গণমাধ্যমকে ইউরোপের মতো গড়তে চান নতুন তথ্যমন্ত্রী

ঢাকা, জাতীয়

তপন কান্তি রায়, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-12-31 18:07:32

দেশে গণমাধ্যমের বিপ্লব ঘটেছে। পাশাপাশি গণমাধ্যম যথেষ্ট স্বাধীন। তবে একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় স্বপ্নের বাংলাদেশ নির্মাণে দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও দায়িত্ববোধ উভয়কে ইউরোপের মতো জায়গায় নিয়ে যেতে চান তথ্যমন্ত্রী ড. মো. হাছান মাহমুদ।

একই সঙ্গে গণমাধ্যমের অভাব-অভিযোগগুলোর সমাধান ও অসুবিধা দূর করার জন্য কাজ করারও ইচ্ছা প্রকাশ করেন নতুন এই তথ্যমন্ত্রী। মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) রাতে বার্তা২৪কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন হাছান মাহমুদ।

দেশের গণমাধ্যম নিয়ে পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যম হচ্ছে রাষ্ট্রের চতুর্থ অঙ্গ। রাষ্ট্রের এক্সিকিউটিভ, ম্যাজিস্ট্রেট ও জুডিশিয়ারি এই তিনটি অঙ্গের পাশাপাশি গণমাধ্যম হচ্ছে রাষ্ট্রের চতুর্থ অঙ্গ। রাষ্ট্রের এক্সিকিউটিভ অথরিটির সাথে যদি রাষ্ট্রের চতুর্থ অঙ্গ গণমাধ্যমের কাজের সমন্বয় না থাকে; তাহলে রাষ্ট্র ও সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’

 

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশে ইলেকট্রনিক মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া ও অনলাইন মিডিয়ার বিকাশ ঘটেছে। এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিপ্লব ঘটেছে। এভাবে গণমাধ্যমের বিস্তৃতির পাশাপাশি সামনে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ এসে দাঁড়িয়েছে। সেই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করার জন্য; আমাদের সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।’

গণমাধ্যমের ভূমিকা সম্পর্কে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘রাষ্ট্রকে সঠিক পথে পরিচালিত করার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের একটা বিশাল ভূমিকা আছে। মানুষের মনন সঠিক খাতে প্রবাহিত করার কাজের ক্ষেত্রে যেমন গণমাধ্যমের বিশাল ভূমিকা রয়েছে। আবার গণমাধ্যমের যে কোনো কারণে ভুল বা অসত্য সংবাদ সমাজের ক্ষতিও করতে পারে।’

‘এই সমস্ত চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করার জন্য রাষ্ট্রের সাথে গণমাধ্যমের সমন্বয় ও বোঝাপড়া প্রয়োজন আছে; যেটি আমাদের দেশে আছে; এটিকে আরও বিস্তৃত করতে হবে।’

গণমাধ্যমের অভিযোগ সম্পর্কে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গণমাধ্যমকর্মীদের অনেক অভাব-অভিযোগ রয়েছে। কিছু গণমাধ্যম ভালো কিন্তু রুগ্ন। এসব গণমাধ্যমের অভাব-অভিযোগও আছে; সেগুলোকে নিয়ে কিভাবে কাজ করা যায় এবং একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য গণমাধ্যম নিয়ে কাজ করতে হবে। সরকারের পক্ষে একা স্বপ্নের বাংলাদেশ করা সম্ভব নয়, এর জন্য গণমাধ্যমের সহায়তা প্রয়োজন।'

মন্ত্রী হিসেবে কোনো বিষয়গুলো চ্যালেঞ্জ মনে করছেন জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমার পূর্বসূরী অনেক ভালো কাজ করেছেন; অনেকগুলো কাজ এগিয়ে রেখেছেন; কিছু কাজ অসমাপ্ত রয়েছে; সেগুলো সমাপ্ত করা। একইসঙ্গে গণমাধ্যম নিয়ে নতুন পরিকল্পনার বিষয়গুলো মন্ত্রণালয়ের সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করবো।'

বর্তমানে দেশের গণমাধ্যম যথেষ্ট স্বাধীনতা ভোগ করছে বলে মনে করেন তথ্যমন্ত্রী। তবে দেশের গণমাধ্যমকে গণমাধ্যমের কর্তব্য ও সরকারের কর্তব্য সম্পর্কেও সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের গণমাধ্যমের যেমন স্বাধীনতা প্রয়োজন, একই সাথে গণমাধ্যমের কর্তব্য ও সরকারের কর্তব্য সম্পর্কেও সচেতন থাকা প্রয়োজন। গণমাধ্যমের কর্তব্য রাষ্ট্র ও সামাজের প্রতি। আমাদেরও গণমাধ্যমের কর্তব্য সম্পর্কে সজাগ থাকা প্রয়োজন।’

‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও দায়িত্ববোধ দুটিকেই ইউরোপের মতো, ইংল্যান্ডের মতো জায়গায় নিয়ে যেতে চাই। এই ক্ষেত্রে আপনাদের (গণমাধ্যম) সঙ্গে আমরা এগোতে চাই।'

এ সম্পর্কিত আরও খবর