অর্থ পাচারে দায়ে তিন কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা

ঢাকা, জাতীয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 10:16:18

৯১৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা বিদেশে পাচারের দায়ে ক্রিসেন্ট লেদার প্রোডাক্টস ও ক্রিসেন্ট ট্যানারিজ এবং রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের বিরুদ্ধে মামলা করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর।

কোম্পানি তিনটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও চেয়ারম্যান এবং জনতা ব্যাংকের ১৩ অফিসারসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দায়ের করেছে এনবিআর। অর্থ পাচারের তালিকায় আরও ১০-১২টি কোম্পানির নাম রয়েছে। শিগগিরই প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।

তিনি বলেন, 'বিদেশে অর্থ পাচারের দায়ে ক্রিসেন্ট লেদার প্রোডাক্টস লিমিটেড ও ক্রিসেন্ট ট্যানারিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম এ কাদেরকে আটক করা হয়েছে। এছাড়াও ক্রিসেন্ট লেদার ও ট্যানারিজের এমডি এবং রিমেক্স ফুটওয়ারে চেয়ারম্যান ও এমডিসহ এর সঙ্গে জড়িত ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।'

এ তালিকায় আরও এক ডজন প্রতিষ্ঠান রয়েছে। শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংক, দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক) এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনী মিলে সব ধরনের তথ্য প্রমাণের পর তাদের গ্রেফতার করা হবে বলে জানান এনবিআর চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, 'মাদকের মতোই অর্থ পাচারও বিষাক্ত। এ থেকে দেশকে বাঁচাতে হবে।'

দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ ও রফতানির সুযোগ থাকার পরও কেন টাকা পাচার হচ্ছে এমন প্রশ্নে এনবিআর প্রধান বলেন, 'যারা টাকা পাচার করেন, তারা ভোগ করতে পারেন না। আমরা আগে শুনতাম সুইস ব্যাংকে টাকা রাখার ঘটনা। কিন্তু তারাও টাকা ফেরত দেয় না। অথচ অনেকে দেশের ব্যাংকের টাকা লুট করে নিয়ে যাচ্ছে।'

সূত্র জানায়, ক্রিসেন্ট গ্রুপের তিন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ক্রিসেন্ট লেদার ৪২২ কোটি ৪৬ লাখ, রিমেক্স ফুটওয়্যার ৪৮১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ও ক্রিসেন্ট ট্যানারিজ ১৫ কোটি ৮৪ লাখ বিদেশে পাচার করেছে। এই অর্থ পাচারের অভিযোগে বুধবার (৩০ জানুয়ারি) রাজধানীর চকবাজার থানায় প্রতিষ্ঠান তিনটির নামে আলাদা আলাদা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে ক্রিসেন্ট লেদার ও ট্যানারিজের চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

আর রিমেক্স ফুটওয়্যারের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ, এমডি লিটুল জাহান (মিরা), ক্রিসেন্ট লেদার প্রোডাক্টস ও ক্রিসেন্ট ট্যানারিজের এমডি সুলতানা বেগম মনিকে মামলার আসামি করা হয়েছে।

অর্থ পাচারের ঘটনায় জনতা ব্যাংক ইমামগঞ্জ কর্পোরেট শাখার কর্মকর্তা ও ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের এফটিডির (এক্সপোর্ট) তৎকালীন ডিজিএম ও জিএম এবং বিভাগীয় কার্যালয়ের জিএম জড়িত থাকায় মোট ১৩জনের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে।

এরা হচ্ছেন- জনতা ব্যাংকের জিএম মো. রেজাউল করিম, সাবেক জিএম মো. জাকির হোসেন (বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের ডিএমডি), ফখরুল আলম (ডিএমডি, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক), ডিজিএম কাজী রইস উদ্দিন আহমেদ, এ কে এম আসাদুজ্জামান ও মো. ইকবাল, এজিএম মো. আতাউর রহমান সরকার, সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মো. খায়রুল আমিন ও মো. মগরেব আলী, প্রিন্সিপাল অফিসার মুহাম্মদ রুহুল আমিন, সিনিয়র অফিসার মো. আবদুল্লাহ আল মামুন, মো. মনিরুজ্জামান ও মো. সাইদুজ্জাহানকে আসামি করা হয়েছে।

এদের মধ্যে এজিএম আতাউর থেকে পরের সবাইকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর