্চিতা নামের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এক কর্মচারী আইনজীবীদের ‘কালো পোশাকের কুকুর’ বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কটূক্তি করেছে। তাই অবিলম্বে তার গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে আইনজীবীরা। শান্তার বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলাও দায়ের করেছেন তারা।
জানা যায়, জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী-কর্মচারীদের বিরোধের জের ধরে বুধবার সকাল থেকেই ছিল উত্তেজনা। সকল আদালতের এজলাস কক্ষ কর্তৃত্ব বহির্ভূত ও বেআইনিভাবে তালা লাগিয়ে বিচারিক কার্যক্রমকে বাঁধাগ্রস্ত করায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন আইনজীবীরা।
সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কর্মচারীরা এজলাসে তালা লাগিয়ে কর্মবিরতি পালন করায় আদালতে যেতে পারেননি আইনজীবীরা। এ কারণে দিনভর ময়মনসিংহ আদালতের কার্যক্রমে স্থবিরতা ছিল। ফলে বিচারপ্রার্থীরা শিকার হন বিড়ম্বনার।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বদর উদ্দিন আহম্মেদ জানান, সরকারি জায়গায় অনুমতি ছাড়াই অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের প্রতিবাদ করায় আইনজীবীদের ওপর হামলা করেছে কর্মচারীরা। কর্মচারীদের সকল অবৈধ স্থাপনা অবিলম্বে অপসারণ, হামলাকারী কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও প্রচলিত আইনে বিচার এবং আইনজীবীদের নিয়ে মানহানিকর মন্তব্যকারীকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।
সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন খান জানান, আদালতের কর্মচারীরা বেপরোয়া হয়ে গেছে। তারা এখন দ্বিগুণ বেতন পেয়েও ঘুষ নেয়। কেউ এদের ঘুষ দেবেন না। যদি কোনো আইনজীবী বা মুহুরি এদের ঘুষ দেয় তবে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করাকে কেন্দ্র করে আইনজীবী ও কর্মচারীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়।