এনামুল বাছির কারাগারে

, আইন-আদালত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-25 03:49:33

৪০ লাখ টাকার ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাম‌য়িক বরখাস্ত পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) তাকে ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা। অপরদিকে তার আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন।

কারাগারে পাঠানোর আবেদনে বলা হয়, মামলার আলামত নষ্ট করাসহ সাক্ষীদের প্রভাবিত করারও চেষ্টা করেছেন তিনি। তাকে জামিন দেওয়া হলে মামলার আদালত নষ্ট করাসহ তদন্তে ব্যাঘাত ঘটবে। ঘুষের ৪০ লাখ টাকার তথ্য গোপন করেন বাছির। এছাড়া তিনি দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করেছিলেন।

জামিন শুনানিতে এনামুল বাছিরের আইনজীবী কবির আহমেদ বলেন, ‘বাছির কোনো ঘুষ খাননি। তার একাউন্টে বেতনের টাকা ছাড়া আর কোনো টাকা ঢুকেনি। ডিআইজি মিজান তাকে ফাঁসানোর জন্য এমন তথ্য দিয়েছেন।’

শুনানি শেষে সংশ্লিষ্ট আদালতে বিচারক কেএম ইমরুল কায়েশ জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বাছিরকে ডিভিশন দেওয়ার আবেদন করা হলে বিচারক জেল কোড অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও দুদক পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যা ঢাকার এক নম্বর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন। বিষয়‌টি নিশ্চিত করে‌ছেন দুদকের উপপ‌রিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য।

গত ১৬ জুলাই ডিআইজি মিজান ও দুদক প‌রিচালক এনামুল বা‌ছি‌রের বিরু‌দ্ধে মামলাটি করে দুদক।

এর আগে একই মামলায় গত ১ জুলাই ডিআইজি মিজানের আগাম জামিনের আবেদন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এসএম কুদ্দুস জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ নামঞ্জুর ক‌রে পুলিশে দেন। তাকে আদালতে আনা হলে ঢাকা মহানগরের সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক কেএম ইমরুল কায়েস কারাগারে পাঠান। প‌রে গত ৪ জুলাই মিজা‌নের ভাগ্নে পু‌লি‌শের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হাসানকেও কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

জানা যায়, মিজা‌নের দুর্নী‌তির অভিযোগ থেকে রেহাই পেতে তৎকালীন অনুসন্ধান কর্মকর্তা এনামুল বাছিরকে ৪০ লাখ টাক ঘুষ দেওয়ার বিষয়‌টি উঠে আসে গণমাধ্য‌মে। অভিযোগ উঠার পর দুইজনই তাদের নিজেদের সংস্থা থেকে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন। অভিযোগ উঠায় গত ১২ জুন বাছিরকে সরিয়ে দুদকের আরেক পরিচালক মো. মঞ্জুর মোরশেদকে অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়।

অনুসন্ধা‌নে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩ মে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে প্রথম ডিআইজি মিজানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। প্রথমে অনুসন্ধান কর্মকর্তা ছিলেন দুদকের উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী; পরে এই দায়িত্ব পে‌য়ে‌ছি‌লেন বরখাস্তকৃত দুদক প‌রিচালক এনামুল বাছির।

ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠার পর গত ১২ জুন তাকে সরিয়ে দুদকের আরেক পরিচালক মো. মঞ্জুর মোরশেদকে অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়। অনুসন্ধান শেষে তিনি ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা করে দুদক। মামলায় তিন কোটি সাত লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও তিন কোটি ২৮ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগ আনা হয় ডিআইজি মিজান, তার স্ত্রী, ভাই ও ভাগ্নের বিরুদ্ধে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর