ওসি মোয়াজ্জেমকে ভিডিও কপি দেওয়ার নির্দেশ

, আইন-আদালত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-31 01:49:51

ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেমের পক্ষ থেকে আবেদনের প্রেক্ষিতে তার সঙ্গে মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির কথোপকথনের ভিডিও’র কপি তাকে (ওসি মোয়াজ্জেমকে) দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

রোববার (৩০ জুন) মামলার চার্জ শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। এদিন ওসি মোয়াজ্জেমের পক্ষে তার আইনজীবী আবু সাঈদ সাগর ও ফারুক আহমেদ আদালতে দাখিল করা ভিডিও’র সার্টিফায়েড কপির জন্য আবেদন করেন। তারা বলেন, চার্জ শুনানির আগে এ ভিডিওটি দেখা দরকার।

এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম এ ধরনের ডিজিটাল ডিভাইসের কপি দেওয়ার বিধান নেই উল্লেখ করে তীব্র বিরোধীতা করেন। এছাড়া আদালত কক্ষে আসামির সঙ্গে আইনজীবীদের কথা বলার সুযোগ চেয়ে করা আবেদন নাকচ করে দেন।

তবে শুনানি শেষে সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস শামস জগলুল হোসেনের আদালত সিডি আকারে ভিডিও’র সার্টিফায়েড কপি জমা আসামিপক্ষকে দেওয়ার নির্দেশ দেন।’

গত ১৬ ‍জুন বিকেলে হাইকোর্ট এলাকা থেকে ওসি মোয়াজ্জেমকে গ্রেফতার করে শাহবাগ থানা পুলিশ। পরদিন তাকে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে বিচারক জামিনের আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গত ১৫ এপ্রিল সোনাগাজী থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয় ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে। তার বিরুদ্ধে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুর হক সুমন।

ওইদিন সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস শামস জগলুল হোসেন বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করে ঘটনাটি তদন্ত করতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন।

পিআইবি ঘটনা তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায় ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এর ভিত্তিতে গত ২৭ মে ট্রাইব্যুনাল প্রতিবেদন আমলে নিয়ে ওসি মোয়াজ্জেমকে গ্রেফতারে পরোয়ানা জারি করেছিলেন।

জবানবন্দি দেওয়ার সময় বাদী সুমন বলেছিলেন, ‘যৌন হয়রানির বিষয়ে নুসরাত থানায় অভিযোগ করতে গেলে, আসামিসহ তাকে থানায় নেওয়া হয়। সেই সময় ওসি মোয়াজ্জেম তাকে আপত্তিকর জেরা করেন ও জেরার ভিডিও তার মুঠোফোনে ধারণ করেন। নুসরাতের মৃত্যুর পরদিন ১১ এপ্রিল বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ায় সে ভিডিও ছেড়ে দেন তিনি। থানার ভেতরে এমন ভিডিও ধারণ করা ও সোস্যাল মিডিয়ার ছড়িয়ে দেওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী অপরাধ।’

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৭মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলার নামে থানায় অভিযোগ করা হয়। পরে পুলিশ মাদরাসা অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলাকে আটক করে। গত ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা ৫ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে মারা যায় নুসরাত জাহান রাফি।

আরও পড়ুন: মৃত্যুর কাছে হার মানল মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত

আরও পড়ুন: পরোয়ানা এসেছে, ওসি মোয়াজ্জেম আসেননি


আরও পড়ুন: আদালতে অভিযোগ অস্বীকার করলেন ওসি মোয়াজ্জেম

আরও পড়ুন: ওসি মোয়াজ্জেমের নিরাপত্তা-বেশভূষা নিয়ে আদালত চত্বরে প্রশ্ন

আরও পড়ুন: মাদরাসা ছাত্রীর অবস্থার উন্নতি দেখছেন না চিকিৎসকরা

এ সম্পর্কিত আরও খবর