সাদ মুসা গ্রুপের এমডির সস্ত্রীক দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

, জাতীয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো | 2024-04-23 20:26:14

বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ৩০০০ কোটি টাকা ঋণ খেলাপির মামলায় চট্টগ্রাম-কেন্দ্রিক শিল্প গ্রুপ সাদ মুসা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ মহসিন এবং তাঁর স্ত্রী শামীমা নার্গিস চৌধুরীর বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালত।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড খাতুনগঞ্জ শাখার মামলার প্রেক্ষিতে অর্থঋণ আদালতের জজ (যুগ্ম জেলা জজ) মুজাহিদুর রহমান এই রায় দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আদেশের কপি বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন), বিশেষ শাখায় পাঠানো হচ্ছে।

বাদী পক্ষের গত ১৪ এপ্রিল দরখাস্ত ও বিবাদী পক্ষের গত ৩ এপ্রিল দেওয়া লিখিত আপত্তির শুনানীর জন্য ধার্য ছিল। এ সময় বাদি হাজিরা দিয়েছেন। তবে বিবাদী পক্ষ লিখিত জবাব দাখিলের জন্য সময়ের আবেদন করেন। আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর রায় দেন।

এ সময় বাদী পক্ষের বিজ্ঞ আইনজীবী আদালতের উদ্দেশে বলেন ৮৩ কোটি ২০ লাখ ৩৬ হাজার ৬৫৫ টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড খাতুনগঞ্জ শাখা এই মামলা দায়ের করে। সুদ মওকুফ সুবিধাসহ নালিশি ঋণ দুই বার পুনঃতপশীল হওয়ার পরও আসামিরা ব্যাংকের পাওনা পরিশোধে এগিয়ে আসছে না। বাদী ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের খেলাপি ঋণ আদায়ের দাবিতে আসামিদের বিরুদ্ধে এই আদালতে অন্তত ১০টি মামলা চলমান আছে। মামলাগুলোতে বিবাদীদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দাবিকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৩০০০ কোটি টাকার কম নয়। বিবাদীগণ ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ পরিশোধ না করে দেশত্যাগের পাঁয়তারা করছেন। তারা দেশত্যাগের সুযোগ পেলে বাদী ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের বিপুল পরিমাণ খেলাপি ঋণ আদায় অযোগ্য হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

অন্যদিকে সাদ মুসা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ মহসিনের আইনজীবী বলেন, বিবাদী দেশের একজন শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী এবং শিল্প উদ্যোক্তা। টেক্সটাইল শিল্পে বিপুল বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের রফতানি বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পরিশোধ করেছেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন। তিনি ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি নন। কোভিড মহামারিসহ রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দার কারণে ব্যবসায়িক বিপর্যয় হওয়ায় যথাসময়ে ঋণ পরিশোধ করতে পারেননি। ঋণের বিপরীতে মূল্যবান সম্পত্তি ব্যাংকের নিকট বন্ধক রয়েছে। বিবাদীগণের দেশত্যাগের কোনো ইচ্ছা নেই। দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হলে বিবাদীগণের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হবে।

এরপরই আদালত পর্যবেক্ষণ দেন। আদালত বলেন, নথি পর্যালোচনায় দেখা যায় নালিশি ঋণ দুই দফা পুনঃতফসিল করা হলেও বিবাদীরা ঋণ পরিশোধে এগিয়ে আসেননি। বন্ধককৃত সম্পত্তি দ্বারা সম্ভাব্য ডিক্রি পরিতুষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। সুদ মওকুফসহ পুনঃতফসিল সুবিধা লাভের পরও বিবাদীরা নালিশি ঋণের কিয়দাংশও পরিশোধ না করায় প্রতীয়মান হয় ২ নম্বর বিবাদী (মোহাম্মদ মহসিন) একজন ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি। তাই এই বিবাদীর বিদেশ গমনের অধিকার বিচারিক সিদ্ধান্তের অধীন থাকা সমীচীন মনে করি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর