মিতু হত্যা: সাক্ষ্য দিলেন বাবুল আক্তারের বন্ধু সাইফুল

, আইন-আদালত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম | 2023-09-01 11:03:49

চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যা মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের বন্ধু সাইফুল ইসলাম। সাক্ষ্যতে মিতু হত্যার পর বাবুল আক্তারের নির্দেশে কর্মচারী মোকলেছুর রহমান ইরাদের মাধ্যমে তিন লাখ টাকা লেনদেনের তথ্য উঠে আসে।

মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে সাইফুল এই সাক্ষ্য দেন।

আদালতকে সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি আগে প্রিন্টিংয়ের ব্যবসা করতাম। প্রতিষ্ঠানের নাম ছিলো মান্টিব্যাক প্রিন্ট এন্ড হক লিমিটেড। উক্ত ব্যবসায়ের অবস্থান ছিলো মোহাম্মদপুরের বসিলায়। আমি ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী শিক্ষা বিভাগে পড়াকালীন বাবুল আক্তারের সঙ্গে আমার হৃদ্যতার সম্পর্ক গড়ে উঠে। আমি লেখাপড়া শেষে চাকরি করাকালীন সময়ে তার সঙ্গে সম্পর্ক অব্যাহত থাকে। পরবর্তীতে আমি চাকরি ছেড়ে প্রিন্টিং ব্যবসা শুরু করি। ব্যবসার এক পর্যায়ে আমার আর্থিক সংকট দেখা দিলে আমি বাবুল আক্তারকে আমার ব্যবসায়ে বিনিয়োগের প্রস্তাব দেই। উনি আমার ব্যবসায়ে ২০০৯ সালে মাহমুদা আক্তার ভাবির নামে পাঁচ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন।

সাইফুল আরও বলেন, ২০১৬ সালের ৬ জুন যেদিন মিতু ভাবি হত্যা হয় সেদিন আমার মোবাইলে অপরিচিত এক নম্বর থেকে কল আসে। আমাকে বলা হয়, আপনি কি টাকা পাঠিয়েছেন? কিসের টাকা জিজ্ঞেস করলে বলে, এসপি বাবুল আক্তার টাকার কথা বলেনি। তখন কলের লাইন কেটে যায়। এর দুই তিনদিন পর আমার অফিস সহকারী মোখলেছুর রহমান ইরাদকে নিয়ে তার শ্বশুর বাড়িতে সমবেদনা জানাতে যাই। সে সময় বাবুল আক্তার ওনার বিনিয়োগ করা টাকা ফেরত চান। একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে কোথায় টাকা পাঠাতে হবে সেটা জেনে নিতে বলে। আমি ওই নম্বরটি ইরাদকে দেই। সরল মনে মানবিক দিক বিবেচনা করে উক্ত টাকা দিয়ে দেওয়ার জন্য আমার অ্যাকাউন্টসকে নির্দেশনা দেই।

আদালতে সাইফুল বলেন, পরবর্তীতে ইরাদের মাধ্যমে আমি জানতে পারি তিন লাখ পরিমাণের অর্থ বিভিন্ন নম্বরে বিকাশ করা হয়েছে। ২০২১ সালের ৯ মে পিবিআই থেকে আমাকে ওই ঘটনা তদন্তের জন্য ডাকা হয়। তৎকালীন ইন্সপেক্টর সন্তোষ কুমারের জিজ্ঞাসাবাদে চট্টগ্রাম এসে আমি সবকিছু খুলে বলি। ওই সময় আমার ব্যবহার করা একটি মোবাইলও জব্দ করা হয়। পরের দিন ১১ মে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আমার সাক্ষীর জবানবন্দি দিই।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুর রশিদ বলেন, আজ মিতু হত্যা মামলার বাবুল আক্তারের বন্ধু সাইফুল ইসলামের সাক্ষ্য ও আসামি পক্ষের জেরা হয়েছে। বুধবারেও সাইফুল হককে আসামি পক্ষ জেরা করবেন।

এর আগে, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মিতুকে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। মামলার বাকি আসামিরা হলেন- মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, আনোয়ার হোসেন, এহতেশামুল হক ভোলা, শাহজাহান মিয়া, কামরুল ইসলাম শিকদার মুছা ও খায়রুল ইসলাম। ২০১৬ সালে মিতু খুন হওয়ার পর তার স্বামী, সে সময়ের পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তার বাদী হয়ে মামলা করেছিলেন। নানা নাটকীয়তা শেষে পিবিআইয়ের তদন্তে এখন তিনিই এ মামলার আসামি। এসপি বাবুল তার কিছুদিন আগেই চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশে ছিলেন। বদলি হওয়ার পর তিনি ঢাকায় কর্মস্থলে যোগ দিতে যাওয়ার পরপরই চট্টগ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর