আভিধানিক অর্থে ‘শ্রমিকরা’ বা শ্রমিক সংঘ যখন কোনো নির্দিষ্ট দাবি আদায় করার জন্য কাজ বন্ধ রেখে শান্তিপূর্ণ অবস্থান করে তখন তাকে ধর্মঘট বলে। আর সড়ক অবরোধ হচ্ছে, দাবি আদায় করার জন্য রাস্তা বন্ধ করে দেয়া।
সারা দেশে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট চললেও ঝিনাইদহে যেন চলছে সড়ক অবরোধ।
শ্রমিক নেতাদের ঘোষণা অনুযায়ী শুধুমাত্র ইঞ্জিনচালিত যান বন্ধের কথা থাকলেও ঝিনাইদহে চলতে দেয়া হচ্ছে না ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত ভ্যানও।
শহরের বাস টার্মিনাল, আরাপপুর, চুয়াডাঙ্গা স্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন স্থান থেকে ইজিবাইকে আসা যাত্রীদের শহরের মুখে নামিয়ে দেয়া হচ্ছে। গালি-গালাজ করা হচ্ছে ইজিবাইক চালক ও ভ্যানচালকদের। শ্রমিকদের এই আচরণে ক্ষুব্ধ যাত্রীরা।
শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ থেকে মাগুরাগামী যাত্রী রাশিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি অনেক কষ্ট করে একটি ইজিবাইকে উঠেছিলাম। ঝিনাইদহ শহরে আসার আগেই শ্রমিকরা আমাদের ইজিবাইক থেকে নামিয়ে দেয়।’
শহর থেকে মাগুরাগামী এক যাত্রী বলেন, ‘২ কিলোমিটার পথ হেঁটে একটি ব্যাটারি চালিত ভ্যানে উঠেছিলাম। বাস টার্মিনালে আসার পর এখানকার শ্রমিকরা আমাদের নামিয়ে দিয়ে ভ্যানচালকদের গালি-গালাজ শুরু করে।’
শ্রমিকদের এই আচরণ থেকে বাদ যাইনি পান ব্যবসায়ীও। বাস টার্মিনাল এলাকায় এক ব্যবসায়ীর পান বোঝাই ভ্যান আটকে দেয়া হয়।
অনেক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে শ্রমিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘ধর্মঘট পালন করবেন করেন। ইজিবাইক, ভ্যানচালকদের চলতে বাধা দিচ্ছেন কেন?’
জানা গেছে, সড়ক পরিবহন আইনের কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ ৮ দফা দাবিতে সারা দেশে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট পালন করছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। আর পরিবহন ধর্মঘটের কারণে অচল হয়ে পড়েছে ঝিনাইদহের জনজীবন। জেলা থেকে ঢাকাগামী পরিবহনসহ দূরপাল্লা ও স্থানীয় সকল রুটের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। রোববার সকাল থেকে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ধর্মঘটের কারণে যানবাহন চলাচল না করায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
ঝিনাইদহ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সাগর বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমরা তো ইজিবাইক, ভ্যান চালকদের চলতে কোনো বাধা দিচ্ছি না।’