এটি কোনো খাল বা নালা নয়

খুলনা, জাতীয়

শরিফুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-26 08:09:41

প্রথমে দেখলে আপনার মনে হতে পারে এটি একটি খাল বা নালা! প্রকৃত পক্ষে এটি কোনো খাল বা নালা নয়। মূলত এটি একটি সড়ক। নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার সত্রহাজারী-ব্রাহ্মণডাঙ্গা সড়ক কাটার পর কার্পেটিং না করায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

ওই সড়কটি কার্পেটিংয়ের নামে এক বছরের অধিক সময় ধরে এ অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে। যার ফলে এই সড়ক দিয়ে মানুষ হেঁটেও চলাচল করতে পারছে না। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হন স্থানীয়রা। বিশেষ করে রিকশা ও মোটরসাইকেল চালকরা বেশি দুর্ঘটনার শিকার হন। এ সড়কে দুর্ভোগের যেন শেষ নেই এলাকাবাসীর।

লোহাগড়া উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, লোহাগড়া উপজেলার সত্রহাজারী বাজার থেকে ব্রাহ্মণডাঙ্গা বাজারের দূরত্ব ৭ কিলোমিটার। ইতোমধ্যে সড়কটির ৫ কিলোমিটার পাকা হলেও হান্দলা গ্রামের মধ্যে ২ কিলোমিটার সড়ক কাঁচা থাকায় চলাচলে ভীষণ অসুবিধা হয়।

২০১৭ সালের আগস্ট মাসে সড়কটি কার্পেটিংয়ের জন্য এলজিইডি দরপত্র আহ্বান করে। কাজটি পান ফরিদপুরের ঠিকাদার আকরাম হোসেন রাজা। তিনি গত বছরের অক্টোবরের দিকে রাস্তাটি গর্ত করে কেটে ফেলে রেখে দেন। ওই রাস্তায় প্রথমে বালু ভরাট এবং পরে বালু ও খোয়া মিশ্রিত করে পর্যায়ক্রমে কার্পেটিংয়ের কাজ করার কথা ছিল। তবে ঠিকাদারের অবহেলা ও গাফিলতির কারণে রাস্তাটি এভাবেই পড়ে রয়েছে এক বছর ধরে।

স্থানীয় আলমগীর হোসেন বলেন, ‘এখন বৃষ্টির সময় না হলেও আমাদের কাদা-মাটির মধ্য দিয়ে যাওয়া-আসা করতে হয়। এক ব্যক্তির জন্য কয়েক হাজার মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হলেও সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের।’

স্কুল শিক্ষক মনিরুজ্জামান বলেন, ‘এ দুর্ভোগ থেকে রক্ষার জন্য জেলা প্রশাসক ও এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে দেখা করেছি। কিন্তু ঠিকাদার কাজ করবে বললেও কিছুই করছে না।’

নোয়াগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুর রহমান কালু বলেন, ‘সরকার দেশব্যাপী সড়কের অনেক উন্নয়ন করছেন। কিন্তু এই ঠিকাদারের কারণে আমাদের এলাকায় কাজ হচ্ছে না। এতে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। শুনেছি ওই ঠিকাদার নড়াইলের বিভিন্ন এলাকায় কমপক্ষে ২০টি রাস্তা এভাবেই ফেলে রেখেছে। বিষয়টিতে দৃষ্টি দেয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানাচ্ছি।’

লোহাগড়া উপজেলা প্রকৌশলী সেয়দ মোশারেফ হোসেন জানান, ফরিদপুরের ঠিকাদার আকরাম হোসেন রাজা কাজটি পান এবং বাস্তবায়নের জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। রাস্তাটির দুই কিলোমিটার কেটে ফেললেও তিনি আর বালু ভরাট বা অন্যান্য কাজ না করায় মানুষের দুর্ভোগের কোনো শেষ নেই। তবে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার দ্রুত কাজ শুরু না করলে পুনরায় দরপত্র আহ্বান করে এ অর্থবছরেই কাজ শেষ করা হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর